ঢাকা ০৯:৫৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
কালিয়াকৈরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের উঠান বৈঠক ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত  মোংলায় জলবায়ু ন্যায্যতার গণসংলাপে বক্তারা : সুন্দরবন উপকূলীয় অঞ্চলের বাস্তুতন্ত্রের সুরক্ষা দিন অভিনব কায়দায় কুমড়া শাকের আড়ালে গাঁজা পাচারকালে ডিএনসি- কুমিল্লার হাতে ১৩ কেজি গাঁজাসহ আটক ০২ নারী মঠবাড়ীয়া সাফলেজা কচুবাড়ীয়া বসত ঘর ভাঙচুর লুটপাট ও যখম এর অভিযোগ আঃ খালেক হাওলাদার গংদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির আখড়া বরগুনার পাসপোর্ট অফিস, দালাল ছাড়া মিলছে না পাসপোর্ট কাশেমপুর থানায় অভিযোগ করতে গিয়ে বিট্টিমরাই স্কুল ছাত্র মোঃ রাব্বি নিজ খালাকে আটকিয়ে ? ওসি সাইফুল ইসলাম মোটা অংকের টাকার বিনিময় তাদের আসামি করে গ্রেফতার দেখান আনন্দবাজারকে ডা. শফিকুর রহমান কোনও রাজনৈতিক দলকে খারিজ বা সরিয়ে দেয়ার ইচ্ছা জামায়াতের নেই রাজনৈতিক দলগুলো যদি বলে যে তারা সংস্কার চায় না, তাহলে এখনই নির্বাচন দিয়ে দেবো: ড. ইউনূস দেশবাসীকে ফের কাঁদালেন শহিদ নাফিজের মা নতুন আইজিপি বাহারুল আলম, ডিএমপি কমিশনার সাজ্জাদ আলী

সাবেক এসপি ও ডিএমপি ডিবি প্রধানের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি পত্রিকার সম্পাদকসহ একাধিক আইনজীবীর

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট টাইম : ০২:১৭:১৪ অপরাহ্ণ, শুক্রবার, ১৬ আগস্ট ২০২৪
  • / ১১০ ৫০০০.০ বার পাঠক

(কু-কান্ডের খলনায়ক সাবেক এসপি হারুন এবং ভূক্তভোগী সম্পাদক বোরহান হাওলাদার জসিম) ছবি 

গাজীপুর জেলার ও নারায়ণগঞ্জ জেলার সাবেক এসপি হারুন অর রশিদের নানা অপকর্মের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছে ভুক্তভোগী অনেকেই। আওয়ামীলীগ সরকারের ‘প্রিয় হারুন’ হয়ে উঠে বিএনপি সরকারের আমলের সংসদীয় চিফ উইপ জয়নাল আবেদীন ফারুক’কে জনসম্মুখে টেনে হেঁচড়ে বেদম মারধরের পর। সেই মূহূর্তে পুলিশের আইনের বিধিমালা’কে তোয়াক্কা না করে যখন যেখানে যে ভাবে পেড়েছে সে ভাবেই শত শত মানুষের নামে বিভিন্ন ধরনের মামলা দিয়ে হয়রানি করে লক্ষ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে জানা গেছে এই হারুন।

সত্যকে মিথ্যা, মিথ্যাকে সত্য বানিয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরও বোকা বানিয়েছেন তিনি । আর এভাবেই তিনি কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে জানা গেছে।
বিশাল অঙ্কের অর্থ-বিত্তের মালিক বনে যাওয়া এই পুলিশ কর্মকর্তা নারায়ণগঞ্জে এতটাই ক্ষমতাধর ছিলেন মন্ত্রী-এমপি সহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে তিনি বিন্দু পরিমাণ মানেননি বরং তাদেরকে হুমকি প্রদানের মাধ্যমে বলতেন, বেশি কথা বললে প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানাবো।

এদিকে সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী এবং সচিবদের কোন প্রটোকল দেননি। এ নিয়ে মন্ত্রী ও এমপি এবং সচিবদের ক্ষোভ থাকলেও সাবেক এসপি হারুনের শেখ হাসিনার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ থাকায় যেন কিছুই করার ছিল না তাদের ।

এদিকে, সাধারণ ব্যবসায়ী তো দূরের কথা জেলার প্রভাবশালী শীর্ষ ব্যবসায়ীরাও এসপি হারুনের রোষানল থেকে রেহাই পায়নি, এমনকি একাধিক শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকরা। বিভিন্ন ভাবে নানা হুমকির সম্মুখীন হয়ে আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন অনেকে। লোক লজ্জার ভয়ে ভুক্তভোগীদের অনেকেই মুখ খোলেননি। নীরবে এসপি হারুনের অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করে গেছেন তারা। এ ছাড়াও সাবেক ক্ষমতাসীন সরকার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদেরও তাকে অর্থ দিয়ে এলাকায় থাকতে হয়েছে বলে জানা গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই বলেছেন, আমরা আওয়ামীলীগ নেতা অথচ আমাদের দল ক্ষমতায় ছিল এরপরও এসপি হারুনকে মাসোহারা দিয়ে এলাকায় থাকতে হয়েছে।
তারা আরও বলেন, এসপি হারুন যখন নারায়ণগঞ্জের এসপি ছিল, তখন তিনি আমাদের কাছে মোটা অংকের টাকা দাবি করতো, দাবিকৃত টাকা না দিলে নানাভাবে হয়রানি করতো, তখন আমরা নিরূপায় ছিলাম। কিন্তু সব কিছুর একটা শেষ আছে তা প্রমাণিত হয়েছে তার বদলির মধ্য দিয়ে।

অভিযোগ রয়েছে, গাজীপুর থাকতেই সাবেক এসপি হারুন নারায়ণগঞ্জের অনেক ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক নেতার তালিকা করেন এবং কার থেকে কিভাবে অর্থ আদায় করবেন তারও একটা ছক করেন। নারায়ণগঞ্জে যোগদানের পর শুরু হয় তার টাকা কামানোর মিশন। এই কাজে তিনি সবচেয়ে বিশ্বস্ত সহচর হিসেবে ব্যবহার করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা (ডিবি) পুলিশকে। তার নির্দেশে প্রতি রাতে ডিবি’র একাধিক টিম কালো গ্লাসের মাইক্রোবাস গাড়ি নিয়ে নেমে পড়তো ‘শিকার’ ধরতে। গাড়িতে মজুত থাকতো ইয়াবা, অস্ত্র ও বিভিন্ন মাদক দ্রব্য। সুযোগ বুঝে ওই সব জিনিস দিয়ে ফাঁসিয়ে দেয়া হতো নিরপরাধ ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক নেতা, জনপ্রতিনিধি ও ধনীর দুলালীদের। যদিও ৬ই অক্টোবর এসপি হারুনের অপকর্মের অন্যতম সহযোগী ডিবির ওসি এনামুল হককে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয় পুলিশ হেড কোয়ার্টারের এক আদেশে। এক পর্যায়ে এসপি হারুন নিজের অপকর্ম ঢাকার জন্য এনামুল হককে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে বদলি করা হয়েছে বলে স্থানীয় মিডিয়ায় প্রচার করেন।

সাবেক এসপি হারুন মুখে বড় বড় বুলি দিয়ে জনগণের সেবা করার কথা বললেও বাস্তবে ছিল উল্টো। এমন ভাবে দিনের বেলা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গিয়ে বলতেন, মাদক ব্যবসায়ী, ভূমিদস্যু, চাঁদাবাজ, গডফাদার, সন্ত্রাসী-মাস্তানদের রক্ষা নাই। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। আর রাতের বেলা চিহ্নিত বড় বড় অপরাধীদের বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিতো বলে অভিযোগ আছে।
যেসকল ব্যক্তিরা টাকা দিতে রাজি না হতো তাদের মাদক দিয়ে গ্রেপ্তার দেখিয়ে সংবাদ কর্মীদের ঢেকে ব্রিফিং করে কোর্টে প্রেরণ করে রিমান্ড মঞ্জুর করিয়ে অমানবিক নির্যাতন করে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেয়ার শত শত অভিযোগ রয়েছে এই হারুনের বিরুদ্ধে।

বিতর্কিত ও আলোচিত সাবেক এসপি হারুনকে মাত্র ১১ মাসের মাথায় নারায়ণগঞ্জ থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দপ্তরে (ট্রেনিং রিজার্ভ) সংযুক্ত করা হয়ছিল। এরপর স্বস্তির দেখা পেয়েছিলো বলে জানান নারায়ণগঞ্জের সাধারণ ব্যবসায়ীসহ ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের অনেকেই। নারায়ণগঞ্জে এসপি হারুনের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ

(সূত্রমতে) সাবেক পুলিশ সুপার হারুন রশিদ ২০১৮ সালের ২রা ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জের এসপি হিসেবে দায়িত্ব নেন। আতঙ্ক দেখা দেয় ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে। কারণ গাজীপুরে থাকাকালীন এসপি হারুনের কর্মকাণ্ড নারায়ণগঞ্জবাসী ভালো করেই জানতো। তবে এসপি হারুন বিভিন্ন সভায় ও অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে নারায়ণগঞ্জবাসীকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেন, তিনি অপরাধীদের জন্য আতঙ্ক, সাধারণের বন্ধু। কিন্তু কয়েকদিনের মধ্যে নারায়ণগঞ্জবাসী জেনে যায় এটা তার উপরের কথা। ৩০শে ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরেই তিনি সরকারদলীয় নেতাকর্মীদের উপর চড়াও হন। আওয়ামীলীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাদের অনেককেই রাতের অন্ধকারে তুলে নিয়ে এসে গ্রেপ্তার অথবা ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে মোটা অঙ্কের চাঁদা আদায় করতেন। দলীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য শামীম ওসমানকে প্রাধান্য দিয়ে বক্তব্য দেয়াকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজামের বিরুদ্ধে পুলিশ দিয়ে ফতুল্লা ও সদর মডেল থানায় দু’টি সাধারণ ডায়েরি করিয়েছিলেন তিনি। জমি সংক্রান্ত বিভিন্ন ঝামেলা মিটিয়ে দেয়ার কথা বলে মোটা অঙ্কের টাকা ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এ ছাড়া যোগদানের পর থেকেই নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন ব্যবসায়ীকে চায়ের দাওয়াত দিয়ে তার দপ্তরে ডেকে নিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিতে শুরু করেন এসপি হারুন। ২রা এপ্রিল ফতুল্লার পাগলায় ভাসমান রেস্টুরেন্ট ও বার ‘মেরি এন্ডারসন’ এ এসপি হারুনের নির্দেশ অভিযান চালায় পুলিশ। সেখান থেকে ২৫ জন স্টাফ ও ৪৩ জন মাদকসেবীকে আটক করা হয়। উদ্ধার করা হয় বিপুল সংখ্যক মাদক দ্রব্য। কিন্তু ঘটনায় জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ও ব্যবসায়ী তানভীর আহমেদ টিটুকে জড়ানোর চেষ্টা করে এসপি হারুন। এ ঘটনায় সে সময় চরম ক্ষোভ দেখা দেয় নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ী মহলে। এক পর্যায়ে ‘দেখা করার দিন শেষ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ’ স্লোগানকে সামনে নিয়ে টিটুকে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়ানোর চেষ্টার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে প্রতিবাদ সভা করেন, নারায়ণগঞ্জ চেম্বারের নেতৃত্বে ব্যবসায়ী সংগঠনের অর্ধশতাধিক ব্যবসায়ী। এরপর কৌশল পাল্টান এসপি হারুন। এসপি হারুনের আর্থিক হয়রানির শিকার হয়েছেন নাসিক ২৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও নারায়ণগঞ্জ মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ দুলাল প্রধান, নাসিক প্যানেল মেয়র-২ ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের সভাপতি মতিউর রহমান মতি, ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ওমর ফারুক, জাপা নেতা জয়নাল আবেদীনসহ ক্ষমতাসীন দলের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী।
এসপি হারুনের নির্দেশে ডিবি পুলিশের ধারাবাহিক ৩টি অভিযান ছিল সবচেয়ে বেশি প্রশ্নবিদ্ধ। ওইদিন রাতে ডিবি পুলিশের একটি টিম অভিযান চালিয়ে দেশের স্বনামধন্য মাস্টার কয়েল ফ্যাক্টরির মালিক জামাল হোসেন মৃধার বাড়িতে অভিযান চালায়। পুলিশের দাবি ছিল, তার বাড়ি থেকে ২ হাজার পিস ইয়াবা এবং নগদ ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয় জামাল হোসেন মৃধা, তার সহযোগী মোস্তফা কামাল ও মানিক মিয়াকে। জামাল মৃধার ৩টি মশার কয়েল তৈরির ফ্যাক্টরি রয়েছে। এ ছাড়া তার একটি গরুর খামারও রয়েছে। গ্রেপ্তারের পর জামাল মৃধা ও তার সঙ্গে গ্রেফতারকৃতরা দীর্ঘ দিন নারায়ণগঞ্জ কারাগারে বন্দি ছিলেন। জামাল মৃধার পরিবার এবং স্থানীয় এলাকাবাসীর দাবি তিনি ধর্মপ্রাণ হিসেবে এলাকায় পরিচিত। মাদকের বিরুদ্ধে তিনি সবসময় সোচ্চার ছিলেন। তার প্রতিষ্ঠিত মাস্টার মশার কয়েল দেশের প্রান্তিক পর্যায়ে ব্যাপক জনপ্রিয় বলে জানা গেছে। তাছাড়া তিনি একজন প্রতিষ্ঠিত গরুর খামারিও বটে।

এরাই অপহরণকারী তাদের ছবি প্রকাশ করলাম।

এর আগে নারায়ণগঞ্জের এসপি’র দায়িত্বে থাকাবস্থায় হারুনের কূ-কর্মের সত্যতা পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ায়, ঐ পত্রিকার সম্পাদক বোরহান হাওলাদার জসিম সহ আরও কয়েকজন সাংবাদিক এবং একাধিক আইনজীবীর নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে গাজীপুর থেকে তাদের অপহরণ  করে নিয়ে যায় নারায়ণগঞ্জে এসপি অফিসে। পরে ঐ সম্পাদক বোরহান হাওলাদার জসিম সহ মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারকৃতদের বেধড়ক শারীরিক নির্যাতনসহ আর্থিক ক্ষতি করে। তাদের কেন গ্রেফতার করা হয়েছে, এমন প্রশ্নের জবাবে সাবেক এসপি হারুন বলেছিলেন (আমি হারুন গাজীপুরে এসপি থাকাকালীন সময়ে) আমার বিরুদ্ধে কেউ কোন কিছু পত্রিকায় ও সেটালাইট টিভি চ্যানেল প্রকাশ করতে সাহস পায়নি। কিন্তু তোর পত্রিকার এক সাংবাদিক আমার বিরুদ্ধে লেখালেখি করেছে। তুই জানিস না বাংলাদেশে হারুন একজনই, সে হলো আমি এসপি হারুন। পরে তাদের নামে একাধিক থানায় একাধিক বানোয়াট মিথ্যা মামলা দিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারে প্রেরণ করে। এরপর মিথ্যা মামলায় বোরহান হাওলাদার জসিম দীর্ঘ ২২ মাস কারাভোগের পর জামিনে মুক্তি পান বলে জানান তিনি।
তখন জামিনে মুক্তি পাওয়ার পরও বিভিন্ন হুমকি পেতে থাকে সাবেক এসপি হারুনের কাছ থেকে।

সত্য ঘটনা পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পরও কেন আমার জেল খাটতে হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাব সম্পাদক বোরহান হাওলাদার জসিম একাধিক সাবেক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা মন্ত্রীদের জানান এবং তিনি সহ একাধিক সাংবাদিক ও আইনজীবীদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান। বারবার এরকম ভাবে লিখিত অভিযোগ জানালেও সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সহ অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের কোন মন্ত্রী এ বিষয়ে কোন রকম ব্যবস্থা নেননি।

(হারুন নারায়ণগঞ্জের এসপি থাকা অবস্থায় যে সংবাদ প্রকাশের জের ধরে মিথ্যা বানোয়াট মামলা করেছিল, তার কিছু অংশ উল্লেখ করা হলো)

(জামাল মৃধার বড় ভাই লাভলু মৃধা বলেন, বাড়িতে ৩ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা ছিল, কিন্তু পুলিশ দেখিয়েছে সোয়া ১ কোটি টাকা। আর ইয়াবার বিষয়টি পুলিশের সাজানো ছিল।

এত টাকা সেদিন বাড়িতে ছিল কেন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, তখন কোরবানির ঈদে আগে খামারের গরু বিক্রির টাকা ছিল বাসায়। এ ছাড়া কারখানার মালামাল ক্রয়ের জন্য বাসায় টাকা রাখা হতো। কিন্তু তার ভাই মাদকের সঙ্গে জড়িত এ কথা পরিবারের কেউ তো নয়ই বরং এলাকারও কেউ বিশ্বাস করেনি। সবকিছুই ছিল পুলিশের সাজানো। জামাল মৃধার আইনজীবী অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান দিপু বলেন, পুলিশের তদন্তে প্রকৃত সত্য উঠে আসবে বলে আমরা মনি করি। তার মক্কেলকে অন্যায়ভাবে ফাঁসিয়ে দিয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি সামাজিকভাবে ব্যবসা করে সুপ্রতিষ্ঠিত সেই ব্যক্তি কেন মাদক ব্যবসার মতো ঝুঁকিপূর্ণ কাজে লিপ্ত হবে। অপর দিকে এ ঘটনার পর দিন ৩রা অক্টোবর ডিবি পুলিশের একই টিম সিদ্ধিরগঞ্জে ম্যাক্স ইলেক্ট্রা ইন্ডাস্ট্রিজে হানা দেয়। তারা ওই প্রতিষ্ঠান থেকে ৮ জন শ্রমিককে গ্রেপ্তার করে। পরে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, ওই প্রতিষ্ঠানে অবৈধ ও নকল পণ্য সামগ্রী মজুত রয়েছে। ম্যাক্স ইলেক্ট্রার মালিক বেলায়েত হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, সেদিন পুলিশ সুপার অন্যায়ভাবে তার প্রতিষ্ঠানে হানা দিয়ে তার ৮ জন কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করেছেন এবং তার প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ পুলিশের কাছে দেন। গতকাল পর্যন্ত তার প্রতিষ্ঠান পুলিশের হেফাজতে ছিল বলে তিনি জানান। প্রতিষ্ঠান থেকে গ্রেপ্তারকৃতরা গতকাল আদালত থেকে জামিনে মুক্ত হয়েছেন বলে তিনি জানান। এ ব্যবসায়ী আরো জানান, পুলিশ তার প্রতিষ্ঠানে অভিযানের সময় নিয়ম অনুযায়ী শুল্ক গোয়েন্দা ও এ বিষয়ে অভিজ্ঞ কোনো প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে নেয়নি। অন্যায় ভাবে আমার প্রতিষ্ঠানে সেদিন হানা দেয়া হয়েছিল। অথচ আমার প্রতিষ্ঠানের পাশেই শুল্ক গোয়েন্দা কার্যালয় অবস্থিত। আমি ভ্যাট-ট্যাক্স পরিশোধ করেই ব্যবসা করছি। ঘটনার সময় পুলিশ সুপারকে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং প্রতিষ্ঠানে থাকা মালামালের বৈধ কাগজপত্র দেখাতে চাইলেও তিনি তা দেখেননি। উল্টো টেলিফোনে তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি আমার কাছে মোটা অঙ্কের উৎকোচ দাবি করেন। তার দাবি না মেটানোয় এখনো আমার প্রতিষ্ঠান পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। এ ব্যবসায়ীর ধারণা পুলিশ তার প্রতিষ্ঠান থেকে বিপুল পরিমাণ ইলেকট্রনিক্স ও প্রসাধনী সামগ্রী সরিয়ে নিয়ে থাকতে পারে। প্রতিষ্ঠানটি অবমুক্ত হওয়ার পর এ বিষয়টি জানা যাবে বলে তিনি বলেন। এসপি হারুনের তৃতীয় বিতর্কিত অভিযান ছিল নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পঞ্চবটিতে অবস্থিত ইউনাইটেড ক্লাবে অভিযান। সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে রেজিস্ট্রেশন পাওয়া ওই ক্লাবে কোনো ধরনের কোনো অবৈধ কর্মকাণ্ড হয়নি। পুলিশও অভিযানের সময় ক্লাব থেকে কোনো অবৈধ কিছু উদ্ধার করতে পারেনি। অভিযানে ক্লাবে থাকা ক্লাবটির সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন তাপুসহ ৭ জন বিভিন্ন পেশার ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। যাদের মধ্যে একজন ব্যাংক কর্মকর্তাও ছিলেন। পরে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তাদের জুয়া আইনে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হলে আদালতে ২০০ টাকা মুচলেকায় তারা জামিন পান। ক্লাবটির সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন তাপু বলেন, ঘটনার পর তিনি তার সন্তানের মুখের দিকে তাকাতে পারেন না। পুলিশের এ ধরনের কর্মকাণ্ডে তিনিসহ তার সঙ্গে থাকা বন্ধুরা সামাজিকভাবে মারাত্মক হেয় প্রতিপন্ন হয়েছেন। যা কোনো দিন ফিরে পাওয়া সম্ভব নয়। তিনি বলেন, ক্লাব মানেই খারাপ কিছু নয়। এই ক্লাবের সব সদস্য সমাজে সুপ্রতিষ্ঠিত। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সূত্র জানায়, ওই ৭ জনের কাছ থেকে ৩০ লাখ টাকা আদায়ের পরেই তাদের জুয়া আইনে আদালতে চালান দেয়া হয়। যাতে তারা সহজেই জামিন পেতে পারেন। যে ঘটনায় আটকে গেলেন এসপি হারুন নানা ঘটনার পর শুক্রবার আম্বার গ্রুপের চেয়ারম্যান ও গুলশান ক্লাবের সভাপতি শওকত আজিজ রাসেলের স্ত্রী-পুত্রকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পরদিন শনিবার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসপি হারুন দাবি করেন, শওকত আজিজের গাড়ি থেকে ২৮টি গুলি, ১ হাজার ২০০ ইয়াবা, ২৪ বোতল বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বিদেশি মদ, ৪৮ ক্যান বিয়ার উদ্ধার করা হয়েছে। ওই সময় গাড়িতে শওকতের স্ত্রী ফারাহ রাসেল ও সন্তান আনাব আজিজ ছিলেন। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের আটক করা হয়েছিল। পরে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে এম এ হাসেম সহযোগিতা করবেন বলে মুচলেকা দেয়ায় তার স্ত্রী-পুত্রকে ছেড়ে দেয়া হয়। এ ঘটনায় শওকত আজিজ বলেন, চাঁদা নিয়ে হারুন অর রশীদের সঙ্গে তার পুরনো বিরোধ ছিল। সমপ্রতি তিনি নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে নতুন একটি প্রকল্পের কাজ শুরু করেছেন। সেখানেও হারুন বাগড়া দিচ্ছিলেন। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার তিনি তার স্ত্রী-পুত্রকে একটি পার্টিতে নামিয়ে ঢাকা ক্লাবে আসেন। ক্লাব থেকে বেরিয়ে দেখেন তার গাড়িটি নেই। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন গাড়ি আছে নারায়ণগঞ্জে। পরদিন রাতে তার অনুপস্থিতিতে এসপি হারুন একদল পুলিশ নিয়ে তার গুলশানের বাসায় ঢুকে ভাঙচুর করেন। এরপর তার স্ত্রী-সন্তানকে নারায়ণগঞ্জে নিয়ে যান। এ বিষয়ে নিকটস্থ গুলশান থানাকে কিছু জানায়নি নারায়ণগঞ্জের পুলিশ। পরদিন তার খোয়া যাওয়া গাড়িতে ইয়াবা, মদ ও গুলি উদ্ধারের ঘটনা সাজিয়ে তার ও তার গাড়িচালকের নামে মামলা করেন। গুলশানের বাসা থেকে স্ত্রী-সন্তানকে তুলে নিয়ে যাওয়ার একটি ভিডিও শওকত তার ফেসবুকে শেয়ার করেন। শওকত আজিজ বলেন, এসপি হারুনের চাঁদাবাজি নিয়ে ২০১৬ সালের ৫ই মে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ ১২টি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের কাছে তিনি একটি লিখিত অভিযোগ করেছিলেন। ওই চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, নির্বাচন কমিশনের আদেশে গাজীপুর থেকে প্রত্যাহারের পর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ তার কাছ থেকে ৫ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেন। তার পক্ষে উপ-পরিদর্শক আজহারুল ইসলাম আম্বার ডেনিমের স্টোর ম্যানেজার ইয়াহিয়া বাবুকে ফোন করে টাকা দাবি করেন। এর আগেও গুলশান ক্লাবের লামডা হলে ও গুলশানের কাবাব ফ্যাক্টরি রেস্তরাঁয় এসপি হারুন তাকে ডেকে নিয়ে ৫ কোটি টাকা যুক্তরাষ্ট্রের একটি ঠিকানায় পাঠাতে বলেন। টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় তার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান আম্বার ডেনিমের ৪৫ জন শ্রমিক-কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গাজীপুর থানায় ধরে নিয়ে মিথ্যা মামলায় জেলে পাঠানো হয়। এদিকে, শুক্রবার রাতের ঘটনায় দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী মহলে তোলপাড় শুরু হয়। এবং বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নজরে আনা হয় রোববার দুপুরে। এরপরই বিকালে এসপি হারুনকে নারায়ণগঞ্জ থেকে বদলির আদেশ আসে বলে সূত্র জানায়।

অবিশ্বাস্য শ্বাসরুদ্ধকর বিস্ময়কর হলেও সত্য এমন ঘটনা ঘটেছে তাও সম্পাদকের জীবনে। মিথ্যা বানোয়াট একাধিক মামলার আসামি হয়ে কারাভোগ করেও এখনো শেষ রক্ষা হয়নি ঝুঁকি ঝামেলা প্রাণনাশের হুমকি কিছুদিন আগেই এসেছে। সম্পাদক হয়েও রক্ষা হয়নি-কু-কাণ্ডের কারিগর সাবেক এসপি হারুনের দানবীয় ষড়যন্ত্রের মিথ্যা বানোয়াট মামলা থেকে।

আজও পাননি বিচার সম্পাদক বোরহান হাওলাদার জসিম। বিচার হয়নি শত ছাড়িয়ে হাজার হাজার অনিয়ম কু-কাণ্ডের কারিগর সাবেক এসপি হারুনের। পদেপদে ভুক্তভোগী হয়েও এমন শতশত হাজারো হারুন তৈরি হয়েছে আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে এবং আইন প্রশাসন সরকারি সুযোগ সুবিধায় দায়িত্বশীল মহলের লালন পালনে।

এসপি হারুনদের মত অন্যায় অনিয়মের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে অনেক প্রতিবাদী সৎ সাহসী মানুষের জীবন। প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছিল দেশের আইনশৃঙ্খলা সহ সরকারি সমস্ত দপ্তর, যাহা এসপি হারুন এর মতো হায়নার জন্য কলুষিত কলংঙ্কিত। কেউ যদি প্রতিবাদ করতে যেতো অজানা অদৃশ্য শক্তি দিয়ে হর-হামেশা হামলা মামলা জেল-জুলুমের শিকার হতে হতো তাকে। প্রতিনিয়তই স্বীকার হতে হয়েছে নিত্যনতুন ভাবে টর্চার নির্যাতনের। ভুক্তভোগী যেই সেই জানে সাবেক এসপি হারুনের নির্মমতা, পাশবিক অত্যাচার।

বলেছিলাম,গত ২মে,২০১৯ সালে দৈনিক সময়ের কণ্ঠ পত্রিকা’র সম্পাদক কে পরিকল্পিতভাবে মিথ্যা নাটক সাজিয়ে সু-কৌশলে গাজীপুর থেকে গল্প সিনেমা নাটক সাজিয়ে অপহরন করে নারায়ণগঞ্জ জেলা এসপি অফিসে আটকে রেখে তিন থানায় ৩টি মামলা দিয়ে বেধড়ক শারীরিক নির্যাতন করে কোর্টে প্রেরণ করেন। পরে কোর্ট থেকে রিমান্ড মঞ্জুর করিয়ে পূণরায় শারীরিক নির্যাতনসহ আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি বিভিন্ন হুমকি দিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারে প্রেরণ করে।

সম্পাদক বলেন, অবিশ্বাস্য লোমর্শক হলেও সত্যি সত্যই।আল্লাহ চাইলে সত্যের জয় হবেই। বিন্দুমাত্র সত্যকে কেউ কোনদিন মিথ্যা দিয়ে ঢেকে রাখতে পারেনি।

জাগ্রত জনতায় জনস্রোতে সত্য প্রকাশ হবে হবেই। আবারো উঠবে সত্যের প্রতিধ্বনি। স্বাধীন বাংলাদেশের স্বাধীন মনে স্বাধীনতার বিজয় হয়েছে স্বৈরাচারী সরকার আওয়ামী লীগের পতনের মাধ্যমে। আল্লাহ পাকের অশেষ রহমতে বিশ্ব শান্তিতে নোবেল জয়ী ডঃ মুহাম্মদ ইউনূস স্যারের মতো এমন একজন সৎ মানুষ বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন। আশা করছি স্বৈরাচারী সরকারের আমলে যেসকল সম্পাদক ও সাংবাদিক সহ অন্যান্যদের নামে মিথ্যা বানোয়াট মামলা করেছিল, তার দ্রুত প্রত্যাহারের বিষয়টি বিবেচনা করবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন দৈনিক সময়ের কন্ঠ পত্রিকার সম্পাদক বোরহান হাওলাদার জসিম। সেই সাথে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা সহ বর্তমানে দ্বায়িত্বে থাকা সকল উপদেষ্টা মণ্ডলীর সর্বাঙ্গীন মঙ্গল কামনা করেন বলে জানান সম্পাদক বোরহান হাওলাদার জসিম।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

সাবেক এসপি ও ডিএমপি ডিবি প্রধানের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি পত্রিকার সম্পাদকসহ একাধিক আইনজীবীর

আপডেট টাইম : ০২:১৭:১৪ অপরাহ্ণ, শুক্রবার, ১৬ আগস্ট ২০২৪

(কু-কান্ডের খলনায়ক সাবেক এসপি হারুন এবং ভূক্তভোগী সম্পাদক বোরহান হাওলাদার জসিম) ছবি 

গাজীপুর জেলার ও নারায়ণগঞ্জ জেলার সাবেক এসপি হারুন অর রশিদের নানা অপকর্মের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছে ভুক্তভোগী অনেকেই। আওয়ামীলীগ সরকারের ‘প্রিয় হারুন’ হয়ে উঠে বিএনপি সরকারের আমলের সংসদীয় চিফ উইপ জয়নাল আবেদীন ফারুক’কে জনসম্মুখে টেনে হেঁচড়ে বেদম মারধরের পর। সেই মূহূর্তে পুলিশের আইনের বিধিমালা’কে তোয়াক্কা না করে যখন যেখানে যে ভাবে পেড়েছে সে ভাবেই শত শত মানুষের নামে বিভিন্ন ধরনের মামলা দিয়ে হয়রানি করে লক্ষ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে জানা গেছে এই হারুন।

সত্যকে মিথ্যা, মিথ্যাকে সত্য বানিয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরও বোকা বানিয়েছেন তিনি । আর এভাবেই তিনি কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে জানা গেছে।
বিশাল অঙ্কের অর্থ-বিত্তের মালিক বনে যাওয়া এই পুলিশ কর্মকর্তা নারায়ণগঞ্জে এতটাই ক্ষমতাধর ছিলেন মন্ত্রী-এমপি সহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে তিনি বিন্দু পরিমাণ মানেননি বরং তাদেরকে হুমকি প্রদানের মাধ্যমে বলতেন, বেশি কথা বললে প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানাবো।

এদিকে সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী এবং সচিবদের কোন প্রটোকল দেননি। এ নিয়ে মন্ত্রী ও এমপি এবং সচিবদের ক্ষোভ থাকলেও সাবেক এসপি হারুনের শেখ হাসিনার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ থাকায় যেন কিছুই করার ছিল না তাদের ।

এদিকে, সাধারণ ব্যবসায়ী তো দূরের কথা জেলার প্রভাবশালী শীর্ষ ব্যবসায়ীরাও এসপি হারুনের রোষানল থেকে রেহাই পায়নি, এমনকি একাধিক শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকরা। বিভিন্ন ভাবে নানা হুমকির সম্মুখীন হয়ে আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন অনেকে। লোক লজ্জার ভয়ে ভুক্তভোগীদের অনেকেই মুখ খোলেননি। নীরবে এসপি হারুনের অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করে গেছেন তারা। এ ছাড়াও সাবেক ক্ষমতাসীন সরকার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদেরও তাকে অর্থ দিয়ে এলাকায় থাকতে হয়েছে বলে জানা গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই বলেছেন, আমরা আওয়ামীলীগ নেতা অথচ আমাদের দল ক্ষমতায় ছিল এরপরও এসপি হারুনকে মাসোহারা দিয়ে এলাকায় থাকতে হয়েছে।
তারা আরও বলেন, এসপি হারুন যখন নারায়ণগঞ্জের এসপি ছিল, তখন তিনি আমাদের কাছে মোটা অংকের টাকা দাবি করতো, দাবিকৃত টাকা না দিলে নানাভাবে হয়রানি করতো, তখন আমরা নিরূপায় ছিলাম। কিন্তু সব কিছুর একটা শেষ আছে তা প্রমাণিত হয়েছে তার বদলির মধ্য দিয়ে।

অভিযোগ রয়েছে, গাজীপুর থাকতেই সাবেক এসপি হারুন নারায়ণগঞ্জের অনেক ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক নেতার তালিকা করেন এবং কার থেকে কিভাবে অর্থ আদায় করবেন তারও একটা ছক করেন। নারায়ণগঞ্জে যোগদানের পর শুরু হয় তার টাকা কামানোর মিশন। এই কাজে তিনি সবচেয়ে বিশ্বস্ত সহচর হিসেবে ব্যবহার করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা (ডিবি) পুলিশকে। তার নির্দেশে প্রতি রাতে ডিবি’র একাধিক টিম কালো গ্লাসের মাইক্রোবাস গাড়ি নিয়ে নেমে পড়তো ‘শিকার’ ধরতে। গাড়িতে মজুত থাকতো ইয়াবা, অস্ত্র ও বিভিন্ন মাদক দ্রব্য। সুযোগ বুঝে ওই সব জিনিস দিয়ে ফাঁসিয়ে দেয়া হতো নিরপরাধ ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক নেতা, জনপ্রতিনিধি ও ধনীর দুলালীদের। যদিও ৬ই অক্টোবর এসপি হারুনের অপকর্মের অন্যতম সহযোগী ডিবির ওসি এনামুল হককে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয় পুলিশ হেড কোয়ার্টারের এক আদেশে। এক পর্যায়ে এসপি হারুন নিজের অপকর্ম ঢাকার জন্য এনামুল হককে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে বদলি করা হয়েছে বলে স্থানীয় মিডিয়ায় প্রচার করেন।

সাবেক এসপি হারুন মুখে বড় বড় বুলি দিয়ে জনগণের সেবা করার কথা বললেও বাস্তবে ছিল উল্টো। এমন ভাবে দিনের বেলা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গিয়ে বলতেন, মাদক ব্যবসায়ী, ভূমিদস্যু, চাঁদাবাজ, গডফাদার, সন্ত্রাসী-মাস্তানদের রক্ষা নাই। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। আর রাতের বেলা চিহ্নিত বড় বড় অপরাধীদের বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিতো বলে অভিযোগ আছে।
যেসকল ব্যক্তিরা টাকা দিতে রাজি না হতো তাদের মাদক দিয়ে গ্রেপ্তার দেখিয়ে সংবাদ কর্মীদের ঢেকে ব্রিফিং করে কোর্টে প্রেরণ করে রিমান্ড মঞ্জুর করিয়ে অমানবিক নির্যাতন করে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেয়ার শত শত অভিযোগ রয়েছে এই হারুনের বিরুদ্ধে।

বিতর্কিত ও আলোচিত সাবেক এসপি হারুনকে মাত্র ১১ মাসের মাথায় নারায়ণগঞ্জ থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দপ্তরে (ট্রেনিং রিজার্ভ) সংযুক্ত করা হয়ছিল। এরপর স্বস্তির দেখা পেয়েছিলো বলে জানান নারায়ণগঞ্জের সাধারণ ব্যবসায়ীসহ ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের অনেকেই। নারায়ণগঞ্জে এসপি হারুনের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ

(সূত্রমতে) সাবেক পুলিশ সুপার হারুন রশিদ ২০১৮ সালের ২রা ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জের এসপি হিসেবে দায়িত্ব নেন। আতঙ্ক দেখা দেয় ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে। কারণ গাজীপুরে থাকাকালীন এসপি হারুনের কর্মকাণ্ড নারায়ণগঞ্জবাসী ভালো করেই জানতো। তবে এসপি হারুন বিভিন্ন সভায় ও অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে নারায়ণগঞ্জবাসীকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেন, তিনি অপরাধীদের জন্য আতঙ্ক, সাধারণের বন্ধু। কিন্তু কয়েকদিনের মধ্যে নারায়ণগঞ্জবাসী জেনে যায় এটা তার উপরের কথা। ৩০শে ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরেই তিনি সরকারদলীয় নেতাকর্মীদের উপর চড়াও হন। আওয়ামীলীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাদের অনেককেই রাতের অন্ধকারে তুলে নিয়ে এসে গ্রেপ্তার অথবা ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে মোটা অঙ্কের চাঁদা আদায় করতেন। দলীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য শামীম ওসমানকে প্রাধান্য দিয়ে বক্তব্য দেয়াকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজামের বিরুদ্ধে পুলিশ দিয়ে ফতুল্লা ও সদর মডেল থানায় দু’টি সাধারণ ডায়েরি করিয়েছিলেন তিনি। জমি সংক্রান্ত বিভিন্ন ঝামেলা মিটিয়ে দেয়ার কথা বলে মোটা অঙ্কের টাকা ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এ ছাড়া যোগদানের পর থেকেই নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন ব্যবসায়ীকে চায়ের দাওয়াত দিয়ে তার দপ্তরে ডেকে নিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিতে শুরু করেন এসপি হারুন। ২রা এপ্রিল ফতুল্লার পাগলায় ভাসমান রেস্টুরেন্ট ও বার ‘মেরি এন্ডারসন’ এ এসপি হারুনের নির্দেশ অভিযান চালায় পুলিশ। সেখান থেকে ২৫ জন স্টাফ ও ৪৩ জন মাদকসেবীকে আটক করা হয়। উদ্ধার করা হয় বিপুল সংখ্যক মাদক দ্রব্য। কিন্তু ঘটনায় জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ও ব্যবসায়ী তানভীর আহমেদ টিটুকে জড়ানোর চেষ্টা করে এসপি হারুন। এ ঘটনায় সে সময় চরম ক্ষোভ দেখা দেয় নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ী মহলে। এক পর্যায়ে ‘দেখা করার দিন শেষ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ’ স্লোগানকে সামনে নিয়ে টিটুকে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়ানোর চেষ্টার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে প্রতিবাদ সভা করেন, নারায়ণগঞ্জ চেম্বারের নেতৃত্বে ব্যবসায়ী সংগঠনের অর্ধশতাধিক ব্যবসায়ী। এরপর কৌশল পাল্টান এসপি হারুন। এসপি হারুনের আর্থিক হয়রানির শিকার হয়েছেন নাসিক ২৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও নারায়ণগঞ্জ মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ দুলাল প্রধান, নাসিক প্যানেল মেয়র-২ ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের সভাপতি মতিউর রহমান মতি, ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ওমর ফারুক, জাপা নেতা জয়নাল আবেদীনসহ ক্ষমতাসীন দলের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী।
এসপি হারুনের নির্দেশে ডিবি পুলিশের ধারাবাহিক ৩টি অভিযান ছিল সবচেয়ে বেশি প্রশ্নবিদ্ধ। ওইদিন রাতে ডিবি পুলিশের একটি টিম অভিযান চালিয়ে দেশের স্বনামধন্য মাস্টার কয়েল ফ্যাক্টরির মালিক জামাল হোসেন মৃধার বাড়িতে অভিযান চালায়। পুলিশের দাবি ছিল, তার বাড়ি থেকে ২ হাজার পিস ইয়াবা এবং নগদ ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয় জামাল হোসেন মৃধা, তার সহযোগী মোস্তফা কামাল ও মানিক মিয়াকে। জামাল মৃধার ৩টি মশার কয়েল তৈরির ফ্যাক্টরি রয়েছে। এ ছাড়া তার একটি গরুর খামারও রয়েছে। গ্রেপ্তারের পর জামাল মৃধা ও তার সঙ্গে গ্রেফতারকৃতরা দীর্ঘ দিন নারায়ণগঞ্জ কারাগারে বন্দি ছিলেন। জামাল মৃধার পরিবার এবং স্থানীয় এলাকাবাসীর দাবি তিনি ধর্মপ্রাণ হিসেবে এলাকায় পরিচিত। মাদকের বিরুদ্ধে তিনি সবসময় সোচ্চার ছিলেন। তার প্রতিষ্ঠিত মাস্টার মশার কয়েল দেশের প্রান্তিক পর্যায়ে ব্যাপক জনপ্রিয় বলে জানা গেছে। তাছাড়া তিনি একজন প্রতিষ্ঠিত গরুর খামারিও বটে।

এরাই অপহরণকারী তাদের ছবি প্রকাশ করলাম।

এর আগে নারায়ণগঞ্জের এসপি’র দায়িত্বে থাকাবস্থায় হারুনের কূ-কর্মের সত্যতা পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ায়, ঐ পত্রিকার সম্পাদক বোরহান হাওলাদার জসিম সহ আরও কয়েকজন সাংবাদিক এবং একাধিক আইনজীবীর নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে গাজীপুর থেকে তাদের অপহরণ  করে নিয়ে যায় নারায়ণগঞ্জে এসপি অফিসে। পরে ঐ সম্পাদক বোরহান হাওলাদার জসিম সহ মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারকৃতদের বেধড়ক শারীরিক নির্যাতনসহ আর্থিক ক্ষতি করে। তাদের কেন গ্রেফতার করা হয়েছে, এমন প্রশ্নের জবাবে সাবেক এসপি হারুন বলেছিলেন (আমি হারুন গাজীপুরে এসপি থাকাকালীন সময়ে) আমার বিরুদ্ধে কেউ কোন কিছু পত্রিকায় ও সেটালাইট টিভি চ্যানেল প্রকাশ করতে সাহস পায়নি। কিন্তু তোর পত্রিকার এক সাংবাদিক আমার বিরুদ্ধে লেখালেখি করেছে। তুই জানিস না বাংলাদেশে হারুন একজনই, সে হলো আমি এসপি হারুন। পরে তাদের নামে একাধিক থানায় একাধিক বানোয়াট মিথ্যা মামলা দিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারে প্রেরণ করে। এরপর মিথ্যা মামলায় বোরহান হাওলাদার জসিম দীর্ঘ ২২ মাস কারাভোগের পর জামিনে মুক্তি পান বলে জানান তিনি।
তখন জামিনে মুক্তি পাওয়ার পরও বিভিন্ন হুমকি পেতে থাকে সাবেক এসপি হারুনের কাছ থেকে।

সত্য ঘটনা পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পরও কেন আমার জেল খাটতে হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাব সম্পাদক বোরহান হাওলাদার জসিম একাধিক সাবেক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা মন্ত্রীদের জানান এবং তিনি সহ একাধিক সাংবাদিক ও আইনজীবীদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান। বারবার এরকম ভাবে লিখিত অভিযোগ জানালেও সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সহ অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের কোন মন্ত্রী এ বিষয়ে কোন রকম ব্যবস্থা নেননি।

(হারুন নারায়ণগঞ্জের এসপি থাকা অবস্থায় যে সংবাদ প্রকাশের জের ধরে মিথ্যা বানোয়াট মামলা করেছিল, তার কিছু অংশ উল্লেখ করা হলো)

(জামাল মৃধার বড় ভাই লাভলু মৃধা বলেন, বাড়িতে ৩ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা ছিল, কিন্তু পুলিশ দেখিয়েছে সোয়া ১ কোটি টাকা। আর ইয়াবার বিষয়টি পুলিশের সাজানো ছিল।

এত টাকা সেদিন বাড়িতে ছিল কেন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, তখন কোরবানির ঈদে আগে খামারের গরু বিক্রির টাকা ছিল বাসায়। এ ছাড়া কারখানার মালামাল ক্রয়ের জন্য বাসায় টাকা রাখা হতো। কিন্তু তার ভাই মাদকের সঙ্গে জড়িত এ কথা পরিবারের কেউ তো নয়ই বরং এলাকারও কেউ বিশ্বাস করেনি। সবকিছুই ছিল পুলিশের সাজানো। জামাল মৃধার আইনজীবী অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান দিপু বলেন, পুলিশের তদন্তে প্রকৃত সত্য উঠে আসবে বলে আমরা মনি করি। তার মক্কেলকে অন্যায়ভাবে ফাঁসিয়ে দিয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি সামাজিকভাবে ব্যবসা করে সুপ্রতিষ্ঠিত সেই ব্যক্তি কেন মাদক ব্যবসার মতো ঝুঁকিপূর্ণ কাজে লিপ্ত হবে। অপর দিকে এ ঘটনার পর দিন ৩রা অক্টোবর ডিবি পুলিশের একই টিম সিদ্ধিরগঞ্জে ম্যাক্স ইলেক্ট্রা ইন্ডাস্ট্রিজে হানা দেয়। তারা ওই প্রতিষ্ঠান থেকে ৮ জন শ্রমিককে গ্রেপ্তার করে। পরে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, ওই প্রতিষ্ঠানে অবৈধ ও নকল পণ্য সামগ্রী মজুত রয়েছে। ম্যাক্স ইলেক্ট্রার মালিক বেলায়েত হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, সেদিন পুলিশ সুপার অন্যায়ভাবে তার প্রতিষ্ঠানে হানা দিয়ে তার ৮ জন কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করেছেন এবং তার প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ পুলিশের কাছে দেন। গতকাল পর্যন্ত তার প্রতিষ্ঠান পুলিশের হেফাজতে ছিল বলে তিনি জানান। প্রতিষ্ঠান থেকে গ্রেপ্তারকৃতরা গতকাল আদালত থেকে জামিনে মুক্ত হয়েছেন বলে তিনি জানান। এ ব্যবসায়ী আরো জানান, পুলিশ তার প্রতিষ্ঠানে অভিযানের সময় নিয়ম অনুযায়ী শুল্ক গোয়েন্দা ও এ বিষয়ে অভিজ্ঞ কোনো প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে নেয়নি। অন্যায় ভাবে আমার প্রতিষ্ঠানে সেদিন হানা দেয়া হয়েছিল। অথচ আমার প্রতিষ্ঠানের পাশেই শুল্ক গোয়েন্দা কার্যালয় অবস্থিত। আমি ভ্যাট-ট্যাক্স পরিশোধ করেই ব্যবসা করছি। ঘটনার সময় পুলিশ সুপারকে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং প্রতিষ্ঠানে থাকা মালামালের বৈধ কাগজপত্র দেখাতে চাইলেও তিনি তা দেখেননি। উল্টো টেলিফোনে তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি আমার কাছে মোটা অঙ্কের উৎকোচ দাবি করেন। তার দাবি না মেটানোয় এখনো আমার প্রতিষ্ঠান পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। এ ব্যবসায়ীর ধারণা পুলিশ তার প্রতিষ্ঠান থেকে বিপুল পরিমাণ ইলেকট্রনিক্স ও প্রসাধনী সামগ্রী সরিয়ে নিয়ে থাকতে পারে। প্রতিষ্ঠানটি অবমুক্ত হওয়ার পর এ বিষয়টি জানা যাবে বলে তিনি বলেন। এসপি হারুনের তৃতীয় বিতর্কিত অভিযান ছিল নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পঞ্চবটিতে অবস্থিত ইউনাইটেড ক্লাবে অভিযান। সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে রেজিস্ট্রেশন পাওয়া ওই ক্লাবে কোনো ধরনের কোনো অবৈধ কর্মকাণ্ড হয়নি। পুলিশও অভিযানের সময় ক্লাব থেকে কোনো অবৈধ কিছু উদ্ধার করতে পারেনি। অভিযানে ক্লাবে থাকা ক্লাবটির সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন তাপুসহ ৭ জন বিভিন্ন পেশার ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। যাদের মধ্যে একজন ব্যাংক কর্মকর্তাও ছিলেন। পরে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তাদের জুয়া আইনে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হলে আদালতে ২০০ টাকা মুচলেকায় তারা জামিন পান। ক্লাবটির সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন তাপু বলেন, ঘটনার পর তিনি তার সন্তানের মুখের দিকে তাকাতে পারেন না। পুলিশের এ ধরনের কর্মকাণ্ডে তিনিসহ তার সঙ্গে থাকা বন্ধুরা সামাজিকভাবে মারাত্মক হেয় প্রতিপন্ন হয়েছেন। যা কোনো দিন ফিরে পাওয়া সম্ভব নয়। তিনি বলেন, ক্লাব মানেই খারাপ কিছু নয়। এই ক্লাবের সব সদস্য সমাজে সুপ্রতিষ্ঠিত। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সূত্র জানায়, ওই ৭ জনের কাছ থেকে ৩০ লাখ টাকা আদায়ের পরেই তাদের জুয়া আইনে আদালতে চালান দেয়া হয়। যাতে তারা সহজেই জামিন পেতে পারেন। যে ঘটনায় আটকে গেলেন এসপি হারুন নানা ঘটনার পর শুক্রবার আম্বার গ্রুপের চেয়ারম্যান ও গুলশান ক্লাবের সভাপতি শওকত আজিজ রাসেলের স্ত্রী-পুত্রকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পরদিন শনিবার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসপি হারুন দাবি করেন, শওকত আজিজের গাড়ি থেকে ২৮টি গুলি, ১ হাজার ২০০ ইয়াবা, ২৪ বোতল বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বিদেশি মদ, ৪৮ ক্যান বিয়ার উদ্ধার করা হয়েছে। ওই সময় গাড়িতে শওকতের স্ত্রী ফারাহ রাসেল ও সন্তান আনাব আজিজ ছিলেন। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের আটক করা হয়েছিল। পরে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে এম এ হাসেম সহযোগিতা করবেন বলে মুচলেকা দেয়ায় তার স্ত্রী-পুত্রকে ছেড়ে দেয়া হয়। এ ঘটনায় শওকত আজিজ বলেন, চাঁদা নিয়ে হারুন অর রশীদের সঙ্গে তার পুরনো বিরোধ ছিল। সমপ্রতি তিনি নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে নতুন একটি প্রকল্পের কাজ শুরু করেছেন। সেখানেও হারুন বাগড়া দিচ্ছিলেন। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার তিনি তার স্ত্রী-পুত্রকে একটি পার্টিতে নামিয়ে ঢাকা ক্লাবে আসেন। ক্লাব থেকে বেরিয়ে দেখেন তার গাড়িটি নেই। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন গাড়ি আছে নারায়ণগঞ্জে। পরদিন রাতে তার অনুপস্থিতিতে এসপি হারুন একদল পুলিশ নিয়ে তার গুলশানের বাসায় ঢুকে ভাঙচুর করেন। এরপর তার স্ত্রী-সন্তানকে নারায়ণগঞ্জে নিয়ে যান। এ বিষয়ে নিকটস্থ গুলশান থানাকে কিছু জানায়নি নারায়ণগঞ্জের পুলিশ। পরদিন তার খোয়া যাওয়া গাড়িতে ইয়াবা, মদ ও গুলি উদ্ধারের ঘটনা সাজিয়ে তার ও তার গাড়িচালকের নামে মামলা করেন। গুলশানের বাসা থেকে স্ত্রী-সন্তানকে তুলে নিয়ে যাওয়ার একটি ভিডিও শওকত তার ফেসবুকে শেয়ার করেন। শওকত আজিজ বলেন, এসপি হারুনের চাঁদাবাজি নিয়ে ২০১৬ সালের ৫ই মে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ ১২টি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের কাছে তিনি একটি লিখিত অভিযোগ করেছিলেন। ওই চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, নির্বাচন কমিশনের আদেশে গাজীপুর থেকে প্রত্যাহারের পর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ তার কাছ থেকে ৫ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেন। তার পক্ষে উপ-পরিদর্শক আজহারুল ইসলাম আম্বার ডেনিমের স্টোর ম্যানেজার ইয়াহিয়া বাবুকে ফোন করে টাকা দাবি করেন। এর আগেও গুলশান ক্লাবের লামডা হলে ও গুলশানের কাবাব ফ্যাক্টরি রেস্তরাঁয় এসপি হারুন তাকে ডেকে নিয়ে ৫ কোটি টাকা যুক্তরাষ্ট্রের একটি ঠিকানায় পাঠাতে বলেন। টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় তার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান আম্বার ডেনিমের ৪৫ জন শ্রমিক-কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গাজীপুর থানায় ধরে নিয়ে মিথ্যা মামলায় জেলে পাঠানো হয়। এদিকে, শুক্রবার রাতের ঘটনায় দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী মহলে তোলপাড় শুরু হয়। এবং বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নজরে আনা হয় রোববার দুপুরে। এরপরই বিকালে এসপি হারুনকে নারায়ণগঞ্জ থেকে বদলির আদেশ আসে বলে সূত্র জানায়।

অবিশ্বাস্য শ্বাসরুদ্ধকর বিস্ময়কর হলেও সত্য এমন ঘটনা ঘটেছে তাও সম্পাদকের জীবনে। মিথ্যা বানোয়াট একাধিক মামলার আসামি হয়ে কারাভোগ করেও এখনো শেষ রক্ষা হয়নি ঝুঁকি ঝামেলা প্রাণনাশের হুমকি কিছুদিন আগেই এসেছে। সম্পাদক হয়েও রক্ষা হয়নি-কু-কাণ্ডের কারিগর সাবেক এসপি হারুনের দানবীয় ষড়যন্ত্রের মিথ্যা বানোয়াট মামলা থেকে।

আজও পাননি বিচার সম্পাদক বোরহান হাওলাদার জসিম। বিচার হয়নি শত ছাড়িয়ে হাজার হাজার অনিয়ম কু-কাণ্ডের কারিগর সাবেক এসপি হারুনের। পদেপদে ভুক্তভোগী হয়েও এমন শতশত হাজারো হারুন তৈরি হয়েছে আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে এবং আইন প্রশাসন সরকারি সুযোগ সুবিধায় দায়িত্বশীল মহলের লালন পালনে।

এসপি হারুনদের মত অন্যায় অনিয়মের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে অনেক প্রতিবাদী সৎ সাহসী মানুষের জীবন। প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছিল দেশের আইনশৃঙ্খলা সহ সরকারি সমস্ত দপ্তর, যাহা এসপি হারুন এর মতো হায়নার জন্য কলুষিত কলংঙ্কিত। কেউ যদি প্রতিবাদ করতে যেতো অজানা অদৃশ্য শক্তি দিয়ে হর-হামেশা হামলা মামলা জেল-জুলুমের শিকার হতে হতো তাকে। প্রতিনিয়তই স্বীকার হতে হয়েছে নিত্যনতুন ভাবে টর্চার নির্যাতনের। ভুক্তভোগী যেই সেই জানে সাবেক এসপি হারুনের নির্মমতা, পাশবিক অত্যাচার।

বলেছিলাম,গত ২মে,২০১৯ সালে দৈনিক সময়ের কণ্ঠ পত্রিকা’র সম্পাদক কে পরিকল্পিতভাবে মিথ্যা নাটক সাজিয়ে সু-কৌশলে গাজীপুর থেকে গল্প সিনেমা নাটক সাজিয়ে অপহরন করে নারায়ণগঞ্জ জেলা এসপি অফিসে আটকে রেখে তিন থানায় ৩টি মামলা দিয়ে বেধড়ক শারীরিক নির্যাতন করে কোর্টে প্রেরণ করেন। পরে কোর্ট থেকে রিমান্ড মঞ্জুর করিয়ে পূণরায় শারীরিক নির্যাতনসহ আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি বিভিন্ন হুমকি দিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারে প্রেরণ করে।

সম্পাদক বলেন, অবিশ্বাস্য লোমর্শক হলেও সত্যি সত্যই।আল্লাহ চাইলে সত্যের জয় হবেই। বিন্দুমাত্র সত্যকে কেউ কোনদিন মিথ্যা দিয়ে ঢেকে রাখতে পারেনি।

জাগ্রত জনতায় জনস্রোতে সত্য প্রকাশ হবে হবেই। আবারো উঠবে সত্যের প্রতিধ্বনি। স্বাধীন বাংলাদেশের স্বাধীন মনে স্বাধীনতার বিজয় হয়েছে স্বৈরাচারী সরকার আওয়ামী লীগের পতনের মাধ্যমে। আল্লাহ পাকের অশেষ রহমতে বিশ্ব শান্তিতে নোবেল জয়ী ডঃ মুহাম্মদ ইউনূস স্যারের মতো এমন একজন সৎ মানুষ বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন। আশা করছি স্বৈরাচারী সরকারের আমলে যেসকল সম্পাদক ও সাংবাদিক সহ অন্যান্যদের নামে মিথ্যা বানোয়াট মামলা করেছিল, তার দ্রুত প্রত্যাহারের বিষয়টি বিবেচনা করবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন দৈনিক সময়ের কন্ঠ পত্রিকার সম্পাদক বোরহান হাওলাদার জসিম। সেই সাথে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা সহ বর্তমানে দ্বায়িত্বে থাকা সকল উপদেষ্টা মণ্ডলীর সর্বাঙ্গীন মঙ্গল কামনা করেন বলে জানান সম্পাদক বোরহান হাওলাদার জসিম।