ঢাকা ০২:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪

বর্ষসেরা প্রতারণায় সাহেদ, সাবরিনা ও এমপি পাপুল

সময়ের কন্ঠ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : ০৪:৩০:১৯ পূর্বাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২০
  • / ২৯৫ ৫০০০.০ বার পাঠক

সময়ের কন্ঠ রিপোর্ট।।

করোনাময় ২০২০ সালে আলোচিত চরিত্রের তালিকা করলে চোখ বন্ধ করে যে তিনটি নাম অনায়াসে বলা যায় তারা হলেন রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদ, জেকেজির চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা ও লক্ষ্মীপুর-২ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল। এ তালিকায় ওপরের দিকে স্থান পাবেন বছরের আলোচিত গাড়িচালক আবদুল মালেকও। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গাড়িচালক মালেকের অভিজাত একাধিক বাড়ি ও চোখ ধাঁধানো বাড়ির দরজাসহ শতকোটি টাকার সম্পদ দেখে যে কারো চোখ কপালে উঠবে।সাহেদের যত কাণ্ড প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের প্রকোপে মানুষ যখন জীবন নিয়ে শঙ্কায় তখন সেই ভাইরাসের পরীক্ষা নিয়েও জালিয়াতি করেন রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান সাহেদ। করোনা পরীক্ষা না করেই জাল সার্টিফিকেট দেওয়াসহ নানা অভিযোগে ১৫ জুলাই সাহেদকে সাতক্ষীরা সীমান্তের দেবহাটা থেকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করে র্যাব। এর আগে ৭ জুলাই অভিযান চালিয়ে রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুরের শাখা দুটি সিলগালা করে দেয় র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।

শুধু করোনা পরীক্ষার জাল সনদ প্রদানই নয়, গ্রেফতারের পর বেরিয়ে আসে সাহেদের বহুমুখী প্রতারণার খবর।

প্রতারণার দায়ে জেলে ডা. সাবরিনা

করোনা ভাইরাস পরীক্ষা নিয়ে জেকেজি হেলথকেয়ারের প্রতারণার ঘটনায় আলোচিত জাতীয় হূদরোগ ইনস্টিটিউটের চিকিত্সক (বর্তমানে বরখাস্তকৃত) ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরীকে পুলিশ ১২ জুলাই গ্রেপ্তার করে। করোনা ভাইরাসের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা না করেই ভুয়া প্রতিবেদন দেওয়ার অভিযোগে সাবরিনার স্বামী জেকেজি হেলথকেয়ারের সিইও আরিফুল হক চৌধুরীসহ আরো কয়েক জনকেও গ্রেফতার করা হয়। জেকেজির বিরুদ্ধে অভিযোগ, সরকারের কাছ থেকে বিনা মূল্যে নমুনা সংগ্রহের অনুমতি নিয়ে বুকিং বিডি ও হেলথকেয়ার নামে দুটি সাইটের মাধ্যমে টাকা নিচ্ছিল এবং নমুনা পরীক্ষা ছাড়াই ভুয়া সনদ দিত। এ বিষয়ে রাজধানীর কল্যাণপুরের একটি বাড়ির কেয়ারটেকারের অভিযোগের সত্যতা পেয়ে গত ২২ জুন জেকেজি হেলথকেয়ারের সাবেক গ্রাফিক ডিজাইনার হুমায়ুন কবীর হিরু ও তার স্ত্রী তানজীন পাটোয়ারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

দেশের কোনো এমপি বিদেশে গ্রেফতারের ঘটনা পাপুলই প্রথম

মানব পাচার, অর্থ পাচার ও ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের শোষণের অভিযোগে কুয়েতের কারাগারে বন্দি হয়ে সে দেশের আদালতে এখন বিচারের মুখোমুখি বাংলাদেশের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য (লক্ষ্মীপুর-২) কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল। গত ৬ জুন পাপুলকে গ্রেফতার করে কুয়েতের পুলিশ। ইতিমধ্যে সেখানে তার বিচার শুরু হয়েছে এবং জানুয়ারিতে রায় ঘোষণার কথা রয়েছে। পাপুলের আগে দেশের কোনো সংসদ সদস্য বিদেশে আটক বা গ্রেফতার হওয়ার ঘটনা ঘটেনি।

ইতিমধ্যে দেশের আদালত পাপুল ও তার স্বজনদের ৬১৭টি ব্যাংক হিসাব জব্ধ করেছে। একই সঙ্গে তাদের ৯২টি তপশীলভুক্ত সম্পত্তি ক্রোকেরও আদেশ দেওয়া হয়েছে।

গাড়িচালক মালেক যেভাবে আলোচনায়

স্বাস্থ্য অধিদফতরের গাড়িচালক আবদুল মালেক ওরফে মালেক ড্রাইভারকে ২০ সেপ্টেম্বর গ্রেফতার করে র্যাব। তার বিরুদ্ধে অবৈধ অস্ত্র দেখিয়ে ভয়ভীতি, চাঁদাবাজি, জাল টাকার ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। তার কাছ থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার জাল টাকা ও একটি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। ইতিমধ্যে শতকোটি টাকার সম্পদের সন্ধান পাওয়া গেছে মালেকের।

মালেকের স্ত্রীর নামে দক্ষিণ কামারপাড়ায় দুটি সাততলা বিলাসবহুল ভবন আছে। ধানমন্ডির হাতিরপুল এলাকায় ৪.৫ কাঠা জমিতে একটি নির্মাণাধীন ১০ তলা ভবন আছে এবং দক্ষিণ কামারপাড়ায় ১৫ কাঠা জমিতে একটি ডেইরি ফার্ম আছে। এছাড়া বিভিন্ন ব্যাংকে নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ অর্থ গচ্ছিত আছে।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

বর্ষসেরা প্রতারণায় সাহেদ, সাবরিনা ও এমপি পাপুল

আপডেট টাইম : ০৪:৩০:১৯ পূর্বাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২০

সময়ের কন্ঠ রিপোর্ট।।

করোনাময় ২০২০ সালে আলোচিত চরিত্রের তালিকা করলে চোখ বন্ধ করে যে তিনটি নাম অনায়াসে বলা যায় তারা হলেন রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদ, জেকেজির চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা ও লক্ষ্মীপুর-২ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল। এ তালিকায় ওপরের দিকে স্থান পাবেন বছরের আলোচিত গাড়িচালক আবদুল মালেকও। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গাড়িচালক মালেকের অভিজাত একাধিক বাড়ি ও চোখ ধাঁধানো বাড়ির দরজাসহ শতকোটি টাকার সম্পদ দেখে যে কারো চোখ কপালে উঠবে।সাহেদের যত কাণ্ড প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের প্রকোপে মানুষ যখন জীবন নিয়ে শঙ্কায় তখন সেই ভাইরাসের পরীক্ষা নিয়েও জালিয়াতি করেন রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান সাহেদ। করোনা পরীক্ষা না করেই জাল সার্টিফিকেট দেওয়াসহ নানা অভিযোগে ১৫ জুলাই সাহেদকে সাতক্ষীরা সীমান্তের দেবহাটা থেকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করে র্যাব। এর আগে ৭ জুলাই অভিযান চালিয়ে রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুরের শাখা দুটি সিলগালা করে দেয় র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।

শুধু করোনা পরীক্ষার জাল সনদ প্রদানই নয়, গ্রেফতারের পর বেরিয়ে আসে সাহেদের বহুমুখী প্রতারণার খবর।

প্রতারণার দায়ে জেলে ডা. সাবরিনা

করোনা ভাইরাস পরীক্ষা নিয়ে জেকেজি হেলথকেয়ারের প্রতারণার ঘটনায় আলোচিত জাতীয় হূদরোগ ইনস্টিটিউটের চিকিত্সক (বর্তমানে বরখাস্তকৃত) ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরীকে পুলিশ ১২ জুলাই গ্রেপ্তার করে। করোনা ভাইরাসের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা না করেই ভুয়া প্রতিবেদন দেওয়ার অভিযোগে সাবরিনার স্বামী জেকেজি হেলথকেয়ারের সিইও আরিফুল হক চৌধুরীসহ আরো কয়েক জনকেও গ্রেফতার করা হয়। জেকেজির বিরুদ্ধে অভিযোগ, সরকারের কাছ থেকে বিনা মূল্যে নমুনা সংগ্রহের অনুমতি নিয়ে বুকিং বিডি ও হেলথকেয়ার নামে দুটি সাইটের মাধ্যমে টাকা নিচ্ছিল এবং নমুনা পরীক্ষা ছাড়াই ভুয়া সনদ দিত। এ বিষয়ে রাজধানীর কল্যাণপুরের একটি বাড়ির কেয়ারটেকারের অভিযোগের সত্যতা পেয়ে গত ২২ জুন জেকেজি হেলথকেয়ারের সাবেক গ্রাফিক ডিজাইনার হুমায়ুন কবীর হিরু ও তার স্ত্রী তানজীন পাটোয়ারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

দেশের কোনো এমপি বিদেশে গ্রেফতারের ঘটনা পাপুলই প্রথম

মানব পাচার, অর্থ পাচার ও ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের শোষণের অভিযোগে কুয়েতের কারাগারে বন্দি হয়ে সে দেশের আদালতে এখন বিচারের মুখোমুখি বাংলাদেশের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য (লক্ষ্মীপুর-২) কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল। গত ৬ জুন পাপুলকে গ্রেফতার করে কুয়েতের পুলিশ। ইতিমধ্যে সেখানে তার বিচার শুরু হয়েছে এবং জানুয়ারিতে রায় ঘোষণার কথা রয়েছে। পাপুলের আগে দেশের কোনো সংসদ সদস্য বিদেশে আটক বা গ্রেফতার হওয়ার ঘটনা ঘটেনি।

ইতিমধ্যে দেশের আদালত পাপুল ও তার স্বজনদের ৬১৭টি ব্যাংক হিসাব জব্ধ করেছে। একই সঙ্গে তাদের ৯২টি তপশীলভুক্ত সম্পত্তি ক্রোকেরও আদেশ দেওয়া হয়েছে।

গাড়িচালক মালেক যেভাবে আলোচনায়

স্বাস্থ্য অধিদফতরের গাড়িচালক আবদুল মালেক ওরফে মালেক ড্রাইভারকে ২০ সেপ্টেম্বর গ্রেফতার করে র্যাব। তার বিরুদ্ধে অবৈধ অস্ত্র দেখিয়ে ভয়ভীতি, চাঁদাবাজি, জাল টাকার ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। তার কাছ থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার জাল টাকা ও একটি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। ইতিমধ্যে শতকোটি টাকার সম্পদের সন্ধান পাওয়া গেছে মালেকের।

মালেকের স্ত্রীর নামে দক্ষিণ কামারপাড়ায় দুটি সাততলা বিলাসবহুল ভবন আছে। ধানমন্ডির হাতিরপুল এলাকায় ৪.৫ কাঠা জমিতে একটি নির্মাণাধীন ১০ তলা ভবন আছে এবং দক্ষিণ কামারপাড়ায় ১৫ কাঠা জমিতে একটি ডেইরি ফার্ম আছে। এছাড়া বিভিন্ন ব্যাংকে নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ অর্থ গচ্ছিত আছে।