প্রবাসী নারীর প্রতারণার শিকার হয়ে সাত বছর ধরে লেবাননের জেলখানায় প্রবাসী রিমন
- আপডেট টাইম : ০৬:৪৩:৩৮ অপরাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ২৯ আগস্ট ২০২৪
- / ৭৫ ৫০০০.০ বার পাঠক
নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার হরনখোলা এলাকার এক দরিদ্র্য পরিবারের সন্তান রিমন। বিগত আট বছর আগে সাংসারিক টানাপোড়েন দূর করতে ঐ এলাকার প্রতিবেশী মহিলা লেবানন প্রবাসী রহিমা বেগমের ও তার ভাই নাসির উদ্দিন লোভনীয় প্রস্তাবে রাজি হয়ে রিমন প্রবাসে (লেবানন) যেতে ইচ্ছা প্রকাশ করে ।
রিমনের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, লেবানন প্রবাসী রহিমা বেগমের রিমনকে প্রবাসে নিয়ে যাওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রথমে ৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা নেয়। পরে দীর্ঘদিন অতিবাহিত হওয়ার পর রিমনকে লেবানন নিতে সক্ষম হন লেবানন প্রবাসী রহিমা বেগম।
এরপর রহিমা বেগম ও তার ভাই নাসির উদ্দিনের আসল রূপ প্রকাশ করা শুরু করে। নানা অযূহাত দেখিয়ে কাগজ করার কথা বলে ১ লক্ষ টাকা নেয় রিমনের পরিবারের কাছে থেকে। এমন করে মোট ৫ লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় রহিমা বেগম। কিন্তু কাগজ এক মাস দুই মাস করে করে রিমনের কাগজপত্র আর ঠিক করেনি রহিমা বেগম। বরং বিভিন্ন ভাবে রহিমা বেগমরের পরিবারের লোকজনের মাধ্যমে রিমনের পরিবারের লোকজনকে হুমকি প্রদান করতে থাকে।
রিমনের পরিবার যখন বলে যে আমাদের ছেলের কাগজ পত্র কিছুই ঠিক করে দেন নাই আবার ৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে রিমনকে লেবানন নিয়ে আবার আরো ১ লক্ষ টাকা নিয়েছেন কিন্তু কোন কাগজপত্র ঠিক করে দেন নাই। আবার রিমনকে দিয়ে রহিমা আক্তার প্রবাসে ৮ মাসের মতো কাজ করিয়ে কোনো টাকা দেয় নাই। এখন উল্টো আমাদের নানা ধরনের হুমকি প্রদান করতেছেন। আমরা আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হবো। এসব কথার প্রেক্ষিতে রহিমা বেগমরের পরিবারের লোকজনেরা রিমনের পরিবারের লোকজনকে মারধর করে বলে জানিয়েছেন রিমনের পরিবার।
এদিকে, রিমন সমস্ত ঘটনাবলি পরিবারের লোকজনকে ফোনের মাধ্যমে অবগত করেন।
প্রবাসী রিমনের পরিবার ঋণ পরিশোধ করতে, যখন রিমনের কাছে টাকা চায় তখন রিমন টাকা দিতে না পেরে মানসিক ভাবে অসুস্থ ও হতাশাগ্রস্ত হয়ে পরলে রিমনের পরিবার এক পর্যায়ে প্রবাসী রহিমা বেগমরের পরিবারের লোকজনের কাছে টাকা দেওয়ার জন্য দাবি করেন।
কারণ রিমনের পরিবার টাকা ধার, সুদের মাধ্যমে এনে মোট পাঁচ লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা রহিমা বেগম ও তোর তার ভাই নাসির উদ্দিন কে দিয়ে রিমনকে লেবানন পাঠায়।
এমতাবস্থায়, ধার ও সুদের মাধ্যমে ঋণ করা টাকার পাওনাদারের চাপে পড়ে যায় রিমনের পরিবার। পরে প্রবাসী রহিমা আক্তারের পরিবারের লোকজনের কাছে রিমনের দেয়া তথ্য অনুযায়ী রহিমা বেগমরের আসল রূপ প্রকাশ করে রিমনের পরিবার। এর প্রেক্ষিতে রহিমা বেগমরের পরিবারের লোকজনেরা রিমনের পরিবারের লোকজনকে প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে। একপর্যায়ে রিমনের বাড়ি পুড়িয়ে ফেলে এবং ফসলের জমি নষ্ট করে দেয় রহিমা বেগমরের বাড়ির লোকজন।
অপরদিকে ও তার ভাই নাসির উদ্দিন, রিমন আট মাস প্রবাসে কাজের উপার্জিত অর্থ সরল বিশ্বাসে প্রবাসী রহিমা বেগমরের কাছে জমা রাখে রিমন এবং রিমন ঐ নারী প্রবাসী রহিমা বেগমরকে বলে যে, এই জমাকৃত টাকা আমার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। কিন্তু রহিমা বেগম কোন টাকা রিমনের পরিবারের কাছে পাঠায়নি বরং এর মধ্যে রিমনের সাথে অমানবিক ব্যবহার এবং খাবার খাদ্য কম দেওয়া থেকে শুরু করে মানসিক ও শারীরিক ভাবে নির্যাতন শুরু করে।
উল্লেখ্য, প্রবাসী রিমন বোকা ও সহজ একজন মানুষ।
রিমনের পরিবার তার উপার্জিত অর্থ না পেয়ে উক্ত মহিলার বাড়ির লোকদের চাপ প্রয়োগ করে সমস্ত টাকা ফিরিয়ে দিতে এবং রিমনকে দেশে ফেরত আনতে, যা লেবানন প্রবাসী মহিলা রহিমা বেগমের শুনে মানসিক ও শারীরিক ভাবে বিপর্যস্ত হয় এবং হার্ট অ্যাটাক করে হঠাৎ মৃত্যুবরণ করেন বলে জানিয়েছেন রিমনের পরিবার।
তাঁরা আরও বলেন, পরবর্তীতে ঐ দেশের পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে রিমনকে ধরে নিয়ে জেল বন্দী করে এবং বিনা দোষে ৭ বছর ধরে লেবাননের জেলখানায় আটক করে রেখেছে বলে দাবি রিমনের পরিবারের।
প্রবাসী রিমন একজন সুন্দর স্বাভাবিক ও বোকা ধরনের মানুষ। এ সুযোগ নিয়ে প্রবাসের সুবিধাবাদী ও তার ভাই নাসির উদ্দিনসহ
মহল রিমন কে মিথ্যা মার্ডার মামলায় জেলখানায় প্রেরণে স্বাক্ষ প্রদানের মাধ্যমে সহযোগিতায় করে এবং এর ফলে সে এখনো লেবাননের জেলখানায় আটক রয়েছে।
বর্তমানে রিমনের পরিবারের আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ, ছেলের শোকে তার মা বাবা প্রায় মৃত্যু শয্যায়।
এমতাবস্থায় বর্তমানে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার সুদৃষ্টি কামনা করে লেবাননের জেলখানা থেকে রিমনের নামে মিথ্যা মামলা খালাস করে দেশে ফেরানোর জন্য আকুল আবেদন জানান।সময়ের অনুসন্ধান চলছে