দৌলতপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কে ধ্বংস করার পায়তারা।
- আপডেট টাইম : ০৫:২২:২৭ অপরাহ্ণ, শনিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২১
- / ২৪৫ ৫০০০.০ বার পাঠক
মোঃ জাহাঙ্গীর আলম
নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর বিভাগ।।
দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়ি উপজেলার ৬নং দৌলতপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ৭৫ পরবর্তী সময় থেকে জীর্ণ শীর্ণ অবস্থায় গুটিকয়েক নেতা কর্মীর সমন্বয়ে তৎকালীন ক্ষমতাশীন দলের ভয়ে গোপনে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ কমিটি করে দলিয় কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল। বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আসলে ধীরে ধীরে দলের অবস্থা পরিবর্তন হতে থাকলে দৌলতপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগও ক্রমশ উজ্জীবিত হতে থাকে এবং পর্যায়ক্রমে কমিটি শক্তিশালী হতে থাকে। একপর্যায়ে ১৯৯৬ সালে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে দৌলতপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ অনেকটায় শক্তিশালী হয়। সেই সময় পরিলক্ষিত হয় তৎকালীন বিএনপি,জামাত ও জাতীয় পার্টির অনেক সুবিধালোভী লোকজন দৌলতপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের পতাকাতলে এসে আশ্রয় নেয়।
২০১০ সালে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন আসলে দৌলতপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালিকায় উড়ে এসে জুড়ে বসে আঃ আজিজ মন্ডল (মাস্টার) এবং দৌলতপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সহ ফুলবাড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিভিন্নভাবে মন জয় করে দলিয় সমর্থন আদায় করে প্রার্থীতাই চুড়ান্ত হোন। সেই সময় দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদে বিএনপি সমর্থিত চেয়ারম্যানের সেচ্ছাচারিতা ও দলিয় এবং আত্বীয়করনের কারনে ইউনিয়নের আপামর জনসাধারণ আঃ আজিজ মন্ডল কে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেন। সেই থেকে ইউনিয়নে শুরু হয় চেয়ারম্যানের দৌরাত্মপুর্ন শাসন। অনেক চড়াই উৎরাই পার করে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ । পরবর্তীতে ২০১৬ সালে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে জাতীয় প্রতিক বরাদ্দ হলে চেয়ারম্যান আঃ আজিজ মন্ডল আবারও দলিয়ভাবে নৌকা প্রতিক বরাদ্দ পেয়ে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী মনোনীত হোন। দৌলতপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ পড়ে বেকায়দায়। একদিকে দলিয় চেয়ারম্যানের সেচ্ছাচারিতা অন্যদিকে জাতীয় প্রতিক নৌকার সম্মান রক্ষা। কোনদিকে অবস্থান নিবে দৌলতপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ। নেতা কর্মীদের অবমুল্যায়ন ও সেচ্ছাচারিতা ভুলে গিয়ে দৌলতপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, সমর্থকগন আওয়ামী লীগ ও নৌকার সম্মান রক্ষার্থে ঝাঁপিয়ে পড়ে নির্বাচনে এবং নৌকার বিজয় ছিনিয়ে এনে দলকে নৌকা প্রতিকের চেয়ারম্যান উপহার দেন। নৌকা প্রতিকের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবার পর দৌলতপুর ইউনিয়ন কে জিম্মিদশায় ফেলা শুরু করেন। শুরু হয় ইউনিয়নে একছত্র শাষন ও শোষন। যেমন, বিচারের নামে প্রহসন করে অর্থগ্রহন,সরকার কর্তৃক প্রদানকৃত হতদরিদ্র মানুষের সহায়তায় কার্ড নির্ধারণে অর্থ গ্রহণ, বয়স্ক ভাতা,বিধবা ভাতা,স্বামী পরিত্যাক্ত ভাতা,প্রতিবন্ধি ভাতা, মাতৃত্বকালিন ভাতার জন্য তালিকা নির্ধারণে অর্থ গ্রহণ সহ গৃহহীনদের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার দেয়া ঘর প্রদানে অর্থ গ্রহণ ইত্যাদি। এছাড়াও ইউনিয়নে ট্যাক্স আদায়ে জন্য বহিরাগত লোক এনে অতিরিক্তহারে ট্যাক্স আদায় করা বাদ রাখেননি তিনি। যার কারনে ৬ নং দৌলতপুর ইউনিয়নবাসি ফুলবাড়ি উপজেলা গেটে এমন জুলুমের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। আওয়ামীলীগের সমর্থন পেয়ে নৌকা প্রতিক নিয়ে নির্বাচিত হয়ে দুর্দিনের দলিয় নেতাকর্মী, ভক্ত, সমর্থক গনকে সুকৌশলে দলের বাহিরে রেখে বিএনপি জামাতের সুজোগ সন্ধানী হাইব্রিড প্রকৃতির লোকজনকে টেনে এনে দৌলতপুর ইউনিয়নে নিজ স্বার্থ হাসিলের জন্য ব্যক্তিলীগ গঠন ও প্রতিষ্ঠিত করার অকৌশল শুরু করেন। এমনকি তার মুখে শোনা গেছে, ( হাসিনা ও ফিজারের নৌকায় ভোট দিলে দিবি না দিলে না দিবি, তুই আমার সঙ্গে থাক আর শুধু আমার মার্কায় ভোট দিস আর আমার দল ভারি কর) । তার কাছে দলিয় নেতা কর্মীগন সব সময় তিরস্কার ও ভৎসনার পাত্র হয়েছে। এমন কি ফুলবাড়ি পার্বতীপুরের মাটি ও মানুষের নেতা সাবেক সফল মন্ত্রী এ্যাডঃ মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার এমপি মহদয়কে ও তার পরিবারকে নিয়েও কটুক্তি করতে বাদ দেননি তিনি। সর্বশেষ ২০২১ সালে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন আসলে তিনি আবারও দলিয় মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেন এবং ২৮শে নভেম্বর নির্বাচনে দৌলতপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সন্পাদক সতন্ত্রপ্রার্থী সাইফুল ইসলামের নিকট ১১৫৪ ভোটে পরাজিত হোন। পরাজিত হয়ে তিনি শুরু করেন দলকে নিয়ে আবারও নতুন চক্রান্ত ও অপকৌশল। দলিয় নিয়মনিতি কে তোয়াক্কা না করে তারপ্রতি সমর্থিত ব্যক্তিলীগের কিছু লোকজনকে নিয়ে আওয়ামীলীগের নামকরে এবার শুরু করেছেন অপরাজনীতি। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটির নেতাকর্মীদের কে বাদ দিয়ে ব্যক্তিলীগের লোকজনকে নিয়ে মিটিং করতে দেখা যাচ্ছে এবং বিভিন্ন প্রকার উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রদান করতে দেখা যাচ্ছে । শুরু হয়েছে নতুন চক্রান্ত, যতদোষ নন্দঘোঁস, নিজের কর্মদোষে দোষী হয়ে প্রতিনিধিত্ব হারায়ে অন্যের উপর দোষ চাপানোর অপচেষ্টা। বর্তমানে সেই সাবেক চেয়ারম্যান দোষ দেয়া শুরু করেছেন মাননীয় এম,পি মহদয় সহ দলের অন্যান্য নেতাদের প্রতি। ইউনিয়নবাসির নিকট প্রত্যাখ্যাত হয়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের মাঝে বিভক্তি সৃষ্টি করে দলিয় শীর্ষ পদটি কব্জা করার স্বপ্ন দেখছেন। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা কর্মী গন ভালকরেই যানে কার নীতিনৈতিকতা ও বৈশিষ্ট্য কেমন। বিগত দশ এগারো বৎসরে ইউনিয়নের সাধারন জনগন সবাইকে পরিমাপ করতে পেরেছেন। এখনি এই অপরাজনীতি ও চক্রান্তকে প্রতিহতো না করতে পারলে দৌলতপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের মধ্যে দ্বিধাবিভক্তি, কোন্দল আরো বড় আকার ধারন করার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই আওয়ামী লীগের সকল নেতাকর্মীগনকে সুসংগঠিত হয়ে ঐ ব্যক্তিলীগের পরাজিত অপশক্তি কে প্রতিহত করতে হবে। নচেৎ আগামী জাতীয় নির্বাচনে এর প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে (চলবে)