মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীতেএকাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির মাসব্যাপী অনুষ্ঠান চট্রগ্রাম থেকে শুরু করা হয়েছে।
- আপডেট টাইম : ০৫:৫৬:৫৬ পূর্বাহ্ণ, শুক্রবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২১
- / ৩১৩ ৫০০০.০ বার পাঠক
বিভাগীয় ব্যুরো প্রধান চট্রগ্রামঃ
মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ‘একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি’র মাসব্যাপী অনুষ্ঠানসূচি ১ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম থেকে আরম্ভ হয়েছে।
সংগঠনের চট্টগ্রাম শাখার উদ্যোগে আয়োজিত ‘বাঙালির অবিস্মরণীয় বিজয়’ শীর্ষক ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ-এর প্রেসিডিয়াম সদস্য ও প্রাক্তন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রী, মুক্তিযুদ্ধে ক্র্যাক প্ল্যাটুনের অধিনায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম এবং প্রধান বক্তা ছিলেন নির্মূল কমিটির সভাপতি লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির।
ভারত থেকে সংযুক্ত হয়ে ওয়েবিনারের শুরুতে আবৃত্তি করেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আবৃত্তি শিল্পী ও গবেষক Daliya Basu Saha ।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রামের বিভাগীয় সমন্বয়কারী লেখক-সাংবাদিক
শওকত বাঙালি ‘র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওয়েবিনারে আলোচক ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক আবেদ খান, নির্মূল কমিটির সহ-সভাপতি শিক্ষাবিদ মমতাজ লতিফ, মানবাধিকার নেত্রী মুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া কবির, মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর Hasina Zakaria বেলা, চট্টগ্রাম মহানগর কমাণ্ডার মোজাফফর আহমেদ, প্রজন্ম ’৭১-এর সভাপতি শহীদ অধ্যাপক মুনীর চৌধুরীর পুত্র Asif Munier তন্ময়, নির্মূল কমিটির চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি পেশাজীবী নেতা প্রকৌশলী Delwar Majumder, সহ-মহিলা বিষয়ক সম্পাদক সমাজকর্মী সুচিত্রা গুহ টুম্পা প্রমুখ।
অন্যদের মধ্যে ওয়েবিনারে সংযুক্ত ছিলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক Kazi Mukul, কেন্দ্রীয় নেতা Rubel Saiff, Shimon Baskey, প্রফেসর ড. Ala Uddin, চট্টগ্রাম জেলা কার্যকরী সাধারণ সম্পাদক Olid Chowdhury, জেলা নেতা আবু সাদাত মোঃ সায়েম রাজীব চৌধুরী রাজু, Rubel Chowdhury, Rtr Sahab Uddin, MD Akter Hossain, এস এম ইমরান হোসেন, Mohammad Jamshedul Islam Chowdhury,
Center For Bangladesh India Friendship চেয়ারম্যান Shubhashish Somadder, নাট্যজন অশোক বড়ুয়া, আইটি বিশেষজ্ঞ Suvra Dev Kar, তরুণ লেখক Rajibul Hasan প্রমুখ।
প্রধান বক্তার ভাষণে লেখক-সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লক্ষ শহীদ এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে বলেন, ‘বাঙালি জাতির লিখিত অলিখিত ইতিহাসের মহত্তম অর্জন হচ্ছে ১৯৭১ রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। স্বাধীনতার জন্য এদেশের মানুষ যে চরম মূল্য দিয়েছে বিশ্বের অন্য কোনও জাতিকে তা দিতে হয়নি। মুক্তিযুদ্ধকালে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী এবং তাদের এদেশীয় মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক দোসররা ইসলাম ও পাকিস্তান রক্ষার কথা বলে স্মরণকালের নৃশংসতম গণহত্যা ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটিত করেছিল। মুক্তিযুদ্ধে অবিস্মরণীয় বিজয়ের এক বছরেরও কম সময়ে বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর সহযোগীরা আমাদের উপহার দিয়েছিলেন বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সংবিধান; যেখানে গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও জাতীয়তাবাদকে রাষ্ট্রের চার মূলনীতি হিসেবে গ্রহণের পাশাপাশি তাঁরা ধর্মের নামে রাজনীতি নিষিদ্ধ
করেছিলেন, ধর্মের নামে হত্যা সন্ত্রাস ও নির্যাতন বন্ধের পাশাপাশি ধর্মের পবিত্রতা রক্ষার জন্য। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু এবং তার প্রধান সহযোগীদের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জেনারেল জিয়া সংবিধান থেকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও চেতনা মুছে ফেলার পাশাপাশি ধর্মের নামে রাজনীতি, হত্যা ও সন্ত্রাসের যে বিষবৃক্ষের চারা রোপণ করেছিলেন, তার বিষফল আজও আমাদের ভোগ করতে হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনকালে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিনাশী অপশক্তিকে বাংলার মাটি থেকে চিরতরে নির্মূল করার শপথ নিতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শের ধর্মনিরপেক্ষ মানবিক রাষ্ট্র ও সমাজ প্রতিষ্ঠা না করা পর্যন্ত আমাদের বিজয় অসম্পূর্ণ থেকে যাবে।’
শাহরিয়ার কবির আরও বলেন, ‘যে মুক্তিযোদ্ধাদের মরণপণ যুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে শোচনীয়ভাবে পরাজিত করে আমরা বিজয় অর্জন করেছি, সেই মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি রাষ্ট্রীয়ভাবে শ্রদ্ধা জানাবার জন্য ১ ডিসেম্বর ‘জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা দিবস’ ঘোষণার জন্য নির্মূল কমিটি এবং মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকরা দীর্ঘকাল ধরে দাবি করছেন। মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনকালে আজও এই দাবি পুনর্ব্যক্ত করছি।’
প্রধান অতিথির ভাষণে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ-এর প্রেসিডিয়াম সদস্য ও প্রাক্তন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রী মুক্তিযুদ্ধে ক্র্যাক প্ল্যাটুনের অধিনায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম বলেন, ‘ডিসেম্বর মাস যেমন আনন্দের মাস তেমনি বেদনারও মাস। ১৯৭১-এর ডিসেম্বরে আমরা যেমন বিজয় অর্জন করেছি তেমনি হারিয়েছি আমাদের সূর্যসন্তান ও বুদ্ধিজীবীদের।’
পহেলা ডিসেম্বরকে মুক্তিযোদ্ধা দিবস হিসেবে ঘোষণা করার জন্য একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম অধিনায়ক মায়া আরো বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধারা কখনো মারা যান না। তাদের অর্জন কখনো ম্লান হতে পারে না। বাংলাদেশের বিজয় ৫০ বছর অতিক্রম করলেও এই পুরো সময়টি বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা স্বপক্ষের মানুষেরা স্বাধীন ছিল না। কেননা, গত ৫০ বছরে অধিকাংশ সময় স্বাধীনতার বিরোধী চক্র বাংলাদেশের ক্ষমতায় ছিল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ’৭১-এর ঘাতক দালালদের বিচার করে আজ বাংলাদেশকে সঠিক পথে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন। আমরা বঙ্গবন্ধুর কন্যার সঙ্গে আছি।’
নির্মূল কমিটি ও উপস্থিত সকল বক্তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বরেণ্য মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক আবেদ খান বলেন, ‘পহেলা ডিসেম্বর আমাদের নতুন করে একাত্তরকে মনে করিয়ে দেয়। আমরা একাত্তরের পরাজিত শক্তি রাজাকার আলবদরদের আর ক্ষমতায় দেখতে চাই না। একাত্তরের পরাজিত শক্তিরা সবসময় সংগঠিত হয়ে ক্ষমতায় আসতে চায়। তাদের সেই অপচেষ্টাকে আমাদের যেকোনো কিছুর বিনিময়ে রুখতে হবে। যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে