পুকুর খননে গিলে খাচ্ছে বাঘার ফসলি জমি সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত চলাচলে চরম দুর্ভোগ
- আপডেট টাইম : ০৫:১২:৪১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ জুন ২০২২
- / ২৩২ ৫০০০.০ বার পাঠক
বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি।।
রাজশাহীর বাঘায় ১৫০ বিঘা জমিতে পুকুর খনন করছে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা বলে অভিযোগ উঠেছে। ৫-৬ মাস ধরে বাঘায় পুকুর খনন চলছে।
স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই খননযন্ত্র বসিয়ে পুকুর খুঁড়ছেন প্রভাবশালী হওয়ায় স্থানীয় লোকজন বাধা দিতে সাহস পাননি। সম্পূর্ণ অবৈধভাবে পুকুর খনন করছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বলিহার,বাঘা বিলের উত্তরের শেষ প্রান্তে ফসলি জমিতে পুকুর খনন করছে চাকি পাড়া গ্রামের লিটন তাকে কিছুদিন আগে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছিল প্রশাসন। তিনি আবারও খননযন্ত্র (ভেকু) বসিয়ে পুকুর খনন করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বাউসা ইউনিয়নের অমরপুর, আড়ানী উপজেলাতে মাসের পর মাস ধরে পুকুর খনন চলছে ।
পুকুর খননে মেতে উঠেছে স্থানীয় এক ছাত্রলীগ নেতা। দিন রাত থেমে নেই পুকুর খনন।
স্থানীয়রা জানান, পুকুর খননের মূল হোতা স্থানীয় নেতা দলীয় ক্ষমতার অপব্যবহার করে পুকুর খননে মতে উঠেছেন। যাদের জমির পাশে পুকুর খনন করা হচ্ছে,তারাও নিরুপায় হয়ে তাদের ফসলি জমি গুলো লিজ দিতে বাধ্য হচ্ছে। এতে মাটি বিক্রি করে লাভবান হচ্ছে ওই ছাত্রলীগ নেতা। এতে মাটি বিক্রি করে আয় করছে লক্ষ লক্ষ টাকা। নষ্ট হচ্ছে সরকারি রাস্তা দিন রাত চলছে পুকুর খননের কাজ।
উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মাটি বহনে সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে চলাচলে চরম দুর্ভোগ
প্রশাসনের চোখের সামনে দিয়ে একের পর এক পুকুর গিলে খাচ্ছে বাঘার ফসলি জমি। এদিকে খননের মাটি ড্রাম ট্রাক ও ট্রাক্টরে বিক্রি করছে ছাত্রলীগ নেতা। ফলে পুকুরের মাটি পাকা রাস্তায় পড়ে পিচ্ছিল হয়ে কৃষিপণ্য আনা-নেওয়া ও চলাচলে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন সাধারণ জনগণ। এতে নষ্ট হচ্ছে সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পাকা সড়ক। সোমবার বলিহার-গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় ৩ কিলোমিটার এলাকায় পুকুর খননের এঁটেল ও কাঁদামাটি পড়ে সড়ক পিচ্ছিল হয়ে চলাচলে ভোগান্তি পোহাচ্ছে সাধারণ জনগণ। আর কাদামাটির সঙ্গে সড়কের খোয়া ও বিটুমিন উঠে যাচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি ও স্থানীয় অটোভ্যানচালক জানান, এখানে বেশ কয়েক মাস ধরে মৎস্য চাষের নামে পুকুর খনন করে ড্রাম ট্রাক ও ট্রাক্টরে মাটি বিক্রি করছেন উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা।
পুকুর খনন এক্সকেভেটর (ভেকু) দিয়ে খনন করে ড্রাম ট্রাক ও ট্রাক্টরে বিভিন্ন গ্রামে বিক্রি করছেন। ফলে সড়ক নষ্ট হচ্ছে। এতে ভোগান্তি পোহাচ্ছে জনগণ।
ট্রাক্টরসহ যানবাহনে এসব মাটি পরিবহনের ফলে নষ্ট হচ্ছে চলাচলের রাস্তাগুলো। এতে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ মাটি পরিবহনের নৈরাজ্য চলতে থাকলে চাষবাদের জন্য কৃষি জমি সংকট হবে বলে আশঙ্কা করছেন। পুকুর খননে বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে বলে মনে করছেন ।
ট্রাক্টর ড্রাইভারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি গাড়ির মাটি বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৭০০ টাকায়। এসব মাটি কাটা হয় এসকোভেটর মেশিন ভেকু দিয়ে ঘন্টায় ২৫০০- থেকে – ২৮০০ টাকা চুক্তিতে মাটি কেটে দেওয়া হয়। পাশের জমিতে অনেক বড়বড় আম গাছও ছিল। সে গুলো কেটে পুকুর খনন করা হচ্ছে। এতে জমিতে বর্ষার সময় পানি বের হওয়ার কোন ব্যবস্থা নেই।
স্থানীয় কৃষিবিদদের অভিযোগ, এতে অন্যটির ক্ষতি হোক এটা কাম্য নয়। কিন্তু এক শ্রেনী অসাধু ব্যবসায়ীরা আবাদী জমি নষ্ট করে পুকুর খননে মেতে উঠেছে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জুয়েল আহমেদ বলেন, নির্বাহি অফিসার পাপিয়া সুলতানা (ইউএনও) স্যারের সঙ্গে কথা বলুন স্যার বললে যেতে পারবো।
এ বিষয়ে নির্বাহী অফিসার পাপিয়া সুলতানা যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, বিষয়টি দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।