১২ লাখ শ্রমিকের ভাগ্য নির্ধারণ আজ

- আপডেট টাইম : ০৭:১৫:০৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫
- / ৫ ১৫০০০.০ বার পাঠক
দীর্ঘ দিন পর মালয়েশিয়ায় কর্মসংস্থানের দুয়ার খুলতে সব ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করেছে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। ইতোমধ্যে ১২ লাখ লোকের কর্মসংস্থানের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এরমধ্যে ৫০ হাজার শ্রমিক আনা হবে যাদের কোনোরকম টাকা খরচ হবে না। বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে দুই দেশের সরকার বিনা খরচে আসা শ্রমিকের তালিকা নিশ্চিত করবে।
বৃহস্পতিবার বিকালে মালয়েশিয়ার পুত্রজয়ায় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান এবং আইন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাশুসন ইসমাইল ও মানবসম্পদ মন্ত্রী স্টিভেন সিম চি কেওয়ার সঙ্গে অনুষ্ঠেয় যৌথ সভায় মিলিত হবেন। সেখানে এ সংক্রান্ত একটি চুক্তি হওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে গত বছর ৪ অক্টোবর সংক্ষিপ্ত সফরে বাংলাদেশে আসেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ড. আনোয়ার ইব্রাহিম। রাজধানী ঢাকার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে।
বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ড. ইউনূস বলেছেন, মালয়েশিয়ার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে চাই। দুই দেশই সম্পর্ক এগিয়ে নিতে সম্মত হয়েছে। অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে। তাছাড়া বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, শিক্ষা, প্রযুক্তি সংক্রান্ত বিষয়, মানবসম্পদ উন্নয়ন, জনশক্তি রপ্তানি, যোগাযোগ, অবকাঠামো উন্নয়ন, প্রতিরক্ষা সহযোগিতাসহ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। কর্মসংস্থান তৈরি, ভিসা সহজীকরণের বিষয় নিয়েও আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ড. আনোয়ার ইব্রাহিম বলেছেন, মানুষের মর্যাদা রক্ষায় ড. ইউনূসের ভূমিকা আমরা জানি। তাকে ব্যক্তিগতভাবে আমি চিনি। তাই তার ওপর ভরসা রাখছি। বাংলাদেশের বন্ধু হিসেবে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি সর্বাত্মক সমর্থন থাকবে।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশের কর্মীরা আধুনিক দাস নয়। বাংলাদেশের শ্রমিকদের সুরক্ষার বিষয়ে কাজ করছি। বন্ধ শ্রম বাজার আবার উন্মুক্ত করে বন্ধুকে দেওয়া কথা রাখতে যাচ্ছেন আনোয়ার ইব্রাহিম। এমনটাই মনে করেছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং মালয়েশিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মীরা
জানা গেছে, মালয়েশিয়া আগামী কয়েক বছরে প্রায় ১২ লাখ শ্রমিক নিবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের শ্রমিকদের জন্য বড় সুখবর মিলেছে। শ্রমবাজার সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশটিতে সাধারণ শ্রমিকের বেতন মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর চাইতে দ্বিগুণ বা তারও বেশি। কিছু জটিলতায় প্রায় এক বছর ধরে ঝুলে ছিল বিশাল এই শ্রমবাজার। ধীরে ধীরে সেই জটিলতা কেটেছে। মালয়েশিয়ায় লাখ লাখ শ্রমিক বৈধভাবে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে।
বিশাল এই শ্রমবাজার খুললে; বৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া শ্রমিক গেলে দেশ উপকৃত হবে, অভিবাসী কর্মী উপকৃত হবে নলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এর মাধ্যমে দেশে রেমিটেন্স প্রবাহ বৃদ্ধি পাবে।
বাংলাদেশের কুয়ালালামপুর দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করলে তারা বলেন, মালয়েশিয়া পর্যাপ্ত সংখ্যক শ্রমিক পাঠানো গেলে বছরে প্রায় পাঁচ বিলিয়ন ডলার বাড়তি রেমিটেন্স পাবে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে আমাদের দেখা উচিত কে শ্রমিক পাঠাল কোন এজেন্সি পাঠাল, সেটা নয় বরং আমাদের শ্রমিকরা কম অভিবাসন ব্যয়ে সেখানে যাওয়া এবং তাদের সুরক্ষার বিষয়টি সবার আগে নজর দেওয়া হচ্ছে। তারা আশা করছেন স্বল্প খরচেই শ্রমিকরা নিরাপদ অভিবাসনের সুযোগ পাবেন।