লঙ্কায় যেই যায় সেই রাবন হয়।।
- আপডেট টাইম : ০৮:৪০:১৯ পূর্বাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ২৯ জুলাই ২০২১
- / ২৯৩ ৫০০০.০ বার পাঠক
মোঃ জাহাঙ্গীর আলম,
জেলা প্রতিনিধি, দিনাজপুর।।
করোনা পরিস্থিতির কারনে দেশে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন পিছিয়ে যেতে যেতে অনেক সময় গড়িয়ে গেলো। সারা দেশের মানুষের মাঝে ইউ,পি নির্বাচন নিয়ে জমে থাকা আমেজ বার বার বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে । গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দেশের সাধারণ ভোটার গন নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে যাদেরকে প্রতিনিধি নির্বাচিত করেছিলেন তাদের প্রতিনিধিত্বের ভালো মন্দ দিক নিয়ে সাধারণ মানুষ আলোচনা সমালোচনা করছে। দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়ি উপজেলায় বিভিন্ন ইউনিয়নের সাধারণ মানুষের সঙ্গে ইউ,পি নির্বাচন নিয়ে কথা বলে যানা গেছে, সময় অতিক্রান্ত হয়ে যাবার কারনে কিছু কিছু ইউপি চেয়ারম্যান পরিষদের কার্যক্রমে অনেক বিষয়ে অনিয়ম, সেচ্ছাচারিতা শুরু করেছে। যা কখনো সাধারণ মানুষের নিকট শোভনিয় এবং কাম্য নয়।
অনেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের পরিষদ পরিচালনায় লক্ষ করা গেছে,বিচারের নামে প্রহশন, অর্থের বিনিময়ে বিচারের রায় ঘোষনা, সরকারি ত্রান বিতরনে আত্বীয়করন, অর্থের বিনিময়ে বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, স্বামী পরিত্যাক্ত ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা, ভিজিডি কার্ড বিতরন সহ দেশের দুস্থ মানুষের জন্য সরকার কতৃক প্রদত্ত আরো অন্যান্ন সুজোগ সুবিধাদি বিতরনে সেচ্ছাচারিতা ও অনিয়ম। তাছাড়াও প্রমান মিলেছে স্বামী জীবিতবস্তায় স্ত্রীকে বিধবা ভাতার কার্ড করে দেয়া হয়েছিল। যা সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রচার হবার পর পরবর্তিতে সংশোধন করা হয়। আমরা আরও লক্ষ করেছি গণপ্রজাতন্ত্রীবাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কতৃক ঘোষিত ১০ টাকা কেজি চালের কার্ড বিতরনে অনিয়ম, প্রকৃত পাওয়ার যৌগ্য পরিবার না পেয়ে অনেক বিত্ববান মানুষের নামে সেই কার্ড নির্ধারণ করা হয়েছে। দেখাগেছে গেছে ইউ,পি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবার পর ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডে দু একজন মনোনিত ব্যক্তি নির্ধারণ করে রেখেছেন, যাদের মাধ্যমে এই সব অনিয়মের অর্থ লেনদেন করেন। অর্থ প্রদানে সামর্থ্য না থাকায় ইউনিয়নে সরকারি দীর্ঘ মেয়াদি অনুদান (ত্রান)সহায়তাগুলো প্রকৃত পাওয়ার যৌগ্য অনেক মানুষ এখনো পিছিয়ে পড়ে আছে।
এই অনিয়ম ও সেচ্ছাচারিতার বিরোধিতা করায় সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের কিছু কিছু সদস্য /সদস্যাকে স্ব দ্বায়িত্ব থেকে অঘোষিতভাবে অব্যাহতি প্রদান করে রাখা হয়েছে। দেখেছি ইউনিয়ন পরিষদের ট্যাক্সআদায় নিয়ে অনিয়ম, ইউনিয়ন পরিষদ পরিচালনা বিধানকে তোয়াক্কা না করে বহিরাগত জনবল এনে (ভুয়া এনজিওর নাম বলে) ইউনিয়নের সহজ সরল মানুষের নিকট হতে নির্ধারিত ট্যাক্সের থেকে অনেক বেসি অর্থ আদায়। ফুলবাড়ি উপজেলার ৬নং দৌলতপুর ইউনিয়নে সাধারন মানুষ এটি একটি অনিয়ম ও প্রতারনা হচ্ছে বুঝতে পেরে প্রতিবাদ স্বরুপ ফুলবাড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট অভিযোগ পত্র প্রদান করেন এবং উপজেলা চত্তরে মানব বন্ধন করেন। যার কারনে ইউ,পি চেয়ারম্যান ঐ অবৈধভাবে ট্যাক্স আদায় বন্দ ও বহিরাগত আদায়কারী লোকজনকে প্রত্যাহার করতে বাধ্যহন। উপজেলার অন্যান্ন ইউনিয়নে এরকম আরো অনেক অনিয়মের প্রমান মিলেছে। (সংবাদ কর্মী হিসেবে এইসব অনিয়মের তথ্য প্রমান সংরক্ষণ করে রেখেছি)।
নির্বাচিত প্রতিনিধিদের যদি এমন বৈশিষ্ট্য হয় তবে সাধারণ জনগন ভরসা করবে কাকে। এ ছাড়াও দেখেছি প্রতিনিধিগন নির্বাচিত হবার পর নিজেকে মনে করে অনেক ক্ষমতাধর শাষক। সচরাচর জনগনের সঙ্গে ধমকের স্বরে কথা বলেন এবং জনগনের সমালোচনা করতে পচন্দ করেন। যে কারনে কিছু কিছু ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গনের কর্মকান্ড ও আচরণে সাধারণ জনগন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। নির্বাচন আসলে এবং সঠিক নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে জনগন সেই সব জনপ্রতিনিধি (চেয়ারম্যান) গনকে ভোটের মাধ্যমে সমুচিত জবাব দিবে বলে ধারনা সচেতন মহলের।
এলাকার সাধারণ জনগনের সঙ্গে উপরোক্ত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করলে সাধারণ জনগন আক্ষেপ করে বলেন যাদেরকেই লঙ্কায় পাঠাই তারাই রাবন হয়। তাই এবারের নির্বাচনে সাধারণ ভোটার গন প্রতিনিধি নির্ধারণে মনোপিড়ায় ভুগছেন যে, যাকে লঙ্কায় পাঠানো হবে সে যেনো আর রাবন না হয়। নির্বাচন আসলে প্রার্থীগন প্রতিটি ভোটারের দরজায় দরজায় গিয়ে ভোটারদের কে বিভিন্ন প্রকার আশ্বাস দিয়ে ভোট নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু দেশে চলমান করোনা সংকটে লকডাউন চলাকালীন সময়ে সেই নির্বাচিত প্রতিনিধি গন জনগনের খোঁজখবর নিতে সম্পুর্ন ব্যর্থ। একারনেই ইউনিয়নের অনেক জনপ্রতিনিধিগন বর্তমানে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। নির্বাচনের সময় পক্ষ বিপক্ষ থাকতেই পারে, সব প্রার্থী সব ভোটারের পছন্দের প্রার্থী হতে পারেনা। অনেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহন করে কিন্তু প্রতিনিধি নির্বাচিত হয় একজন। বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী যিনি নির্বাচিত হন তিনি অত্র ইউনিয়নের আপামর জনসাধারণের প্রতিনিধি নির্বাচিত হন। কিন্তু অধিকাংশ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগনকে দেখা যায় জনগনের সঙ্গে বৈমাত্রেয় আচরন করে। অসহায়, গরিব,সহায়সম্বলহীন যেই হোক যদি তার ভোটার না হয় তবে সরকারি ত্রান সহ সকল সুযোগসুবিধা থেকে বঞ্চিত হন তারা। হয়তোবা এমন বৈশ্বম্য থাকবে বা থাকতেই পারে। তাই বলে নির্বাচিত প্রতিনিধিগনের নিকট অনিয়ম ও দুর্নীতি কাম্যনয়। সর্বপোরি দেখা গেছে অনেক ইউ,পি চেয়ারম্যানগন নির্বাচিত হবার পর অনিয়ম ও দুর্নীতি করে আঙুলফুলে কলাগাছ হয়ে গেছে। পরবর্তী নির্বাচন আসার আগেই দুর্নীতি দমন কমিশনের মাধ্যমে নির্বাচিত হবার আগে ও নির্বাচিত হবার পরে তাদের আয় ব্যয় ও সম্পদের হিসাব নিলেই থলের বিড়াল বের হয়ে আসবে বলে মনে করেন ইউনিয়নের সচেতন জনগন।।, (চলবে)