ঢাকা ১০:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ জুন ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
শান্তিতে আছেন সব সম্প্রদায়ের মানুষ – মোংলায় কৃষিবিদ শামীম মারধরের পর স্ত্রীর মাথা ন্যাড়া করে নির্যাতন, স্বামী গ্রেপ্তার সরকারের সঙ্গে দূরত্ব ঘুচবে কী বিএনপির? প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমান আবারও করোনা পরীক্ষা শুরু হচ্ছে হাসপাতালগুলোতে লস অ্যাঞ্জেলেসের ডাউনটাউনে কারফিউ জারি শরণখোলা নির্বাচন অফিসে কর্মরত বিথী আক্তারের দরজা বন্ধ অবস্থায় সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত মৃত দেহ সিঙ্গাপুরের ঘাম ঝরিয়েও হার বাংলাদেশের সিঙ্গাপুরের ফুটবলারের সঙ্গে বল দখলের লড়াই অভিষিক্ত আগুন থেকে বাঁচতে বহুতল ভবন থেকে ঝাঁপ, দিল্লিতে বাবা ও দুই সন্তানের মৃত্যু ভাঙ্গুড়ায় মাদ্রাসার নৈশপ্রহরীকে কুপিয়ে হত্যা, আটক ১ জুলাই গণহত্যা মামলায় বেশি নাম থাকায় তদন্তে বিঘ্ন ঘটছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

রাজউকের নকশার বিচ্যুতি করে ভবন নির্মাণ করছে শহিদুল ইসলাম গং

রফিকুল ইসলাম মাসুদ:
  • আপডেট টাইম : ১২:৩৮:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • / ৪১৯ ১৫০.০০০ বার পাঠক

নিজের সুবিধামতো বাড়ি নির্মাণ বাড়ছে। মানা হচ্ছে না বিভিন্ন সংস্থা থেকে পাস করা নকশা। বাড়ি নির্মাণে সবচেয়ে বেশি নির্মাণ ত্রুটি হচ্ছে রাজধানী ঢাকায়। ইমারত নির্মাণ বিধিমালা কেবল নকশায়, বাস্তবে এর প্রতিফলন নেই। অনেকেই নিজেদের সুবিধামতো নির্মাণ করছে বাহারি ডিজাইনের বাড়ি। একটি ভবন নির্মাণ করতে কমপক্ষে এক বছর সময় লাগলেও অভিযোগ রয়েছে অনেক বাড়ির মালিকের কাছে রক্ষিত রাজউকের অনুমোদিত নকসায় ভাঁজ পড়ে না। নকশা যেভাবে অনুমোদন করিয়ে আনা হয়, সেভাবেই থাকে। সাইট ইঞ্জিনিয়ারের কাছে থাকে নিজেদের মতো তৈরি করা নকশা, তা দেখেই ভবন নির্মাণ করার অভিযোগ আছে।

সরেজমিনে এমন এক বাড়ির দেখামেলে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ রাজউকের ৬/১ জোনের আওতাধীন রাজধানীর সবুজবাগ এলাকার কুলসুমবাগের ১নং রোডে। বাড়িটির মালিক মো: শহিদুল ইসলাম গং, যা কুলসুমবাগস্থ সি.এস-৩১০, আর.এস-২৩৪, এস.এ- ৪৩১ ও সিটি- ৩১৩৬, ৩০৫০ খতিয়ানস্থ সি.এস/এস.এ দাগ নং ১০৯৫, আর.এস- ৭৯২ ও সিটি- ৩৩৮৯, ৮৪৬৬ দাগে ৭ (সতি) কাঠা জমির উপর রাজউক থেকে জি+৯ (১০তলা) ভবনের অনুমোন গ্রহন করে ভবন মালিক কর্তৃপক্ষ। যার স্বারক নং রাজউক-২৫.৩৯.০০০০.১২২.৩৩.১২৩.২১ তারিখ: ০৭/০৬/২০২১ ইং, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের নাম আব্দুল কাদের এন্টারপ্রাইজ।

প্রতিনিধির অনুসন্ধানে দেখাযায় বাড়িটির সম্মূখ্যে মাটির কাচা রাস্তা যার প্রস্ত ১০ ফিট+ কিন্ত রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ রাজউকের আইন অনুযায়ী বাড়ির সামনে পাকা রাস্তা এবং ২০ ফিট+ রাস্তা থাকতে হবে। যার বিন্দুমাত্র দেখা নেই। বাড়িটির চতুরপাশ্বে ইচ্ছামত ডেভিয়েশন করে পরবর্তীতে পাশের বাড়ির জন্য জায়গা পর্যাপ্ত না রেখেই বাড়িটির নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে ভবন মালিক কর্তৃপক্ষ। যা অনুমোধিত নকশা বা নকশা পাশের প্রস্তাবনার সময় ১৫টি শর্ত সাপেক্ষ্যে ভবনের নকশার অনুমোধন দেয় রাজউক তার সাথে কোন মিল নেই।

গ্রাম্য কাচা রাস্তা হলেও জনবহুল এলাকা সেখানে জনসাধারনের ও কর্মরত শ্রমীকদের সেফটির জন্য কোন সেফটি নেট ব্যবহার করা হয়নি। নাম সর্বস্য রাজউকের অনুমোদনের সাইনবোর্ড টানালেও তার সাথে কোন মিল নাই ভবনের। বর্তমানে ভবনটির ৮ তলা শেষে ৯ তলার কাজ চলমান রয়েছে।

উল্লেখ্য যে, ঢাকায় রাজউকের আওতাধীন এলাকায় যেসব বাড়ি নির্মাণ হয়ে থাকে সবগুলোর খবরই রাজউকের পরিদর্শকরা রাখেন। তারা ভবনগুলো পরিদর্শনও করেন, আবার ফিরেও যান কিন্তু রাজউকে অভিযোগের খাতা শূন্য থাকে। রাজউকের অনুমোদিত নকশার ব্যত্যয় ঘটিয়ে অন্য নকশায় ভবন নির্মাণের উদাহরণ রাজধানীর প্রায় সর্বত্র।

নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক একজন সচেতন নাগরিক জানিয়েছেন, ‘রাজউক থেকে একটি নকশা অনুমোদন করিয়ে আনলেই হয়ে যায়। এরপর নিজের ইচ্ছামতো নির্মাণ করো, কোনো সমস্যা হবে না। একটু গলির ভেতরে বাসা হলে আরো বেশি সুবিধা। সেখানে রাজউকের বুলডোজার পৌঁছাবে না। তবে রাজউকের পরিদর্শকদের ‘ম্যানেজ’ করার ক্ষমতা থাকতে হবে ভবন মালিকদের। পরিদর্শকরা দুই দিন পর পর আসতেই থাকে। গলি বা মফস্বলের দিকে রাজউকের বড় কর্তারা কখনোই আসেন না।

ভবনটির বিষয় রাজউক ৬/১ জোনের ইমারত পরিদর্শক তারিফ হোসেন এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এই জোনে নতুন তাই এই ভবনের বিষয় কিছুই জানিনা। যেহেতু জেনেছি আমি পরিদর্শন করে কোন অনিয়ম পেলে রাজউক আইন অনুসারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনের সুপারিশ করবো।

আমাদের মতে, রাজউকের উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী রাজধানী ঢাকায় রাজউকের তালিকায় প্রায় ১০ হাজারের বেশি ত্রুটিপূর্ণ ভবন রয়েছে। এসব নকশা ব্যত্যয় ঘটানো ভবনের বেশির ভাগ তথ্য এসেছে বিভিন্ন সময়ে রাজউকে জমা দেয়া সাধারণ মানুষের অভিযোগ থেকে। রাজউকের পরিদর্শকদের দায়িত্ব থাকলেও তাদের কাছ থেকে খুব কম তথ্যই আসে। বরং অভিযোগ রয়েছে রাজউকের পরিদর্শকদের বেশির ভাগেরই একটি বিশাল ‘আয়’ আসে রাজধানীর ত্রুটিপূর্ণ ও নকশা ব্যত্যয় ঘটিয়ে নির্মিত ভবনের মালিকদের কাছ থেকে। তাহলে কি রজউক এর কর্মকর্তারা অতিরিক্ত সুবিধা গ্রহনের জন্য এসব ভবনের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করছেন না। দৈনিক সামর্কন্ট পত্রিকায় চোখ রাখুন

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

রাজউকের নকশার বিচ্যুতি করে ভবন নির্মাণ করছে শহিদুল ইসলাম গং

আপডেট টাইম : ১২:৩৮:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

নিজের সুবিধামতো বাড়ি নির্মাণ বাড়ছে। মানা হচ্ছে না বিভিন্ন সংস্থা থেকে পাস করা নকশা। বাড়ি নির্মাণে সবচেয়ে বেশি নির্মাণ ত্রুটি হচ্ছে রাজধানী ঢাকায়। ইমারত নির্মাণ বিধিমালা কেবল নকশায়, বাস্তবে এর প্রতিফলন নেই। অনেকেই নিজেদের সুবিধামতো নির্মাণ করছে বাহারি ডিজাইনের বাড়ি। একটি ভবন নির্মাণ করতে কমপক্ষে এক বছর সময় লাগলেও অভিযোগ রয়েছে অনেক বাড়ির মালিকের কাছে রক্ষিত রাজউকের অনুমোদিত নকসায় ভাঁজ পড়ে না। নকশা যেভাবে অনুমোদন করিয়ে আনা হয়, সেভাবেই থাকে। সাইট ইঞ্জিনিয়ারের কাছে থাকে নিজেদের মতো তৈরি করা নকশা, তা দেখেই ভবন নির্মাণ করার অভিযোগ আছে।

সরেজমিনে এমন এক বাড়ির দেখামেলে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ রাজউকের ৬/১ জোনের আওতাধীন রাজধানীর সবুজবাগ এলাকার কুলসুমবাগের ১নং রোডে। বাড়িটির মালিক মো: শহিদুল ইসলাম গং, যা কুলসুমবাগস্থ সি.এস-৩১০, আর.এস-২৩৪, এস.এ- ৪৩১ ও সিটি- ৩১৩৬, ৩০৫০ খতিয়ানস্থ সি.এস/এস.এ দাগ নং ১০৯৫, আর.এস- ৭৯২ ও সিটি- ৩৩৮৯, ৮৪৬৬ দাগে ৭ (সতি) কাঠা জমির উপর রাজউক থেকে জি+৯ (১০তলা) ভবনের অনুমোন গ্রহন করে ভবন মালিক কর্তৃপক্ষ। যার স্বারক নং রাজউক-২৫.৩৯.০০০০.১২২.৩৩.১২৩.২১ তারিখ: ০৭/০৬/২০২১ ইং, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের নাম আব্দুল কাদের এন্টারপ্রাইজ।

প্রতিনিধির অনুসন্ধানে দেখাযায় বাড়িটির সম্মূখ্যে মাটির কাচা রাস্তা যার প্রস্ত ১০ ফিট+ কিন্ত রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ রাজউকের আইন অনুযায়ী বাড়ির সামনে পাকা রাস্তা এবং ২০ ফিট+ রাস্তা থাকতে হবে। যার বিন্দুমাত্র দেখা নেই। বাড়িটির চতুরপাশ্বে ইচ্ছামত ডেভিয়েশন করে পরবর্তীতে পাশের বাড়ির জন্য জায়গা পর্যাপ্ত না রেখেই বাড়িটির নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে ভবন মালিক কর্তৃপক্ষ। যা অনুমোধিত নকশা বা নকশা পাশের প্রস্তাবনার সময় ১৫টি শর্ত সাপেক্ষ্যে ভবনের নকশার অনুমোধন দেয় রাজউক তার সাথে কোন মিল নেই।

গ্রাম্য কাচা রাস্তা হলেও জনবহুল এলাকা সেখানে জনসাধারনের ও কর্মরত শ্রমীকদের সেফটির জন্য কোন সেফটি নেট ব্যবহার করা হয়নি। নাম সর্বস্য রাজউকের অনুমোদনের সাইনবোর্ড টানালেও তার সাথে কোন মিল নাই ভবনের। বর্তমানে ভবনটির ৮ তলা শেষে ৯ তলার কাজ চলমান রয়েছে।

উল্লেখ্য যে, ঢাকায় রাজউকের আওতাধীন এলাকায় যেসব বাড়ি নির্মাণ হয়ে থাকে সবগুলোর খবরই রাজউকের পরিদর্শকরা রাখেন। তারা ভবনগুলো পরিদর্শনও করেন, আবার ফিরেও যান কিন্তু রাজউকে অভিযোগের খাতা শূন্য থাকে। রাজউকের অনুমোদিত নকশার ব্যত্যয় ঘটিয়ে অন্য নকশায় ভবন নির্মাণের উদাহরণ রাজধানীর প্রায় সর্বত্র।

নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক একজন সচেতন নাগরিক জানিয়েছেন, ‘রাজউক থেকে একটি নকশা অনুমোদন করিয়ে আনলেই হয়ে যায়। এরপর নিজের ইচ্ছামতো নির্মাণ করো, কোনো সমস্যা হবে না। একটু গলির ভেতরে বাসা হলে আরো বেশি সুবিধা। সেখানে রাজউকের বুলডোজার পৌঁছাবে না। তবে রাজউকের পরিদর্শকদের ‘ম্যানেজ’ করার ক্ষমতা থাকতে হবে ভবন মালিকদের। পরিদর্শকরা দুই দিন পর পর আসতেই থাকে। গলি বা মফস্বলের দিকে রাজউকের বড় কর্তারা কখনোই আসেন না।

ভবনটির বিষয় রাজউক ৬/১ জোনের ইমারত পরিদর্শক তারিফ হোসেন এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এই জোনে নতুন তাই এই ভবনের বিষয় কিছুই জানিনা। যেহেতু জেনেছি আমি পরিদর্শন করে কোন অনিয়ম পেলে রাজউক আইন অনুসারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনের সুপারিশ করবো।

আমাদের মতে, রাজউকের উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী রাজধানী ঢাকায় রাজউকের তালিকায় প্রায় ১০ হাজারের বেশি ত্রুটিপূর্ণ ভবন রয়েছে। এসব নকশা ব্যত্যয় ঘটানো ভবনের বেশির ভাগ তথ্য এসেছে বিভিন্ন সময়ে রাজউকে জমা দেয়া সাধারণ মানুষের অভিযোগ থেকে। রাজউকের পরিদর্শকদের দায়িত্ব থাকলেও তাদের কাছ থেকে খুব কম তথ্যই আসে। বরং অভিযোগ রয়েছে রাজউকের পরিদর্শকদের বেশির ভাগেরই একটি বিশাল ‘আয়’ আসে রাজধানীর ত্রুটিপূর্ণ ও নকশা ব্যত্যয় ঘটিয়ে নির্মিত ভবনের মালিকদের কাছ থেকে। তাহলে কি রজউক এর কর্মকর্তারা অতিরিক্ত সুবিধা গ্রহনের জন্য এসব ভবনের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করছেন না। দৈনিক সামর্কন্ট পত্রিকায় চোখ রাখুন