বস্তিবাসী শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন সচলে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে
- আপডেট টাইম : ০৫:১৫:৩৭ পূর্বাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২৬ জানুয়ারি ২০২১
- / ২৬৭ ৫০০০.০ বার পাঠক
সময়ের কন্ঠ রিপোর্ট।।
বস্তিবাসী শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনকে সচল করার জন্য সরকারের বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বক্তারা। সোমবার পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন পবা-র ‘করোনায় নগরের নিম্ন আয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর প্রভাব ও করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এ দাবি করা হয়।
সভাটি পবা চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভপতিত্বে ও সম্পাদক ফেরদৌস আহমেদ উজ্জ্বলের সঞ্চালনায় পবা কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন পবার সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান, কাপ-এর নির্বাহী পরিচালক খন্দকার রেবেকা সান ইয়াত, বারসিকের সমন্বয়ক মো. জাহাঙ্গীর আলম, সহযোগী কর্মসূচি কর্মকর্তা সুদীপ্তা কর্মকার, পবার সম্পাদক আতিক মোর্শেদ, পবার শাকিল রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবেশ সংসদের সভাপতি আবু সাদাত মো. সায়েম, বস্তিবাসী নেত্রী কুলসুম বেগম, হোসনে আরা বেগম রাফেজা প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন, করোনায় সারা বিশ্ব মারাত্মাকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আর বাংলাদেশের মতো দেশে এর প্রভাব আরো ব্যাপক। বিশেষ করে এ দেশের নিম্ন আয়ের মানুষদের জীবনের সংকট মারাত্মক। আর তাদের শিক্ষার্থীদের জীবনে নেমে এসেছে ভয়াবহ সংকট। বক্তারা বস্তিবাসী শিক্ষার্থীদের জন্য সরকারের বিশেষ প্রণোদনার দাবি জানান। বক্তারা আরো বলেন, করোনার মহামারির কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ১১ মাস ধরে বন্ধ। এই সময়ে প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক পর্যন্ত দেশের প্রায় ৪ কোটি শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন ও শিক্ষাপঞ্জি ওলটপালট হয়ে গেছে।
সংসদ টিভি, অনলাইন, রেডিও এবং মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে দূরশিক্ষণ ব্যবস্থা করা গেলেও বাস্তবে ৬৯.৫ শতাংশ শিক্ষার্থীই এই ব্যবস্থায় অংশ নিতে পারেনি। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা গণসাক্ষরতা অভিযানের এক সমীক্ষায় এই তথ্য পাওয়া গেছে।
বস্তি এলাকায় যেসব বেসরকারি এবং ব্যক্তিগত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছিল তার অধিকাংশই করোনার প্রভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে তাদের মধ্যেও যাদের শিক্ষা গ্রহণের ইচ্ছা রয়েছে তারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবে। ফলে নগরের বস্তিতে বেড়ে যাচ্ছে স্কুল থেকে ঝরে পড়া, বাল্যবিবাহ, শিশুশ্রম। এমনকি তাদের মধ্যে মানসিক বিকারগ্রস্ততাও বেড়ে যাবে। ২০১৯ সালে প্রাথমিকে ঝরে পড়ার হার ছিল ১৭ দশমিক ৯ শতাংশ আর মাধ্যমিকে এই হার ছিল ৩৭ দশমিক ৬২ শতাংশ। ২০২১ সালে এই ঝরে পড়ার হার অনেক বাড়বে বলেই নিশ্চিত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
তারা বলছেন, ঝরে পড়ার পেছনে অন্যতম কারণ দারিদ্র্য ও বাল্যবিয়ে। বিশেষ করে শহরের বস্তিবাসী এবং চর ও হাওর অঞ্চলের শিশুরাই বেশি ঝরে পড়ে। করোনার কারণে এসব পরিবারে দারিদ্র্য আগের চেয়ে বেড়েছে। অনেক ক্ষেত্রে তারা কোনো রকমে তিন বেলা খেতে পারলেও পুষ্টিমান রক্ষা করতে পারছে না। গত সপ্তাহে প্রকাশিত এডুকেশন ওয়াচের অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন ২০২১-এ ঝরে পড়ার ব্যাপারে উদ্বেগজনক মতামত পাওয়া যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রাথমিকের ৩৮ শতাংশ শিক্ষক মনে করেন বিদ্যালয় খুলে দেওয়ার পরও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে যেতে পারে। ২০ শতাংশ মনে করেন, ঝরে পড়ার হার বাড়বে এবং ৮.৭ শতাংশ মনে করেন, শিক্ষার্থীরা শিশুশ্রমে নিযুক্ত হতে পারে। মাধ্যমিকের ৪১.২ শতাংশ শিক্ষক মনে করেন, বেশি শিক্ষার্থী ক্লাসে অনুপস্থিত থাকতে পারে। ২৯ শতাংশ মনে করেন, ঝরে পড়ার হার বাড়বে।