ঢাকা ০৪:১৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
শর্ত ভঙ্গের দায়ে বন্ধ হয়ে গেল বাইমাইল বাণিজ্য মেলা সরকারি ভ্যাকসিনে ২৫ গরু-ছাগলের মৃত্যু মোংলায় শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের আয়োজনে মহান মে দিবস উদযাপনে হাজারো শ্রমিক জনতার সমাগম পাকিস্তান সীমান্তে ভারতীয় ৫ সেনাঘাঁটিতে গোলাগুলি দিল্লিতে নিহত ৪, ‘ইয়েলো অ্যালার্ট’ জারি কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী আটক ফুলবাড়ীতে মহান মে দিবস উদযাপন সব জিনিসের দাম বাড়লেও কমেছে পাদুকা শ্রমিকের দাম ১ মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে গাজীপুর মহানগরীর বাইপাস চৌরাস্তা থেকে বোর্ডবাজার পর্যন্ত বিশাল মিছিল ও শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে শ্রমিকদের আগের অবস্থায় রেখে নতুন বাংলাদেশ সম্ভব নয়: প্রধান উপদেষ্টা

দিনাজপুর আবদুর রহিম মেডিকেল ॥ ভুয়া সনদ দিতেন ৩ কর্মচারী

সময়ের কন্ঠ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : ০৭:০৬:৪৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ জুলাই ২০২১
  • / ২৫৫ ১৫০০০.০ বার পাঠক

জাহাঙ্গীর আলম বিশেষ প্রতিনিধি।।

হাসপাতালে ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভায় গতকাল ভুয়া সনদ দেয়া তিন কর্মচারী অপরাধ স্বীকার করলে পরে তাঁদের পুলিশে দেওয়া হয়।

শুরুতে দেওয়া হতো করোনার পজিটিভ সনদ। টাকা দিলে ফল হয়ে যেত নেগেটিভ। সনদ দিতেন হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির তিন কর্মচারী। তাঁদের অন্যতম টার্গেট ছিলেন বিদেশগামীরা।

ভুয়া নাম নিবন্ধন করে হাসপাতাল থেকে করোনার নমুনা সংগ্রহের কিট উত্তোলন করা হতো। সেই কিট দিয়ে করোনার উপসর্গ আছে, এমন ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সংগ্রহ করা হতো নমুনা। বিনিময়ে রোগীর কাছে থেকে আদায় করা হতো ১ হাজার থেকে ২ হাজার টাকা। শুরুতে দেওয়া হতো করোনার পজিটিভ সনদ। পরে টাকা দিলে সে সনদে নমুনা পরীক্ষার ফল হয়ে যেত নেগেটিভ।

এমন ঘটনা ঘটেছে দিনাজপুরের এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনার নমুনা পরীক্ষা কেন্দ্রে (ফ্লু কর্নার)। এসব সনদ দিতেন হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির তিন কর্মচারী। তাঁদের অন্যতম টার্গেট ছিলেন বিদেশগামীরা।

এমন খবর ছিল স্থানীয় সাংসদ ও জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিমের কাছে। গতকাল শনিবার দুপুরে হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভায় যোগদান করেন ইকবালুর রহিম। পরে সভায় বিষয়টি উপস্থাপন করেন তিনি। আলোচনা

সভায় ডাকা হয় অভিযুক্ত তিনজনকে। জিজ্ঞাসাবাদে অপরাধ স্বীকার করলে গতকাল বিকেলেই তাঁদের কোতোয়ালি থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

আটক ব্যক্তিরা হলেন এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজের অফিস সহায়ক মামুনুর রশিদ (৪০), হাসপাতালের রক্ত পরিসঞ্চালন বিভাগের ল্যাব সহকারী আশরাফুল আলম (৩৫) ও মাস্টাররোল কর্মচারী (অনুসন্ধান বিভাগ) মো. খোকন (৩০)।

দিনাজপুর এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ নাদের হোসেন বলেন, আটক ব্যক্তিদের মধ্যে একজন কলেজের নিয়মিত কর্মচারী। অন্য দুজন হাসপাতালের। তবে কলেজের ওই কর্মচারীকে ডেপুটেশনে করোনার বুথে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। এই তিনজনসহ আরও কয়েকজন মিলে একটি সিন্ডিকেট তৈরি করেছিলেন। যখনই বিদেশগামী ব্যক্তির করোনা নেগেটিভ সনদের প্রয়োজন হতো, তখনই সুস্থ ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করে বিদেশগামী ব্যক্তির নাম দিয়ে পিসিআর ল্যাব থেকে নেগেটিভ ফল বের করা হতো। এ জন্য ওই ব্যক্তির কাছে থেকে আর্থিক সুবিধা নিতেন। তবে এমন ঘটনার সঙ্গে পিসিআর ল্যাবের কারও সংশ্লিষ্টতা নেই।

নাদের হোসেন আরও বলেন, এক ব্যক্তি রংপুরে মেডিকেলে নমুনা পরীক্ষা করালে করোনা পজিটিভ ফল আসে। দ্বিতীয়বার টেস্টের জন্য তিনি এম আবদুর রহিম মেডিকেলে নমুনা দেন। সেখানে পরিচয় হয় রক্ত পরিসঞ্চালন বিভাগের ল্যাব সহকারী আশরাফুল আলমের সঙ্গে। আশরাফুল নেগেটিভ রিপোর্ট দেওয়ার জন্য দুই হাজার টাকা নেন। কিন্তু কয়েক দিন পরেও রিপোর্ট পাননি ওই ব্যক্তি। পরে তাঁর মেয়ে ঘটনাটি পরিচিত একজনকে জানান। রিপোর্ট নিতে যোগাযোগের জন্য যে মুঠোফোন নম্বর দেওয়া হয়েছিল, তা ওই পরিচিতজনকে দেন। পরে ওই ব্যক্তি ঘটনাটি জানান সাংসদকে। মুঠোফোন নম্বরের সূত্র ধরে জানা যায়, নেগেটিভ রিপোর্ট দিতে চাওয়া ব্যক্তিটি আশরাফুল আলম।

হুইপ ইকবালুর রহিম বলেন, করোনার শুরু থেকেই ওই তিনজন এ ধরনের জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এ জন্য তাঁদের কঠিন শাস্তি পেতে হবে।

দিনাজপুরের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফফর আহমদ বলেন, ওই তিন কর্মচারী নমুনা জালিয়াতির ঘটনায় অভিযুক্ত। তাঁদের নামে থানায় নিয়মিত মামলা হবে। আজ রবিবার (আজ) তাঁদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দিনাজপুর আবদুর রহিম মেডিকেল ॥ ভুয়া সনদ দিতেন ৩ কর্মচারী

আপডেট টাইম : ০৭:০৬:৪৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ জুলাই ২০২১

জাহাঙ্গীর আলম বিশেষ প্রতিনিধি।।

হাসপাতালে ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভায় গতকাল ভুয়া সনদ দেয়া তিন কর্মচারী অপরাধ স্বীকার করলে পরে তাঁদের পুলিশে দেওয়া হয়।

শুরুতে দেওয়া হতো করোনার পজিটিভ সনদ। টাকা দিলে ফল হয়ে যেত নেগেটিভ। সনদ দিতেন হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির তিন কর্মচারী। তাঁদের অন্যতম টার্গেট ছিলেন বিদেশগামীরা।

ভুয়া নাম নিবন্ধন করে হাসপাতাল থেকে করোনার নমুনা সংগ্রহের কিট উত্তোলন করা হতো। সেই কিট দিয়ে করোনার উপসর্গ আছে, এমন ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সংগ্রহ করা হতো নমুনা। বিনিময়ে রোগীর কাছে থেকে আদায় করা হতো ১ হাজার থেকে ২ হাজার টাকা। শুরুতে দেওয়া হতো করোনার পজিটিভ সনদ। পরে টাকা দিলে সে সনদে নমুনা পরীক্ষার ফল হয়ে যেত নেগেটিভ।

এমন ঘটনা ঘটেছে দিনাজপুরের এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনার নমুনা পরীক্ষা কেন্দ্রে (ফ্লু কর্নার)। এসব সনদ দিতেন হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির তিন কর্মচারী। তাঁদের অন্যতম টার্গেট ছিলেন বিদেশগামীরা।

এমন খবর ছিল স্থানীয় সাংসদ ও জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিমের কাছে। গতকাল শনিবার দুপুরে হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভায় যোগদান করেন ইকবালুর রহিম। পরে সভায় বিষয়টি উপস্থাপন করেন তিনি। আলোচনা

সভায় ডাকা হয় অভিযুক্ত তিনজনকে। জিজ্ঞাসাবাদে অপরাধ স্বীকার করলে গতকাল বিকেলেই তাঁদের কোতোয়ালি থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

আটক ব্যক্তিরা হলেন এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজের অফিস সহায়ক মামুনুর রশিদ (৪০), হাসপাতালের রক্ত পরিসঞ্চালন বিভাগের ল্যাব সহকারী আশরাফুল আলম (৩৫) ও মাস্টাররোল কর্মচারী (অনুসন্ধান বিভাগ) মো. খোকন (৩০)।

দিনাজপুর এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ নাদের হোসেন বলেন, আটক ব্যক্তিদের মধ্যে একজন কলেজের নিয়মিত কর্মচারী। অন্য দুজন হাসপাতালের। তবে কলেজের ওই কর্মচারীকে ডেপুটেশনে করোনার বুথে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। এই তিনজনসহ আরও কয়েকজন মিলে একটি সিন্ডিকেট তৈরি করেছিলেন। যখনই বিদেশগামী ব্যক্তির করোনা নেগেটিভ সনদের প্রয়োজন হতো, তখনই সুস্থ ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করে বিদেশগামী ব্যক্তির নাম দিয়ে পিসিআর ল্যাব থেকে নেগেটিভ ফল বের করা হতো। এ জন্য ওই ব্যক্তির কাছে থেকে আর্থিক সুবিধা নিতেন। তবে এমন ঘটনার সঙ্গে পিসিআর ল্যাবের কারও সংশ্লিষ্টতা নেই।

নাদের হোসেন আরও বলেন, এক ব্যক্তি রংপুরে মেডিকেলে নমুনা পরীক্ষা করালে করোনা পজিটিভ ফল আসে। দ্বিতীয়বার টেস্টের জন্য তিনি এম আবদুর রহিম মেডিকেলে নমুনা দেন। সেখানে পরিচয় হয় রক্ত পরিসঞ্চালন বিভাগের ল্যাব সহকারী আশরাফুল আলমের সঙ্গে। আশরাফুল নেগেটিভ রিপোর্ট দেওয়ার জন্য দুই হাজার টাকা নেন। কিন্তু কয়েক দিন পরেও রিপোর্ট পাননি ওই ব্যক্তি। পরে তাঁর মেয়ে ঘটনাটি পরিচিত একজনকে জানান। রিপোর্ট নিতে যোগাযোগের জন্য যে মুঠোফোন নম্বর দেওয়া হয়েছিল, তা ওই পরিচিতজনকে দেন। পরে ওই ব্যক্তি ঘটনাটি জানান সাংসদকে। মুঠোফোন নম্বরের সূত্র ধরে জানা যায়, নেগেটিভ রিপোর্ট দিতে চাওয়া ব্যক্তিটি আশরাফুল আলম।

হুইপ ইকবালুর রহিম বলেন, করোনার শুরু থেকেই ওই তিনজন এ ধরনের জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এ জন্য তাঁদের কঠিন শাস্তি পেতে হবে।

দিনাজপুরের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফফর আহমদ বলেন, ওই তিন কর্মচারী নমুনা জালিয়াতির ঘটনায় অভিযুক্ত। তাঁদের নামে থানায় নিয়মিত মামলা হবে। আজ রবিবার (আজ) তাঁদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।