কাশিমপুরে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নজরদারি ছাড়াই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হচ্ছে ‘হানিফ সরিষার তৈল

- আপডেট টাইম : ০৩:২৯:০৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫
- / ২ ১৫০০০.০ বার পাঠক
উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার হাবিবুর রহমান জানান, তারা বর্তমানে তিনটি পণ্য উৎপাদন করছে, এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সরিষার তৈল, মরিচের গুড়া, হলুদের গুড়া, আমার সবগুলো কাগজপত্র রয়েছে। এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের লোকজনের সাথে আমার মৌখিক যোগাযোগ রয়েছে।
গাজীপুরের কাশিমপুর ৪ নং ওয়ার্ড সারদাগঞ্জ এলাকায় একটি গোপন কারখানায় অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে তৈরি হচ্ছে ‘হানিফ সরিষার তৈল’।
প্রতারণা করে বাজারজাত করা হচ্ছে এই তৈল, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন ধরে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈল, মরিচ গুঁড়া, হলুদের গুঁড়া উৎপাদন করে আসছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতিষ্ঠানটির ভেতরে ন্যূনতম স্বাস্থ্যবিধি বা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বালাই নেই। নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই কারখানায় তৈলের কাঁচামাল সংগ্রহ থেকে শুরু করে বোতলজাত করার পুরো প্রক্রিয়ায় নেই কোনো স্বাস্থ্যবিধি বা মান নিয়ন্ত্রণ। ময়লা-আবর্জনায় ভরা পরিবেশে, খোলা হাতে, অপরিষ্কার যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে তৈরি করা হচ্ছে তৈল।
এমনকি তৈল সংরক্ষণের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে পুরনো, পুনর্ব্যবহৃত প্লাস্টিকের বোতল, যা জীবাণুমুক্ত করার ন্যূনতম ব্যবস্থা পর্যন্ত নেই।
কারখানাটিতে সরিষা সংরক্ষণ, পিষে তৈল নিষ্কাশন ও বোতলজাতকরণ সবই চলছে একই ছাউনির নিচে। শ্রমিকদের অনেকেই স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী ছাড়া কাজ করছেন।
গোপন সূত্রে জানা যায়, কারখানাটির কোনো বৈধ অনুমোদন বা সনদ নেই। স্থানীয় প্রশাসনের চোখ এড়িয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলেছে এই অবৈধ কার্যক্রম। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ভোক্তাদের সচেতনতার কারণে বিষয়টি সামনে আসতে শুরু করেছে।
তৈলের বর্জ্য ফেলা হচ্ছে আশেপাশে,খোলা জায়গায় যা পরিবেশ দূষণের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অথচ এ বিষয়ে কোনো নজরদারি বা তদারকি নেই স্থানীয় প্রশাসন বা পরিবেশ অধিদপ্তরের।
একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “এই তৈল খাওয়ার পর অনেকেই পেটের অসুখে ভুগছেন। অথচ প্যাকেট দেখে বোঝার উপায় নেই, এতটা নোংরা পরিবেশে এটা তৈরি হচ্ছে।”
কিন্তু সিটি কর্পোরেশনের ট্রেড লাইসেন্স ব্যতীত অন্য কোন কাগজপত্রের বালাই নেই। কারখানার ভেতরে ঢুকে দেখা যায়, হানিফ মশার কয়েল, লেভেল বিহীন গুড়ের টিন,পামওয়েল তৈলের ড্রাম , প্রায় ৩২ টি প্রোডাক্ট বাজারজাত করে হাবিবুর রহমান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, “প্রতিষ্ঠানটির কোনো পরিবেশ ছাড়পত্র নেই। তারা সম্পূর্ণ অবৈধভাবে তৈল সহ অন্যান্য পণ্য উৎপাদন করছে।”
এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ আরেফিন বাদল কাছে মুঠোফোন জানতে চাইলে তিনি জানান অভিযোগের সত্যতা পেলে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং কারখানাটির কাগজ পত্র যাচাই বাছাই করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্ৰহন করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
স্থানীয় সচেতন মহল ও পরিবেশবাদীগণের দাবি, দ্রুত এই ধরনের অনিরাপদ তৈলের উৎপাদন বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে।