ঢাকা ০২:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪

দিন দিন হাত বদলেই চালের দাম বাড়ে ৩০৭ শতাংশ

সময়ের কন্ঠ রিপোর্ট
  • আপডেট টাইম : ০৮:১৩:১৬ পূর্বাহ্ণ, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪
  • / ০ ৫০০০.০ বার পাঠক

ফাইল ছবি। সংগৃহীত

কৃষকের কাছ থেকে ভোক্তার পাতে ওঠা পর্যন্ত হাত বদলের কারণে শুধু সরু চালের দাম বৃদ্ধি পায় ৩০৭ শতাংশ। স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদিত সব ধরনের নিত্যপণ্যেও একই অবস্থা, বিশেষ করে মোটা চাল, পেঁয়াজ, আদা-রসুন, রুই মাছ, ডাল, আলু, কাঁচামরিচ, হলুদ ও শুকনা মরিচের দামের ক্ষেত্রে।

নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধির কারণ অনুসন্ধানে সম্প্রতি ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে। বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করা হয়।

২০ থেকে ২৯ আগস্ট পর্যন্ত ৮টি বিভাগের ৪৯টি জেলায় যেখানে ৬০০ জন উৎপাদনকারী ও ব্যবসায়ীর কাছ থেকে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়। গবেষণায় ২১টি খাদ্যপণ্যের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে ১২টি স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত, ৫টি আমদানিকৃত এবং বাকি ৪টি স্থানীয় উৎপাদন ও আমদানি করা হয়।

গবেষণার তথ্যমতে, ভালো মানের এক কেজি মোটা চাল উৎপাদনে কৃষক পর্যায়ে সর্বোচ্চ খরচ পড়ে ২৬ টাকা। সেই চাল কৃষক বিক্রি করে ৩২ টাকায়। ভোক্তাদের সেই মোটা চাল কিনতে হয় ৬০ টাকায়। অর্থাৎ শুধু হাত বদলে মোটা চালের দাম ২১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পায় বা ২৮ টাকা।

একইভাবে প্রতি কেজি সরু চালের দাম পার্থক্য প্রায় ৪০ টাকা, পেঁয়াজের ৪০ টাকা, রুই মাছের ১২০ টাকা, ডালে ৩০ টাকা, আলু ২৯ টাকা, কাঁচামরিচ ৭২ টাকা এবং হলুদে ১০০ টাকা।

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আশরাফ আহমেদ বলেন, ভোক্তাপর্যায়ে দাম বাড়লেও উৎপাদকরা ন্যায্য দাম পান না। কখনো কখনো দাম বাড়ানোর জন্য পরোক্ষ খরচ জড়িত হয়। সংরক্ষণ, পরিবহণ এবং পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ পর্যায়ে খরচ কমাতে পারলে নিত্যপণ্যের দাম তুলনামূলকভাবে কমে আসতে পারে।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা চেম্বারের নির্বাহী সচিব (গবেষণা) একেএম আসাদুজ্জামান পাটোয়ারী। তিনি বলেন, বর্তমান খাদ্য মূল্যস্ফীতির প্রধান কারণ হলো প্রয়োজনীয় পণ্যের চাহিদা, উৎপাদন ও আমদানির মধ্যে সমন্বয়ের অভাব। এছাড়াও অদক্ষ বাজার ব্যবস্থা এবং তথ্যের অসামঞ্জস্যতা, স্থানীয় উৎপাদন হ্রাস এবং উচ্চ পরিবহণ খরচ, কীটনাশকসহ সার-বীজ-তেলের উচ্চ মূল্য ভূমিকা রাখছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর সুনির্দিষ্ট তথ্যভিত্তিক গবেষণা পরিচালনা করার মত দেন তিনি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ড. সায়েরা ইউনুস বলেন, শুধু মুদ্রানীতি দিয়ে পণ্যের মূল্য কমানো সম্ভব নয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রায় ৯ বার পলিসি রেট পরিবর্তন করলেও বাজারে এর প্রভাব তেমন উল্লেখজনক নয়। এজন্য সরকারকে প্রান্তিক পর্যায়ে পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম জোরদার করতে হবে।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দিন দিন হাত বদলেই চালের দাম বাড়ে ৩০৭ শতাংশ

আপডেট টাইম : ০৮:১৩:১৬ পূর্বাহ্ণ, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪

ফাইল ছবি। সংগৃহীত

কৃষকের কাছ থেকে ভোক্তার পাতে ওঠা পর্যন্ত হাত বদলের কারণে শুধু সরু চালের দাম বৃদ্ধি পায় ৩০৭ শতাংশ। স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদিত সব ধরনের নিত্যপণ্যেও একই অবস্থা, বিশেষ করে মোটা চাল, পেঁয়াজ, আদা-রসুন, রুই মাছ, ডাল, আলু, কাঁচামরিচ, হলুদ ও শুকনা মরিচের দামের ক্ষেত্রে।

নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধির কারণ অনুসন্ধানে সম্প্রতি ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে। বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করা হয়।

২০ থেকে ২৯ আগস্ট পর্যন্ত ৮টি বিভাগের ৪৯টি জেলায় যেখানে ৬০০ জন উৎপাদনকারী ও ব্যবসায়ীর কাছ থেকে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়। গবেষণায় ২১টি খাদ্যপণ্যের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে ১২টি স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত, ৫টি আমদানিকৃত এবং বাকি ৪টি স্থানীয় উৎপাদন ও আমদানি করা হয়।

গবেষণার তথ্যমতে, ভালো মানের এক কেজি মোটা চাল উৎপাদনে কৃষক পর্যায়ে সর্বোচ্চ খরচ পড়ে ২৬ টাকা। সেই চাল কৃষক বিক্রি করে ৩২ টাকায়। ভোক্তাদের সেই মোটা চাল কিনতে হয় ৬০ টাকায়। অর্থাৎ শুধু হাত বদলে মোটা চালের দাম ২১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পায় বা ২৮ টাকা।

একইভাবে প্রতি কেজি সরু চালের দাম পার্থক্য প্রায় ৪০ টাকা, পেঁয়াজের ৪০ টাকা, রুই মাছের ১২০ টাকা, ডালে ৩০ টাকা, আলু ২৯ টাকা, কাঁচামরিচ ৭২ টাকা এবং হলুদে ১০০ টাকা।

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আশরাফ আহমেদ বলেন, ভোক্তাপর্যায়ে দাম বাড়লেও উৎপাদকরা ন্যায্য দাম পান না। কখনো কখনো দাম বাড়ানোর জন্য পরোক্ষ খরচ জড়িত হয়। সংরক্ষণ, পরিবহণ এবং পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ পর্যায়ে খরচ কমাতে পারলে নিত্যপণ্যের দাম তুলনামূলকভাবে কমে আসতে পারে।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা চেম্বারের নির্বাহী সচিব (গবেষণা) একেএম আসাদুজ্জামান পাটোয়ারী। তিনি বলেন, বর্তমান খাদ্য মূল্যস্ফীতির প্রধান কারণ হলো প্রয়োজনীয় পণ্যের চাহিদা, উৎপাদন ও আমদানির মধ্যে সমন্বয়ের অভাব। এছাড়াও অদক্ষ বাজার ব্যবস্থা এবং তথ্যের অসামঞ্জস্যতা, স্থানীয় উৎপাদন হ্রাস এবং উচ্চ পরিবহণ খরচ, কীটনাশকসহ সার-বীজ-তেলের উচ্চ মূল্য ভূমিকা রাখছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর সুনির্দিষ্ট তথ্যভিত্তিক গবেষণা পরিচালনা করার মত দেন তিনি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ড. সায়েরা ইউনুস বলেন, শুধু মুদ্রানীতি দিয়ে পণ্যের মূল্য কমানো সম্ভব নয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রায় ৯ বার পলিসি রেট পরিবর্তন করলেও বাজারে এর প্রভাব তেমন উল্লেখজনক নয়। এজন্য সরকারকে প্রান্তিক পর্যায়ে পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম জোরদার করতে হবে।