ঢাকা ০৪:৩৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
১৪৫ বছরে যা হয়নি, লর্ডস দেখেছে সেই কীর্তি কোম্পানীগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে ১৩ জনকে পুশইন করেছে বিএসএফ ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে অস্বীকৃতি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর তারেক রহমানের দেশে ফিরতে কোনো বাধা নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা প্রধান উপদেষ্টা আজ কিংস চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করবেন ইরান-ইসরায়েল কী যুদ্ধ বাধছে? ভুটানে সাবিনা-সুমাইয়ার হ্যাটট্রিক বিধ্বস্ত প্রতিপক্ষ শান্তিতে আছেন সব সম্প্রদায়ের মানুষ – মোংলায় কৃষিবিদ শামীম মারধরের পর স্ত্রীর মাথা ন্যাড়া করে নির্যাতন, স্বামী গ্রেপ্তার সরকারের সঙ্গে দূরত্ব ঘুচবে কী বিএনপির? প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমান

দিনাজপুর আবদুর রহিম মেডিকেল ॥ ভুয়া সনদ দিতেন ৩ কর্মচারী

নিজস্ব সংবাদদাতা:
  • আপডেট টাইম : ০৭:০৬:৪৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ জুলাই ২০২১
  • / ২৬৪ ১৫০.০০০ বার পাঠক

জাহাঙ্গীর আলম বিশেষ প্রতিনিধি।।

হাসপাতালে ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভায় গতকাল ভুয়া সনদ দেয়া তিন কর্মচারী অপরাধ স্বীকার করলে পরে তাঁদের পুলিশে দেওয়া হয়।

শুরুতে দেওয়া হতো করোনার পজিটিভ সনদ। টাকা দিলে ফল হয়ে যেত নেগেটিভ। সনদ দিতেন হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির তিন কর্মচারী। তাঁদের অন্যতম টার্গেট ছিলেন বিদেশগামীরা।

ভুয়া নাম নিবন্ধন করে হাসপাতাল থেকে করোনার নমুনা সংগ্রহের কিট উত্তোলন করা হতো। সেই কিট দিয়ে করোনার উপসর্গ আছে, এমন ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সংগ্রহ করা হতো নমুনা। বিনিময়ে রোগীর কাছে থেকে আদায় করা হতো ১ হাজার থেকে ২ হাজার টাকা। শুরুতে দেওয়া হতো করোনার পজিটিভ সনদ। পরে টাকা দিলে সে সনদে নমুনা পরীক্ষার ফল হয়ে যেত নেগেটিভ।

এমন ঘটনা ঘটেছে দিনাজপুরের এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনার নমুনা পরীক্ষা কেন্দ্রে (ফ্লু কর্নার)। এসব সনদ দিতেন হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির তিন কর্মচারী। তাঁদের অন্যতম টার্গেট ছিলেন বিদেশগামীরা।

এমন খবর ছিল স্থানীয় সাংসদ ও জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিমের কাছে। গতকাল শনিবার দুপুরে হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভায় যোগদান করেন ইকবালুর রহিম। পরে সভায় বিষয়টি উপস্থাপন করেন তিনি। আলোচনা

সভায় ডাকা হয় অভিযুক্ত তিনজনকে। জিজ্ঞাসাবাদে অপরাধ স্বীকার করলে গতকাল বিকেলেই তাঁদের কোতোয়ালি থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

আটক ব্যক্তিরা হলেন এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজের অফিস সহায়ক মামুনুর রশিদ (৪০), হাসপাতালের রক্ত পরিসঞ্চালন বিভাগের ল্যাব সহকারী আশরাফুল আলম (৩৫) ও মাস্টাররোল কর্মচারী (অনুসন্ধান বিভাগ) মো. খোকন (৩০)।

দিনাজপুর এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ নাদের হোসেন বলেন, আটক ব্যক্তিদের মধ্যে একজন কলেজের নিয়মিত কর্মচারী। অন্য দুজন হাসপাতালের। তবে কলেজের ওই কর্মচারীকে ডেপুটেশনে করোনার বুথে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। এই তিনজনসহ আরও কয়েকজন মিলে একটি সিন্ডিকেট তৈরি করেছিলেন। যখনই বিদেশগামী ব্যক্তির করোনা নেগেটিভ সনদের প্রয়োজন হতো, তখনই সুস্থ ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করে বিদেশগামী ব্যক্তির নাম দিয়ে পিসিআর ল্যাব থেকে নেগেটিভ ফল বের করা হতো। এ জন্য ওই ব্যক্তির কাছে থেকে আর্থিক সুবিধা নিতেন। তবে এমন ঘটনার সঙ্গে পিসিআর ল্যাবের কারও সংশ্লিষ্টতা নেই।

নাদের হোসেন আরও বলেন, এক ব্যক্তি রংপুরে মেডিকেলে নমুনা পরীক্ষা করালে করোনা পজিটিভ ফল আসে। দ্বিতীয়বার টেস্টের জন্য তিনি এম আবদুর রহিম মেডিকেলে নমুনা দেন। সেখানে পরিচয় হয় রক্ত পরিসঞ্চালন বিভাগের ল্যাব সহকারী আশরাফুল আলমের সঙ্গে। আশরাফুল নেগেটিভ রিপোর্ট দেওয়ার জন্য দুই হাজার টাকা নেন। কিন্তু কয়েক দিন পরেও রিপোর্ট পাননি ওই ব্যক্তি। পরে তাঁর মেয়ে ঘটনাটি পরিচিত একজনকে জানান। রিপোর্ট নিতে যোগাযোগের জন্য যে মুঠোফোন নম্বর দেওয়া হয়েছিল, তা ওই পরিচিতজনকে দেন। পরে ওই ব্যক্তি ঘটনাটি জানান সাংসদকে। মুঠোফোন নম্বরের সূত্র ধরে জানা যায়, নেগেটিভ রিপোর্ট দিতে চাওয়া ব্যক্তিটি আশরাফুল আলম।

হুইপ ইকবালুর রহিম বলেন, করোনার শুরু থেকেই ওই তিনজন এ ধরনের জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এ জন্য তাঁদের কঠিন শাস্তি পেতে হবে।

দিনাজপুরের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফফর আহমদ বলেন, ওই তিন কর্মচারী নমুনা জালিয়াতির ঘটনায় অভিযুক্ত। তাঁদের নামে থানায় নিয়মিত মামলা হবে। আজ রবিবার (আজ) তাঁদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দিনাজপুর আবদুর রহিম মেডিকেল ॥ ভুয়া সনদ দিতেন ৩ কর্মচারী

আপডেট টাইম : ০৭:০৬:৪৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ জুলাই ২০২১

জাহাঙ্গীর আলম বিশেষ প্রতিনিধি।।

হাসপাতালে ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভায় গতকাল ভুয়া সনদ দেয়া তিন কর্মচারী অপরাধ স্বীকার করলে পরে তাঁদের পুলিশে দেওয়া হয়।

শুরুতে দেওয়া হতো করোনার পজিটিভ সনদ। টাকা দিলে ফল হয়ে যেত নেগেটিভ। সনদ দিতেন হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির তিন কর্মচারী। তাঁদের অন্যতম টার্গেট ছিলেন বিদেশগামীরা।

ভুয়া নাম নিবন্ধন করে হাসপাতাল থেকে করোনার নমুনা সংগ্রহের কিট উত্তোলন করা হতো। সেই কিট দিয়ে করোনার উপসর্গ আছে, এমন ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সংগ্রহ করা হতো নমুনা। বিনিময়ে রোগীর কাছে থেকে আদায় করা হতো ১ হাজার থেকে ২ হাজার টাকা। শুরুতে দেওয়া হতো করোনার পজিটিভ সনদ। পরে টাকা দিলে সে সনদে নমুনা পরীক্ষার ফল হয়ে যেত নেগেটিভ।

এমন ঘটনা ঘটেছে দিনাজপুরের এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনার নমুনা পরীক্ষা কেন্দ্রে (ফ্লু কর্নার)। এসব সনদ দিতেন হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির তিন কর্মচারী। তাঁদের অন্যতম টার্গেট ছিলেন বিদেশগামীরা।

এমন খবর ছিল স্থানীয় সাংসদ ও জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিমের কাছে। গতকাল শনিবার দুপুরে হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভায় যোগদান করেন ইকবালুর রহিম। পরে সভায় বিষয়টি উপস্থাপন করেন তিনি। আলোচনা

সভায় ডাকা হয় অভিযুক্ত তিনজনকে। জিজ্ঞাসাবাদে অপরাধ স্বীকার করলে গতকাল বিকেলেই তাঁদের কোতোয়ালি থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

আটক ব্যক্তিরা হলেন এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজের অফিস সহায়ক মামুনুর রশিদ (৪০), হাসপাতালের রক্ত পরিসঞ্চালন বিভাগের ল্যাব সহকারী আশরাফুল আলম (৩৫) ও মাস্টাররোল কর্মচারী (অনুসন্ধান বিভাগ) মো. খোকন (৩০)।

দিনাজপুর এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ নাদের হোসেন বলেন, আটক ব্যক্তিদের মধ্যে একজন কলেজের নিয়মিত কর্মচারী। অন্য দুজন হাসপাতালের। তবে কলেজের ওই কর্মচারীকে ডেপুটেশনে করোনার বুথে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। এই তিনজনসহ আরও কয়েকজন মিলে একটি সিন্ডিকেট তৈরি করেছিলেন। যখনই বিদেশগামী ব্যক্তির করোনা নেগেটিভ সনদের প্রয়োজন হতো, তখনই সুস্থ ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করে বিদেশগামী ব্যক্তির নাম দিয়ে পিসিআর ল্যাব থেকে নেগেটিভ ফল বের করা হতো। এ জন্য ওই ব্যক্তির কাছে থেকে আর্থিক সুবিধা নিতেন। তবে এমন ঘটনার সঙ্গে পিসিআর ল্যাবের কারও সংশ্লিষ্টতা নেই।

নাদের হোসেন আরও বলেন, এক ব্যক্তি রংপুরে মেডিকেলে নমুনা পরীক্ষা করালে করোনা পজিটিভ ফল আসে। দ্বিতীয়বার টেস্টের জন্য তিনি এম আবদুর রহিম মেডিকেলে নমুনা দেন। সেখানে পরিচয় হয় রক্ত পরিসঞ্চালন বিভাগের ল্যাব সহকারী আশরাফুল আলমের সঙ্গে। আশরাফুল নেগেটিভ রিপোর্ট দেওয়ার জন্য দুই হাজার টাকা নেন। কিন্তু কয়েক দিন পরেও রিপোর্ট পাননি ওই ব্যক্তি। পরে তাঁর মেয়ে ঘটনাটি পরিচিত একজনকে জানান। রিপোর্ট নিতে যোগাযোগের জন্য যে মুঠোফোন নম্বর দেওয়া হয়েছিল, তা ওই পরিচিতজনকে দেন। পরে ওই ব্যক্তি ঘটনাটি জানান সাংসদকে। মুঠোফোন নম্বরের সূত্র ধরে জানা যায়, নেগেটিভ রিপোর্ট দিতে চাওয়া ব্যক্তিটি আশরাফুল আলম।

হুইপ ইকবালুর রহিম বলেন, করোনার শুরু থেকেই ওই তিনজন এ ধরনের জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এ জন্য তাঁদের কঠিন শাস্তি পেতে হবে।

দিনাজপুরের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফফর আহমদ বলেন, ওই তিন কর্মচারী নমুনা জালিয়াতির ঘটনায় অভিযুক্ত। তাঁদের নামে থানায় নিয়মিত মামলা হবে। আজ রবিবার (আজ) তাঁদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।