পাথরঘাটায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে এক জনকে কুপিয়ে জখম।
- আপডেট টাইম : ১০:১৪:০৮ পূর্বাহ্ণ, শুক্রবার, ১৬ এপ্রিল ২০২১
- / ৩৪২ ৫০০০.০ বার পাঠক
বরগুনা জেলা প্রতিনিধি।
বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে রাহাত নামের এক যুবককে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও তিনজন।
কাকচিড়া ইউনিয়নের কাকচিড়া বন্দর বাজারের একটি নির্মাণাধীন ভবনের সামনে বৃহষ্পতিবার বেলা ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে রাহাত হোসেন ও লাভলী বেগমকে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বাকি দুই জন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।
আহত মোহাম্মদ রাব্বি হোসেন জানান, ক্রয়সূত্রে কাকচিড়া বাজারে ছয় শতাংশ জমির ওপর একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মালিক তার বাবা মৃত মোশাররফ দালাল। ৩০ বছর ধরে ওই জমি তারা ভোগদখল করে আসছেন। সম্প্রতি দোকান সংস্কারের কাজে হাত দিলে রায়হানপুর ইউনিয়নের করিম দালালের ছেলে আমীর হোসেন ওই জমির মালিকানা দাবি করেন। এ নিয়ে একাধিক সালিস বৈঠক হলেও, তাতে নিষ্পত্তি না হওয়ায় নির্মাণ কাজ বন্ধ রেখেছি। এই সুযোগে বুধবার রাতে আমির হোসেনসহ কয়েকজন নির্মাণাধীন ভবনে অস্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। বিষয়টি আমি পাথরঘাটা থানা পুলিশকে জানিয়ে রাখি।
রাব্বি হোসেন আরও জানান, বৃহস্পতিবার বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য বিবদমান পক্ষের পাথরঘাটা থানায় বৈঠকে বসার কথা ছিল। কিন্তু বেলা ১১টার দিকে আমীর হোসেন ও তার ভাই ভবনের সেন্টারিং খুলে ফেলতে থাকে। খবর পেয়ে তিনি ও তার বড় ভাই রাহাত সেখানে গিয়ে সেন্টারিং খুলতে নিষেধ করলে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন আমীর হোসেন। এ নিয়ে তর্কের এক পর্যায়ে আমীর হোসেন ও তার ভাই এবং দুই মেয়েসহ কয়েকজন লাঠি ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। মারধরের এক পর্যায়ে রাহাত হোসেনের মাথায় দা দিয়ে কোপ দেয়া হয়।
এ সময় তাকে বাঁচাতে গেলে,তাদের মা ও বড় ভাইয়ের স্ত্রীকেও মারধর করা হয়।
রাব্বির মা লাভলী বেগম বলেন, ‘আমীর হোসেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দিয়ে জমির দাবি করে কাকচিড়া বাজারের অনেক ব্যবসায়ীকে হয়রানি করে আসছেন। অথচ, তার বাবা প্রত্যেকের কাছে জমি বিক্রি করে টাকা নিয়েছেন। ১৯৮৩ সালে আমার স্বামী মৃত মোশারফ হোসেন আমীর হোসেনের বাবা করিম দালালের কাছ থেকে জমিটি কিনে নেন। সেই থেকে আমরা ওই জমি ভোগদখল করে আসছি।
‘এতদিন কোনো দাবি ছিল না তাদের, আমরা যখন দোকানের কাজ শুরু করেছি তখনই তারা এসে আমার ঘর দখলে নিয়ে আমাদের মারধর করে তাড়ানোর পাঁয়তারা শুরু করেছে।’
যোগাযোগ করা হলে বীর মুক্তিযোদ্ধা আমীর হোসেন বলেন, ‘আগে থেকেই কাগজপত্র অনুসারে আমরা ওই জমির মালিকানা দাবি করছি। এ নিয়ে বিরোধ চলছে। আমি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর কাছেও আবেদন করেছিলাম। তিনি পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয়কে বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য লিখিত চিঠি দিয়েছেন। কিন্তু এসব পাত্তা না দিয়ে মোশাররফ দালালের ছেলে রাহাত ও রাব্বি জোর করে ভবন নির্মাণ করছিল।
‘সকালে তারা লাঠিসোটা নিয়ে আমাদের মারধর করে জমি থেকে তাড়ানোর চেষ্টা করে। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়েছে। আমাদের পক্ষের কেউ কাউকে কোপ দেয়নি। এটা মিথ্যে ও বানোয়াট অভিযোগ।’
পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাহাবুদ্দিন জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।