ঢাকা ০৫:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
বাবার থ্রি হুইলারে চড়ে স্কুলে যাওয়া হলোনা রুবাইয়ার// ঠাকুরগাঁওয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় বাবা-মেয়ে নিহত ঘিওর, মানিকগঞ্জের এই জুলুমের বিচারের জন্য আওয়াজ তুলুন, স্থানীয়রা এগিয়ে আসুন! জাতীয় নির্বাচনের আগে দেশের ১২টি সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে নতুন করে ভাবছে সরকার মালয়েশিয়ায় ১৭০০ রিঙ্গিতের নিচে বেতনপ্রাপ্ত শ্রমিকদের অভিযোগ করার আহ্বান গণঅভ্যুত্থানে মরদেহ পোড়ানোর ঘটনায় ১৬ জনের সম্পৃক্ততা পেয়েছে ট্রাইব্যুনাল ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা: কখন কীভাবে কার্যকর হবে কাঠালিয়া গার্ডার ব্রিজ রাতে ঢালাই রাতে ডেবে যায় নাসিরনগরে তিন সংগঠনের তারুণ্যের সমাবেশ অনুষ্ঠিত সাবেক সিইসির সঙ্গে মব জাস্টিসের আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কিশোরগঞ্জের ভৈরবে বাবাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে ছেলেকে আটক করেছে থানা পুলিশ

দফের আবিষ্কার ও প্রচলন ইতিহাস

নিজস্ব সংবাদদাতা:
  • আপডেট টাইম : ০২:০৯:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫
  • / ৮১ ১৫০.০০০ বার পাঠক

অফিস ডেস্ক —
দফ (Daf) বা দাফ একটি প্রাচীন তালবাদ্য যন্ত্র, যার ইতিহাস বহু শতাব্দী পেছনের কথা। এটি মূলত: একটি এক-মুখো ফ্রেম ড্রাম, সাধারণত কাঠ, ধাতু বা প্লাষ্টিকের গোলাকার ফ্রেমে একটি চামড়ার বা সিন্থেটিক চামড়ার ত্বক টানানো থাকে।

চলুন দফের আবিষ্কার ও প্রচলনের ইতিহাস সম্পর্কে ধারাবাহিকভাবে জেনে নিই:

আদিম উৎস:
দফের উৎস ধরা হয় প্রাচীন পারস্য বা ইরান অঞ্চলে। প্রায় ৬ষ্ঠ শতাব্দী খ্রিষ্টপূর্বাব্দে।এটি তখন ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক অনুষ্ঠানে ব্যবহৃত হতো। বিশেষ করে সুফি সাধকরা ধ্যান ও জিকিরের সময় দফ ব্যবহার করতেন।

প্রসার ও প্রচার মধ্যপ্রাচ্যে :

পারস্য থেকে এটি মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে।বিশেষ করে আরব, তুর্কি, ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলোতে।প্রাচীন ইসলামি সংস্কৃতিতে দফকে “হালাল” বাদ্যযন্ত্র হিসেবে গণ্য করা হতো।কারণ এটি গানের চেয়ে জিকিরে বেশি ব্যবহৃত হতো।

ভারতীয় উপমহাদেশে আগমন:
দফ ভারতীয় উপমহাদেশে আসে মূলত: সুফি সাধকদের মাধ্যমে।মাজার, ওরস, কাওয়ালি, লোকগান ও বাউল সংগীতে দফ বিশেষভাবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।বাংলা লোকসংগীতে বিশেষ করে বাউল, মারফতি, মুর্শিদি গানে দফ একটি অপরিহার্য বাদ্যযন্ত্র।

দফের প্রচলন ও ব্যবহার:

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও লোকসংগীত:
গ্রামীণ মেলা, বাউল উৎসব এবং পীর-মাজারেও দফের ব্যবহার অত্যন্ত জনপ্রিয়।বিভিন্ন ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক গানে দফ ব্যবহৃত হয় সঙ্গীতের স্পন্দন ও তাল সৃষ্টি করতে।

সুফি ও ধ্যানসংগীতে:
দফ শুধুই বাদ্যযন্ত্র নয়; অনেকের কাছে এটি আত্মার অনুরণন, ভক্তির ছন্দ এবং জাগরণের মাধ্যম বলেও জানা গেছে।

আধুনিক সংস্করণ ও থেরাপিতে প্রয়োগ:
এখন অনেক দফে ঝিনঝিন বা ঘণ্টাধ্বনির মতো রিং লাগানো থাকে।বর্তমানে দফকে মিউজিক থেরাপিতেও ব্যবহার করা হয়, কারণ এর ধ্বনি হৃদয় ও মস্তিষ্কে প্রশান্তি আনে।

উপসংহার:
দফ একটি প্রাচীন কিন্তু জীবন্ত বাদ্যযন্ত্র যা যুগে যুগে বিভিন্ন সংস্কৃতিতে নতুনভাবে ও নতুনসাজে প্রকাশ হয়ে আসছে। আজও এটি শুধু লোকসংগীতে নয়, ধ্যান, চিকিৎসা ও গবেষণার ক্ষেত্রেও গুরুত্ব পাচ্ছে।

মো: শোয়েব হোসেন (লেখক)
শিক্ষক,শিল্পী, গবেষক,
সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দফের আবিষ্কার ও প্রচলন ইতিহাস

আপডেট টাইম : ০২:০৯:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

অফিস ডেস্ক —
দফ (Daf) বা দাফ একটি প্রাচীন তালবাদ্য যন্ত্র, যার ইতিহাস বহু শতাব্দী পেছনের কথা। এটি মূলত: একটি এক-মুখো ফ্রেম ড্রাম, সাধারণত কাঠ, ধাতু বা প্লাষ্টিকের গোলাকার ফ্রেমে একটি চামড়ার বা সিন্থেটিক চামড়ার ত্বক টানানো থাকে।

চলুন দফের আবিষ্কার ও প্রচলনের ইতিহাস সম্পর্কে ধারাবাহিকভাবে জেনে নিই:

আদিম উৎস:
দফের উৎস ধরা হয় প্রাচীন পারস্য বা ইরান অঞ্চলে। প্রায় ৬ষ্ঠ শতাব্দী খ্রিষ্টপূর্বাব্দে।এটি তখন ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক অনুষ্ঠানে ব্যবহৃত হতো। বিশেষ করে সুফি সাধকরা ধ্যান ও জিকিরের সময় দফ ব্যবহার করতেন।

প্রসার ও প্রচার মধ্যপ্রাচ্যে :

পারস্য থেকে এটি মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে।বিশেষ করে আরব, তুর্কি, ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলোতে।প্রাচীন ইসলামি সংস্কৃতিতে দফকে “হালাল” বাদ্যযন্ত্র হিসেবে গণ্য করা হতো।কারণ এটি গানের চেয়ে জিকিরে বেশি ব্যবহৃত হতো।

ভারতীয় উপমহাদেশে আগমন:
দফ ভারতীয় উপমহাদেশে আসে মূলত: সুফি সাধকদের মাধ্যমে।মাজার, ওরস, কাওয়ালি, লোকগান ও বাউল সংগীতে দফ বিশেষভাবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।বাংলা লোকসংগীতে বিশেষ করে বাউল, মারফতি, মুর্শিদি গানে দফ একটি অপরিহার্য বাদ্যযন্ত্র।

দফের প্রচলন ও ব্যবহার:

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও লোকসংগীত:
গ্রামীণ মেলা, বাউল উৎসব এবং পীর-মাজারেও দফের ব্যবহার অত্যন্ত জনপ্রিয়।বিভিন্ন ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক গানে দফ ব্যবহৃত হয় সঙ্গীতের স্পন্দন ও তাল সৃষ্টি করতে।

সুফি ও ধ্যানসংগীতে:
দফ শুধুই বাদ্যযন্ত্র নয়; অনেকের কাছে এটি আত্মার অনুরণন, ভক্তির ছন্দ এবং জাগরণের মাধ্যম বলেও জানা গেছে।

আধুনিক সংস্করণ ও থেরাপিতে প্রয়োগ:
এখন অনেক দফে ঝিনঝিন বা ঘণ্টাধ্বনির মতো রিং লাগানো থাকে।বর্তমানে দফকে মিউজিক থেরাপিতেও ব্যবহার করা হয়, কারণ এর ধ্বনি হৃদয় ও মস্তিষ্কে প্রশান্তি আনে।

উপসংহার:
দফ একটি প্রাচীন কিন্তু জীবন্ত বাদ্যযন্ত্র যা যুগে যুগে বিভিন্ন সংস্কৃতিতে নতুনভাবে ও নতুনসাজে প্রকাশ হয়ে আসছে। আজও এটি শুধু লোকসংগীতে নয়, ধ্যান, চিকিৎসা ও গবেষণার ক্ষেত্রেও গুরুত্ব পাচ্ছে।

মো: শোয়েব হোসেন (লেখক)
শিক্ষক,শিল্পী, গবেষক,
সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী।