চাঁদাবাজির সময় ডিএসসিসির দুই কর্মচারী গ্রেফতার
- আপডেট টাইম : ০১:৩৫:২৩ অপরাহ্ণ, সোমবার, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২১
- / ৩৩৫ ৫০০০.০ বার পাঠক
সময়ের অনুসন্ধান রিপোর্ট।।
ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেট সেজে এবং ম্যাজিস্ট্রেটের গানম্যান পরিচয়ে চাঁদাবাজির সময় জাকির সুপার মার্কেটের সামনে থেকে কর্পোরেশনের চেইনম্যান মোঃ নোবেল হোসেন মিঠু ও নগর ভবনের আনসার ক্যাম্প ইনচার্জ ও ডিউটি পরিদর্শক (পিসি) মোঃ শহিদুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।
আজ সোমবার ( ১ ফেব্রুয়ারি) কর্পোরেশনের চেইনম্যান মোঃ নোবেল হাসান মিঠু ও আনসার পিসি মোঃ শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে বংশাল থানা মামলা দায়ের করা হয়। এ ধরনের অনৈতিক আচরণ এবং দাপ্তরিক শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হওয়ায় চেইনম্যান মোঃ নোবেল হাসান মিঠুকে ডিএসসিসি হতে চাকরীচ্যুত করা হয়েছে। একই অপরাধে আনসার পিসি মোঃ শহিদুল ইসলামের কর্মকাণ্ড অবহিত করে তার নিয়ন্ত্রণকারী দপ্তরে ( আনসার ও ভিডিপির জোন অধিনায়ক, ডিএমএ – দক্ষিণ) অবহিত করে পত্র দেওয়ার লক্ষ্যে নথি উপস্থাপন করা হয়েছে।
কর্পোরেশনের সচিব আকরামুজ্জামান স্বাক্ষরিত অফিস আদেশ চেইনম্যান মিঠুকে চাকরীচ্যুত করা হয়েছে এবং “ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন কর্মচারী চাকুরী বিধিমালা, ২০১৯ এর বিধি ৬৪(২) মোতাবেক জনস্বার্থে এবং কর্পোরেশনের স্বার্থ রক্ষার্থে সম্পত্তি বিভাগের চেইনম্যান মোঃ নোবেল হাসান মিঠুকে চাকুরি হতে অপসারণ করা হয়েছে।” বলে মিঠুর অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয়।
জনস্বার্থে জারিকৃত এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে উল্লেখ করে আদেশে আরও বলা হয়, ‘তিনি বিধি মোতাবেক ৯০ দিনের বেতন নগদ প্রাপ্য হবেন। তাকে এ কর্পোরেশনের হিসাব বিভাগের অতিসত্বর যোগাযোগ করে ৯০ দিনের বেতন বুঝে নেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।’
নোবেল হাসান মিঠু বিগত ০২/১২/২০২০ তারিখে কর্পোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ এইচ ইরফান আহমেদ এর পেশকার হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে কর্মরত ছিলেন। নিয়োগপ্রাপ্ত হওয়ার পর দিন থেকেই তার অদক্ষতা, অপেশাদার আচরণ ও মানুষের সাথে দুর্ব্যবহারের কারণে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইরফান উদ্দিন আহমেদ চেইনম্যান মিঠুকে একাধিকবার সতর্ক করে। কিন্তু তার আচরণ ও ব্যবহারে কোন পরিবর্তন না হওয়ায় গত ১০/১২/২০২০ তারিখে তার কাছে রক্ষিত মোবাইল কোর্টে সহযোগিতার সরঞ্জামাদি বিশেষত জরিমানা বই, মোবাইল কোর্টে ব্যবহৃত আইনের বই, সাজা পরোয়ানার কপি, আসামীর স্বীকারোক্তি ফর্ম ইত্যাদি ফিরিয়ে নেওয়া হয় এবং তাকে মোবাইল কোর্ট বা উচ্ছেদ কাজে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়।
সেই মোতাবেক ১০/১২/২০২০ তারিখ হতে চেইনম্যান মিঠুকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইরফান উদ্দিন উদ্দিন আহমেদের সাথে দাপ্তরিক কার্যক্রমে হতে বিরত থাকতে বলা হয়। পরবর্তীতে বিগত ৩১ জানুয়ারি ২০২১ তারিখ রাতে বংশাল থানা হতে কর্পোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইরফান উদ্দিন আহমেদকে অবগত করে বলা হয় যে, জাকির সুপার মার্কেটের সামনে ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয়ে চাঁদাবাজি করার সময় স্থানীয় লোকজন মিঠু নামীয় কর্পোরেশনের একজন চেইনম্যান ও পিসি মোঃ শহীদুল ইসলামকে হাতেনাতে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে এবং এ বিষয়ে তৎপরবর্তী করনীয় সম্পর্কে জানতে চাইলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইরফান উদ্দিন আহমেদ বংশাল থানার ওসিকে ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয়ে চাঁদাবাজী ও চাঁদাবাজিতে সহযোগিতার জন্য মামলা করার নির্দেশ দেন।
এ প্রেক্ষিতে বংশাল থানা আজ ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ খ্রি. তারিখে পেনাল কোডের ১৭০/৪২০/৩৮৫/৩৮৬/৫০৬ ধারা অনুযায়ী মামলা দায়ের করে। এরই ধারাবাহিকতায় চেইনম্যান মিঠুকে আজ কর্পোরেশনের চাকরি হতে অপসারণ করা হয়েছে এবং আনসারের পিসির সার্বিক কর্মকাণ্ড ও তার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে বংশাল থানা কর্তৃক গৃহীত কার্যক্রম সম্পর্কে অবগত করার লক্ষ্যে কর্তৃপক্ষ বরাবরে পত্র প্রেরণের লক্ষ্যে নথি উপস্থাপন করা হয়েছে।