ঢাকা ০২:২৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
গাজীপুরে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত রায়পুর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের দুর্নীতিত অতিষ্ঠ জনসাধারণ সমাবেশে গিয়ে টাকা না পেয়ে বাড়ি ঘেরাও, ৫ প্রতারক আটক অভিনব সিন্ডিকেট: সয়াবিন তেলের সঙ্গে চাল-ডাল কেনা বাধ্যতামূলক! সব ছাত্রসংগঠনের সমন্বয়ে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করলেন হাসনাত ডেপুটি রেজিস্ট্রার হয়েও নার্সিং ইনস্টিটিউট ব্যবসা নিলুফার ইয়াসমিনের অভিযোগ তদন্তে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে তলব পুলিশ প্রশাসনের নীতিগত পরিবর্তন হলেও এসআই মিজানের অসাধু নীতির পরিবর্তন হয়নি ঠাকুরগাঁওয়ে নারীদের ভূমি অধিকার ও কৃষি ভূমি সংষ্কার বিষয়ক সমাবেশ কালিয়াকৈরে ধর্ষণের অভিযোগে বাড়ির মালিক গ্রেফতার পীরগঞ্জ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দুর্নীতির অভিযোগে বরখাস্ত

রাজধানীর র‌্যাবের পৃথক ১৫ টি অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে

সময়ের কন্ঠ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : ০৯:৫৮:৪৫ পূর্বাহ্ণ, মঙ্গলবার, ১২ এপ্রিল ২০২২
  • / ২৫৫ ৫০০০.০ বার পাঠক

সময়ের কন্ঠ রিপোর্ট।। 

র‌্যাবের পৃথক ১৫ টি অভিযানে রাজধানীর রমনা, খিলগাঁও, হাতিরঝিল, শাহজাহানপুর, পল্টন, মতিঝিল, শাহবাগ ও ওয়ারী এলাকা হতে সংঘবদ্ধ চাঁদাবাজ ও ছিনতাইকারী চক্রের মূলহোতাসহ ৩৩ জন চাঁদাবাজ ও ২০ জন ছিনতাইকারীসহ মোট ৫৩ জন গ্রেফতার; চাঁদাবাজির মাধ্যমে আদায়কৃত নগদ ১,৪৪,৭৩০ টাকা, মোবাইল ও ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত দেশিয় অস্ত্র উদ্ধার।

এরই ধারাবাহিকতায় গত রাতে র‌্যাব-৩ এর কয়েকটি আভিযানিক দল একযোগে রাজধানীর রমনা, খিলগাঁও, হাতিরঝিল, শাহজাহানপুর, পল্টন ও ওয়ারী এলাকা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে চাঁদাবাজ চক্রের সদস্য ১। মোঃ আওয়াল (৪৫), সাং-৯৮/৭, পশ্চিম মাদারটেক, রাজারবাগ বাসাবো, থানা-সবুজবাগ, জেলা-ঢাকা, ২। মোঃ আতিক (৩৫), সাং-আগদহখোলা, থানা-বাঘারপাড়া, জেলা-যশোর, ৩। মোঃ আলাউদ্দিন (৪৫), সাং-এখলাসপুর, থানা-মতলব, জেলা-চাঁদপুর, ৪। মোঃ ইসমাইল (৫৪), সাং-বাসা নং-২৩, কাজী আলাউদ্দিন রোড, নাজিরা বাজার, থানা-বংশাল, জেলা-ঢাকা, ৫। মোঃ জুয়েল (৪৩), সাং-মহিষেরচর, থানা-মাদরীপুর সদর, জেলা-মাদারীপুর, ৬। মোঃ দুলাল (৪৫), সাং-সৈয়দ বুস্তা, থানা-ডামুডা, জেলা-শরিয়তপুর, ৭। মোঃ বদির উদ্দিন বাবু (৫০), সাং-এখলাসপুর, থানা-মতলব, জেলা-চাঁদপুর, ৮। মোঃ বাবুল (৫২), সাং-চাচড়া, থানা-ভোলা সদর, জেলা-ভোলা, ৯। মোঃ বাবুল হাওলাদার (৪৯), সাং-রামপুর, থানা-মির্জাগঞ্জ, জেলা-পটুয়াখালী, ১০। মোঃ মোস্তফা হাওলাদার (৫০), সাং-বান্দাবাড়ী, থানা-কোটালীপাড়া, জেলা-গোপালগঞ্জ, ১১। মোঃ সাহেব আলী (৫৪), সাং-খোয়াজপুর, থানা-মাদারীপুর সদর, জেলা-মাদারীপুর, ১২। মোঃ তানভির (৪০), সাং-বাসা নং-৩, হেয়ার স্ট্রীট, থানা-ওয়ারী, জেলা-ঢাকা, ১৩। মোঃ জালাল হোসেন (৩০), সাং-পূর্ব ষোলপাড়া, থানা-দাউদকান্দি, জেলা-কুমিল্লা, ১৪। নিয়ামুল হোসেন (২৯), সাং-চর মানিকদিয়া, থানা-গোপালগঞ্জ, জেলা-গোপালগঞ্জ, ১৫। মোঃ ময়নুল হোসেন (৪৫), সাং-তাতারকান্দি, থানা-কুলিয়ারচর, জেলা-কিশোরগঞ্জ, ১৬। মিন্টু খান (২৫), সাং-লক্ষীপুর, থানা-ভান্ডারিয়া, জেলা-পিরোজপুর, ১৭। মোঃ মেনু মিয়া (৩৮), সাং-নগরবান্ধা, থানা-বাজিতপুর, জেলা-কিশোরগঞ্জ, ১৮। মোঃ রনি (৩১), সাং-জাফরপুর, থানা-চুয়াডাঙ্গা, জেলা-চুয়াডাঙ্গা, ১৯। মোঃ রানা (২৪), সাং-বনগ্রাম, থানা-ওয়ারী, জেলা-ঢাকা, ২০। মোঃ শরীফ সরকার (৩৫), সাং-নাওঘাট, থানা-আশুগঞ্জ, জেলা-বি-বাড়িয়া, ২১। মোঃ মহসীন (২৫), সাং-রাগদুল, থানা-কচুয়া, জেলা-চাদপুর, ২২। রনজিৎ দাস (৪৮), সাং-কাজী ভিলা (মুগদা থানার গলি), থানা-মুগদা, জেলা-ঢাকা, ২৩। রাসেল শিকদার (২১), সাং-খুন্না গোবিন্দপুর, থানা-হিজলা, জেলা-বরিশাল, ২৪। মোঃ হারেজ (৪৩), সাং-বুড়ারচর, থানা-কোতয়ালী, জেলা-ময়মনসিংহ, ২৫। মোঃ বাদশা (২৯), সাং-মিঠা খেয়াঘাট, থানা-মাতারহাট মেন্দীগঞ্জ, জেলা-বরিশাল, ২৬। আল আমীন সর্দার (২০), সাং-জালালপুর, থানা-শুশাইরহাট, জেলা-শরীয়তপুর, ২৭। মোঃ শহীদ (২৭), সাং-খাঁনপুর, থানা-নারায়ণগঞ্জ সদর, জেলা-নারায়ণগঞ্জ, ২৮। মোঃ রাজু (৩৫), সাং-মাঠপাড়া, থানা-মোকছেদপুর, জেলা-গোপালগঞ্জ, ২৯। মোঃ রফিক (২৫), সাং-দক্ষিণপাড়া, থানা-করিমগঞ্জ, জেলা-কিশোরগঞ্জ, ৩০। মোঃ রোমান (৪২), সাং-নারিকেল তলা, থানা-ফরিদগঞ্জ, জেলা-চাঁদপুর, ৩১। মোঃ আকবর (২০), সাং-কাওরান বাজার মোল্লা বাড়ী, থানা-তেজগাঁও, জেলা-ঢাকা, ৩২। ইমন (১৯), সাং-আলেকজান্ডার, থানা-রামগতি, জেলা-লক্ষীপুর, ৩৩। রাব্বি (১৯), থানা ও জেলা-শরীয়ত পুর, ৩৪। মোঃ হৃদয় (১৯), সাং-মহিষবাড়ী, থানা-কোতয়ালী, জেলা-ময়মনসিংহ, ৩৫। মোঃ হোসেন (১৯), সাং-কসবা, থানা-কসবা, জেলা-কুমিল্লা, ৩৬। মোঃ আল আমিন (২২), সাং-শফিপুর, থানা-মুলাদি, জেলা- বরিশাল , ৩৭। মোঃ ইসমাইল হোসেন (২২), সাং-রাখিল কান্দি, থানা-মুন্সিগঞ্জ, জেলা-মুন্সিগঞ্জ, ৩৮। নাইমুল ইসলাম মিশু (২৫), সাং-বাসাবো ওহাব কলোনী, থানা-সবুজবাগ, জেলা-ঢাকা, ৩৯। মোঃ নুরুল হক (২৫), সাং-৭৮/বাসাবো, থানা-সবুজবাগ, জেলা-ঢাকা, ৪০। মোঃ রতন (২২), সাং-মুক্তিনগর, থানা-মেঘনা, জেলা-কুমিল্লা, ৪১। রাব্বি (১৯), সাং-চরকান্দি, থানা-দাউদকান্দি, জেলা-কুমিল্লা, ৪২। মোঃ শফিকুল ইসলাম (২৪), সাং-কাঠালিয়া, থানা-কাঠালিয়া, জেলা-ঝালকাঠি, ৪৩। মোঃ সাগর হোসেন শামীম (২০), সাং-২০২/১ দক্ষিণবাসাবো, থানা-সবুজবাগ, জেলা-ঢাকা, ৪৪। উজ্জল মিয়া (২০), সাং-সওদাগর কান্দি, থানা- রায়পুরা, জেলা-নরসিংদী, ৪৫। মোঃ আক্কাছ (৫০), সাং-১৭ ভিতরবাড়ী লেন নবাবপুর, থানা- বংশাল, জেলা-ঢাকা, ৪৬। মোঃ ইউছুফ (৩২), সাং-দরবেশপুর, থানা-রামগঞ্জ, জেলা-লক্ষীপুর, ৪৭। মোঃ জাহিদ (৪৪), সাং-১৮১ লালমোহন সাহা স্ট্রীট নারিন্দা, থানা-ওয়ারী, জেলা-ঢাকা, ৪৮। মুন্সি মুছা আহমেদ (৫২), সাং-বাঘমারা, থানা-নবাবগঞ্জ, জেলা-ঢাকা, ৪৯। মোঃ রবিন মিয়া (৩২), সাং-২৩ বাসা-লালচান মুকিন লেন, থানা-ওয়ারী, জেলা-ঢাকা, ৫০। মোঃ সাগর (২৭), সাং-তর্কি, থানা-গৌরনদী, জেলা-বরিশাল, ৫১। মোঃ সুজন (৪৫), সাং-পাঙ্গাশিয়া, থানা-ধুমকী, জেলা-পটুয়াখালী, ৫২। মোঃ সোহাগ মৃধা (৩২), সাং-দক্ষিন রাঙ্গামালিয়া, থানা-মিরাজদীখান, জেলা-মুন্সিগঞ্জ এবং ৫৩। সোহেল সরকার (৩১), সাং-নৌঘাট, থানা-আশুগঞ্জ, জেলা-ব্রাহ্মণবাড়ীয়াদেরকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতারকালে উক্ত আসামীদের নিকট হতে চাঁদাবাজির মাধ্যমে আদায়কৃত ১,৪৪,৭৩০ টাকা, ৬০ টি মোবাইলফোন ও ৪৫টি দেশিয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামীরা তাদের অপরাধের বিষয়টি স্বীকার করে এবং দীর্ঘদিন যাবৎ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার সবজি ও ফলের দোকান, ফুটপাতের অস্থায়ী দোকান, লেগুনা স্ট্যান্ড এবং মালবাহী গাড়ী হতে অবৈধভাবে জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করে আসছে বলে জানায়। তারা আরও জানায় যে, রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমান দোকানসমূহের মালিকদেরকে ভয়ভীতি দেখিয়ে আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রত্যেক দোকানদারদের নিকট হতে তারা দৈনিক ৫০০-১০০০ টাকা হারে চাঁদা আদায় করে আসছে।

ওয়ারী থানাধীন কাপ্তান বাজারে চাঁদাবাজি শুরু হয় মূলত রাত ১২ টার পর থেকে ভোররাত পর্যন্ত। পোল্ট্রি মুরগী বহনকারী কোন গাড়ি এই বাজারে প্রবেশ করার সাথে সাথেই গাড়ির ধরন ও মুরগীর পরিমান এর উপর নির্ভর করে চাঁদার পরিমান ঠিক করে দেয়া হয় এবং জোরপূর্বক তা আদায় করা হয়। কেউ যদি চাঁদা না দেয় তাহলে তাকে নানাভাবে হয়রানি করার উদ্দেশ্যে গাড়ির মালামাল আনলোড/বিক্রিতে ইচ্ছাকৃতভাবে বিঘœ সৃষ্টি করা হত। তাছাড়াও যেসব গাড়িতে তুলনামূলকভাবে ছোট/অসুস্থ/মৃত মুরগী পাওয়া যায় তাদেরকে বেশি চাঁদা দিতে হয়। প্রতিরাতে এখান থেকে কয়েক লক্ষ টাকা চাঁদা সংগ্রহ করা হয়।

রমনা থানাধীন শান্তিনগরে মূলত রাস্তার ধারে ভাসমান দোকান থেকে নির্দিষ্ট হারে প্রতিদিন চাঁদা আদায় করা হয়। সকাল ও বিকাল দুই শিফটে চাঁদা আদায় করা হয়। এই কাজে ৪/৫ জনের একটি গ্রæপ জড়িত। প্রতিদিন এখান থেকে প্রায় লক্ষাধিক টাকা উত্তোলন করা হয়।

চাঁদার টাকা না দিলে ধৃত আসামীগণ নিরীহ দোকানদারদেরকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি প্রদান করে এবং তাদের হাতে থাকা লাঠি দিয়ে মার পিট করে। তাদের কথা মত কেউ চাঁদার টাকা না দিলে দোকান বসতে দেওয়া হবে না মর্মে দোকানদারদের হুমকি দেয়া হয়। লেগুনা স্ট্যান্ডে তাদের কথা মত কেউ চাঁদার টাকা না দিলে এই রূটে কোন লেগুনা চলতে দেওয়া হবে না মর্মে হুমকি প্রদান করে। তখন লেগুনা চালকরা পেটের দায়ে বিনা প্রতিবাদে চাঁদা পরিশোধ করতে বাধ্য হয়। এ সকল চাঁদাবাজদের আইনের আওতায় আনার ফলে নিরীহ দোকানদার ও লেগুনা চালকদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে।

পবিত্র মাহে রমজান এবং ঈদুল ফিতরকে লক্ষ্য করে সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারীরা রাজধানীর বিভিন্ন অলি-গলিতে ওৎপেতে থাকে। সুযোগ পাওয়া মাত্রই তারা পথচারী, রিকশা আরোহী, যানজটে থাকা সিএনজি, অটোরিকশার যাত্রীদের ধারালো অস্ত্র প্রদর্শন করে সর্বস্ব লুটে নিত। ইফতারের সময় এবং সেহেরির পর তুলনামূলক জনশূন্য রাস্তায় ছিনতাইকারীরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। তাদের ছিনতাইকাজে বাধা দিলে তারা নিরীহ পথচারীদের প্রাণঘাতী আঘাত করতে দ্বিধা বোধ করেনা। খিলগাঁও মালিবাগ রেইল গেইট, দৈনিক বাংলা মোড়, পীরজঙ্গি মাজার ক্রসিং, কমলাপুর বটতলা, মতিঝিল কালভার্ট রোড, নাসিরের টেক হাতিরঝিল, শাহবাগ, গুলবাগ, রাজউক ক্রসিং, ইউবিএল ক্রসিং পল্টন মোড়, গোলাপ শাহ’র মাজার ক্রসিং, হাইকোর্ট ক্রসিং, আব্দুল গণি রোড, মানিকনগর স্টেডিয়ামের সামনে, নন্দীপাড়া ব্রিজ, বাসাবো ক্রসিং এলাকায় সন্ধ্যা হতে ভোর রাত পর্যন্ত ছিনতাইকারীদের তৎপরতা বেশি পরিলক্ষিত হয়। রাজধানীবাসী এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্ত হতে রাজধানীতে আগত যাত্রীরা যেন নিরাপদে ঈদের কেনাকাটা করে নির্বিঘেœ ও স্বস্তির সাথে বাড়ি ফিরে যেতে পারেন এবং ব্যবসায়ীরা নির্ভয়ে চাঁদাবাজমুক্ত পরিবেশে ব্যবসা করতে পারেন, এ লক্ষ্য ভবিষ্যতে সকল চাঁদাবাজ ও ছিনতাইকারী চক্রের বিরুদ্ধে র‌্যাবের সাড়াঁশি অভিযান অব্যাহত থাকবে।

ধৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

রাজধানীর র‌্যাবের পৃথক ১৫ টি অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে

আপডেট টাইম : ০৯:৫৮:৪৫ পূর্বাহ্ণ, মঙ্গলবার, ১২ এপ্রিল ২০২২

সময়ের কন্ঠ রিপোর্ট।। 

র‌্যাবের পৃথক ১৫ টি অভিযানে রাজধানীর রমনা, খিলগাঁও, হাতিরঝিল, শাহজাহানপুর, পল্টন, মতিঝিল, শাহবাগ ও ওয়ারী এলাকা হতে সংঘবদ্ধ চাঁদাবাজ ও ছিনতাইকারী চক্রের মূলহোতাসহ ৩৩ জন চাঁদাবাজ ও ২০ জন ছিনতাইকারীসহ মোট ৫৩ জন গ্রেফতার; চাঁদাবাজির মাধ্যমে আদায়কৃত নগদ ১,৪৪,৭৩০ টাকা, মোবাইল ও ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত দেশিয় অস্ত্র উদ্ধার।

এরই ধারাবাহিকতায় গত রাতে র‌্যাব-৩ এর কয়েকটি আভিযানিক দল একযোগে রাজধানীর রমনা, খিলগাঁও, হাতিরঝিল, শাহজাহানপুর, পল্টন ও ওয়ারী এলাকা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে চাঁদাবাজ চক্রের সদস্য ১। মোঃ আওয়াল (৪৫), সাং-৯৮/৭, পশ্চিম মাদারটেক, রাজারবাগ বাসাবো, থানা-সবুজবাগ, জেলা-ঢাকা, ২। মোঃ আতিক (৩৫), সাং-আগদহখোলা, থানা-বাঘারপাড়া, জেলা-যশোর, ৩। মোঃ আলাউদ্দিন (৪৫), সাং-এখলাসপুর, থানা-মতলব, জেলা-চাঁদপুর, ৪। মোঃ ইসমাইল (৫৪), সাং-বাসা নং-২৩, কাজী আলাউদ্দিন রোড, নাজিরা বাজার, থানা-বংশাল, জেলা-ঢাকা, ৫। মোঃ জুয়েল (৪৩), সাং-মহিষেরচর, থানা-মাদরীপুর সদর, জেলা-মাদারীপুর, ৬। মোঃ দুলাল (৪৫), সাং-সৈয়দ বুস্তা, থানা-ডামুডা, জেলা-শরিয়তপুর, ৭। মোঃ বদির উদ্দিন বাবু (৫০), সাং-এখলাসপুর, থানা-মতলব, জেলা-চাঁদপুর, ৮। মোঃ বাবুল (৫২), সাং-চাচড়া, থানা-ভোলা সদর, জেলা-ভোলা, ৯। মোঃ বাবুল হাওলাদার (৪৯), সাং-রামপুর, থানা-মির্জাগঞ্জ, জেলা-পটুয়াখালী, ১০। মোঃ মোস্তফা হাওলাদার (৫০), সাং-বান্দাবাড়ী, থানা-কোটালীপাড়া, জেলা-গোপালগঞ্জ, ১১। মোঃ সাহেব আলী (৫৪), সাং-খোয়াজপুর, থানা-মাদারীপুর সদর, জেলা-মাদারীপুর, ১২। মোঃ তানভির (৪০), সাং-বাসা নং-৩, হেয়ার স্ট্রীট, থানা-ওয়ারী, জেলা-ঢাকা, ১৩। মোঃ জালাল হোসেন (৩০), সাং-পূর্ব ষোলপাড়া, থানা-দাউদকান্দি, জেলা-কুমিল্লা, ১৪। নিয়ামুল হোসেন (২৯), সাং-চর মানিকদিয়া, থানা-গোপালগঞ্জ, জেলা-গোপালগঞ্জ, ১৫। মোঃ ময়নুল হোসেন (৪৫), সাং-তাতারকান্দি, থানা-কুলিয়ারচর, জেলা-কিশোরগঞ্জ, ১৬। মিন্টু খান (২৫), সাং-লক্ষীপুর, থানা-ভান্ডারিয়া, জেলা-পিরোজপুর, ১৭। মোঃ মেনু মিয়া (৩৮), সাং-নগরবান্ধা, থানা-বাজিতপুর, জেলা-কিশোরগঞ্জ, ১৮। মোঃ রনি (৩১), সাং-জাফরপুর, থানা-চুয়াডাঙ্গা, জেলা-চুয়াডাঙ্গা, ১৯। মোঃ রানা (২৪), সাং-বনগ্রাম, থানা-ওয়ারী, জেলা-ঢাকা, ২০। মোঃ শরীফ সরকার (৩৫), সাং-নাওঘাট, থানা-আশুগঞ্জ, জেলা-বি-বাড়িয়া, ২১। মোঃ মহসীন (২৫), সাং-রাগদুল, থানা-কচুয়া, জেলা-চাদপুর, ২২। রনজিৎ দাস (৪৮), সাং-কাজী ভিলা (মুগদা থানার গলি), থানা-মুগদা, জেলা-ঢাকা, ২৩। রাসেল শিকদার (২১), সাং-খুন্না গোবিন্দপুর, থানা-হিজলা, জেলা-বরিশাল, ২৪। মোঃ হারেজ (৪৩), সাং-বুড়ারচর, থানা-কোতয়ালী, জেলা-ময়মনসিংহ, ২৫। মোঃ বাদশা (২৯), সাং-মিঠা খেয়াঘাট, থানা-মাতারহাট মেন্দীগঞ্জ, জেলা-বরিশাল, ২৬। আল আমীন সর্দার (২০), সাং-জালালপুর, থানা-শুশাইরহাট, জেলা-শরীয়তপুর, ২৭। মোঃ শহীদ (২৭), সাং-খাঁনপুর, থানা-নারায়ণগঞ্জ সদর, জেলা-নারায়ণগঞ্জ, ২৮। মোঃ রাজু (৩৫), সাং-মাঠপাড়া, থানা-মোকছেদপুর, জেলা-গোপালগঞ্জ, ২৯। মোঃ রফিক (২৫), সাং-দক্ষিণপাড়া, থানা-করিমগঞ্জ, জেলা-কিশোরগঞ্জ, ৩০। মোঃ রোমান (৪২), সাং-নারিকেল তলা, থানা-ফরিদগঞ্জ, জেলা-চাঁদপুর, ৩১। মোঃ আকবর (২০), সাং-কাওরান বাজার মোল্লা বাড়ী, থানা-তেজগাঁও, জেলা-ঢাকা, ৩২। ইমন (১৯), সাং-আলেকজান্ডার, থানা-রামগতি, জেলা-লক্ষীপুর, ৩৩। রাব্বি (১৯), থানা ও জেলা-শরীয়ত পুর, ৩৪। মোঃ হৃদয় (১৯), সাং-মহিষবাড়ী, থানা-কোতয়ালী, জেলা-ময়মনসিংহ, ৩৫। মোঃ হোসেন (১৯), সাং-কসবা, থানা-কসবা, জেলা-কুমিল্লা, ৩৬। মোঃ আল আমিন (২২), সাং-শফিপুর, থানা-মুলাদি, জেলা- বরিশাল , ৩৭। মোঃ ইসমাইল হোসেন (২২), সাং-রাখিল কান্দি, থানা-মুন্সিগঞ্জ, জেলা-মুন্সিগঞ্জ, ৩৮। নাইমুল ইসলাম মিশু (২৫), সাং-বাসাবো ওহাব কলোনী, থানা-সবুজবাগ, জেলা-ঢাকা, ৩৯। মোঃ নুরুল হক (২৫), সাং-৭৮/বাসাবো, থানা-সবুজবাগ, জেলা-ঢাকা, ৪০। মোঃ রতন (২২), সাং-মুক্তিনগর, থানা-মেঘনা, জেলা-কুমিল্লা, ৪১। রাব্বি (১৯), সাং-চরকান্দি, থানা-দাউদকান্দি, জেলা-কুমিল্লা, ৪২। মোঃ শফিকুল ইসলাম (২৪), সাং-কাঠালিয়া, থানা-কাঠালিয়া, জেলা-ঝালকাঠি, ৪৩। মোঃ সাগর হোসেন শামীম (২০), সাং-২০২/১ দক্ষিণবাসাবো, থানা-সবুজবাগ, জেলা-ঢাকা, ৪৪। উজ্জল মিয়া (২০), সাং-সওদাগর কান্দি, থানা- রায়পুরা, জেলা-নরসিংদী, ৪৫। মোঃ আক্কাছ (৫০), সাং-১৭ ভিতরবাড়ী লেন নবাবপুর, থানা- বংশাল, জেলা-ঢাকা, ৪৬। মোঃ ইউছুফ (৩২), সাং-দরবেশপুর, থানা-রামগঞ্জ, জেলা-লক্ষীপুর, ৪৭। মোঃ জাহিদ (৪৪), সাং-১৮১ লালমোহন সাহা স্ট্রীট নারিন্দা, থানা-ওয়ারী, জেলা-ঢাকা, ৪৮। মুন্সি মুছা আহমেদ (৫২), সাং-বাঘমারা, থানা-নবাবগঞ্জ, জেলা-ঢাকা, ৪৯। মোঃ রবিন মিয়া (৩২), সাং-২৩ বাসা-লালচান মুকিন লেন, থানা-ওয়ারী, জেলা-ঢাকা, ৫০। মোঃ সাগর (২৭), সাং-তর্কি, থানা-গৌরনদী, জেলা-বরিশাল, ৫১। মোঃ সুজন (৪৫), সাং-পাঙ্গাশিয়া, থানা-ধুমকী, জেলা-পটুয়াখালী, ৫২। মোঃ সোহাগ মৃধা (৩২), সাং-দক্ষিন রাঙ্গামালিয়া, থানা-মিরাজদীখান, জেলা-মুন্সিগঞ্জ এবং ৫৩। সোহেল সরকার (৩১), সাং-নৌঘাট, থানা-আশুগঞ্জ, জেলা-ব্রাহ্মণবাড়ীয়াদেরকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতারকালে উক্ত আসামীদের নিকট হতে চাঁদাবাজির মাধ্যমে আদায়কৃত ১,৪৪,৭৩০ টাকা, ৬০ টি মোবাইলফোন ও ৪৫টি দেশিয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামীরা তাদের অপরাধের বিষয়টি স্বীকার করে এবং দীর্ঘদিন যাবৎ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার সবজি ও ফলের দোকান, ফুটপাতের অস্থায়ী দোকান, লেগুনা স্ট্যান্ড এবং মালবাহী গাড়ী হতে অবৈধভাবে জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করে আসছে বলে জানায়। তারা আরও জানায় যে, রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমান দোকানসমূহের মালিকদেরকে ভয়ভীতি দেখিয়ে আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রত্যেক দোকানদারদের নিকট হতে তারা দৈনিক ৫০০-১০০০ টাকা হারে চাঁদা আদায় করে আসছে।

ওয়ারী থানাধীন কাপ্তান বাজারে চাঁদাবাজি শুরু হয় মূলত রাত ১২ টার পর থেকে ভোররাত পর্যন্ত। পোল্ট্রি মুরগী বহনকারী কোন গাড়ি এই বাজারে প্রবেশ করার সাথে সাথেই গাড়ির ধরন ও মুরগীর পরিমান এর উপর নির্ভর করে চাঁদার পরিমান ঠিক করে দেয়া হয় এবং জোরপূর্বক তা আদায় করা হয়। কেউ যদি চাঁদা না দেয় তাহলে তাকে নানাভাবে হয়রানি করার উদ্দেশ্যে গাড়ির মালামাল আনলোড/বিক্রিতে ইচ্ছাকৃতভাবে বিঘœ সৃষ্টি করা হত। তাছাড়াও যেসব গাড়িতে তুলনামূলকভাবে ছোট/অসুস্থ/মৃত মুরগী পাওয়া যায় তাদেরকে বেশি চাঁদা দিতে হয়। প্রতিরাতে এখান থেকে কয়েক লক্ষ টাকা চাঁদা সংগ্রহ করা হয়।

রমনা থানাধীন শান্তিনগরে মূলত রাস্তার ধারে ভাসমান দোকান থেকে নির্দিষ্ট হারে প্রতিদিন চাঁদা আদায় করা হয়। সকাল ও বিকাল দুই শিফটে চাঁদা আদায় করা হয়। এই কাজে ৪/৫ জনের একটি গ্রæপ জড়িত। প্রতিদিন এখান থেকে প্রায় লক্ষাধিক টাকা উত্তোলন করা হয়।

চাঁদার টাকা না দিলে ধৃত আসামীগণ নিরীহ দোকানদারদেরকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি প্রদান করে এবং তাদের হাতে থাকা লাঠি দিয়ে মার পিট করে। তাদের কথা মত কেউ চাঁদার টাকা না দিলে দোকান বসতে দেওয়া হবে না মর্মে দোকানদারদের হুমকি দেয়া হয়। লেগুনা স্ট্যান্ডে তাদের কথা মত কেউ চাঁদার টাকা না দিলে এই রূটে কোন লেগুনা চলতে দেওয়া হবে না মর্মে হুমকি প্রদান করে। তখন লেগুনা চালকরা পেটের দায়ে বিনা প্রতিবাদে চাঁদা পরিশোধ করতে বাধ্য হয়। এ সকল চাঁদাবাজদের আইনের আওতায় আনার ফলে নিরীহ দোকানদার ও লেগুনা চালকদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে।

পবিত্র মাহে রমজান এবং ঈদুল ফিতরকে লক্ষ্য করে সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারীরা রাজধানীর বিভিন্ন অলি-গলিতে ওৎপেতে থাকে। সুযোগ পাওয়া মাত্রই তারা পথচারী, রিকশা আরোহী, যানজটে থাকা সিএনজি, অটোরিকশার যাত্রীদের ধারালো অস্ত্র প্রদর্শন করে সর্বস্ব লুটে নিত। ইফতারের সময় এবং সেহেরির পর তুলনামূলক জনশূন্য রাস্তায় ছিনতাইকারীরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে। তাদের ছিনতাইকাজে বাধা দিলে তারা নিরীহ পথচারীদের প্রাণঘাতী আঘাত করতে দ্বিধা বোধ করেনা। খিলগাঁও মালিবাগ রেইল গেইট, দৈনিক বাংলা মোড়, পীরজঙ্গি মাজার ক্রসিং, কমলাপুর বটতলা, মতিঝিল কালভার্ট রোড, নাসিরের টেক হাতিরঝিল, শাহবাগ, গুলবাগ, রাজউক ক্রসিং, ইউবিএল ক্রসিং পল্টন মোড়, গোলাপ শাহ’র মাজার ক্রসিং, হাইকোর্ট ক্রসিং, আব্দুল গণি রোড, মানিকনগর স্টেডিয়ামের সামনে, নন্দীপাড়া ব্রিজ, বাসাবো ক্রসিং এলাকায় সন্ধ্যা হতে ভোর রাত পর্যন্ত ছিনতাইকারীদের তৎপরতা বেশি পরিলক্ষিত হয়। রাজধানীবাসী এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্ত হতে রাজধানীতে আগত যাত্রীরা যেন নিরাপদে ঈদের কেনাকাটা করে নির্বিঘেœ ও স্বস্তির সাথে বাড়ি ফিরে যেতে পারেন এবং ব্যবসায়ীরা নির্ভয়ে চাঁদাবাজমুক্ত পরিবেশে ব্যবসা করতে পারেন, এ লক্ষ্য ভবিষ্যতে সকল চাঁদাবাজ ও ছিনতাইকারী চক্রের বিরুদ্ধে র‌্যাবের সাড়াঁশি অভিযান অব্যাহত থাকবে।

ধৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।