ঢাকা ০১:০৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
বাঘায় সৎ ভাইয়ের হাতে হত্যা হলো সাদেক আলী সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে নিরাপদ জায়গায় রূপান্তরের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে: আসিফ মাহমুদ ঠাকুরগাঁওয়ে কার্যক্রম নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামীলীগের পার্টি অফিস দখল আজমিরীগঞ্জে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্রকরে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে নারী পুরুষসহ ৪০ জন আহত, বাড়ি-ঘর ও দোকানপাট ভাঙচুর ও লোটপাট। সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে এই প্রথমবারের মতো আজ নিজ জেলা চট্টগ্রামে আসলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস কোনাবাড়ী ফ্লাইওভার ব্রিজের মাথায় বাসের ধাক্কায় নারী শ্রমিক নিহত কর্নেল সোফিয়াকে ‘জঙ্গিদের বোন’ বলে বিতর্কের মুখে বিজেপি মন্ত্রী কালুরঘাট সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন, নেই প্রধান উপদেষ্টার নাম আওয়ামী লীগসহ সংশ্লিষ্ট সংগঠনের সব অনলাইন প্ল্যাটফর্ম বন্ধে বিটিআরসিকে চিঠি ঢাবির ছাত্রদল নেতা হত্যার ঘটনায় উপাচার্য–প্রক্টরের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লার ভূমিকা অনস্বীকার্য – আলোচনায় বক্তারা

নিজস্ব সংবাদদাতা:
  • আপডেট টাইম : ০১:৪৮:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ অগাস্ট ২০২১
  • / ২৮৪ ১৫০০০.০ বার পাঠক
সময়ের কন্ঠ রিপোর্ট।।

বিংশ শতাব্দীর বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, সুফি-সাধক, সমাজ-সংস্কারক খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা ১৮৯৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনশাস্ত্রে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। তারপর দীর্ঘ ৩৪ বছর তিনি শিক্ষাদান ও শিক্ষা-সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রেখে বাংলার পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে শিক্ষায় বিশেষ করে ইংরেজি শিক্ষায় আগ্রহী করে তুলতে সচেষ্ট থাকেন। তাঁরই ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে বেশ কিছু শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে।
১৯১৪ সালের পর থেকে ১৯২৮ সাল পর্যন্ত তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট, সিন্ডিকেট, গুরুত্বপূর্ণ অন্যান্য কমিটি ও কাউন্সিলের সদস্য ছিলেন। তিনি ১৯১২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্কিম প্রণয়নের জন্য গঠিত নাথান কমিটির একটি গুরুত্বপূর্ণ সাব-কমিটির সদস্য মনোনীত হয়েছিলেন।
পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খসড়া বিল ১৯১৯ বিবেচনার জন্য ৯ সদস্যবিশিষ্ট কমিটিতে খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা একমাত্র বাঙালি মুসলমান সদস্য হিসেবে মনোনীত হন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যকারিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে তার জোরালো যুক্তি উপস্থাপন করেন।
খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (র:) সম্পর্কে এই বিষয়গুলোই উঠে আসে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য সেক্টরের উদ্যোগে আয়োজিত সরাসরি সম্প্রচারিত আলোচনা অনুষ্ঠান ‘করোনা সংলাপ’-এ। ৪ আগস্ট সন্ধ্যায় ফেসবুক ও ইউটিউবে প্রচারিত ‘করোনা সংলাপ’ (পর্ব-৩০) শিরোনামের এই লাইভ অনুষ্ঠানের বিষয় ছিল ‘অবিভক্ত বাংলার অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর শিক্ষা বিস্তার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (র:) এর ভূমিকা’। এতে আলোচক হিসেবে ছিলেন বিশিষ্ট চিন্তাবিদ ও লেখক ড. সলিমুল্লাহ খান ও ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ, সাবেক সচিব, এনবিআর এর চেয়ারম্যান ও গবেষক। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য ও ওয়াশ সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদ।
এসময় খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লাকে বাঙালি মুসলমানদের নব জাগরণের পথিকৃত বলেন ড. সলিমুল্লাহ খান। তিনি বলেন, শিক্ষার প্রসারে খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লার ভূমিকা ছিল অনস্বীকার্য। বিশেষ করে বাঙালির মাতৃভাষা বাংলাকে খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা কেবল ধারণই করেননি, বরং তিনি তার সাহিত্য চর্চার মাধ্যমেও তা প্রকাশ করেছেন। খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লার সময়ের অনেক মুসলিম সাহিত্যিকগণ বাংলায় সাহিত্য চর্চা করতেন না। উর্দুর প্রচলন ছিল বেশি। কিন্তু খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা প্রাঞ্জল বাংলায় সাহিত্য চর্চা করেছেন। এটি তার বড় মনেরই পরিচায়ক।
ড. মো. আবদুল মজিদ বলেন, বঙ্গভঙ্গ রদ হওয়ার প্রেক্ষাপটে পূর্ববঙ্গের জনগণের সার্বিক উন্নয়ন দাবি-দাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ভারতে ব্রিটিশ সরকার ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের ঐতিহাসিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে। তবে তা বাস্তবায়নের বিভিন্ন পর্যায়ে বাধাদান ও বিশ্ববিদ্যালয়টি যাতে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে নানান প্রতিবন্ধকতার শিকার হয়ে পূর্ববঙ্গের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর সম্প্রদায়ের জন্য কল্যাণবহ না হতে পারে, সে ব্যাপারে সকল প্রকার ষড়যন্ত্রের মুখে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিনির্ধারণী পর্ষদসমূহের একমাত্র পূর্ববঙ্গীয় মুসলমান সদস্য হিসেবে খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা অবিসংবাদিত ভূমিকা পালন করেছিলেন। ভাবীকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করেই পূর্ববঙ্গের জনগণ আর্থসামাজিক, রাজনৈতিক অধিকার সচেতন হয়, মাতৃভাষা বাংলার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি লাভ এবং স্বাধিকার থেকে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সফল হয়।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লার ভূমিকা অনস্বীকার্য – আলোচনায় বক্তারা

আপডেট টাইম : ০১:৪৮:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ অগাস্ট ২০২১
সময়ের কন্ঠ রিপোর্ট।।

বিংশ শতাব্দীর বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, সুফি-সাধক, সমাজ-সংস্কারক খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা ১৮৯৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনশাস্ত্রে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। তারপর দীর্ঘ ৩৪ বছর তিনি শিক্ষাদান ও শিক্ষা-সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রেখে বাংলার পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে শিক্ষায় বিশেষ করে ইংরেজি শিক্ষায় আগ্রহী করে তুলতে সচেষ্ট থাকেন। তাঁরই ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে বেশ কিছু শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে।
১৯১৪ সালের পর থেকে ১৯২৮ সাল পর্যন্ত তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট, সিন্ডিকেট, গুরুত্বপূর্ণ অন্যান্য কমিটি ও কাউন্সিলের সদস্য ছিলেন। তিনি ১৯১২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্কিম প্রণয়নের জন্য গঠিত নাথান কমিটির একটি গুরুত্বপূর্ণ সাব-কমিটির সদস্য মনোনীত হয়েছিলেন।
পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খসড়া বিল ১৯১৯ বিবেচনার জন্য ৯ সদস্যবিশিষ্ট কমিটিতে খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা একমাত্র বাঙালি মুসলমান সদস্য হিসেবে মনোনীত হন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যকারিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে তার জোরালো যুক্তি উপস্থাপন করেন।
খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (র:) সম্পর্কে এই বিষয়গুলোই উঠে আসে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য সেক্টরের উদ্যোগে আয়োজিত সরাসরি সম্প্রচারিত আলোচনা অনুষ্ঠান ‘করোনা সংলাপ’-এ। ৪ আগস্ট সন্ধ্যায় ফেসবুক ও ইউটিউবে প্রচারিত ‘করোনা সংলাপ’ (পর্ব-৩০) শিরোনামের এই লাইভ অনুষ্ঠানের বিষয় ছিল ‘অবিভক্ত বাংলার অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর শিক্ষা বিস্তার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (র:) এর ভূমিকা’। এতে আলোচক হিসেবে ছিলেন বিশিষ্ট চিন্তাবিদ ও লেখক ড. সলিমুল্লাহ খান ও ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ, সাবেক সচিব, এনবিআর এর চেয়ারম্যান ও গবেষক। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য ও ওয়াশ সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদ।
এসময় খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লাকে বাঙালি মুসলমানদের নব জাগরণের পথিকৃত বলেন ড. সলিমুল্লাহ খান। তিনি বলেন, শিক্ষার প্রসারে খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লার ভূমিকা ছিল অনস্বীকার্য। বিশেষ করে বাঙালির মাতৃভাষা বাংলাকে খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা কেবল ধারণই করেননি, বরং তিনি তার সাহিত্য চর্চার মাধ্যমেও তা প্রকাশ করেছেন। খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লার সময়ের অনেক মুসলিম সাহিত্যিকগণ বাংলায় সাহিত্য চর্চা করতেন না। উর্দুর প্রচলন ছিল বেশি। কিন্তু খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা প্রাঞ্জল বাংলায় সাহিত্য চর্চা করেছেন। এটি তার বড় মনেরই পরিচায়ক।
ড. মো. আবদুল মজিদ বলেন, বঙ্গভঙ্গ রদ হওয়ার প্রেক্ষাপটে পূর্ববঙ্গের জনগণের সার্বিক উন্নয়ন দাবি-দাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ভারতে ব্রিটিশ সরকার ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের ঐতিহাসিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে। তবে তা বাস্তবায়নের বিভিন্ন পর্যায়ে বাধাদান ও বিশ্ববিদ্যালয়টি যাতে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে নানান প্রতিবন্ধকতার শিকার হয়ে পূর্ববঙ্গের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর সম্প্রদায়ের জন্য কল্যাণবহ না হতে পারে, সে ব্যাপারে সকল প্রকার ষড়যন্ত্রের মুখে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিনির্ধারণী পর্ষদসমূহের একমাত্র পূর্ববঙ্গীয় মুসলমান সদস্য হিসেবে খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা অবিসংবাদিত ভূমিকা পালন করেছিলেন। ভাবীকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করেই পূর্ববঙ্গের জনগণ আর্থসামাজিক, রাজনৈতিক অধিকার সচেতন হয়, মাতৃভাষা বাংলার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি লাভ এবং স্বাধিকার থেকে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সফল হয়।