ঢাকা ০৯:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৯ জুন ২০২৩
সংবাদ শিরোনাম ::
প্রধানমন্ত্রীকে গরু উপহার দিতে চান পাকুন্দিয়ার বুলবুল নবীনগরে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চট্রগ্রাম বিভাগীয় শান্তি সমাবেশ সফল করার লক্ষে প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত কাশীপুর তরুণ প্রজন্মের উদ্যোগে পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে গরিব ও দুস্থ মানুষের মাঝে ঈদ সামগ্রী বিতরণ এবং বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচি ২০২৩ অনুষ্ঠিত হয়েছে শেখ হাসিনা শুধু আমার নেত্রী নয়,তিনি আমার কাছে মায়ের সমতুল্য। মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রী কোস্ট গার্ডের অভিযানে ৪ কেজি ৯৫০ গ্রাম গাঁজা জব্দ সিএনজি চালকের হত্যার গোপন রহস্য উন্মোচন গ্রেফতার – ৬ ময়মনসিংহে অ্যাক্রোবেটিক প্রদর্শনী মুগ্ধ দর্শক সন্তান লালন পালনে পিতামাতার যে বিষয়ে লক্ষ্য রাখা উচিত স্বাধীনতা, সংগ্রাম ও বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস আদর্শকে জানাতে হবে সকল শিক্ষার্থীদের ছাত্র জীবন থেকেই জীবনের লক্ষ্য স্থির করে উপার্জনের সুযোগ খোঁজতে হবে

নারী নির্যাতন মামলায় দারুস সালাম থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাজহার গ্রেফতার 

সময়ের কন্ঠ রিপোর্ট।।
আজ মঙ্গলবার ( ২৬ জানুয়ারি) রাজধানীর মিরপুরের দারুস সালাম থানায় নারী নির্যাতন ও যৌতুক নিরোধ আইনের ধারায়-  দারুস সালাম থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবিএম মাজহার আনাম(৫০)  সহ সাতজনের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন মামলা রজু হয়। মামলার বাদী এবিএম মাজহার আনামের স্ত্রী ফিরোজা পারভীন(৪৩)।
পুলিশ জানিয়েছে, আজ মঙ্গলবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলাটি দায়ের করেছেন তার স্ত্রী ফিরোজা পারভীন। পরে ওই মামলায় এবিএম মাজহারুল এনামকে গ্রেপ্তারের পর আজ আদালতে পাঠানো হয়েছে।
মামলা ও মামলার বাদী সূত্রে জানা যায়, মাজহার বাদীর এর সাথে দীর্ঘ ১২ বছর যাবৎ ঘর সংসার করে আসছে। তাদের ১১ বছর বয়সী প্রতিবন্ধী ছেলে সন্তান রয়েছে। সন্তান হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন সময় আসামী মাজহার যৌতুকের জন্য বাদীর উপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার চালাত। সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে বাদী দফায় দফায় বিশ লক্ষ টাকা এবং বিভিন্ন আসবাবপত্র ও নিত্যপণ্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী আসামী মাজহারকে প্রদান করেন। যেহেতু আসামী একজন লোভী লম্পট প্রকৃতির পরনারী আসক্ত ব্যাক্তি সেকারনে যৌতুক দেওয়ার পরেও তার লোভ দিন দিন বেড়েই চলেছে। একই সাথে একাধিক নারীর সাথে তার অন্তরঙ্গ মূহুর্তের ছবি থাকার কারনে ধারনা করা যায় যৌতুকের টাকা ঐ সকল নারীর পিছনে ব্যায় করছে।
মামলা সূত্রে আরও জানা যায়, গতবছর এপ্রিল মাসের ৪ তারিখ বিকাল তিনটায় আসামী মাজহার অন্যান্য আসামীদের কুপ্রোরচনায় বাদীর পরিবারের নিকট হতে আরও দশলক্ষ টাকা যৌতুকের জন্য চাপ দেয়। যার ফলস্রুতিতে গতবছর ১২ ডিসেম্বর বিকেল তিনটায় আসামী মাজহার ও অন্যান্য আসামীরা পূর্বের দাবিকৃত দশলক্ষ টাকা চাইলে বাদী দিতে অস্বীকৃতি জানালে আসামীগণ তাকে শারীরিক নির্যাতন করে গুরতর আহত অবস্থায় বাদীর আত্মীয় স্বজন তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হসপিটালে তার চিকিৎসা করায়। কিছুটা সুস্থ হয়ে বাদী একমাত্র শারীরিক এবং বুদ্ধি প্রতিবন্ধী সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আপোষ মিমাংসার উদ্দেশ্যে সোমবার (২৫ জানুয়ারী ২০২১) সন্ধ্যা সাতটায় আসামী এবং বাদী যে ফ্লাটে বসবাস করত সেখানে গিয়ে দেখতে পায় বাদীর আলমারির তালা ভাঙ্গা এবং বাদীর বিয়ের সময় উপহার হিসেবে পাওয়া পনের ভরী স্বর্নালঙ্কার, গুরুত্বপূর্ণ দলিলপত্র বিবাদীগণ সরিয়ে ফেলেছে। এই সময় আসামী মাজহার যৌতুকের দশলক্ষ টাকা ছাড়া বাদী কেন বাসায় ঢুকেছে এই বলে চুলের মুঠি ধরে কিল ঘুষি লাথি মারে এবং বাঁশের লাঠি দিয়ে বাদীকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় আঘাত করার চেষ্টা করলে বাদী হাত দিয়ে ঠেকায়। যাতে তার হাত গুরুতর আঘাত প্রাপ্ত হয়। এসময় মামলার অপর আসামী মিলি বাদীকে এলোপাথারি কিল ঘুষি লাথি মারে এবং বাদীর প্রতিবন্ধী সন্তানকে মারধর করে। তখন বাদীকে অন্যান্য আসামীরা মারধর করা অবস্থায় আসামী কামরুল ইসলাম বাদীর নাকে ঘুষি মেরে রক্তাক্ত করে। একপর্যায়ে আসামী মাজহার বাদীকে হত্যার উদ্দেশ্যে অন্যান্য আসামীর সহযোগিতায় বালিশ চাপা দেয়। তখন বাদীর ডাক চিৎকারে আপোষ মীমাংসার জন্য পাশের রুমে অবস্থানরত বাদীর আত্মীয় স্বজন এগিয়ে এসে বাদীকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা করায়।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দারুস সালাম থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো.মোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘মামলার প্রধান আসামি এবিএম মাজহারুল এনামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ তাকে আদালতেও পাঠানো  হয়েছে।’
এসআই আরও বলেন, ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলাটি দায়ের করেছেন তার স্ত্রী ফিরোজা পারভীন। এই মামলায় আরও ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালে ৩১ আগস্ট রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অস্ত্র ও গুলিসহ আটক হয়েছিলেন এ বি এম মাজহারুল আনাম। পরে তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালত পাঠানো হয়েছিল। অস্ত্র ও ৪৪ রাউন্ড গুলি নিয়ে বিমানবন্দরে প্রবেশ করার সময় এ বি এম মাজহারুল আনামকে আটক করে বিমানবন্দর এভিয়েশন সিকিউরিটি ফোর্স। ওই দিন সকাল সোয়া ১০টার একটি ফ্লাইটে কক্সবাজার যাওয়ার কথা ছিল তার।
বিমানবন্দর এভিয়েশন সিকিউরিটি অপারেশনের পরিচালক নূরে আলম সিদ্দিক ওই সময়ে জানিয়েছিলেন, মাজহারুল আনামের কাছ থেকে ৩৪ রাউন্ড রাইফেলের ও ১০ রাউন্ড পিস্তলের গুলি পাওয়া যায়।
বিমানবন্দরে প্রবেশের সময় মাজহারুল আনাম তার কাছে গুলি থাকার বিষয়টি ঘোষণা করেননি। স্ক্যানিংয়ের সময় তার হ্যান্ডব্যাগে গুলি ধরা পড়ে। পরে তাকে এভিয়েশন সিকিউরিটির অফিসে নিয়ে আসা হয়। এ সময় পিস্তলের লাইসেন্স দেখাতে পারলেও গোলাবারুদের ব্যাপারে কাগজপত্র দেখাতে পারেননি তিনি।
এছাড়াও দারুস সালাম থানায় ইতিপূর্বে দখলের অভিযোগে মামলা হয়েছিল।
আরো খবর.......
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

প্রধানমন্ত্রীকে গরু উপহার দিতে চান পাকুন্দিয়ার বুলবুল

নারী নির্যাতন মামলায় দারুস সালাম থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাজহার গ্রেফতার 

আপডেট টাইম : ০৪:২৫:১৯ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২৬ জানুয়ারি ২০২১
সময়ের কন্ঠ রিপোর্ট।।
আজ মঙ্গলবার ( ২৬ জানুয়ারি) রাজধানীর মিরপুরের দারুস সালাম থানায় নারী নির্যাতন ও যৌতুক নিরোধ আইনের ধারায়-  দারুস সালাম থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবিএম মাজহার আনাম(৫০)  সহ সাতজনের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন মামলা রজু হয়। মামলার বাদী এবিএম মাজহার আনামের স্ত্রী ফিরোজা পারভীন(৪৩)।
পুলিশ জানিয়েছে, আজ মঙ্গলবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলাটি দায়ের করেছেন তার স্ত্রী ফিরোজা পারভীন। পরে ওই মামলায় এবিএম মাজহারুল এনামকে গ্রেপ্তারের পর আজ আদালতে পাঠানো হয়েছে।
মামলা ও মামলার বাদী সূত্রে জানা যায়, মাজহার বাদীর এর সাথে দীর্ঘ ১২ বছর যাবৎ ঘর সংসার করে আসছে। তাদের ১১ বছর বয়সী প্রতিবন্ধী ছেলে সন্তান রয়েছে। সন্তান হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন সময় আসামী মাজহার যৌতুকের জন্য বাদীর উপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার চালাত। সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে বাদী দফায় দফায় বিশ লক্ষ টাকা এবং বিভিন্ন আসবাবপত্র ও নিত্যপণ্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী আসামী মাজহারকে প্রদান করেন। যেহেতু আসামী একজন লোভী লম্পট প্রকৃতির পরনারী আসক্ত ব্যাক্তি সেকারনে যৌতুক দেওয়ার পরেও তার লোভ দিন দিন বেড়েই চলেছে। একই সাথে একাধিক নারীর সাথে তার অন্তরঙ্গ মূহুর্তের ছবি থাকার কারনে ধারনা করা যায় যৌতুকের টাকা ঐ সকল নারীর পিছনে ব্যায় করছে।
মামলা সূত্রে আরও জানা যায়, গতবছর এপ্রিল মাসের ৪ তারিখ বিকাল তিনটায় আসামী মাজহার অন্যান্য আসামীদের কুপ্রোরচনায় বাদীর পরিবারের নিকট হতে আরও দশলক্ষ টাকা যৌতুকের জন্য চাপ দেয়। যার ফলস্রুতিতে গতবছর ১২ ডিসেম্বর বিকেল তিনটায় আসামী মাজহার ও অন্যান্য আসামীরা পূর্বের দাবিকৃত দশলক্ষ টাকা চাইলে বাদী দিতে অস্বীকৃতি জানালে আসামীগণ তাকে শারীরিক নির্যাতন করে গুরতর আহত অবস্থায় বাদীর আত্মীয় স্বজন তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হসপিটালে তার চিকিৎসা করায়। কিছুটা সুস্থ হয়ে বাদী একমাত্র শারীরিক এবং বুদ্ধি প্রতিবন্ধী সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আপোষ মিমাংসার উদ্দেশ্যে সোমবার (২৫ জানুয়ারী ২০২১) সন্ধ্যা সাতটায় আসামী এবং বাদী যে ফ্লাটে বসবাস করত সেখানে গিয়ে দেখতে পায় বাদীর আলমারির তালা ভাঙ্গা এবং বাদীর বিয়ের সময় উপহার হিসেবে পাওয়া পনের ভরী স্বর্নালঙ্কার, গুরুত্বপূর্ণ দলিলপত্র বিবাদীগণ সরিয়ে ফেলেছে। এই সময় আসামী মাজহার যৌতুকের দশলক্ষ টাকা ছাড়া বাদী কেন বাসায় ঢুকেছে এই বলে চুলের মুঠি ধরে কিল ঘুষি লাথি মারে এবং বাঁশের লাঠি দিয়ে বাদীকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় আঘাত করার চেষ্টা করলে বাদী হাত দিয়ে ঠেকায়। যাতে তার হাত গুরুতর আঘাত প্রাপ্ত হয়। এসময় মামলার অপর আসামী মিলি বাদীকে এলোপাথারি কিল ঘুষি লাথি মারে এবং বাদীর প্রতিবন্ধী সন্তানকে মারধর করে। তখন বাদীকে অন্যান্য আসামীরা মারধর করা অবস্থায় আসামী কামরুল ইসলাম বাদীর নাকে ঘুষি মেরে রক্তাক্ত করে। একপর্যায়ে আসামী মাজহার বাদীকে হত্যার উদ্দেশ্যে অন্যান্য আসামীর সহযোগিতায় বালিশ চাপা দেয়। তখন বাদীর ডাক চিৎকারে আপোষ মীমাংসার জন্য পাশের রুমে অবস্থানরত বাদীর আত্মীয় স্বজন এগিয়ে এসে বাদীকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা করায়।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দারুস সালাম থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো.মোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘মামলার প্রধান আসামি এবিএম মাজহারুল এনামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ তাকে আদালতেও পাঠানো  হয়েছে।’
এসআই আরও বলেন, ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলাটি দায়ের করেছেন তার স্ত্রী ফিরোজা পারভীন। এই মামলায় আরও ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালে ৩১ আগস্ট রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অস্ত্র ও গুলিসহ আটক হয়েছিলেন এ বি এম মাজহারুল আনাম। পরে তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালত পাঠানো হয়েছিল। অস্ত্র ও ৪৪ রাউন্ড গুলি নিয়ে বিমানবন্দরে প্রবেশ করার সময় এ বি এম মাজহারুল আনামকে আটক করে বিমানবন্দর এভিয়েশন সিকিউরিটি ফোর্স। ওই দিন সকাল সোয়া ১০টার একটি ফ্লাইটে কক্সবাজার যাওয়ার কথা ছিল তার।
বিমানবন্দর এভিয়েশন সিকিউরিটি অপারেশনের পরিচালক নূরে আলম সিদ্দিক ওই সময়ে জানিয়েছিলেন, মাজহারুল আনামের কাছ থেকে ৩৪ রাউন্ড রাইফেলের ও ১০ রাউন্ড পিস্তলের গুলি পাওয়া যায়।
বিমানবন্দরে প্রবেশের সময় মাজহারুল আনাম তার কাছে গুলি থাকার বিষয়টি ঘোষণা করেননি। স্ক্যানিংয়ের সময় তার হ্যান্ডব্যাগে গুলি ধরা পড়ে। পরে তাকে এভিয়েশন সিকিউরিটির অফিসে নিয়ে আসা হয়। এ সময় পিস্তলের লাইসেন্স দেখাতে পারলেও গোলাবারুদের ব্যাপারে কাগজপত্র দেখাতে পারেননি তিনি।
এছাড়াও দারুস সালাম থানায় ইতিপূর্বে দখলের অভিযোগে মামলা হয়েছিল।