পাথরঘাটায় শ্রেণিকক্ষে স্বপরিবারে বসবাস করছেন প্রধান শিক্ষক, ছাত্রীদের টয়লেটিও রয়েছে তার দখলে।
- আপডেট টাইম : ০৫:২৪:৪৯ পূর্বাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১
- / ২৬৭ ৫০০০.০ বার পাঠক
নুরুল আমিন মিল্টন বরগুনা থেকে।
বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়া ইউনিয়নের জালিয়াঘাটা এস ইএস ডিপি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের তিনটি শ্রেণিকক্ষ ও ছাত্রীদের একমাত্র টয়লেটি দখল করে স্বপরিবারে বসবাস করার অভিযোগ উঠেছে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ফেরদৌসের বিরুদ্ধে। অভিযোগের ভিত্তিতে রোববার বিকেলে গনমাধ্যমকর্মীরা সংবাদ সংগ্রহে গেলে তাদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে চলে যেতে বলেন। এছাড়াও তিনি সব কিছু ম্যানেজ করেই ৬ বছর ধরে ওই শ্রেণী কক্ষগুলো ব্যাবহার করছেন বলে জানিয়ে বলেন, বিষয়টি নিয়ে অন্য সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেছি।
সরেজমিনে গিয়ে ও স্থানীয়দের থেকে জানা যায়, ৩ তলা বিশিষ্ট ওই বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় তলার পশ্চিম পাশের ৩ টি শ্রেণিকক্ষ ও বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের ব্যবহৃত টয়লেটটি দখলে নিয়ে স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে দীর্ঘ ৬ বছর ধরে বসবাস করছেন প্রধান শিক্ষক মো. ফেরদৌস। ওই ৩টি শ্রেণীর কক্ষের বেঞ্চ একত্রিত করে বানিয়েছেন খাট এবং কিছু বেঞ্চ একত্রিত করে রেখেছেন অন্যান্য মালামাল। রান্নার জন্যে বারান্দার এক কোনে চুলা বসিয়ে তাতে বেড়া দিয়েছেন ২৬ মার্চের স্বাধীনতা দিবস ও ১৫ই আগস্টের শোক দিবসের বঙ্গবন্ধুর ছবি সম্বলিত ব্যানার দিয়ে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনী ২ শিক্ষার্থী ও ষষ্ঠ শ্রেণীর ২ শিক্ষার্থী জানান, দীর্ঘদিন ধরে স্যার আমাদের শ্রেণি কক্ষগুলো আটকিয়ে তার স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে থাকছেন। ছাত্রীদের একমাত্র টয়লেটটি দখলে নিয়েছে। একারণে ছাত্রীরা ছেলেদের টয়লেট ব্যাবহার করছেন। কিছু বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করার হুমকি দেয় বলেও জানান শিক্ষার্থীরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক জানান, দীর্ঘদিন ধরেই তিনি শ্রেণী কক্ষগুলো দখল করে বসবাস করছেন। তিনি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেই এগুলো করেছেন বলেও জানান তারা।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ফেরদৌস শ্রেণি কক্ষ দখলের কথা স্বীকার করে জানান, আমি সব কিছু ম্যানেজ করেই ৬ বছর ধরে বসবাস করে আসছি আপনারা নিউজ করে যা করার করেন, দেখি আমার কি হয়। বঙ্গবন্ধুর ছবি সম্বলিত ব্যানার দিয়ে রান্না ঘরের বেড়া দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি তা অস্বীকার করে ভিতরে গিয়ে সেগুলো সরিয়ে ফেলেন। যার ভিডিও চিত্র সাংবাদিকদের মুঠোফোনে ধারণ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বরগুনা জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে (ভারপ্রাপ্ত) শাহাদাৎ হোসেন বলেন, আমি জানি উনি বাসা নিয়ে থাকেন। তবে বিদ্যালয়ের রুম দখল করে থাকেন সেটা জানতাম না। এবিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে বলেছি। তাকে সরেজমিনে গিয়ে খোঁজ নিয়ে দেখতে বলা হয়েছে।
পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসাইন মোহাম্মাদ আল মুজাহিদ জানান, বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের শ্রেণী কক্ষ দখল করে পরিবার নিয়ে থাকার কোন সুযোগ নেই। এ বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত ছিলাম না। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে বিষয়টি দেখার জন্য বলা হয়েছে।