কুবিতে দশমিক ভগ্নাংশে ইনকোর্স নম্বর, ক্ষোভ শিক্ষার্থীদের
- আপডেট টাইম : ০৫:২৭:৩২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ অক্টোবর ২০২২
- / ১৬৯ ৫০০০.০ বার পাঠক
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ১১ তম আবর্তনের শিক্ষার্থীদের মিড-টার্ম পরীক্ষায় নম্বর কম দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মুর্শেদ রায়হানের বিরুদ্ধে। শিক্ষার্থীদের দাবি, সেশনজট কমাতে আন্দোলন করায় ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে এমন নম্বর দেওয়া হয়েছে।
খোজ নিয়ে জানা যায়, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ৮ম সেমিস্টারের কোর্স ARC-423 যার শিরোনাম ‘Tourism and Heritage management’ নিতেন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুর্শেদ রায়হান। ২৩ অক্টোবর প্রকাশিত কোর্সের ইনকোর্সের ফলাফল তালিকায় দ্বিতীয় মিড-টার্ম পরীক্ষায় দশ নাম্বারে এক নম্বরের নিচে ৩ জনকে, দুই নম্বরের নিচে ১৩ জনকে, তিন নম্বরের এর নিচে ১৭ জনকে এবং চার এর নিচে ৪ জনকে নম্বর দেওয়া হয়েছে। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেইসবুকে ‘Comilla University’ নামে গ্রুপে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা লিখালিখি করে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায়। এছাড়াও জানা যায়, একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী একই ব্যাচের অষ্টম সেমিস্টারের পরীক্ষা ২০২২ সালের জুলাই মাসে শেষ হওয়ার কথা উল্লেখ থাকলেও এই শিক্ষকের নির্ধারিত কোর্স সময়মতো শেষ না হওয়ায় ১ মাস পর সেপ্টেম্বর মাসে এই সেমিস্টার শেষ হয়। যার ফলে সেশনজটের সৃষ্টি হয়।
২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, ‘আমাদের সাব্জেক্ট কোন সায়েন্স রিলেটেড না। আমরা চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী, আমাদের বিভাগ, কোর্স নিয়ে মোটামুটি ধারণা সবারই আছে। শিক্ষার্থীদের ০.৩৩, ০.৬৭ দেওয়ার মাধ্যমে স্পষ্টতই ব্যক্তিগত ক্ষোভ শিক্ষার্থীদের উপর প্রকাশ করা হয়েছে’।
এবিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী অধ্যাপক মো. মুর্শেদ রায়হান বলেন, ‘এটা শিক্ষক-শিক্ষার্থীর বিষয়। শিক্ষক-শিক্ষার্থী পার হয়ে সাংবাদিকদের কাছে গেলো কেন? শিক্ষার্থীরা যা লিখেছে সে অনুযায়ী নম্বর পেয়েছে। এই বিষয়ে যদি তাদের কোন অভিযোগ থেকেও থাকে তাহলে বিভাগের ছাত্র উপদেষ্টা আছে, চেয়ারম্যান আছে এবং কোর্স টিচার আছে সে অনুযায়ী একাডেমিক ভাবে সমাধান হতে পারতো।’
বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সোহরাব উদ্দীন বলেন, ‘শিক্ষকরা গার্ডিয়ানের মতো। আমার মনে হয় না, কোন শিক্ষক ব্যক্তিগত ক্ষোভ শিক্ষার্থীর উপর তুলবে। ওরা আমাদের স্টুডেন্টের পাশাপাশি ছোট ভাই-বোনও। তবে কোর্স টিচারের ইখতিয়ার আছে শিক্ষার্থীদের কেমন নাম্বার দিবে। শিক্ষার্থীরা যেরকম লিখেছে হয়তো সেরকম নম্বর পেয়েছে।
এব্যাপারে কোর্স টিচারই ভাল বলতে পারবে।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, ‘পুরো একটা ব্যাচের শিক্ষার্থীদের এভাবে নম্বর দেওয়া অস্বাভাবিক। আমি বিভাগের চেয়ারম্যান ও কোর্স টিচারের সাথে কথা বলে এ ব্যাপারে জানার চেষ্টা করব। এবং কতটুকু সম্ভব সিদ্ধান্ত নেওয়ার চেষ্টা করব। উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ১৮ নভেম্বর প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থীরা সেশনজট নিরসনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে আন্দোলন করেন। পরবর্তীতে ২০২১ সালের ৩০ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করে এসময় প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে লিখালিখির দরুন ২০২১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬-১৭ আবর্তনের ৪০ জন শিক্ষার্থীকে বিভাগ থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়।