বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনের অনিয়ম জাল সার্টিফিকেটে খোরশেদ আলম সিনিয়র ইলেক্ট্রিক্যাল ফোরম্যান
- আপডেট টাইম : ০৭:৪১:০১ পূর্বাহ্ণ, বুধবার, ২৩ নভেম্বর ২০২২
- / ৪৩৫ ৫০০০.০ বার পাঠক
এক সময়ের ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশন শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধিনস্থ সরকারী প্রতিষ্ঠানটি কয়েক বছরেই মুখ থুবড়ে পড়েছে কিছু অসাধু ও অযোগ্য ব্যাক্তিবর্গের দ্বারা পরিচালনার কারনে। পাশাপাশি রয়েছে কর্মচারী ইউনিয়নের কিছু অসাধু ও অর্থলোভী নেতা। যারা বছরের পর বছর সিন্ডিকেটের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তাদের নানাভাবে জিম্মি করে প্রতিষ্ঠানটির ভেতরে ও বাইরে (মিলগুলোতে) সরকারী বিধিমালাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে অনিয়ম, দূর্নীতি ও ঘুষ বানিজ্যের মাধ্যমে ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানটিকে ধ্বংশের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসেছেন। ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠনটির ৬টি চিনিকল বন্ধ হয়ে গেছে। এসব অন্যায়, অনিয়ম ও ঘুষ বানিজ্যের পেছনের কারিগর প্রতিষ্ঠানটিরই কর্মকর্তা ও স্বঘোষিত ইউনিয়ন সভাপতি খোরশেদ আলম। সরেজমিনে অনুসন্ধানে প্রতিষ্ঠানটির সাবেক ও বর্তমান একাধিক কর্মকর্তার বক্তব্যে এসব চাঞ্চল্যকর চিত্র ফুটে উঠেছে।
অনুসন্ধানকালে শত অভিযোগে জর্জরিত খোরশেদ আলমের নিয়োগ, একসাথে দু’টি বিশেষ বেতন বৃদ্ধি ও শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ নিয়ে খোঁদ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশন থেকেই বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। পরবর্তীতে বিষয়গুলো নিয়ে পরিষ্কার ধারণার জন্য তথ্য অধিকার আইনে চিঠির মাধ্যমে নিয়োগের বৈধতা, বেতন বৃদ্ধির বৈধতা ও তার শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট চাইলে বেরিয়ে আসে খোরশেদের আসলরূপ। টাকা পয়সা, চিনি, মদ, চিনির ব্যবসা, কর্পোরেশনে ফ্রি অফিস ব্যবহারের সুযোগসহ নানাবিধ প্রস্তাব দেন দৈনিক সময়ের কন্ঠের নিজস্ব প্রতিনিধিকে খবর প্রকাশ না করার শর্তে। তথ্য অধিকারের চিঠির উত্তর আসার পর গাঁ শিউরে উঠার মতো ঘটনা বের হয়ে আসে।
খোরশেদ ছিল পূর্বরাগ হোটেলের দৈনিক মজুরী ভিত্তিক একজন বহিরাগত শ্রমিক। কিন্তু ২৯/০৪/১৯৯০ ইং তারিখে খোরশেদের একটি আবেদনের ভিত্তিতে ততকালীন কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগ সাজসে খোরশেদকে কাজ নাই মজুরী নাই ভিত্তিতে অস্থায়ীভাবে চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনে হেলপার হিসাবে নিয়োগ প্রদান করা হয় যা পরবর্তীতে বিভিন্ন কুট কৌশলে খোরশেদকে অবৈধভাবে স্থায়ীকরন করা হয়। কুট কৌশলী খোরশেদ আলম মূলত ততকালীন ইউনিয়নের নেতাদের ম্যানেজ করে তাদের প্রভাব কাজে লাগিয়েই স্থায়ীকরণ হয় বলে সূত্রে জানা যায়। এছাড়া ততকালীন উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের বিভিন্নভাবে ম্যানেজ করে এবং আঞ্চলিক প্রভাব বিস্তার করে পরপর চারটি পদোন্নতি ও দু’টি বিশেষ ইনক্রিমেন্ট নেন যা বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনের কর্মচারী চাকুরী প্রবিধানমালা ১৯৮৯ কে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখানো হয়েছে। এছাড়া খোরশেদ আলমের দারোরা দীনেশ চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণী পাশকৃত একটি সনদ তথ্য অধিকার আইনের চিঠির মাধ্যমে প্রতিবেদকের হাতে পৌঁছায় যা উক্ত বিদ্যালয়ে যাচাই বাছাইয়ের মাধ্যমে ভূয়া বা জাল সনদ হিসেবে প্রতিয়মান হয়। এ ব্যপারে দারোরা দীনেশ চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল ওয়াহিদ প্রতিবেদককে বলেন স্কুলের সকল প্রকার নথিপত্র যাচাই বাছাই করে দেখা যায় খোরশেদ আলম আমাদের স্কুলে কোনদিন ভর্তিই হয়নি তাহলে অষ্টম শ্রেণী পাশ করার কোন প্রশ্নই আসেনা এবং সনদটি জাল বলে তিনি মন্তব্য করেন। চারটি পদোন্নতি ও দু’টি ইনক্রিমেন্টের বিষয়ে খোরশেদ আলমকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন ভালো কাজের পুরষ্কার হিসেবে ততকালীন চেয়ারম্যান কাজী আমিনুল ইসলাম তাকে এসব সুবিধা প্রদান করেছেন। আপনার পুরষ্কার বিধিসম্মত হয়নি এমন প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি খোরশেদ আলম। অষ্টম শ্রেণীর জাল সার্টিফিকেটের বিষয়ে খোরশেদের কাছে জানতে চাইলে তিনি কথায় জরিয়ে পড়েন ও ততকালীন দারোরা দীনেশ চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাকে এটি প্রদান করেছেন বলে খোরশেদ আলম দাবী করেছেন।(পর্ব- ১)