ঢাকা ১০:০১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
সাউন্ড থেরাপির উপকারীতা সত্যিই চমকে যাওয়ার মতোই বেক্সিমকো শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ মেংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ কর্মচারী সংঘের নির্বাচন বানচালে সক্রিয় আওয়ামী লীগ বিক্ষোভ মিছিল প্রদর্শন হুমকি দেওয়া বিমানের সেই ফ্লাইটে তল্লাশি চালিয়ে যা জানাল কর্তৃপক্ষ মোবাইল ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের খরচ নিয়ে সুখবর কোস্ট গার্ডের অভিযানে দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র সহ ০২ জন দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী আটক মোংলায় জমি জমার বিরোধের জেরে সংঘর্ষ আহত ৩ কালিয়াকৈরে উঠান বৈঠক ও বিট পুলিশিং সভা অনুষ্ঠিত মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ কর্মচারী সংঘের মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু নওগাঁর নিয়ামতপুরে সমতল ভূমিতে বসবাসর ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মাঝে মুরগি ও মুরগির উপকরণ বিতরণ অনুষ্ঠান

রংপুরে শীতের প্রকোপে বাড়ছে অসুখ

রংপুর প্রতিনিধিঃ
  • আপডেট টাইম : ০৯:২৫:১০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৬ জানুয়ারী ২০২৩
  • / ১৯৪ ৫০০০.০ বার পাঠক

উত্তরাঞ্চলে বেড়েছে শীতের প্রকোপ। অনেক জেলায় মৃদ্যু শৈত্যপ্রবাহ চলছে। শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে শিশুরা। বাড়তি রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন হাসপাতালের চিকিৎসক-নার্সরা। এমন পরিস্থিতিতেও চালু করা হয়নি রংপুরের ১০০ শয্যা বিশিষ্ট আধুনিক শিশু হাসপাতাল।

করোনা মহামারির কারণে ২০২০ সালে হাসপাতালটিকে ডেডিকেটেড করোনা আইসোলেশন হাসপাতাল হিসেবে চালু করা হয়। বর্তমানে করোনার প্রকোপ কমেছে। তবে শিশু হাসপাতালটি চালুর কোনো উদ্যোগ নেয়নি স্বাস্থ্য বিভাগ। শিশুদের চিকিৎসায় উন্নত অবকাঠামো থাকলেও হাসপাতালটি না চালু হওয়ায় উত্তরের অস্বচ্ছল পরিবারের শিশুরা এর সুফল পাচ্ছে না।

২০১৯ সালে নগরীর প্রাণকেন্দ্রে সাবেক সদর হাসপাতাল এলাকায় প্রায় দুই একর জমির ওপর শিশু হাসপাতালটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়। ২০২০ সালের ৮ মার্চ ভবনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিভিল সার্জনকে হস্তান্তর করে। তিনতলা বিশিষ্ট এ শিশু হাসপাতালে রয়েছে ইমার্জেন্সি, আউটডোর, চিকিৎসকদের চেম্বার, ল্যাব, অপারেশন থিয়েটার, ব্রোন ইউনিট, ওয়ার্ড ও কেবিন।

হাসপাতাল চত্বরেই সুপারিনটেনডেন্ট কোয়ার্টার, ডক্টরস’ কোয়ার্টার, স্টাফ অ্যান্ড নার্স কোয়ার্টার, ড্রাইভার কোয়ার্টার ও বিদ্যুতের সাবস্টেশন নির্মাণ করা হয়েছে।

হাসপাতাল চালুর আগে দেশে করোনার প্রকোপ বেড়ে যায়। একারণে ২০২০ সালের ১৯ এপ্রিল হাসপাতালটিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালের সম্প্রসারিত ‘করোনা ডেডিকেটেড আইসোলেশন হাসপাতাল’ হিসেবে চালু করে স্বাস্থ্য বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসন। ১০০ শয্যা বিশিষ্ট এ হাসপাতালে করোনার চিকিৎসায় পুরুষ রোগীর জন্য ৬০ শয্যা, নারী রোগীর জন্য ৩০ শয্যা এবং সংকটাপন্ন রোগীর জন্য ১০ শয্যা বিশিষ্ট নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) ব্যবস্থা করা হয়।

একই সঙ্গে হাসপাতালটিতে সেন্ট্রাল অক্সিজেন, ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সুবিধা ও লাশবাহী গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়। এতে করে রমেক হাসপাতালের পাশাপাশি শিশু হাসপাতালে ১০টি আইসিইউ বেডসহ নানা সুযোগ-সুবিধা সংযোজিত হয়। পরে করোনার প্রকোপ আরও বাড়লে রমেক হাসপাতালে একটি করোনা ওয়ার্ড চালু করা হয়। ২০২২ সালের শুরুর দিকে রোগী না থাকায় রমেক হাসপাতালে করোনা ইউনিট বন্ধ করা হয়। বর্তমানে শিশু হাসপাতালটিতেও করোনা শনাক্ত রোগীর চাপ নেই।

সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) রংপুর মহানগর সভাপতি অধ্যক্ষ খন্দকার ফখরুল আনাম বেঞ্জু বলেন, ‘রংপুরের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল জেলায় একটি বিশেষায়িত শিশু হাসপাতাল চালু করা। বর্তমানে যেহেতু করোনার প্রকোপ কমে গেছে, তাই এটি এখন শিশু হাসপাতাল হিসেবে চালু করা যেতে পারে। নাহলে হাসপাতাল নির্মাণে সরকারের উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে। এছাড়া রংপুরের দুই কোটি মানুষ সেবা থেকে বঞ্চিত হবে।’

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. মো. ফখরুল আলম বলেন, ‘শীত কিংবা অত্যাধিক গরমে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশু রোগীর সংখ্যা বেড়ে যায়। হাসপাতালের প্রায় ১৮০ শয্যার বিপরীতে সাড়ে ৩০০-এর বেশি রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে। ফলে এক বেডে একাধিক শিশুকে চিকিৎসা দিতে হয়। যেহেতু রংপুরে একটি বিশেষায়িত শিশু হাসপাতাল নির্মাণ হয়েছে, সেটি চালু হলে হাসপাতালে রোগীর চাপ কমবে। আমরা ওই হাসপাতাল চালুর জন্য অপেক্ষা করছি।’

নব-নির্মিত ১০০ শয্যা বিশিষ্ট শিশু হাসপাতালের কার্যক্রম পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক ও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. শরিফুল হাসান বলেন, ‘শিশু হাসপাতালটি চালু করতে সেখানে কতজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, কোন কোন বিষয়ে পারদর্শী চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ডবয়, কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রয়োজন সেটি নিয়ে একটি অর্গানোগ্রামের প্রয়োজন। রংপুরের স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত জনবল নিয়োগে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হবে!

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

রংপুরে শীতের প্রকোপে বাড়ছে অসুখ

আপডেট টাইম : ০৯:২৫:১০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৬ জানুয়ারী ২০২৩

উত্তরাঞ্চলে বেড়েছে শীতের প্রকোপ। অনেক জেলায় মৃদ্যু শৈত্যপ্রবাহ চলছে। শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে শিশুরা। বাড়তি রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন হাসপাতালের চিকিৎসক-নার্সরা। এমন পরিস্থিতিতেও চালু করা হয়নি রংপুরের ১০০ শয্যা বিশিষ্ট আধুনিক শিশু হাসপাতাল।

করোনা মহামারির কারণে ২০২০ সালে হাসপাতালটিকে ডেডিকেটেড করোনা আইসোলেশন হাসপাতাল হিসেবে চালু করা হয়। বর্তমানে করোনার প্রকোপ কমেছে। তবে শিশু হাসপাতালটি চালুর কোনো উদ্যোগ নেয়নি স্বাস্থ্য বিভাগ। শিশুদের চিকিৎসায় উন্নত অবকাঠামো থাকলেও হাসপাতালটি না চালু হওয়ায় উত্তরের অস্বচ্ছল পরিবারের শিশুরা এর সুফল পাচ্ছে না।

২০১৯ সালে নগরীর প্রাণকেন্দ্রে সাবেক সদর হাসপাতাল এলাকায় প্রায় দুই একর জমির ওপর শিশু হাসপাতালটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়। ২০২০ সালের ৮ মার্চ ভবনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিভিল সার্জনকে হস্তান্তর করে। তিনতলা বিশিষ্ট এ শিশু হাসপাতালে রয়েছে ইমার্জেন্সি, আউটডোর, চিকিৎসকদের চেম্বার, ল্যাব, অপারেশন থিয়েটার, ব্রোন ইউনিট, ওয়ার্ড ও কেবিন।

হাসপাতাল চত্বরেই সুপারিনটেনডেন্ট কোয়ার্টার, ডক্টরস’ কোয়ার্টার, স্টাফ অ্যান্ড নার্স কোয়ার্টার, ড্রাইভার কোয়ার্টার ও বিদ্যুতের সাবস্টেশন নির্মাণ করা হয়েছে।

হাসপাতাল চালুর আগে দেশে করোনার প্রকোপ বেড়ে যায়। একারণে ২০২০ সালের ১৯ এপ্রিল হাসপাতালটিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালের সম্প্রসারিত ‘করোনা ডেডিকেটেড আইসোলেশন হাসপাতাল’ হিসেবে চালু করে স্বাস্থ্য বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসন। ১০০ শয্যা বিশিষ্ট এ হাসপাতালে করোনার চিকিৎসায় পুরুষ রোগীর জন্য ৬০ শয্যা, নারী রোগীর জন্য ৩০ শয্যা এবং সংকটাপন্ন রোগীর জন্য ১০ শয্যা বিশিষ্ট নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) ব্যবস্থা করা হয়।

একই সঙ্গে হাসপাতালটিতে সেন্ট্রাল অক্সিজেন, ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সুবিধা ও লাশবাহী গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়। এতে করে রমেক হাসপাতালের পাশাপাশি শিশু হাসপাতালে ১০টি আইসিইউ বেডসহ নানা সুযোগ-সুবিধা সংযোজিত হয়। পরে করোনার প্রকোপ আরও বাড়লে রমেক হাসপাতালে একটি করোনা ওয়ার্ড চালু করা হয়। ২০২২ সালের শুরুর দিকে রোগী না থাকায় রমেক হাসপাতালে করোনা ইউনিট বন্ধ করা হয়। বর্তমানে শিশু হাসপাতালটিতেও করোনা শনাক্ত রোগীর চাপ নেই।

সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) রংপুর মহানগর সভাপতি অধ্যক্ষ খন্দকার ফখরুল আনাম বেঞ্জু বলেন, ‘রংপুরের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল জেলায় একটি বিশেষায়িত শিশু হাসপাতাল চালু করা। বর্তমানে যেহেতু করোনার প্রকোপ কমে গেছে, তাই এটি এখন শিশু হাসপাতাল হিসেবে চালু করা যেতে পারে। নাহলে হাসপাতাল নির্মাণে সরকারের উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে। এছাড়া রংপুরের দুই কোটি মানুষ সেবা থেকে বঞ্চিত হবে।’

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. মো. ফখরুল আলম বলেন, ‘শীত কিংবা অত্যাধিক গরমে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশু রোগীর সংখ্যা বেড়ে যায়। হাসপাতালের প্রায় ১৮০ শয্যার বিপরীতে সাড়ে ৩০০-এর বেশি রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে। ফলে এক বেডে একাধিক শিশুকে চিকিৎসা দিতে হয়। যেহেতু রংপুরে একটি বিশেষায়িত শিশু হাসপাতাল নির্মাণ হয়েছে, সেটি চালু হলে হাসপাতালে রোগীর চাপ কমবে। আমরা ওই হাসপাতাল চালুর জন্য অপেক্ষা করছি।’

নব-নির্মিত ১০০ শয্যা বিশিষ্ট শিশু হাসপাতালের কার্যক্রম পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক ও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. শরিফুল হাসান বলেন, ‘শিশু হাসপাতালটি চালু করতে সেখানে কতজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, কোন কোন বিষয়ে পারদর্শী চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ডবয়, কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রয়োজন সেটি নিয়ে একটি অর্গানোগ্রামের প্রয়োজন। রংপুরের স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত জনবল নিয়োগে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হবে!