কাপাসিয়া থানা পুলিশ এসআই আমিনুল হকের আতঙ্কে সিঙ্গাপুর প্রবাসী পরিবার, পুলিশ হেডকোয়ার্টারে অভিযোগ

- আপডেট টাইম : ০৩:০৯:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ মে ২০২৫
- / ৯ ১৫০০০.০ বার পাঠক
বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে রেমিডেন্স যোদ্ধা হিসেবে দুই যুগের অধিক সময় ধরে সিঙ্গাপুরে কর্মরত তিন ভাই । পারিবারিক বিরোধের জেরে এবং হয়রানির মূলে রয়েছেন প্রতিবেশী তোফাজ্জল হোসেন ও কাপাসিয়া থানার এসআই আমিনুল হক। ভুক্তভোগী পরিবারটির বসবাস গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া থানা সদরের জুনিয়া গ্রামে। মৃত হাজী দেলোয়ার হোসেনের তিন পুত্র সোহরাব হোসেন, জাফর আহমেদ,ও রাজীব আহমেদ। গ্রামটিতে শহরের ছোঁয়া লাগায় শহরের মধ্যে এই ছোট্ট গ্রামে “ভিলেজ পলিটিক্সে “একটি পরিবার প্রায় দিশেহারা। এই বছরের শুরুতে পারিবারিক একটি অনুষ্ঠান এবং বাড়ির আংশিক নির্মাণ কাজ মেরামতের জন্য সিঙ্গাপুর থেকে দেশে আসেন। দেশে আসার পর কোন কাজই করতে পারেননি প্রবাসী পরিবারটি। পারিবারিক যে কোনো কাজ করতে গেলেই প্রতিবেশী তোফাজ্জল বাঁধা দেন। দাবি করেন চাঁদা। এমনকি বিদেশ যাওয়া বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিতে থাকেন। প্রবাসী পরিবারটি হয়রানি থেকে বাঁচতে তোফাজ্জল কে ১০ হাজার টাকা চাঁদা দিয়েও পারিবারিক সকল কাজ অসমাপ্ত রেখেই গোপনে সিঙ্গাপুর চলে যান প্রবাসী সদস্যরা।
এবার তোফাজ্জল প্রবাসী পরিবারের মহিলা সদস্যদের হয়রানি শুরু করেন। তার সাথে যোগ হয় কাপাসিয়া থানার এস আই আমিনুল হক। থানা পুলিশ পরিবারের মহিলা সদস্যদের হুমকি ধামকি দিয়ে হয়রানি শুরু করেন। ভুক্তভোগী পরিবারের মহিলা সদস্য লুৎফুন্নাহার রুনা, মাহফুজা, সালমা আক্তার,অভিযোগ করে বলেন আমাদের পরিবারটি বৈদেশিক রেমিটেন্স এর উপর নির্ভরশীল । বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে আমাদের পরিবারের পুরুষ সদস্যরা দূর প্রবাসে থাকায় আমরা থানা পুলিশ ও তোফাজ্জল র ভয়ে আতঙ্কে আছি।গত ১৫ এপ্রিল গভীর রাতে কাপাসিয়া থানার এসআই আমিনুল হক সাদাপোশাকে এবং আমার প্রতিবেশী তোফাজ্জল আমার বসত ঘরের কেচি গেইট ভেঙ্গে ঘরের ভিতর প্রবেশের চেষ্টা করেন। এ সময় আমাদের চিৎকার ও ডাকাডাকির শব্দে প্রতিবেশীরা চলে আসলে পুলিশ বলে এ বাড়িতে পুরুষ আসামী রয়েছে।তখন উপস্থিত অনেকেই বলেন এ বাড়িতে কোন পুরুষ লোক নাই ওরা সিঙ্গাপুরে প্রবাসী। তারপর ও পুলিশ গেইট খুলতে বলেন। গেইট খুলার পর কাপাসিয়া থানার এসআই আমিনুল হক ঘরে প্রবেশ করে খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। পুরুষ সদস্যদের না পেয়ে ওরা একে অপরকে বলতে থাকে পুরুষ নেই মহিলাদের ধরে নিয়ে আসবো স্যার? এবিষয়ে সিঙ্গাপুর প্রবাসী সোহরাব হোসেন সিঙ্গাপুর হাইকমিশনার এম্বাসি এর মাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশ হেডকোয়ার্টার বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
পুলিশের এমন আচরণে এবং বাড়িতে কোন পুরুষ না থাকায় আমরা ভয়ে দিন কাটাচ্ছি। এ ব্যাপারে গাজীপুর পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী পরিবারটি।
স্থানীয় রঞ্জিত, জিয়াউর রহমান, ও সিদ্দিকুর রহমান সহ একাধিক ব্যক্তি জানান, কাপাসিয়া থানার এসআই আমিনুল হক গত ১৪ ই এপ্রিল এলাকার চা-দোকানে এসে আমাদের কে বলেন,এই প্রবাসী পরিবারটির বিরুদ্ধে স্থানীয় তোফাজ্জল হোসেনের পক্ষে মিথ্যা সাক্ষী দিতে এমনকি উপস্থিত লোকজনদের অর্থের প্রলোভন দেখান। কাপাসিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সহ-সভাপতি, পার্শ্ববর্তী খোদাদিয়া গ্রামের ইসমাইল হোসেন বলেন, আমি তোফাজ্জলের বাড়ির পাশে জমি ক্রয় করার পর থেকেই তোফাজ্জল চাঁদা দাবি করে আমার নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়। পরে আমি উক্ত তোফাজ্জলের বিরুদ্ধে গাজীপুর আদালতে একটি চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করি বর্তমানে মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে।
একই গ্রামের হাজী সাইফুল ইসলাম বলেন, আমি ১৫ এপ্রিলের সিসি ফুটেজে দেখতে পাইলাম কাপাসিয়া থানার এসআই আমিনুল হক সাদাপোশাকে গভীর রাতে প্রবাসী সোহরাব হোসেন ও জাফরদের বসত বাড়িতে প্রবেশ করতে। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই। প্রতিবেশী তোফাজ্জলের বাড়ির পাশে ক্রয় কৃত জমির সীমানা প্রাচীর ও প্রধান ফটক মেরামত করতে গেলে তোফাজ্জল আমার কাছে চাঁদা দাবি করে কাজ বন্ধ করে দেয় । পরে আমি তোফাজ্জলকে ১০ হাজার টাকা চাঁদা দিয়ে সীমানা প্রাচীরের আংশিক কাজ করি। আরো টাকা দাবি করলে আমি দিতে পারিনি। না দেয়ায় আমার এবং আমার পরিবারের বিরুদ্ধে কাপাসিয়া থানার এসআই আমিনুল হক এর মাধ্যমে একটি কাল্পনিক ঘটনা সাজিয়ে মিথ্যা ও হয়রানি মূলক মামলা দেয়।
উল্লেখিত ঘটনার বিষয়ে কাপাসিয়া থানার এসআই আমিনুল হকের নিকট জানতে তার মোবাইল নাম্বারে একাধিক বার ফোন দিলে তিনি রিসিভ করেননি।
কাপাসিয়া থানার ওসি আব্দুল বারিক বলেন, কোন থানার পুলিশ এমন আচরণ করলে তার চাকরি থাকার কথা না। এমনটা হতে পারে না। কিন্তু এই বিষয়ে সিঙ্গাপুর থেকে প্রবাসী সোহরাব হোসেন গত কিছুদিন পুর্বে মোবাইল ফোনে আমার সাথে কথা বলেছেন।