ঢাকা ১১:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
ডেঙ্গুতে ২৪ ঘণ্টায় ১০ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৯৯০ ইলা লালালালা: সবুজ ঘাসের লাল দ্রোহের সুর যার কন্ঠে তরুণ আইনজীবী সাইফুলকে যেভাবে হত্যা করা হয় গাজীপুরে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত রায়পুর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের দুর্নীতিত অতিষ্ঠ জনসাধারণ সমাবেশে গিয়ে টাকা না পেয়ে বাড়ি ঘেরাও, ৫ প্রতারক আটক অভিনব সিন্ডিকেট: সয়াবিন তেলের সঙ্গে চাল-ডাল কেনা বাধ্যতামূলক! সব ছাত্রসংগঠনের সমন্বয়ে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করলেন হাসনাত ডেপুটি রেজিস্ট্রার হয়েও নার্সিং ইনস্টিটিউট ব্যবসা নিলুফার ইয়াসমিনের অভিযোগ তদন্তে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে তলব পুলিশ প্রশাসনের নীতিগত পরিবর্তন হলেও এসআই মিজানের অসাধু নীতির পরিবর্তন হয়নি

নির্বাহী প্রকৌশলী ইলিয়াসের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট টাইম : ১২:১৭:১১ অপরাহ্ণ, সোমবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
  • / ৫৪৮ ৫০০০.০ বার পাঠক

★ ঘুষ ছাড়া কোনো কাজই করেন না★ রোষানলে ঠিকাদাররা

তথ্য মতে জানা যায় -প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্পের কাজ ও গণপূর্তের সরকারি আবাসিক কলোনির ভবন নির্মাণ, রক্ষণাবেক্ষণ, উন্নয়ন ও মেরামতকাজে পিপিআর বিধিমালা অমান্য করার অভিযোগ উঠেছে আজিমপুর গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইলিয়াস আহম্মেদের বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে ঘুষ দাবিরও অভিযোগ রয়েছে।
জানা গেছে, আজিমপুর গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইলিয়াস আহম্মেদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম ও ঠিকাদারকে হয়রানি করায় গণপূর্ত বিভাগের প্রধান প্রকৌশলীর কাছে একজন ভুক্তভোগী ঠিকাদার লিখিত অভিযোগ করেছেন। আর ওই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযোগকারীকে কালো তালিকাভুক্তকরণের প্রস্তুতিসহ তার ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত এবং গণপূর্ত বিভাগের কোথাও ঠিকাদারির কাজ করতে না দেয়াসহ হয়রানি করার হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে ভুক্তভোগী জানিয়েছেন।
একাধিক সূত্র থেকে জানা যায়, নির্বাহী প্রকৌশলী ইলিয়াস আহম্মেদের কারসাজি ও তার পছন্দের ঠিকাদার ছাড়া কাজ দেন না। তিনি দীর্ঘদিন ধরে আজিমপুর গণপূর্ত বিভাগে থেকে পছন্দের ঠিকাদারদের কাছ থেকে নজরানা আদায়ের মাধ্যমে ‘যেমন খুশি তেমনভাবে’ কাজ করে আসছেন। গণপূর্ত বিভাগের সাবেক একজন মন্ত্রীর বাড়ি তার এলাকায় হওয়ায় বর্তমান চেয়ারে আসীন হন। তার হাত অনেক লম্বা দাবি করে বিভিন্ন ঠিকাদারকে হুমকি-ধমকি দিয়ে কমিশনের মাধ্যমে কাজ করে আসছেন।

আজিমপুর এলাকায় গণপূর্ত বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছে তার বিষয়ে খোঁজখবর নিতে গিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য ছাড়াও ভুক্তভোগীদের নানান হয়রানির খবর পাওয়া গেছে।

জানা যায়, রাজধানীর পুরান ঢাকার ২৭৬ লালবাগ রোডস্থ ‘মেসার্স এম.এ আলী এন্টারপ্রাইজ’ নামক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রোপাইটারের পক্ষ থেকে গত ২৯ মার্চ গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীর দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। উক্ত অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, তিনি ই-জিপি টেন্ডারে আজিমপুর বিভাগে একটি কাজ পেয়েছিলেন। নির্বাহী প্রকৌশলী ইলিয়াস আহম্মেদ তাকে ডেকে ২ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। কিন্তু তিনি তার দাবিকৃত টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় তার কাজ শেষে বিল দাখিলের পর পুনরায় মোট বিলের ১৩ শতাংশ ঘুষ দাবি করেন। এরপর বিল পেতে ঝামেলার আশঙ্কায় প্রকৌশলী ইলিয়াস আহমেদকে ৫৫ হাজার টাকা ঘুষ দেন ওই ঠিকাদার। কিন্তু তার চাহিদামতো ঘুষ না দেয়ায় প্রায় দুই বছর ঘুরিয়ে একাধিক কিস্তিতে তার বিল পরিশোধ করা হয়েছে। এছাড়া টেন্ডারে কাজ প্রাপ্তির সময় জামানত হিসেবে দেয়া ১ লাখ ১৬ হাজার ৫০০ টাকার চেক ইস্যু হওয়ার পরও নানা টালবাহানার মাধ্যমে তার চেকটি দেয়া হয়েছে।
এম.এ আলী এন্টারপ্রাইজের প্রোপ্রাইটর পল্টু বলেন, কাজ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নির্বাহী প্রকৌশলী ইলিয়াস আমাকে ডেকে সরাসরি দুই লাখ টাকা চাইলেন। ঘুষ দিতে রাজি না হওয়াটাই কাল হয়েছে। মাত্র ১০ লাখ টাকার বিল দিতে তিনি দুই বছরের বেশি সময় ঘুরিয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে গণপূর্ত বিভাগের ঠিকাদারসহ কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী বলেছেন, নির্বাহী প্রকৌশলী টাকার জন্য সবার সঙ্গে স্বৈরাচারী আচরণ করে থাকেন। তিনি ব্যাপক অদৃশ্য ক্ষমতার অধিকারী বলে নিজেকে দাবি করেন। ইলিয়াস আহম্মেদ দীর্ঘদিন আজিমপুর বিভাগের দায়িত্বে থাকায় আলোচনার বিষয়ে পরিণত হয়েছেন। তার জন্মস্থান দেশের দক্ষিণাঞ্চলে হওয়ায় সাবেক গণপূর্ত মন্ত্রীর আমলে প্রভাব বেড়ে গিয়েছিল। কিন্তু ওই মন্ত্রীর মন্ত্রণালয় পরিবর্তন হলেও তার আধিপত্য থামেনি।
শুধু তাই নয়, এর আগেও অনেক ঠিকাদার আজিমপুর গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ইলিয়াস আহম্মেদের বিরুদ্ধে ই-জিপি টেন্ডার প্রক্রিয়া, ভবন ঝুঁকিপূর্ণ নোটিস দেয়া এবং পুনরায় মেরামতসহ নানা কৌশল করে ঘুষ বাণিজ্য ও অনিয়মের অভিযোগ করেছেন। গত ৬ বছরের বেশি সময় একই চেয়ারে থাকায় আধিপত্য গড়ে ওঠায় পচ্ছন্দের ঠিকাদারদের দিয়ে নানা অনিয়মের মাধ্যমে কমিশন বাগিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। আর চলতি বছরের শুরুতে এসব বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন, প্রধান প্রকৌশলী গণপূর্ত অধিদপ্তর ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের (সিপিটিইউ) মহাপরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। ওই অভিযোগে বলা হয়েছে, লালবাগ থানাধীন আজিমপুর সরকারি কলোনির (মৌচাক) সর্বমোট ১০টি আবাসিক ভবন ছিল। এরমধ্যে নতুন ৩৭ ও নতুন ৩৮ ভবন দুটি অত্যাধিক নাজুক জরাজীর্ণ অবস্থার নোটিশ করা হয়।

ভবন দুটিতে নিয়মিতভাবে অভ্যন্তরীণ সিভিল, স্যানিটারী মেরামত কাজ করা হয়। এক নোটিশের স্মারক নং ২৫,৩৬,২৬০০–২১০৪-এ বলা হয়, আজিমপুর সরকারি মৌচাক কলোনির ভবন নং ৩৭ ও ৩৮ নতুন ভবন অতি পুরাতন ও জরাজীর্ণ। উক্ত ভবন দুটিতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের পুলের আওতায় বরাদ্দকৃত মোট ৪৮টি ফ্ল্যাটে বসবাসকারী কর্মচারীগণ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় সপরিবারে বসবাসের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। উক্ত ভবন দুটির গেটে নোটিস টাঙিয়ে বলা হয়েছিল- এতদ্বারা সম্মানিত এলোটিগণের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, আজিমপুর গণপূর্ত বিভাগ, ঢাকার স্মারক নং ২৫, ৩৬–২১০৪ তারিখ ২০-০৯-২০২১ খ্রি. অনুযায়ী মৌচাক কলোনির ৩৭ (নতুন) ভবনটিকে দুর্ঘটনাপ্রবণ ও অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করার প্রেক্ষিতে এলোটিগণকে অন্যত্র বরাদ্দ প্রাপ্তির জন্য সরকারি আবাসন পরিদপ্তরের সাথে জরুরিভিত্তিতে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করা হলো। অথচ উক্ত ভবন দুটি ঠিকাদারের মাধ্যমে তা মেরামত করা হয়। অর্থাৎ নিজেরাই ওই সব ভবনকে ব্যবহার অনুপযোগী বলে, আবার সরকারের টাকায় সেগুলো মেরামতের নামে পছন্দের ঠিকাদারদের সঙ্গে আঁতাত করে অর্থ আত্মসাৎ করে।

এসব বিষয়ে অভিযুক্ত নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইলিয়াস আহম্মেদের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার ফোনটি রিসিভ করেননি।

তবে এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে তার স্বাক্ষরিত এক বক্তব্যের এক জায়গায় বলা বলা হয়েছে, অভিযোগকারী পল্টন দাসের বিল প্রদান পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে মনগড়া এবং বানোয়াট তথ্য সংবলিত পত্র প্রেরণের মাধ্যমে সরকারি কাজে বিঘ্ন সৃষ্টি করে আসছেন। আর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সমুদয় অর্থ বরাদ্দ সাপেক্ষে পরিশোধ করা হয়েছে।দৈনিক সময়ের কণ্ঠ পত্রিকায় চোখ রাখুন

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

নির্বাহী প্রকৌশলী ইলিয়াসের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়

আপডেট টাইম : ১২:১৭:১১ অপরাহ্ণ, সোমবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

★ ঘুষ ছাড়া কোনো কাজই করেন না★ রোষানলে ঠিকাদাররা

তথ্য মতে জানা যায় -প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্পের কাজ ও গণপূর্তের সরকারি আবাসিক কলোনির ভবন নির্মাণ, রক্ষণাবেক্ষণ, উন্নয়ন ও মেরামতকাজে পিপিআর বিধিমালা অমান্য করার অভিযোগ উঠেছে আজিমপুর গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইলিয়াস আহম্মেদের বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে ঘুষ দাবিরও অভিযোগ রয়েছে।
জানা গেছে, আজিমপুর গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইলিয়াস আহম্মেদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম ও ঠিকাদারকে হয়রানি করায় গণপূর্ত বিভাগের প্রধান প্রকৌশলীর কাছে একজন ভুক্তভোগী ঠিকাদার লিখিত অভিযোগ করেছেন। আর ওই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযোগকারীকে কালো তালিকাভুক্তকরণের প্রস্তুতিসহ তার ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত এবং গণপূর্ত বিভাগের কোথাও ঠিকাদারির কাজ করতে না দেয়াসহ হয়রানি করার হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে ভুক্তভোগী জানিয়েছেন।
একাধিক সূত্র থেকে জানা যায়, নির্বাহী প্রকৌশলী ইলিয়াস আহম্মেদের কারসাজি ও তার পছন্দের ঠিকাদার ছাড়া কাজ দেন না। তিনি দীর্ঘদিন ধরে আজিমপুর গণপূর্ত বিভাগে থেকে পছন্দের ঠিকাদারদের কাছ থেকে নজরানা আদায়ের মাধ্যমে ‘যেমন খুশি তেমনভাবে’ কাজ করে আসছেন। গণপূর্ত বিভাগের সাবেক একজন মন্ত্রীর বাড়ি তার এলাকায় হওয়ায় বর্তমান চেয়ারে আসীন হন। তার হাত অনেক লম্বা দাবি করে বিভিন্ন ঠিকাদারকে হুমকি-ধমকি দিয়ে কমিশনের মাধ্যমে কাজ করে আসছেন।

আজিমপুর এলাকায় গণপূর্ত বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছে তার বিষয়ে খোঁজখবর নিতে গিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য ছাড়াও ভুক্তভোগীদের নানান হয়রানির খবর পাওয়া গেছে।

জানা যায়, রাজধানীর পুরান ঢাকার ২৭৬ লালবাগ রোডস্থ ‘মেসার্স এম.এ আলী এন্টারপ্রাইজ’ নামক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রোপাইটারের পক্ষ থেকে গত ২৯ মার্চ গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীর দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। উক্ত অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, তিনি ই-জিপি টেন্ডারে আজিমপুর বিভাগে একটি কাজ পেয়েছিলেন। নির্বাহী প্রকৌশলী ইলিয়াস আহম্মেদ তাকে ডেকে ২ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। কিন্তু তিনি তার দাবিকৃত টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় তার কাজ শেষে বিল দাখিলের পর পুনরায় মোট বিলের ১৩ শতাংশ ঘুষ দাবি করেন। এরপর বিল পেতে ঝামেলার আশঙ্কায় প্রকৌশলী ইলিয়াস আহমেদকে ৫৫ হাজার টাকা ঘুষ দেন ওই ঠিকাদার। কিন্তু তার চাহিদামতো ঘুষ না দেয়ায় প্রায় দুই বছর ঘুরিয়ে একাধিক কিস্তিতে তার বিল পরিশোধ করা হয়েছে। এছাড়া টেন্ডারে কাজ প্রাপ্তির সময় জামানত হিসেবে দেয়া ১ লাখ ১৬ হাজার ৫০০ টাকার চেক ইস্যু হওয়ার পরও নানা টালবাহানার মাধ্যমে তার চেকটি দেয়া হয়েছে।
এম.এ আলী এন্টারপ্রাইজের প্রোপ্রাইটর পল্টু বলেন, কাজ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নির্বাহী প্রকৌশলী ইলিয়াস আমাকে ডেকে সরাসরি দুই লাখ টাকা চাইলেন। ঘুষ দিতে রাজি না হওয়াটাই কাল হয়েছে। মাত্র ১০ লাখ টাকার বিল দিতে তিনি দুই বছরের বেশি সময় ঘুরিয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে গণপূর্ত বিভাগের ঠিকাদারসহ কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী বলেছেন, নির্বাহী প্রকৌশলী টাকার জন্য সবার সঙ্গে স্বৈরাচারী আচরণ করে থাকেন। তিনি ব্যাপক অদৃশ্য ক্ষমতার অধিকারী বলে নিজেকে দাবি করেন। ইলিয়াস আহম্মেদ দীর্ঘদিন আজিমপুর বিভাগের দায়িত্বে থাকায় আলোচনার বিষয়ে পরিণত হয়েছেন। তার জন্মস্থান দেশের দক্ষিণাঞ্চলে হওয়ায় সাবেক গণপূর্ত মন্ত্রীর আমলে প্রভাব বেড়ে গিয়েছিল। কিন্তু ওই মন্ত্রীর মন্ত্রণালয় পরিবর্তন হলেও তার আধিপত্য থামেনি।
শুধু তাই নয়, এর আগেও অনেক ঠিকাদার আজিমপুর গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ইলিয়াস আহম্মেদের বিরুদ্ধে ই-জিপি টেন্ডার প্রক্রিয়া, ভবন ঝুঁকিপূর্ণ নোটিস দেয়া এবং পুনরায় মেরামতসহ নানা কৌশল করে ঘুষ বাণিজ্য ও অনিয়মের অভিযোগ করেছেন। গত ৬ বছরের বেশি সময় একই চেয়ারে থাকায় আধিপত্য গড়ে ওঠায় পচ্ছন্দের ঠিকাদারদের দিয়ে নানা অনিয়মের মাধ্যমে কমিশন বাগিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। আর চলতি বছরের শুরুতে এসব বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন, প্রধান প্রকৌশলী গণপূর্ত অধিদপ্তর ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের (সিপিটিইউ) মহাপরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। ওই অভিযোগে বলা হয়েছে, লালবাগ থানাধীন আজিমপুর সরকারি কলোনির (মৌচাক) সর্বমোট ১০টি আবাসিক ভবন ছিল। এরমধ্যে নতুন ৩৭ ও নতুন ৩৮ ভবন দুটি অত্যাধিক নাজুক জরাজীর্ণ অবস্থার নোটিশ করা হয়।

ভবন দুটিতে নিয়মিতভাবে অভ্যন্তরীণ সিভিল, স্যানিটারী মেরামত কাজ করা হয়। এক নোটিশের স্মারক নং ২৫,৩৬,২৬০০–২১০৪-এ বলা হয়, আজিমপুর সরকারি মৌচাক কলোনির ভবন নং ৩৭ ও ৩৮ নতুন ভবন অতি পুরাতন ও জরাজীর্ণ। উক্ত ভবন দুটিতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের পুলের আওতায় বরাদ্দকৃত মোট ৪৮টি ফ্ল্যাটে বসবাসকারী কর্মচারীগণ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় সপরিবারে বসবাসের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। উক্ত ভবন দুটির গেটে নোটিস টাঙিয়ে বলা হয়েছিল- এতদ্বারা সম্মানিত এলোটিগণের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, আজিমপুর গণপূর্ত বিভাগ, ঢাকার স্মারক নং ২৫, ৩৬–২১০৪ তারিখ ২০-০৯-২০২১ খ্রি. অনুযায়ী মৌচাক কলোনির ৩৭ (নতুন) ভবনটিকে দুর্ঘটনাপ্রবণ ও অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করার প্রেক্ষিতে এলোটিগণকে অন্যত্র বরাদ্দ প্রাপ্তির জন্য সরকারি আবাসন পরিদপ্তরের সাথে জরুরিভিত্তিতে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করা হলো। অথচ উক্ত ভবন দুটি ঠিকাদারের মাধ্যমে তা মেরামত করা হয়। অর্থাৎ নিজেরাই ওই সব ভবনকে ব্যবহার অনুপযোগী বলে, আবার সরকারের টাকায় সেগুলো মেরামতের নামে পছন্দের ঠিকাদারদের সঙ্গে আঁতাত করে অর্থ আত্মসাৎ করে।

এসব বিষয়ে অভিযুক্ত নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইলিয়াস আহম্মেদের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার ফোনটি রিসিভ করেননি।

তবে এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে তার স্বাক্ষরিত এক বক্তব্যের এক জায়গায় বলা বলা হয়েছে, অভিযোগকারী পল্টন দাসের বিল প্রদান পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে মনগড়া এবং বানোয়াট তথ্য সংবলিত পত্র প্রেরণের মাধ্যমে সরকারি কাজে বিঘ্ন সৃষ্টি করে আসছেন। আর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সমুদয় অর্থ বরাদ্দ সাপেক্ষে পরিশোধ করা হয়েছে।দৈনিক সময়ের কণ্ঠ পত্রিকায় চোখ রাখুন