ঢাকা ০৪:৩৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
গাজা দখল করে ‘ফ্রিডম জোন’ বানাতে চান ট্রাম্প মধ্যরাতের অধ্যাদেশ’ বাতিলে সারাদেশে কলম বিরতি এনবিআরের একাধিক নেতাদের গণপদত্যাগ আগামী ১৫ ও ১৭ মে পর্যন্ত চলবে কর্মসূচি বিডিআর বিদ্রোহ: কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেলেন ২৭ জন পালানো’র সময় বিমানবন্দর থেকে বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা আটক নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ভোট কার বাক্সে? শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষকরা রাজপথে থাকবেন’ ১২ লাখ শ্রমিকের ভাগ্য নির্ধারণ আজ হত্যা ও ধর্ষণের হুমকির অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী নেতাসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা ইশরাককে মেয়র পদে বসানোর দাবি, দ্বিতীয় দিনের মতো নগর ভবন অবরুদ্ধ বাঘায় সৎ ভাইয়ের হাতে হত্যা হলো সাদেক আলী

ভাঙ্গুড়ায় চার নিয়োগে অর্ধ কোটি টাকা ঘুস আদায় আ.লীগ নেতার

উপজেলা প্রতিনিধি (ভাঙ্গুড়া)পাবনা
  • আপডেট টাইম : ১০:২৭:২৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ মে ২০২৫
  • / ১৫ ১৫০০০.০ বার পাঠক

ভাঙ্গুড়ায় চার নিয়োগে অর্ধ কোটি টাকা ঘুস আদায় আ.লীগ নেতার

পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার দহপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে চারটি পদে শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা ঘুস আদায়ের ঘটনা ঘটেছে। ঘুস আদায়কারী ভাঙ্গুড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও বিদ্যালয়ের তৎকালীন পরিচালনা পরিষধদের সভাপতি জাকির হোসেন ছবি। এই ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও তৎকালীন সংসদ সদস্যের পুত্র গোলাম হাসনাইন রাসেলের সরাসরি যোগসাজশ ছিল বলে জানা গেছে।

অভিযোগ অনুযায়ী, ২০২২ সালে দহপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এরপর, একই বছরের ১০ অক্টোবর লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় এবং ২০২৩ সালে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। তবে অভিযোগ উঠেছে, এই নিয়োগ পরীক্ষায় পূর্বনির্ধারিত প্রার্থীদের বাদ দিয়ে কৌশলে অন্য প্রার্থীদের অকৃতকার্য দেখানো হয়েছে।

একাধিক ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থী অভিযোগ করেছেন যে, পরীক্ষায় ভালো ফল করা সত্ত্বেও তাদের ফেল করানো হয়েছে। পরবর্তীতে, তারা উত্তরপত্র পুনঃনিরীক্ষার দাবি জানালে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের মুখ বন্ধ করে দেওয়া হয়।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক পদে ফজলুর রহমানকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য ২০ লাখ টাকা, পরিচ্ছন্ন কর্মী তানিয়া খাতুনের নিয়োগের জন্য ৮ লাখ ৬০ হাজার টাকা, অফিস সহায়ক হাফিজুর রহমানের নিয়োগের জন্য ৮ লাখ ৬০ হাজার টাকা এবং দপ্তরী কাম নৈশপ্রহরী আব্দুল আলীমের নিয়োগের জন্য একই পরিমাণ অর্থ নেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে ঘুসের অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৫ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা।

নিয়োগ পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়া একজন ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমার পরীক্ষা অত্যন্ত ভালো হয়েছিল, কিন্তু আমাকে অন্যায়ভাবে ফেল করানো হয়েছে। পরবর্তীতে আমি যখন আমার খাতা দেখতে চেয়েছিলাম, তখন আমাকে ভয় দেখানো হয়। বলা হয়, বেশি বাড়াবাড়ি করলে রাসেল (তৎকালীন এমপির ছেলে) দিয়ে আমাকে তুলে নেওয়া হবে। তাই ভয়ে আমি আর কোনো কথা বলিনি।’

তবে, এই বিষয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফজলুর রহমান তার বিরুদ্ধে আনা ঘুসের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমার কোনো অর্থ-সম্পদ নেই। আমি কীভাবে ২০ লাখ টাকা ঘুস দেব? এগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা।’

এই গুরুতর অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত বিদ্যালয়ের তৎকালীন সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা জাকির হোসেন ছবির বক্তব্য জানার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এমনকি তার নিকটাত্মীয়দের মাধ্যমেও তার অবস্থান সম্পর্কে কোনো নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে ভাঙ্গুড়া উপজেলা বিএনপির একজন শীর্ষ স্থানীয় নেতার আশ্রয়ে তিনি লুকিয়ে আছেন।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

ভাঙ্গুড়ায় চার নিয়োগে অর্ধ কোটি টাকা ঘুস আদায় আ.লীগ নেতার

আপডেট টাইম : ১০:২৭:২৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ মে ২০২৫

ভাঙ্গুড়ায় চার নিয়োগে অর্ধ কোটি টাকা ঘুস আদায় আ.লীগ নেতার

পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার দহপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে চারটি পদে শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা ঘুস আদায়ের ঘটনা ঘটেছে। ঘুস আদায়কারী ভাঙ্গুড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও বিদ্যালয়ের তৎকালীন পরিচালনা পরিষধদের সভাপতি জাকির হোসেন ছবি। এই ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও তৎকালীন সংসদ সদস্যের পুত্র গোলাম হাসনাইন রাসেলের সরাসরি যোগসাজশ ছিল বলে জানা গেছে।

অভিযোগ অনুযায়ী, ২০২২ সালে দহপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এরপর, একই বছরের ১০ অক্টোবর লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় এবং ২০২৩ সালে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। তবে অভিযোগ উঠেছে, এই নিয়োগ পরীক্ষায় পূর্বনির্ধারিত প্রার্থীদের বাদ দিয়ে কৌশলে অন্য প্রার্থীদের অকৃতকার্য দেখানো হয়েছে।

একাধিক ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থী অভিযোগ করেছেন যে, পরীক্ষায় ভালো ফল করা সত্ত্বেও তাদের ফেল করানো হয়েছে। পরবর্তীতে, তারা উত্তরপত্র পুনঃনিরীক্ষার দাবি জানালে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের মুখ বন্ধ করে দেওয়া হয়।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক পদে ফজলুর রহমানকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য ২০ লাখ টাকা, পরিচ্ছন্ন কর্মী তানিয়া খাতুনের নিয়োগের জন্য ৮ লাখ ৬০ হাজার টাকা, অফিস সহায়ক হাফিজুর রহমানের নিয়োগের জন্য ৮ লাখ ৬০ হাজার টাকা এবং দপ্তরী কাম নৈশপ্রহরী আব্দুল আলীমের নিয়োগের জন্য একই পরিমাণ অর্থ নেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে ঘুসের অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৫ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা।

নিয়োগ পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়া একজন ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমার পরীক্ষা অত্যন্ত ভালো হয়েছিল, কিন্তু আমাকে অন্যায়ভাবে ফেল করানো হয়েছে। পরবর্তীতে আমি যখন আমার খাতা দেখতে চেয়েছিলাম, তখন আমাকে ভয় দেখানো হয়। বলা হয়, বেশি বাড়াবাড়ি করলে রাসেল (তৎকালীন এমপির ছেলে) দিয়ে আমাকে তুলে নেওয়া হবে। তাই ভয়ে আমি আর কোনো কথা বলিনি।’

তবে, এই বিষয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফজলুর রহমান তার বিরুদ্ধে আনা ঘুসের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমার কোনো অর্থ-সম্পদ নেই। আমি কীভাবে ২০ লাখ টাকা ঘুস দেব? এগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা।’

এই গুরুতর অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত বিদ্যালয়ের তৎকালীন সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা জাকির হোসেন ছবির বক্তব্য জানার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এমনকি তার নিকটাত্মীয়দের মাধ্যমেও তার অবস্থান সম্পর্কে কোনো নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে ভাঙ্গুড়া উপজেলা বিএনপির একজন শীর্ষ স্থানীয় নেতার আশ্রয়ে তিনি লুকিয়ে আছেন।