ঢাকা ১১:২৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৩ মে ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
নারী স্বাধীন হয়ে আজ আকাশে উড়ছে পুরুষ আজ নির্যাতিত নারীদের কাছে এই যদি হয় সমাজের অবস্থা নাসিরনগরে ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জিয়া পরিষদের মতবিনিময় সভা চট্টগ্রাম মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য আবু বকর ছিদ্দিকের জানাজা ও দাফন সম্পন্ন ১৫ বছরে সাংবাদিকদের ভূমিকা মূল্যায়নে জাতিসংঘের সহায়তা চাওয়া হবে:প্রেস সচিব আ.লীগের বিচার ও সংস্কারের আগে কোনো নির্বাচন হবে না দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে বাফুফের নিবন্ধন লাভ করেছে দক্ষিণ হালিশহর ফুটবল একাডেমি শর্ত ভঙ্গের দায়ে বন্ধ হয়ে গেল বাইমাইল বাণিজ্য মেলা সরকারি ভ্যাকসিনে ২৫ গরু-ছাগলের মৃত্যু মোংলায় শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের আয়োজনে মহান মে দিবস উদযাপনে হাজারো শ্রমিক জনতার সমাগম পাকিস্তান সীমান্তে ভারতীয় ৫ সেনাঘাঁটিতে গোলাগুলি

দফের আবিষ্কার ও প্রচলন ইতিহাস

সময়ের কন্ঠ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : ০২:০৯:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫
  • / ১৮ ১৫০০০.০ বার পাঠক

অফিস ডেস্ক —
দফ (Daf) বা দাফ একটি প্রাচীন তালবাদ্য যন্ত্র, যার ইতিহাস বহু শতাব্দী পেছনের কথা। এটি মূলত: একটি এক-মুখো ফ্রেম ড্রাম, সাধারণত কাঠ, ধাতু বা প্লাষ্টিকের গোলাকার ফ্রেমে একটি চামড়ার বা সিন্থেটিক চামড়ার ত্বক টানানো থাকে।

চলুন দফের আবিষ্কার ও প্রচলনের ইতিহাস সম্পর্কে ধারাবাহিকভাবে জেনে নিই:

আদিম উৎস:
দফের উৎস ধরা হয় প্রাচীন পারস্য বা ইরান অঞ্চলে। প্রায় ৬ষ্ঠ শতাব্দী খ্রিষ্টপূর্বাব্দে।এটি তখন ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক অনুষ্ঠানে ব্যবহৃত হতো। বিশেষ করে সুফি সাধকরা ধ্যান ও জিকিরের সময় দফ ব্যবহার করতেন।

প্রসার ও প্রচার মধ্যপ্রাচ্যে :

পারস্য থেকে এটি মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে।বিশেষ করে আরব, তুর্কি, ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলোতে।প্রাচীন ইসলামি সংস্কৃতিতে দফকে “হালাল” বাদ্যযন্ত্র হিসেবে গণ্য করা হতো।কারণ এটি গানের চেয়ে জিকিরে বেশি ব্যবহৃত হতো।

ভারতীয় উপমহাদেশে আগমন:
দফ ভারতীয় উপমহাদেশে আসে মূলত: সুফি সাধকদের মাধ্যমে।মাজার, ওরস, কাওয়ালি, লোকগান ও বাউল সংগীতে দফ বিশেষভাবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।বাংলা লোকসংগীতে বিশেষ করে বাউল, মারফতি, মুর্শিদি গানে দফ একটি অপরিহার্য বাদ্যযন্ত্র।

দফের প্রচলন ও ব্যবহার:

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও লোকসংগীত:
গ্রামীণ মেলা, বাউল উৎসব এবং পীর-মাজারেও দফের ব্যবহার অত্যন্ত জনপ্রিয়।বিভিন্ন ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক গানে দফ ব্যবহৃত হয় সঙ্গীতের স্পন্দন ও তাল সৃষ্টি করতে।

সুফি ও ধ্যানসংগীতে:
দফ শুধুই বাদ্যযন্ত্র নয়; অনেকের কাছে এটি আত্মার অনুরণন, ভক্তির ছন্দ এবং জাগরণের মাধ্যম বলেও জানা গেছে।

আধুনিক সংস্করণ ও থেরাপিতে প্রয়োগ:
এখন অনেক দফে ঝিনঝিন বা ঘণ্টাধ্বনির মতো রিং লাগানো থাকে।বর্তমানে দফকে মিউজিক থেরাপিতেও ব্যবহার করা হয়, কারণ এর ধ্বনি হৃদয় ও মস্তিষ্কে প্রশান্তি আনে।

উপসংহার:
দফ একটি প্রাচীন কিন্তু জীবন্ত বাদ্যযন্ত্র যা যুগে যুগে বিভিন্ন সংস্কৃতিতে নতুনভাবে ও নতুনসাজে প্রকাশ হয়ে আসছে। আজও এটি শুধু লোকসংগীতে নয়, ধ্যান, চিকিৎসা ও গবেষণার ক্ষেত্রেও গুরুত্ব পাচ্ছে।

মো: শোয়েব হোসেন (লেখক)
শিক্ষক,শিল্পী, গবেষক,
সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দফের আবিষ্কার ও প্রচলন ইতিহাস

আপডেট টাইম : ০২:০৯:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

অফিস ডেস্ক —
দফ (Daf) বা দাফ একটি প্রাচীন তালবাদ্য যন্ত্র, যার ইতিহাস বহু শতাব্দী পেছনের কথা। এটি মূলত: একটি এক-মুখো ফ্রেম ড্রাম, সাধারণত কাঠ, ধাতু বা প্লাষ্টিকের গোলাকার ফ্রেমে একটি চামড়ার বা সিন্থেটিক চামড়ার ত্বক টানানো থাকে।

চলুন দফের আবিষ্কার ও প্রচলনের ইতিহাস সম্পর্কে ধারাবাহিকভাবে জেনে নিই:

আদিম উৎস:
দফের উৎস ধরা হয় প্রাচীন পারস্য বা ইরান অঞ্চলে। প্রায় ৬ষ্ঠ শতাব্দী খ্রিষ্টপূর্বাব্দে।এটি তখন ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক অনুষ্ঠানে ব্যবহৃত হতো। বিশেষ করে সুফি সাধকরা ধ্যান ও জিকিরের সময় দফ ব্যবহার করতেন।

প্রসার ও প্রচার মধ্যপ্রাচ্যে :

পারস্য থেকে এটি মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে।বিশেষ করে আরব, তুর্কি, ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলোতে।প্রাচীন ইসলামি সংস্কৃতিতে দফকে “হালাল” বাদ্যযন্ত্র হিসেবে গণ্য করা হতো।কারণ এটি গানের চেয়ে জিকিরে বেশি ব্যবহৃত হতো।

ভারতীয় উপমহাদেশে আগমন:
দফ ভারতীয় উপমহাদেশে আসে মূলত: সুফি সাধকদের মাধ্যমে।মাজার, ওরস, কাওয়ালি, লোকগান ও বাউল সংগীতে দফ বিশেষভাবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।বাংলা লোকসংগীতে বিশেষ করে বাউল, মারফতি, মুর্শিদি গানে দফ একটি অপরিহার্য বাদ্যযন্ত্র।

দফের প্রচলন ও ব্যবহার:

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও লোকসংগীত:
গ্রামীণ মেলা, বাউল উৎসব এবং পীর-মাজারেও দফের ব্যবহার অত্যন্ত জনপ্রিয়।বিভিন্ন ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক গানে দফ ব্যবহৃত হয় সঙ্গীতের স্পন্দন ও তাল সৃষ্টি করতে।

সুফি ও ধ্যানসংগীতে:
দফ শুধুই বাদ্যযন্ত্র নয়; অনেকের কাছে এটি আত্মার অনুরণন, ভক্তির ছন্দ এবং জাগরণের মাধ্যম বলেও জানা গেছে।

আধুনিক সংস্করণ ও থেরাপিতে প্রয়োগ:
এখন অনেক দফে ঝিনঝিন বা ঘণ্টাধ্বনির মতো রিং লাগানো থাকে।বর্তমানে দফকে মিউজিক থেরাপিতেও ব্যবহার করা হয়, কারণ এর ধ্বনি হৃদয় ও মস্তিষ্কে প্রশান্তি আনে।

উপসংহার:
দফ একটি প্রাচীন কিন্তু জীবন্ত বাদ্যযন্ত্র যা যুগে যুগে বিভিন্ন সংস্কৃতিতে নতুনভাবে ও নতুনসাজে প্রকাশ হয়ে আসছে। আজও এটি শুধু লোকসংগীতে নয়, ধ্যান, চিকিৎসা ও গবেষণার ক্ষেত্রেও গুরুত্ব পাচ্ছে।

মো: শোয়েব হোসেন (লেখক)
শিক্ষক,শিল্পী, গবেষক,
সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী।