কারাগারে বন্দির সঙ্গে নারীর সাক্ষাৎ : ডেপুটি জেলারসহ ৩ জন প্রত্যাহার
- আপডেট টাইম : ০৬:৪২:২৯ অপরাহ্ণ, শুক্রবার, ২২ জানুয়ারি ২০২১
- / ২৫৯ ৫০০০.০ বার পাঠক
জসিম উদ্দিনঃ গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১ এ কারাবিধি লঙ্ঘন করে বন্দির সঙ্গে এক নারীর সাক্ষাতের মাধ্যমে অনৈতিক সুবিধা দেয়ার অভিযোগে সেখানকার ডেপুটি জেলারসহ তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। সহকারী কারা মহাপরিদর্শক (প্রশাসন) মো. মাইন উদ্দিন ভূইয়া তাদের প্রত্যাহারের আদেশ দেন।
প্রত্যাহারকৃতরা হলেন- কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১ এর ডেপুটি জেলার গোলাম সাকলাইন, সার্জেন্ট ইন্সট্রাক্টর মো. আব্দুল বারী ও সহকারী প্রধান কারারক্ষী মো. খলিলুর রহমান।
কারা অধিদফতরের দেয়া গত ১৮ জানুয়ারির এক আদেশনামায় দেখা গেছে, পরবর্তী আদেশ না দেয়া পর্যন্ত কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১ এর ডেপুটি জেলার গোলাম সাকলাইন, সার্জেন্ট ইন্সট্রাক্টর মো. আব্দুল বারী ও সহকারী প্রধান কারারক্ষী মো. খলিলুর রহমানকে কাশিমপুর কারাগার পার্ট-১ থেকে প্রত্যাহার করে কারা অধিদফতরে সংযুক্ত করা হয়েছে। মন্তব্যের জায়গায় লেখা রয়েছে, প্রশাসনিক কারণে। আদেশটি অনতিবিলম্বে কার্যকর করতেও বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, হলমার্ক কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত কোম্পানিটির মহাব্যবস্থাপক তুষার আহমদের সঙ্গে কারা কর্মকর্তাদের কক্ষে সাক্ষাত করেন ওই নারী। তবে ওই নারীর পরিচয় জানা যায়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারা সূত্র জানায়, গত ৬ জানুয়ারি কারাগারের প্রবেশের মাঝে কর্মকর্তাদের অফিস এলাকায় কালো রংয়ের পোশাক পরে স্বাচ্ছন্দে ঘোরাফেরা করছিলেন তুষার আহমেদ। তিনি আসার কিছু সময় পর কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার রত্না রায় ও ডেপুটি জেলার সাকলাইনের উপস্থিতিতেই বাইরে থেকে বেগুনি রংয়ের সালোয়ার কামিজ পরা এক নারী সেখানে প্রবেশ করেন। তাদের সহযোগিতার বিষয়টিও সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে।
দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে অপর দুই যুবকের সঙ্গে ওই নারী কারাগারের কর্মকর্তাদের কক্ষ এলাকায় প্রবেশ করেন। তাকে সেখানে রিসিভ করেন ডেপুটি জেলার সাকলাইন। ওই নারী সেখানে প্রবেশ করার পর অফিস থেকে বেরিয়ে যান সাকলাইন। এর আনুমানিক ১০ মিনিট পর কারাগারে বন্দী তুষার আহমদকে সেখানে প্রবেশ করতে দেখা যায়।
গাজীপুর জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ওই ঘটনায় গত ১২ জানুয়ারি গাজীপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবুল কালামকে প্রধান করে গাজীপুরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উন্মে হাবিবা ফারজানা ও ওয়াসিউজ্জামান চৌধুরীকে নিয়ে তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটিটি গঠন করা হয়।
এছাড়া ২১ জানুয়ারি অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক আবরার হোসেনকে প্রধান করে উপসচিব (সুরক্ষা বিভাগ) আবু সাঈদ মোল্লাহ ও ডিআইজি (ময়মনসিংহ বিভাগ) জাহাঙ্গীর কবিরকে সদস্য করে আরও একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।
গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আবুল কালাম বলেন, কারাগারের সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজটি আমরা দেখেছি। এ বিষয়ে তদন্ত চলমান রয়েছে।
বন্দির সঙ্গে নারীর সাক্ষাতের ব্যাপারে জানতে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১-এর জেল সুপার রত্না রায়কে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।