ঢাকা ০২:৩২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
রাণীশংকৈলে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা কোনাবাড়ি পল্লী বিদ্যুৎ পাওয়ার সাবস্টেশনে আগুন তামাক হচ্ছে মাদকের মূল লক্ষ্য -ডাঃ মোঃ নজরুল ইসলাম কিরাটন ইউনিয়নের পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম আমাদের মাঝে আর নেই শিবগঞ্জে সানামসজিদ স্থলবন্দরে হিট স্ট্রোকে ট্রাফিক পরিদর্শকের মৃত্যু গাজীপুরবাসীর জন্য চরম “সৌভাগ্য’ বর্তমান ডিসি এডিসি রেভিনিউ চৌকস ও মেধাবী দুই কর্মকর্তার চিন্তা,চেতনায় কর্মে, সর্বোপরিভাবে সততাকে প্রাধাণ্য দিয়েই দায়িত্ব পালন করছেন জামালপুরে ভোজ্য তেল সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রনে কিশোরগঞ্জে নিখোঁজের পর ছাত্রলীগ নেতার গলিত মরদেহ উদ্ধার চাঁপাইনবাবগঞ্জে বৃষ্টির জন্য চোখের পানিতে বুক ভাসিয়ে ইসতিসকার নামাজ আদায় মঠবাড়ীয়া তীব্র তাপদাহের হাত থেকে বাঁচতে বৃষ্টির জন্য বিশেষ। প্রার্থনা

উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি স্বাবলম্বী করতে মন্ত্রণালয় দৃষ্টি দিবেন কি?

ইউসিসিএ’র তথ্য সংগ্রহ কর্মসূচী-২০২২ এর তথ্য বিশ্লেষণ
বাংলাদেশ এর সর্ববৃহৎ সমবায় প্রতিনিধিত্বকারী কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নের জাতীয় প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ জাতীয় পল্লী উন্নয়ন সমবায় ফেডারেশন। যা সরকারী পৃষ্টপোষকতার প্রাথমিক কৃষক সমবায় সমিতি লিঃ (পুরুষ/মহিলা) ও উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি (ইউসিসিএ)’র সরাসরি প্রতিনিধিত্বকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে মহান স্বাধীনবাংলার স্থাপতি কৃষক সমবায়ীদের অভিভাবক হৃদয়ের স্পন্ধন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিপ্লব ও দারিদ্রমুক্ত সোনার বাংলা বির্নিমানের উদ্দ্যেশ্যে ১৯৭৩ সনে সরাসরি নির্দেশে প্রতিষ্ঠা পায় বাংলাদেশ জাতীয় পল্লী উন্নয়ন সমবায় ফেডারেশন। ১৯৭৩ থেকে ২০২২ দীর্ঘ ৪৯ বছরের পথ চলা।
গত ২৯ অক্টবর ২০২১ বাংলাদেশ জাতীয় পল্লী উন্নয়নসমবায় ফেডারেশন এর নির্বাচনে বিজয়ী সদস্যরা বর্তমান ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব গ্রহন করে। কৃষক সমবায়ীদের অধিকার, স্বাবলম্বী সমবায়ী কৃষি নির্ভর অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে মন্ত্রনালয় ও বিআরডিবির সাথে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত থাকার সুযোগ সৃষ্টি হয়। কিন্ত উক্ত সভায় সমগ্র দেশের ইউসিসিএর সু নির্দিষ্ট তথ্য উপস্থাপনে ব্যার্থ হই। এ কারনে, ফেডারেশনের কর্মকর্তাদের সমগ্র দেশের ইউসিসিএর সুনির্দিষ্ট কিছু তথ্য দিতে বলি। কিন্তু দূর্ভাগ্য ফেডারেশনের কাছে ইউসিসিএর উল্লেখ করার মত কোন হালনাগাদ তথ্য বা প্রয়োজনীয় তথ্য ছিলনা। তখন থেকেই তথ্য সংগ্রহ করার পরিকল্পনাগ্রহণ করি এবং একটি তথ্য ফরম তৈরি করে ফেডারেশন এর ব্যবস্থাপনা কমিটি ও ফেডারেশনের কর্মকর্তাদের সরবরাহ করি ডিসেম্বর ২০২১ এ। ফেডারেশনের ব্যবস্থাপনা কমিটি দেরিতে হলেও অনুমতি প্রদান করেন সেপ্টেম্বর ২০২২। ফেডারেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সক্রিয় অংশগ্রহনে ও ইউসিসিএর কর্মচারী ইউনিয়নের সহযোগিতায় ১লা আগষ্ট ২০২২ থেকে তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রম চলমান আছে। কিন্ত তথ্য সংগ্রহ কাজে বিআরডিবির মাঠ পর্যায়ের কিছু জেলা কর্মকর্তাদের তীব্র বিরোধীতায় ও ইউসিসিএর চেয়ারম্যানরা গুরুত্ব না দেয়ার কারনে সমগ্র দেশের প্রায় ৪৯% ইউসিসিএর তথ্য সমবায় ফেডারেশন সংগ্রহ করতে পারেনি বিধায় তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বর্তমান সমগ্র দেশের ইউসিসিএ ও কেএসএস এর প্রকৃত চিত্র তুলে ধরতে সুনির্দিষ্ট তথ্যের বিকল্প নাই, এই তথ্যের বিশ্লেষনেই উদ্ভাবনী উন্নয়ন পরিকল্পনা তৈরীতে সহায়ক হবে এবং ইউসিসিএ ও কৃষক সমবায়ীরা স্বনির্ভরতার সুফল পাবেন।
পরিসংখ্যানঃ
সমবায় অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী সারাদেশে মোট নিবন্ধিত সমবায় সমিতির সংখ্যা প্রায় ১ লক্ষ ৯৩ হাজার (তথ্যসূত্র জাতীয় সমবায় দিবস-২০২২)। তমধ্যে প্রাথমিক সমবায় সমিতির সংখ্যা প্রায় ১ লাখ ৯১ হাজার । কেন্দ্রীয় সমবায় সমবায় সমিতি প্রায়১২০৯ টি এবং জাতীয় পর্যায়ের সমবায় সমিতি ২২ টি। বিআইডিএস এর এক গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী নিবন্ধিত সমিতির ৫৩ শতাংশেরই অস্তিত্ব নেই বা নিস্কৃয়। এই পরিসংখ্যানে ব্যাক্তি উদ্যোগে গড়ে উঠা সমবায় সমিতির চেয়ে সরকারী পৃষ্টপোষকতা সমবায় সমিতির হার ই বেশি।
দ্বিস্তর সমবায় সমিতির উদ্ভাবক ড. আখতার হামিদ খান ১৯৫৯ সালে কুমিল্লা পদ্ধতি সফলতার সাথে বাস্তবায়ন আরাম্ভ করেন। বর্তমানে নিবন্ধিত কৃষক সমবায় সমিতি  (কেএসএস) সংখ্যা প্রায় ৯০ হাজার যা সমগ্র দেশের সমবায় সমিতির ৪৯%। মোট কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতির সংখ্যা ১২০৯ টি । সরকারী পৃষ্টপোষকতায় কেন্দ্রীয় ইউসিসিএর সংখ্যা ৬৯৩টি, যা মোট কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতির ৫৮%। এর মধ্যে বাংলাদেশ জাতীয় পল্লী উন্নয়নসমবায় ফেডারেশন এর সদস্য ৪৬২টি ইউসিসিএ। উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি তথ্য সংগ্রহ কর্মসূচী ২০২২ এ ইউসিসিএ থেকে তথ্য পাওয়া গেছে ২৩৩টি ইউসিসিএর যা প্রায় ৫১%।
২৩৩টি ইউসিসিএর প্রথমিক কৃষক সমবায় সমিতি(কেএসএস) সংখ্যা ৩৬০০২টি। সক্রিয় তালিকা আছে ২১৮৬৪ টি, যা কাগজে কলমে সক্রিয় কিন্তু কোন প্রকার কার্যক্রম নেই প্রায় ৫৫%-৬০% কেএসএস’র। তাহলে ঋন সহ অন্যান্য কার্যক্রমে সক্রিয় সমিতি সংখ্যা মোট কেএসএস এর ২০%-২৫% যা গত ৫০ বছরে সরকারী পৃষ্ঠ পোষকতায় প্রাথমিক সমবায় সমিতি চিত্র।
কৃষক সমবায়ীদের ঋন কার্যক্রমে মূলধনের চরম সংকট। ২৩৩টি ইউসিসিএর মোট বিতরণকৃত ঋনের স্থিতি ১৬১ কোটি ৩৫.৪৮ লক্ষ টাকা কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় ২৩৩টি ইউসিসিএর ব্যাংকে এফডিআর জমা আছে ১৮২ কোটি ৪১.১৫ লক্ষ টাকা। তাহলে, এই এফডিআরের টাকাটা কৃষক সমবায়ী ও কৃষির কি উপকারে আসে। কাদের পরিকল্পনায় কেএসএসকে নিস্ক্রীয় করে ইউসিসিএকে এফডিআর এ উৎসাহিত করে। তারা কি দ্বিস্তর সমবায় পদ্ধতিটাকে অপছন্দ করে, নাকি বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া কৃষক সমবায়ীদেরকে ধংস করার উদ্দেশ্য হাসিল করতে, তাহলে সেটা কার স্বার্থে এবং তারা কি স্বাধীনতা বিরোধী কোন গোষ্টি ?
কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চিত্রঃ
২৩৩টি ইউসিসিএর মোট অনুমোদিত জনবল ১৮১২ টি পদ,যা বর্তমানে ৮৪৪ জন। প্রায় ৫৮ শতাংশ জনবল শূন্য। বাংলাদেশে প্রতিটি সেক্টরে, দপ্তরে জনবল বৃদ্ধি পেয়েছে কিন্তু ইউসিসিএর জনবল ৫০ বছরে ৫৮% হ্রাস পেয়েছে। হয়ত এমন ভাবে চলতে থাকলে ২০৬০ সনে ইউসিসিএ’র অস্তিত্ত বিলীন হবে, নিসন্দেহে। আরও হৃদয় বিদারক ও অমানবিক তথ্য হল ২৩৩টি ইউসিসিএর প্রায় ৯০ শতাংশ কর্মচারীরা বেতন পায়না। তারা মাসের পর মাস, বছরের পর বছর বিনা বেতনে, অনাহারে অর্ধহারে, বিনা চিকিৎসায় জীবন পার করছে। হয়ত বা সমবায় ফেডারেশনের এজিএম বা বিআরডিবির বোর্ড সভায় তাদের বেঁেচ থাকার পথ তৈরি হবে, এই আশায় ইউসিসিএর কর্মচারীরা দীর্ঘ অপেক্ষার প্রহর গুনছে। ইউসিসিএর কর্মচারীদের একমাত্র চাওয়া নিয়মিত বেতন, সেটা ইউসিসিএ স্বাভলম্বী করে বা রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করে, এটা ভাববার বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে মানবিক দৃষ্টিতে । নিয়মিত বেতন দিতে হলে ইউসিসিএর মূলধন বৃদ্ধির বিকল্প নাই । বর্তমানে প্রায় ১০ শতাংশ ইউসিসিএতে জনবল শূন্য। ঐ সকল ইউসিসিএ কার্যক্রম কিভাবে বাস্তবায়ন হয়, তা বোধগম্য নয়। কোন অদৃশ্য অপশক্তির নির্দেশে বছরের পর বছর কোন জনবল নিয়োগ হয়না ঐ সকল জনবলশূণ্য ইউসিসিএতে।
ইউসিসিএর সম্পদ ঃ
২৩৩টি ইউসিসিএর তথ্য অনুযায়ী মোট প্রায় ৮০০ একর সম্পত্তি আছে, যা নিজস্ব ভবন জোড়াবাড়ি, গুদামঘর এবং অব্যবহৃত খালি জমি। জোড়াবাড়ি এবং গুদামঘরের অবস্থা নাজুক। ইউসিসিএকে বঙ্গবন্ধু কর্তৃক বরাদ্দকৃত ভুমিতে ইউসিসিএর কোন কর্তৃত্ব নাই  এবং ভবনে ইউসিসিএর পরিচয় নেই, হয়েছে পল্লী ভবন, যা সমবায় আইনপরিপন্থী। আবার অনেক ইউসিসিএ কে নিজ সম্পত্তিতে ভাড়ায় থাকতে হয়। আর ভবনের ইউটিলিটি খরচ ইউসিসিএ থেকেই পরিশোধ করতে হয়। এখানে সমবায় আইন বা সাংবিধানিক অধিকার গৌন হিসেবে প্রয়োগ করা হয়। অরো বিস¦য়কর তথ্য হল স্মারক ৪৭.৬২.০০০০.২১০.১৮.৩৫৬.২১.১৯৬৩ তারিখ: ২৩/০৩/২০২২ ইং এ বিআরডিবির মহাপরিচালক স্বাক্ষরিত পত্রে সচিব, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ এর বরাররে শিরোনাম (কোড) ‘‘ উপজেলা পর্যায়ে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (বিআরডিবি) এর আওতাভুক্ত পল্লীভবনের জায়গা থানা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি লিঃ (টিসিসিএলিঃ) এর পরিবর্তে বিআরডিবি’র অনুকুলে বরাদ্ধ প্রদান’’ অত্র পত্রটি সমগ্র বাংলাদেশের ১.৫০ কোটি কৃষক সমবায়ীরা হতবাক। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সূচনালগ্নে বঙ্গবন্ধুর বরাদ্ধকৃত ভুমি কৃষক সমবায়ীদের দিয়ে ছিল, স্বপ্নের সোনার বাংলাগড়ার প্রত্যয়ে।  প্রশ্ন ? স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের নীতি নির্ধারকদের, কৃষক সমবায়ীদের ভাবিষৎ কোন দিকে ধাবিত হচ্ছে, দয়াকরে স্পষ্ট করবেন কি? মনে রাখতে হবে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা কৃষি নির্ভর অর্থনৈতিক স্বাভলম্বিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন কি এই বৃহৎ কৃষক সমবায়ীদের বাদ দিয়ে? আরোমনে রাখতে হবে,স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে দেশগড়ার অঙ্গীকারে জাতির জনকের স্বপ্ন, সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে কৃষি বিপ্লব এর একমাত্র পথিকৃত কৃষক সমবায় ও দ্বিস্তর সমবায় পদ্ধতি।
ইউসিসি’র ব্যবস্থাপনা কমিটির অবস্থা ঃ
২৩৩টি ইউসিসিএর মধ্যে ১৭টি ইউসিসিএ এডহক কমিটিতে চলছে। এখানে ৬/৭ বছর যাবৎ এডহক কমিটিও বিদ্যমান । সরকারী পৃষ্ঠপোষক কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতিতে নির্বাচিত (সভাপতি, সহ-সভাপতি, পরিচালক/সদস্য – ৭ জন), সরকারি কর্মকর্তা প্রতিনিধি (পরিচালক/সদস্য-৩ জন), সরকারী পৃষ্টপোষক প্রতিষ্ঠান বিআরডিবির (নির্বাহী কর্মকর্তা / সদস্য সচিব-১জন)। ব্যবস্থাপনা কমিটির দায়িত্ব নিয়মনীতি, সমবায় আইন কাগজে কলমে বাস্তবায়ন হয় চমৎকার ভাবে। এখানে কিঞ্চিৎ স¦াধীনতা থাকলেও ব্যবস্থাপনা কমিটির ক্ষমতা বিভিন্ন সময় অসমবায়ী বা আইন পরিপন্থী সার্কুলার বিআরডিবি দিয়ে করে রেখেছে পরাধীন। যেহেতু ইউসিসিএর নির্বাহী কর্মকর্তা আরডিও তাই বিআরডিবি’র সকল সিদ্ধান্তই ইউসিসিতে বাস্তবায়নে কোন সমস্যা হয় না, সমবায় ফেডারেশন বা ইউসিসিএর ব্যবস্থাপনা কমিটির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে শুরু হয় অসহযোগী মনোভাব। এক সময় উপজেলা সমন্বয় কমিটিতে ইউসিসিএর সভাপতি রা নিয়মিত সদস্য ছিল, কিন্ত বর্তমানে এ মর্যাদাটুকুও নাই অর্থ্যাৎ বর্তমানে উপজেলা পরিষদ আইনে বাদ দেয়া হয়েছে। অথচ এটা সম্মানের এবং অধিকারের। কৃষি নির্ভর অর্থনীতি সাজাবেন, অভ্যন্তরীণ কৃষি নির্ভর হবেন কিন্তু  সমবায়ী কৃষক প্রতিনিধিদের জন প্রতিনিধি হিসেবে মর্যাদা দিবেন না, সেটা বড়ই বেমানান। প্রায় ৮৮% ইউসিসিএর ব্যবস্থাপনা কমিটির ইউসিসিএর ব্যবস্থাপনা ও পরিকল্পনা তৈরির কোন প্রশিক্ষন নেই। যা এই সেক্টরকে সংকুচিত করেছে। আবর্তক ঋনে ব্যবস্থাপনা কমিটির কোন ক্ষমতা নেই। এটি ইউসিসিএর নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিআরডিবি’র জেলা কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্তে  অনুমোদিত হয়। এই জটিলতার কারনে যথা সময় কৃষক সমবায়িরা ঋণ পায়না ও বিআরডিবির অন্যান্য প্রকল্পের ঋনের মত সহজী করন করা হয়না। যার ফলে ব্যবস্থাপনা কমিটিকে করেছে অনাগ্রহী।
উচিৎ বা করনীয় ছিল ঃ
গ্রামে গ্রামে(পুরুষ-মহিলা)কেএসএস কে শক্তিশালী করণ। প্রতিটি গ্রামে কেএসএসএ’র সমবায় বিপনন কেন্দ্র গড়ে তোলা, আধুনিক কৃষি সমবায় উন্নয়নে দক্ষতা বৃদ্ধি করা, প্রতিটি ইউনিয়নে ই্উসিসিএর অটো রাইস মিল, আধুনিক যন্ত্রপাতি সরবরাহে ভূমিকা রাখা । অস্থির বাজার ব্যবস্থাকে তরান্বীত করতে সমগ্র দেশে পন্য সরবরহের লিংকেজ স্থাপন, তথ্য প্রযুক্তি অবাদ ব্যবহার, গ্রামকে শহরে পরিবর্তনের সক্রিয় অংশীদারিত্বে অংশগ্রহন, যৌথ বিনিয়োগে ইউসিসিএর সম্পদ উন্নয়ন করে আয় বৃদ্ধি । এর জন্য স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ে সরাসরি সহযোগীতায় বাংলাদেশ জাতীয় পল্লী উন্নয়ন সমবায় ফেডারেশনের সক্রিয় কর্মসূচী বা পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ভূমিকার বিকল্প নেই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ২০৪১ সালে স্বনির্ভর জাতি হিসেবে বিশে^ প্রতিষ্টিত হতে ও এসডিজি লক্ষ্য অর্জনে কৃষি ভিক্তিক দ্বিস্তর সমবায়কে সক্রিয় করার বিকল্প নেই।
যা হতে পারত এই সমবায় ফেডারেশন :
জাপানের জেন-নোহ হচ্ছে কৃষি সমবায় সমিতিগুলোর একটি ফেডারেশন। ১৯৭২ সালে যাত্রা শুরু করে, সারা দেশে ৯৪৫ টি ইউনিয়নের মাধ্যমে পরিচালিত এ ফেডারেশনের বর্তমান মূলধনের পরিমান ১০৮ কোটি মার্কিন ডলার এবং বার্ষিক টার্নওভারের পরিমান ৪৩০০ কোটি ডলার। জেন-নোহার ব্যবসাগুলোর মধ্যে রয়েছে চালসহ দানাশস্য উৎপাদন, টাটকা ফলমূল ও শাকসবজি উৎপাদন,কৃষি ব্যবসা কার্যক্রম, কৃষি উপকরণ ওযন্ত্রপাতি সরবরাহ, প্রাণি সম্পদ উৎপাদন কার্যক্রম, ভোক্তার জন্য নিরাপদ ও গুনগত মানসম্পন্ন দ্রব্যাদি সরবরাহ, কৃষিজাত পন্য রফতানি কার্যক্রম ইত্যাদি। রয়েছে নিজস্ব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। এমন একটি ফেডারেশন হবে বলেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে প্রতিষ্ঠিত হয়, বাংলাদেশ জাতীয় পল্লী উন্নয়ন সমবায় ফেডারেশন। যুগের পর যুগ ইউসিসি’র স্বনির্ভরতা লক্ষে নেয়া হয়নি সমবায় ফেডারেশনের থেকে সুনির্দিষ্ট কোন পরিকল্পনা আর বিআরডিবি’র এতএত প্রকল্পের পরিকল্পনায় ছিলনা ইউসিসিএর স্থান। সকলেই এই বৃহৎ জনগোষ্টির দায়সাড়া মেয়াদ পার করেছে বা করছেন। যা সমগ্রদেশের কৃষক সমবায়ী কারোরই অজানা নয়।
সুপারিশ :
০১। সময়ের প্রয়োজনে সরকারী পৃষ্টপোষক কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি (ইউসিসিএ) পরিচালনার সু নির্দিষ্ট বিধি বা নীতিমালা প্রদানে মন্ত্রনালয়ের উদ্যোগ গ্রহণ।
০২। সমগ্র দেশের শতভাগ প্রাথমিক কৃষক সমবায় সমিতি  (কেএসএস) কে সক্রিয় সমিতি গড়তে সমবায় ফেডারেশনের সরাসরি পরিকল্পনা প্রণয়ন।
০৩। উদ্ভাবনী পরিকল্পনা ও দক্ষ নেতৃত্ব তৈরীতে ইউসিসিএর ব্যবস্থাপনা কমিটি ও কর্মচারীদের সরাসরি সমবায় ফেডারেশনের মাধ্যমে প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করণ।
০৪। কৃষক সমবায়ীদের ঋণ গ্রহণে সহজ শর্তে ও স্বল্প সুদে ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা করণ।
০৫। পূর্বের ন্যায় উপজেলা পরিষদ সমন্বয় কমিটিতে ইউসিসিএর সভাপতিদের অর্ন্তভুক্তি করণ।
০৬। দূর্বল ইউসিসিএ গুলোর মূলধন বৃদ্ধিতে মন্ত্রণালয় ও সমবায় ফেডারেশন পরিকল্পনা, প্রস্তবনা তৈরী ও বাস্তবায়নে সহায়তা বৃদ্ধিকরন।
০৭। অস্থির বাজার ব্যবস্থাপনা ও মধ্যসত্ত¦ভোগীদের দৌরত্ব হ্রাসে গ্রামে গ্রামে কেএসএস সমবায় বিপনন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা ও নিরবিচ্ছিন্ন উৎপাদিত পন্য সরবরাহে সমবায় পদ্ধতিতে উৎপাদক থেকে ভোক্তা পর্যায়ে সংযোগ স্থাপন।
০৮। ইউসিসিএর অবহৃত ভুমি আয়বর্ধক প্রকল্পে অর্šÍভুক্তি করন।
০৯। ব্যবস্থাপনা কমিটির মেয়াদ সম্প্রসারনবা মেয়াদ প্রথা বাতিলে সমবায়িদের কাজে গতি বৃদ্ধি পাবে।
১০।ইউসিসিএর কর্মচারীদের নিয়মিত বেতন প্রদানের কর্ম পরিকল্পনা প্রনয়ন বা রাজস্বে স্থানন্তরের ব্যবস্থা করণ।
১১। কৃষি সমবায় ক্ষেত্রে সরকারী পৃষ্টপোষক প্রতিষ্ঠানের উর্দ্ধোতন কর্মকার্তাদের সাথে সমবায়ীদের সম্পর্ক উন্নয়নে উভয় পক্ষকে এগিয়ে আসা।
১২। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অভিষ্ঠ্য লক্ষ্য ২০৪১ অর্জনে সমবায়ীদের সক্রিয় অংশগ্রহণের ভুমিকা রাখার পরিকল্পনায় অংশগ্রহন।
১৩। সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী (ওএমএস, টিসিবি, সার সরবরাহে) বাস্তবায়নে ইউসিসিএ কে অন্তর্ভুক্তি করন।
পরিশেষে :
উল্লেখিত তথ্য উপাত্থ্য উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতির তথ্য সংগ্রহ কর্মসূচী-২০২২’র প্রদত্ত তথ্য, মাঠ পর্যায়ের সাবেক ও বর্তমান ইউসিসিএর চেয়ারম্যান, সমবায় গবেষকদের সাময়িকী থেকে সংগৃহিত। লক্ষ্য উদ্দেশ্য একটিই বঙ্গবন্ধুর ১৯৭৫ সালের ২৬ মার্চের ভাষণের কথা স্মরন করতে পারি তিনি বলেছিলেন ‘‘ আমার যুবক ভাইয়েরা, আমি যে কো-অপারেটিভ করতে যাচ্ছি গ্রামে গ্রামে এর ওপর বাংলার মানুষের বাচাঁ নির্ভর করবে’’ । কিন্ত মধ্যসত্ত¡ ভোগীদের দৌরত্বে দেশের মানুষ আজ দিশেহারা, আগামী ২০২৩ অশনি সংকেত দিচ্ছে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশের এক ইঞ্চি ভুমিও অনাবাদী না রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন , কৃষিতে গুরুত্ব দিতে বলেছেন। এই সময়ে গুরুত্ব পূর্ন ভুমিকা রাখতে পারে দ্বিস্তর কৃষক সমবায় অঙ্গন। আমার বিশ্লেষন বা উপস্থাপন কাউকে উদ্দশ্য মূলক নয়, দ্বিস্তর কৃষক সমবায় সক্রিয় হলেই দেশের গুরুত্ব পূর্ন ভুমিকায় অবদান রাখতে পারবে। এই সমবায় অঙ্গনের নীতি নির্ধারক, অবিভাবক, দায়িত্বশীলরা দেশ প্রেমিক সমবায়ী চিন্তা ধারন ও বহন করে একটু ইতিবাচক দৃষ্টিতে কাজ করলেই এই দীর্ঘ দিনের সমস্যা সমাধান করা সম্ভব।
(ইউসিসিএ’র তথ্য সংগ্রহ কর্মসূচী-২০২২ এর প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণের আলোকে)
এইচ এম হাসান আল মামুন লিমন
পরিচালক, বাংলাদেশ জাতীয় সমবায় ফেডারেশন,
আহŸায়ক, উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি (ইউসিসিএ) তথ্য সংগ্রহ কর্মসূচী ২০২২ উপকমিটি।
আরো খবর.......

জনপ্রিয় সংবাদ

রাণীশংকৈলে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা

উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি স্বাবলম্বী করতে মন্ত্রণালয় দৃষ্টি দিবেন কি?

আপডেট টাইম : ০৩:১৭:৩২ অপরাহ্ণ, শনিবার, ২৬ নভেম্বর ২০২২
ইউসিসিএ’র তথ্য সংগ্রহ কর্মসূচী-২০২২ এর তথ্য বিশ্লেষণ
বাংলাদেশ এর সর্ববৃহৎ সমবায় প্রতিনিধিত্বকারী কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নের জাতীয় প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ জাতীয় পল্লী উন্নয়ন সমবায় ফেডারেশন। যা সরকারী পৃষ্টপোষকতার প্রাথমিক কৃষক সমবায় সমিতি লিঃ (পুরুষ/মহিলা) ও উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি (ইউসিসিএ)’র সরাসরি প্রতিনিধিত্বকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে মহান স্বাধীনবাংলার স্থাপতি কৃষক সমবায়ীদের অভিভাবক হৃদয়ের স্পন্ধন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিপ্লব ও দারিদ্রমুক্ত সোনার বাংলা বির্নিমানের উদ্দ্যেশ্যে ১৯৭৩ সনে সরাসরি নির্দেশে প্রতিষ্ঠা পায় বাংলাদেশ জাতীয় পল্লী উন্নয়ন সমবায় ফেডারেশন। ১৯৭৩ থেকে ২০২২ দীর্ঘ ৪৯ বছরের পথ চলা।
গত ২৯ অক্টবর ২০২১ বাংলাদেশ জাতীয় পল্লী উন্নয়নসমবায় ফেডারেশন এর নির্বাচনে বিজয়ী সদস্যরা বর্তমান ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব গ্রহন করে। কৃষক সমবায়ীদের অধিকার, স্বাবলম্বী সমবায়ী কৃষি নির্ভর অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে মন্ত্রনালয় ও বিআরডিবির সাথে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত থাকার সুযোগ সৃষ্টি হয়। কিন্ত উক্ত সভায় সমগ্র দেশের ইউসিসিএর সু নির্দিষ্ট তথ্য উপস্থাপনে ব্যার্থ হই। এ কারনে, ফেডারেশনের কর্মকর্তাদের সমগ্র দেশের ইউসিসিএর সুনির্দিষ্ট কিছু তথ্য দিতে বলি। কিন্তু দূর্ভাগ্য ফেডারেশনের কাছে ইউসিসিএর উল্লেখ করার মত কোন হালনাগাদ তথ্য বা প্রয়োজনীয় তথ্য ছিলনা। তখন থেকেই তথ্য সংগ্রহ করার পরিকল্পনাগ্রহণ করি এবং একটি তথ্য ফরম তৈরি করে ফেডারেশন এর ব্যবস্থাপনা কমিটি ও ফেডারেশনের কর্মকর্তাদের সরবরাহ করি ডিসেম্বর ২০২১ এ। ফেডারেশনের ব্যবস্থাপনা কমিটি দেরিতে হলেও অনুমতি প্রদান করেন সেপ্টেম্বর ২০২২। ফেডারেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সক্রিয় অংশগ্রহনে ও ইউসিসিএর কর্মচারী ইউনিয়নের সহযোগিতায় ১লা আগষ্ট ২০২২ থেকে তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রম চলমান আছে। কিন্ত তথ্য সংগ্রহ কাজে বিআরডিবির মাঠ পর্যায়ের কিছু জেলা কর্মকর্তাদের তীব্র বিরোধীতায় ও ইউসিসিএর চেয়ারম্যানরা গুরুত্ব না দেয়ার কারনে সমগ্র দেশের প্রায় ৪৯% ইউসিসিএর তথ্য সমবায় ফেডারেশন সংগ্রহ করতে পারেনি বিধায় তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বর্তমান সমগ্র দেশের ইউসিসিএ ও কেএসএস এর প্রকৃত চিত্র তুলে ধরতে সুনির্দিষ্ট তথ্যের বিকল্প নাই, এই তথ্যের বিশ্লেষনেই উদ্ভাবনী উন্নয়ন পরিকল্পনা তৈরীতে সহায়ক হবে এবং ইউসিসিএ ও কৃষক সমবায়ীরা স্বনির্ভরতার সুফল পাবেন।
পরিসংখ্যানঃ
সমবায় অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী সারাদেশে মোট নিবন্ধিত সমবায় সমিতির সংখ্যা প্রায় ১ লক্ষ ৯৩ হাজার (তথ্যসূত্র জাতীয় সমবায় দিবস-২০২২)। তমধ্যে প্রাথমিক সমবায় সমিতির সংখ্যা প্রায় ১ লাখ ৯১ হাজার । কেন্দ্রীয় সমবায় সমবায় সমিতি প্রায়১২০৯ টি এবং জাতীয় পর্যায়ের সমবায় সমিতি ২২ টি। বিআইডিএস এর এক গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী নিবন্ধিত সমিতির ৫৩ শতাংশেরই অস্তিত্ব নেই বা নিস্কৃয়। এই পরিসংখ্যানে ব্যাক্তি উদ্যোগে গড়ে উঠা সমবায় সমিতির চেয়ে সরকারী পৃষ্টপোষকতা সমবায় সমিতির হার ই বেশি।
দ্বিস্তর সমবায় সমিতির উদ্ভাবক ড. আখতার হামিদ খান ১৯৫৯ সালে কুমিল্লা পদ্ধতি সফলতার সাথে বাস্তবায়ন আরাম্ভ করেন। বর্তমানে নিবন্ধিত কৃষক সমবায় সমিতি  (কেএসএস) সংখ্যা প্রায় ৯০ হাজার যা সমগ্র দেশের সমবায় সমিতির ৪৯%। মোট কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতির সংখ্যা ১২০৯ টি । সরকারী পৃষ্টপোষকতায় কেন্দ্রীয় ইউসিসিএর সংখ্যা ৬৯৩টি, যা মোট কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতির ৫৮%। এর মধ্যে বাংলাদেশ জাতীয় পল্লী উন্নয়নসমবায় ফেডারেশন এর সদস্য ৪৬২টি ইউসিসিএ। উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি তথ্য সংগ্রহ কর্মসূচী ২০২২ এ ইউসিসিএ থেকে তথ্য পাওয়া গেছে ২৩৩টি ইউসিসিএর যা প্রায় ৫১%।
২৩৩টি ইউসিসিএর প্রথমিক কৃষক সমবায় সমিতি(কেএসএস) সংখ্যা ৩৬০০২টি। সক্রিয় তালিকা আছে ২১৮৬৪ টি, যা কাগজে কলমে সক্রিয় কিন্তু কোন প্রকার কার্যক্রম নেই প্রায় ৫৫%-৬০% কেএসএস’র। তাহলে ঋন সহ অন্যান্য কার্যক্রমে সক্রিয় সমিতি সংখ্যা মোট কেএসএস এর ২০%-২৫% যা গত ৫০ বছরে সরকারী পৃষ্ঠ পোষকতায় প্রাথমিক সমবায় সমিতি চিত্র।
কৃষক সমবায়ীদের ঋন কার্যক্রমে মূলধনের চরম সংকট। ২৩৩টি ইউসিসিএর মোট বিতরণকৃত ঋনের স্থিতি ১৬১ কোটি ৩৫.৪৮ লক্ষ টাকা কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় ২৩৩টি ইউসিসিএর ব্যাংকে এফডিআর জমা আছে ১৮২ কোটি ৪১.১৫ লক্ষ টাকা। তাহলে, এই এফডিআরের টাকাটা কৃষক সমবায়ী ও কৃষির কি উপকারে আসে। কাদের পরিকল্পনায় কেএসএসকে নিস্ক্রীয় করে ইউসিসিএকে এফডিআর এ উৎসাহিত করে। তারা কি দ্বিস্তর সমবায় পদ্ধতিটাকে অপছন্দ করে, নাকি বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া কৃষক সমবায়ীদেরকে ধংস করার উদ্দেশ্য হাসিল করতে, তাহলে সেটা কার স্বার্থে এবং তারা কি স্বাধীনতা বিরোধী কোন গোষ্টি ?
কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চিত্রঃ
২৩৩টি ইউসিসিএর মোট অনুমোদিত জনবল ১৮১২ টি পদ,যা বর্তমানে ৮৪৪ জন। প্রায় ৫৮ শতাংশ জনবল শূন্য। বাংলাদেশে প্রতিটি সেক্টরে, দপ্তরে জনবল বৃদ্ধি পেয়েছে কিন্তু ইউসিসিএর জনবল ৫০ বছরে ৫৮% হ্রাস পেয়েছে। হয়ত এমন ভাবে চলতে থাকলে ২০৬০ সনে ইউসিসিএ’র অস্তিত্ত বিলীন হবে, নিসন্দেহে। আরও হৃদয় বিদারক ও অমানবিক তথ্য হল ২৩৩টি ইউসিসিএর প্রায় ৯০ শতাংশ কর্মচারীরা বেতন পায়না। তারা মাসের পর মাস, বছরের পর বছর বিনা বেতনে, অনাহারে অর্ধহারে, বিনা চিকিৎসায় জীবন পার করছে। হয়ত বা সমবায় ফেডারেশনের এজিএম বা বিআরডিবির বোর্ড সভায় তাদের বেঁেচ থাকার পথ তৈরি হবে, এই আশায় ইউসিসিএর কর্মচারীরা দীর্ঘ অপেক্ষার প্রহর গুনছে। ইউসিসিএর কর্মচারীদের একমাত্র চাওয়া নিয়মিত বেতন, সেটা ইউসিসিএ স্বাভলম্বী করে বা রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করে, এটা ভাববার বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে মানবিক দৃষ্টিতে । নিয়মিত বেতন দিতে হলে ইউসিসিএর মূলধন বৃদ্ধির বিকল্প নাই । বর্তমানে প্রায় ১০ শতাংশ ইউসিসিএতে জনবল শূন্য। ঐ সকল ইউসিসিএ কার্যক্রম কিভাবে বাস্তবায়ন হয়, তা বোধগম্য নয়। কোন অদৃশ্য অপশক্তির নির্দেশে বছরের পর বছর কোন জনবল নিয়োগ হয়না ঐ সকল জনবলশূণ্য ইউসিসিএতে।
ইউসিসিএর সম্পদ ঃ
২৩৩টি ইউসিসিএর তথ্য অনুযায়ী মোট প্রায় ৮০০ একর সম্পত্তি আছে, যা নিজস্ব ভবন জোড়াবাড়ি, গুদামঘর এবং অব্যবহৃত খালি জমি। জোড়াবাড়ি এবং গুদামঘরের অবস্থা নাজুক। ইউসিসিএকে বঙ্গবন্ধু কর্তৃক বরাদ্দকৃত ভুমিতে ইউসিসিএর কোন কর্তৃত্ব নাই  এবং ভবনে ইউসিসিএর পরিচয় নেই, হয়েছে পল্লী ভবন, যা সমবায় আইনপরিপন্থী। আবার অনেক ইউসিসিএ কে নিজ সম্পত্তিতে ভাড়ায় থাকতে হয়। আর ভবনের ইউটিলিটি খরচ ইউসিসিএ থেকেই পরিশোধ করতে হয়। এখানে সমবায় আইন বা সাংবিধানিক অধিকার গৌন হিসেবে প্রয়োগ করা হয়। অরো বিস¦য়কর তথ্য হল স্মারক ৪৭.৬২.০০০০.২১০.১৮.৩৫৬.২১.১৯৬৩ তারিখ: ২৩/০৩/২০২২ ইং এ বিআরডিবির মহাপরিচালক স্বাক্ষরিত পত্রে সচিব, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ এর বরাররে শিরোনাম (কোড) ‘‘ উপজেলা পর্যায়ে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (বিআরডিবি) এর আওতাভুক্ত পল্লীভবনের জায়গা থানা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি লিঃ (টিসিসিএলিঃ) এর পরিবর্তে বিআরডিবি’র অনুকুলে বরাদ্ধ প্রদান’’ অত্র পত্রটি সমগ্র বাংলাদেশের ১.৫০ কোটি কৃষক সমবায়ীরা হতবাক। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সূচনালগ্নে বঙ্গবন্ধুর বরাদ্ধকৃত ভুমি কৃষক সমবায়ীদের দিয়ে ছিল, স্বপ্নের সোনার বাংলাগড়ার প্রত্যয়ে।  প্রশ্ন ? স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের নীতি নির্ধারকদের, কৃষক সমবায়ীদের ভাবিষৎ কোন দিকে ধাবিত হচ্ছে, দয়াকরে স্পষ্ট করবেন কি? মনে রাখতে হবে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা কৃষি নির্ভর অর্থনৈতিক স্বাভলম্বিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন কি এই বৃহৎ কৃষক সমবায়ীদের বাদ দিয়ে? আরোমনে রাখতে হবে,স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে দেশগড়ার অঙ্গীকারে জাতির জনকের স্বপ্ন, সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে কৃষি বিপ্লব এর একমাত্র পথিকৃত কৃষক সমবায় ও দ্বিস্তর সমবায় পদ্ধতি।
ইউসিসি’র ব্যবস্থাপনা কমিটির অবস্থা ঃ
২৩৩টি ইউসিসিএর মধ্যে ১৭টি ইউসিসিএ এডহক কমিটিতে চলছে। এখানে ৬/৭ বছর যাবৎ এডহক কমিটিও বিদ্যমান । সরকারী পৃষ্ঠপোষক কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতিতে নির্বাচিত (সভাপতি, সহ-সভাপতি, পরিচালক/সদস্য – ৭ জন), সরকারি কর্মকর্তা প্রতিনিধি (পরিচালক/সদস্য-৩ জন), সরকারী পৃষ্টপোষক প্রতিষ্ঠান বিআরডিবির (নির্বাহী কর্মকর্তা / সদস্য সচিব-১জন)। ব্যবস্থাপনা কমিটির দায়িত্ব নিয়মনীতি, সমবায় আইন কাগজে কলমে বাস্তবায়ন হয় চমৎকার ভাবে। এখানে কিঞ্চিৎ স¦াধীনতা থাকলেও ব্যবস্থাপনা কমিটির ক্ষমতা বিভিন্ন সময় অসমবায়ী বা আইন পরিপন্থী সার্কুলার বিআরডিবি দিয়ে করে রেখেছে পরাধীন। যেহেতু ইউসিসিএর নির্বাহী কর্মকর্তা আরডিও তাই বিআরডিবি’র সকল সিদ্ধান্তই ইউসিসিতে বাস্তবায়নে কোন সমস্যা হয় না, সমবায় ফেডারেশন বা ইউসিসিএর ব্যবস্থাপনা কমিটির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে শুরু হয় অসহযোগী মনোভাব। এক সময় উপজেলা সমন্বয় কমিটিতে ইউসিসিএর সভাপতি রা নিয়মিত সদস্য ছিল, কিন্ত বর্তমানে এ মর্যাদাটুকুও নাই অর্থ্যাৎ বর্তমানে উপজেলা পরিষদ আইনে বাদ দেয়া হয়েছে। অথচ এটা সম্মানের এবং অধিকারের। কৃষি নির্ভর অর্থনীতি সাজাবেন, অভ্যন্তরীণ কৃষি নির্ভর হবেন কিন্তু  সমবায়ী কৃষক প্রতিনিধিদের জন প্রতিনিধি হিসেবে মর্যাদা দিবেন না, সেটা বড়ই বেমানান। প্রায় ৮৮% ইউসিসিএর ব্যবস্থাপনা কমিটির ইউসিসিএর ব্যবস্থাপনা ও পরিকল্পনা তৈরির কোন প্রশিক্ষন নেই। যা এই সেক্টরকে সংকুচিত করেছে। আবর্তক ঋনে ব্যবস্থাপনা কমিটির কোন ক্ষমতা নেই। এটি ইউসিসিএর নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিআরডিবি’র জেলা কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্তে  অনুমোদিত হয়। এই জটিলতার কারনে যথা সময় কৃষক সমবায়িরা ঋণ পায়না ও বিআরডিবির অন্যান্য প্রকল্পের ঋনের মত সহজী করন করা হয়না। যার ফলে ব্যবস্থাপনা কমিটিকে করেছে অনাগ্রহী।
উচিৎ বা করনীয় ছিল ঃ
গ্রামে গ্রামে(পুরুষ-মহিলা)কেএসএস কে শক্তিশালী করণ। প্রতিটি গ্রামে কেএসএসএ’র সমবায় বিপনন কেন্দ্র গড়ে তোলা, আধুনিক কৃষি সমবায় উন্নয়নে দক্ষতা বৃদ্ধি করা, প্রতিটি ইউনিয়নে ই্উসিসিএর অটো রাইস মিল, আধুনিক যন্ত্রপাতি সরবরাহে ভূমিকা রাখা । অস্থির বাজার ব্যবস্থাকে তরান্বীত করতে সমগ্র দেশে পন্য সরবরহের লিংকেজ স্থাপন, তথ্য প্রযুক্তি অবাদ ব্যবহার, গ্রামকে শহরে পরিবর্তনের সক্রিয় অংশীদারিত্বে অংশগ্রহন, যৌথ বিনিয়োগে ইউসিসিএর সম্পদ উন্নয়ন করে আয় বৃদ্ধি । এর জন্য স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ে সরাসরি সহযোগীতায় বাংলাদেশ জাতীয় পল্লী উন্নয়ন সমবায় ফেডারেশনের সক্রিয় কর্মসূচী বা পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ভূমিকার বিকল্প নেই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ২০৪১ সালে স্বনির্ভর জাতি হিসেবে বিশে^ প্রতিষ্টিত হতে ও এসডিজি লক্ষ্য অর্জনে কৃষি ভিক্তিক দ্বিস্তর সমবায়কে সক্রিয় করার বিকল্প নেই।
যা হতে পারত এই সমবায় ফেডারেশন :
জাপানের জেন-নোহ হচ্ছে কৃষি সমবায় সমিতিগুলোর একটি ফেডারেশন। ১৯৭২ সালে যাত্রা শুরু করে, সারা দেশে ৯৪৫ টি ইউনিয়নের মাধ্যমে পরিচালিত এ ফেডারেশনের বর্তমান মূলধনের পরিমান ১০৮ কোটি মার্কিন ডলার এবং বার্ষিক টার্নওভারের পরিমান ৪৩০০ কোটি ডলার। জেন-নোহার ব্যবসাগুলোর মধ্যে রয়েছে চালসহ দানাশস্য উৎপাদন, টাটকা ফলমূল ও শাকসবজি উৎপাদন,কৃষি ব্যবসা কার্যক্রম, কৃষি উপকরণ ওযন্ত্রপাতি সরবরাহ, প্রাণি সম্পদ উৎপাদন কার্যক্রম, ভোক্তার জন্য নিরাপদ ও গুনগত মানসম্পন্ন দ্রব্যাদি সরবরাহ, কৃষিজাত পন্য রফতানি কার্যক্রম ইত্যাদি। রয়েছে নিজস্ব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। এমন একটি ফেডারেশন হবে বলেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে প্রতিষ্ঠিত হয়, বাংলাদেশ জাতীয় পল্লী উন্নয়ন সমবায় ফেডারেশন। যুগের পর যুগ ইউসিসি’র স্বনির্ভরতা লক্ষে নেয়া হয়নি সমবায় ফেডারেশনের থেকে সুনির্দিষ্ট কোন পরিকল্পনা আর বিআরডিবি’র এতএত প্রকল্পের পরিকল্পনায় ছিলনা ইউসিসিএর স্থান। সকলেই এই বৃহৎ জনগোষ্টির দায়সাড়া মেয়াদ পার করেছে বা করছেন। যা সমগ্রদেশের কৃষক সমবায়ী কারোরই অজানা নয়।
সুপারিশ :
০১। সময়ের প্রয়োজনে সরকারী পৃষ্টপোষক কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি (ইউসিসিএ) পরিচালনার সু নির্দিষ্ট বিধি বা নীতিমালা প্রদানে মন্ত্রনালয়ের উদ্যোগ গ্রহণ।
০২। সমগ্র দেশের শতভাগ প্রাথমিক কৃষক সমবায় সমিতি  (কেএসএস) কে সক্রিয় সমিতি গড়তে সমবায় ফেডারেশনের সরাসরি পরিকল্পনা প্রণয়ন।
০৩। উদ্ভাবনী পরিকল্পনা ও দক্ষ নেতৃত্ব তৈরীতে ইউসিসিএর ব্যবস্থাপনা কমিটি ও কর্মচারীদের সরাসরি সমবায় ফেডারেশনের মাধ্যমে প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করণ।
০৪। কৃষক সমবায়ীদের ঋণ গ্রহণে সহজ শর্তে ও স্বল্প সুদে ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা করণ।
০৫। পূর্বের ন্যায় উপজেলা পরিষদ সমন্বয় কমিটিতে ইউসিসিএর সভাপতিদের অর্ন্তভুক্তি করণ।
০৬। দূর্বল ইউসিসিএ গুলোর মূলধন বৃদ্ধিতে মন্ত্রণালয় ও সমবায় ফেডারেশন পরিকল্পনা, প্রস্তবনা তৈরী ও বাস্তবায়নে সহায়তা বৃদ্ধিকরন।
০৭। অস্থির বাজার ব্যবস্থাপনা ও মধ্যসত্ত¦ভোগীদের দৌরত্ব হ্রাসে গ্রামে গ্রামে কেএসএস সমবায় বিপনন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা ও নিরবিচ্ছিন্ন উৎপাদিত পন্য সরবরাহে সমবায় পদ্ধতিতে উৎপাদক থেকে ভোক্তা পর্যায়ে সংযোগ স্থাপন।
০৮। ইউসিসিএর অবহৃত ভুমি আয়বর্ধক প্রকল্পে অর্šÍভুক্তি করন।
০৯। ব্যবস্থাপনা কমিটির মেয়াদ সম্প্রসারনবা মেয়াদ প্রথা বাতিলে সমবায়িদের কাজে গতি বৃদ্ধি পাবে।
১০।ইউসিসিএর কর্মচারীদের নিয়মিত বেতন প্রদানের কর্ম পরিকল্পনা প্রনয়ন বা রাজস্বে স্থানন্তরের ব্যবস্থা করণ।
১১। কৃষি সমবায় ক্ষেত্রে সরকারী পৃষ্টপোষক প্রতিষ্ঠানের উর্দ্ধোতন কর্মকার্তাদের সাথে সমবায়ীদের সম্পর্ক উন্নয়নে উভয় পক্ষকে এগিয়ে আসা।
১২। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অভিষ্ঠ্য লক্ষ্য ২০৪১ অর্জনে সমবায়ীদের সক্রিয় অংশগ্রহণের ভুমিকা রাখার পরিকল্পনায় অংশগ্রহন।
১৩। সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী (ওএমএস, টিসিবি, সার সরবরাহে) বাস্তবায়নে ইউসিসিএ কে অন্তর্ভুক্তি করন।
পরিশেষে :
উল্লেখিত তথ্য উপাত্থ্য উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতির তথ্য সংগ্রহ কর্মসূচী-২০২২’র প্রদত্ত তথ্য, মাঠ পর্যায়ের সাবেক ও বর্তমান ইউসিসিএর চেয়ারম্যান, সমবায় গবেষকদের সাময়িকী থেকে সংগৃহিত। লক্ষ্য উদ্দেশ্য একটিই বঙ্গবন্ধুর ১৯৭৫ সালের ২৬ মার্চের ভাষণের কথা স্মরন করতে পারি তিনি বলেছিলেন ‘‘ আমার যুবক ভাইয়েরা, আমি যে কো-অপারেটিভ করতে যাচ্ছি গ্রামে গ্রামে এর ওপর বাংলার মানুষের বাচাঁ নির্ভর করবে’’ । কিন্ত মধ্যসত্ত¡ ভোগীদের দৌরত্বে দেশের মানুষ আজ দিশেহারা, আগামী ২০২৩ অশনি সংকেত দিচ্ছে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশের এক ইঞ্চি ভুমিও অনাবাদী না রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন , কৃষিতে গুরুত্ব দিতে বলেছেন। এই সময়ে গুরুত্ব পূর্ন ভুমিকা রাখতে পারে দ্বিস্তর কৃষক সমবায় অঙ্গন। আমার বিশ্লেষন বা উপস্থাপন কাউকে উদ্দশ্য মূলক নয়, দ্বিস্তর কৃষক সমবায় সক্রিয় হলেই দেশের গুরুত্ব পূর্ন ভুমিকায় অবদান রাখতে পারবে। এই সমবায় অঙ্গনের নীতি নির্ধারক, অবিভাবক, দায়িত্বশীলরা দেশ প্রেমিক সমবায়ী চিন্তা ধারন ও বহন করে একটু ইতিবাচক দৃষ্টিতে কাজ করলেই এই দীর্ঘ দিনের সমস্যা সমাধান করা সম্ভব।
(ইউসিসিএ’র তথ্য সংগ্রহ কর্মসূচী-২০২২ এর প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণের আলোকে)
এইচ এম হাসান আল মামুন লিমন
পরিচালক, বাংলাদেশ জাতীয় সমবায় ফেডারেশন,
আহŸায়ক, উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি (ইউসিসিএ) তথ্য সংগ্রহ কর্মসূচী ২০২২ উপকমিটি।