ঢাকা ০২:০৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৪ মে ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
ইবিতে ‘বি’ ইউনিটের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন: মুরাদ কবির সড়ক দুর্ঘটনায় ট্রাকের হেলপার গুরুতর আহত কুরআনে যাদেরকে আল্লাহর ওলি বলা হয়েছে। দুধরচকী। পাকুন্দিয়া উপজেলার পাটুয়াবাঙ্গা দর্গাবাজারে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হাজী মো: মকবুল হোসেনের পথসভা ও গণসংযোগ জামালপুরে হাত পাখা শিল্পের প্রসার পুলিশ স্ত্রীর দাপটে বেপরোয়া জালাল উদ্দিন সাগর, সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা মোংলায় মহান মে দিবস উদযাপন উপলক্ষে বিশাল শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত পাকুন্দিয়া থানা পুলিশের অভিযানে ৪০০ গ্রাম গাঁজা সহ ১ আসামী গ্রেফতার সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার-১

আসছে রোজা, বাড়ছে দাম

সম্পাদকীয়ঃ

রমজান আসার পূর্বেই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি!

প্রতিবছর রোজা এলেই বাড়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম। রমজান আসার প্রায় মাস খানিক আগেই তার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। রোজার মাত্র ৪ দিনের মতো বাকি। এর পূর্বেই বাড়তে শুরু করেছে দাম। বিশ্ববাজারেই পণ্যের দাম চড়া। চাল, ডাল, চিনি, গম, গুঁড়া দুধ প্রভৃতি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম আন্তর্জাতিক বাজারেই বেশি। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বাড়তি জাহাজ ভাড়া। আগে যে জাহাজের ভাড়া ছিল ৮০০ ডলার, এখন তা প্রায় ১ হাজার ৮০০। ফলে দেশের বাজারে আগে থেকেই দাম চড়া। গত এক বছরে চালের দাম বেড়েছে ২৯ শতাংশ, তেলের ৩৭ শতাংশ। তারপর রোজার রীতি অনুযায়ী আবার যদি আরেক দফা দাম বাড়ে, তাহলে সাধারণ মানুষের জন্য সেটা হবে মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা।

এমনিতেই করোনার কারণে বেকার হয়েছে বহু মানুষ। আর চাকরি যাঁদের আছেও, তাঁদের আয়–রোজগার কমেছে। জরিপ বলছে, মহামারিতে মানুষের গড় আয় কমেছে ২০ শতাংশ। ফলে বর্তমান দাম যদি স্থিতিশীলও থাকে, তারপরও সাধারণ মানুষের চলা দায় হয়ে যাবে। এর মধ্যে আরেক দফা মূল্যবৃদ্ধি কোনোমতেই কাম্য হতে পারে না।

অথচ সারা দুনিয়ায় ধর্মীয় উপলক্ষ বা উৎসবের সময় জিনিসপত্রের দাম বরং কমে। উৎসব ঘিরে ইউরোপ-আমেরিকায় ছাড়ের হিড়িক পড়ে যায়। মাসখানেক আগে থেকেই শুরু হয়ে যায় উৎসব। অনেকে বছরভর এ সময়টার জন্যই অপেক্ষা করে। সারা বছরের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনে রাখে তারা। ছাড় আর সেলের এ রীতি দুনিয়াজোড়া, ব্যতিক্রম মনে হয় শুধু বাংলাদেশ। এখানে উৎসবের আগে পণ্যের দাম বাড়ে।

আমাদের প্রশ্ন, রোজা এলেই কেন জিনিসপত্রের দাম বাড়বে? এ তো জানা কথাই যে রোজায় কিছু পণ্যের চাহিদা বাড়ে। এর মধ্যে আছে পেঁয়াজ, ছোলা, ডাল, চিনি, দুধ, তেল, আটা, মুড়ি, খেজুর, আলু, বেগুন, শসা ইত্যাদি। এসব পণ্য কী পরিমাণ লাগবে, তা–ও আমাদের জানা আছে। এই যেমন রমজানে ভোজ্যতেলের চাহিদা ২ লাখ টন, পেঁয়াজ ৫ লাখ টন, চিনি ১ লাখ ৩৬ হাজার টন, ছোলা ৮০ হাজার টন। তাহলে কী কী দরকার, কখন দরকার আর কতটুকু দরকার—গুরুত্বপূর্ণ ৩টা তথ্যই আমাদের জানা, তারপরও কেন পণ্যের আকাল পড়ে, দাম বাড়ে?

আগেভাগেই কেন আমরা সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারি না। নির্দিষ্ট একটি পণ্য দেশে কতটুকু আছে, কিংবা কতটুকু উৎপাদিত হয়েছে, তার হিসাব তো কৃষি ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে আছে। বাড়তি কতটুকু আমদানি করতে হবে, তা–ও নিশ্চয় তাদের জানা। এ পণ্য কোন দেশ থেকে সুলভ মূল্যে আনা যাবে, তা–ও আগেভাগেই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জানা থাকা উচিত। সব মিলিয়ে রোজার জন্য মানসম্মত একটা বাজারব্যবস্থা তো অনেক আগেই গড়ে ওঠার কথা। প্রতিবছরই তাহলে কেন এ অনিয়ম?

সরকার অবশ্য বলছে, সুলভে সাধারণ মানুষের কাছে পণ্য পৌঁছে দিতে এবার সরকারি বিক্রয় সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের সক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। ৫০০ ট্রাকে করে পণ্য বিক্রি হবে। পাশাপাশি ই-কমার্সেও পাওয়া যাবে। আর আমদানি মূল্যের সঙ্গে বিক্রয়মূল্যের ফারাক যাতে বেশি না-হয়, তা–ও তদারক করা হবে। কিন্তু এ সবই তো বিশেষ ব্যবস্থা। রমজানে কোরামিনবিহীন স্বাভাবিক একটা বাজার আমরা কখন দেখতে পাবো ?

আরো খবর.......

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ইবিতে ‘বি’ ইউনিটের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত

আসছে রোজা, বাড়ছে দাম

আপডেট টাইম : ১০:৩৬:১২ পূর্বাহ্ণ, শনিবার, ১০ এপ্রিল ২০২১

সম্পাদকীয়ঃ

রমজান আসার পূর্বেই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি!

প্রতিবছর রোজা এলেই বাড়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম। রমজান আসার প্রায় মাস খানিক আগেই তার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। রোজার মাত্র ৪ দিনের মতো বাকি। এর পূর্বেই বাড়তে শুরু করেছে দাম। বিশ্ববাজারেই পণ্যের দাম চড়া। চাল, ডাল, চিনি, গম, গুঁড়া দুধ প্রভৃতি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম আন্তর্জাতিক বাজারেই বেশি। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বাড়তি জাহাজ ভাড়া। আগে যে জাহাজের ভাড়া ছিল ৮০০ ডলার, এখন তা প্রায় ১ হাজার ৮০০। ফলে দেশের বাজারে আগে থেকেই দাম চড়া। গত এক বছরে চালের দাম বেড়েছে ২৯ শতাংশ, তেলের ৩৭ শতাংশ। তারপর রোজার রীতি অনুযায়ী আবার যদি আরেক দফা দাম বাড়ে, তাহলে সাধারণ মানুষের জন্য সেটা হবে মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা।

এমনিতেই করোনার কারণে বেকার হয়েছে বহু মানুষ। আর চাকরি যাঁদের আছেও, তাঁদের আয়–রোজগার কমেছে। জরিপ বলছে, মহামারিতে মানুষের গড় আয় কমেছে ২০ শতাংশ। ফলে বর্তমান দাম যদি স্থিতিশীলও থাকে, তারপরও সাধারণ মানুষের চলা দায় হয়ে যাবে। এর মধ্যে আরেক দফা মূল্যবৃদ্ধি কোনোমতেই কাম্য হতে পারে না।

অথচ সারা দুনিয়ায় ধর্মীয় উপলক্ষ বা উৎসবের সময় জিনিসপত্রের দাম বরং কমে। উৎসব ঘিরে ইউরোপ-আমেরিকায় ছাড়ের হিড়িক পড়ে যায়। মাসখানেক আগে থেকেই শুরু হয়ে যায় উৎসব। অনেকে বছরভর এ সময়টার জন্যই অপেক্ষা করে। সারা বছরের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনে রাখে তারা। ছাড় আর সেলের এ রীতি দুনিয়াজোড়া, ব্যতিক্রম মনে হয় শুধু বাংলাদেশ। এখানে উৎসবের আগে পণ্যের দাম বাড়ে।

আমাদের প্রশ্ন, রোজা এলেই কেন জিনিসপত্রের দাম বাড়বে? এ তো জানা কথাই যে রোজায় কিছু পণ্যের চাহিদা বাড়ে। এর মধ্যে আছে পেঁয়াজ, ছোলা, ডাল, চিনি, দুধ, তেল, আটা, মুড়ি, খেজুর, আলু, বেগুন, শসা ইত্যাদি। এসব পণ্য কী পরিমাণ লাগবে, তা–ও আমাদের জানা আছে। এই যেমন রমজানে ভোজ্যতেলের চাহিদা ২ লাখ টন, পেঁয়াজ ৫ লাখ টন, চিনি ১ লাখ ৩৬ হাজার টন, ছোলা ৮০ হাজার টন। তাহলে কী কী দরকার, কখন দরকার আর কতটুকু দরকার—গুরুত্বপূর্ণ ৩টা তথ্যই আমাদের জানা, তারপরও কেন পণ্যের আকাল পড়ে, দাম বাড়ে?

আগেভাগেই কেন আমরা সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারি না। নির্দিষ্ট একটি পণ্য দেশে কতটুকু আছে, কিংবা কতটুকু উৎপাদিত হয়েছে, তার হিসাব তো কৃষি ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে আছে। বাড়তি কতটুকু আমদানি করতে হবে, তা–ও নিশ্চয় তাদের জানা। এ পণ্য কোন দেশ থেকে সুলভ মূল্যে আনা যাবে, তা–ও আগেভাগেই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জানা থাকা উচিত। সব মিলিয়ে রোজার জন্য মানসম্মত একটা বাজারব্যবস্থা তো অনেক আগেই গড়ে ওঠার কথা। প্রতিবছরই তাহলে কেন এ অনিয়ম?

সরকার অবশ্য বলছে, সুলভে সাধারণ মানুষের কাছে পণ্য পৌঁছে দিতে এবার সরকারি বিক্রয় সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের সক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। ৫০০ ট্রাকে করে পণ্য বিক্রি হবে। পাশাপাশি ই-কমার্সেও পাওয়া যাবে। আর আমদানি মূল্যের সঙ্গে বিক্রয়মূল্যের ফারাক যাতে বেশি না-হয়, তা–ও তদারক করা হবে। কিন্তু এ সবই তো বিশেষ ব্যবস্থা। রমজানে কোরামিনবিহীন স্বাভাবিক একটা বাজার আমরা কখন দেখতে পাবো ?