ভারত ও আমিরাতের বাণিজ্য করিডোর চুক্তি স্বাক্ষর
- আপডেট টাইম : ১১:৩৮:৪৩ পূর্বাহ্ণ, বুধবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
- / ৮৭ ৫০০০.০ বার পাঠক
বৈঠকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও আমিরাতের রাষ্ট্রপতি শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান। ছবি: রয়টার্স
বৈঠকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও আমিরাতের রাষ্ট্রপতি শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান। ছবি: রয়টার্স
ভারত ও সংযুক্ত আরব আমিরাত গত মঙ্গলবার একটি বাণিজ্য করিডোর চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। চুক্তির লক্ষ্য সমুদ্র ও রেলপথে মধ্যপ্রাচ্যের কিছু অংশের মাধ্যমে ইউরোপকে ভারতের সঙ্গে সংযুক্ত করা। বিলাসবহুল এই পরিকল্পনাটিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সমর্থন রয়েছে। খবর রয়টার্স।
উপসাগরীয় দেশটিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফর ও চুক্তির খবর ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। যদিও উভয়পক্ষ ঠিক কী বিষয়ে একমত হয়েছিল তার কিছু বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘চুক্তিটি এই বিষয়ে পূর্বের বোঝাপড়া ও সহযোগিতার ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হবে। ভারত ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সহযোগিতা আঞ্চলিক সংযোগকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।’
নয়াদিল্লিতে জি২০ সম্মেলনের ফাঁকে গত সেপ্টেম্বর এই বাণিজ্যিক করিডোরের ঘোষণা করা হয়। করিডোরটির লক্ষ্য, ভারত থেকে আরব সাগর পেরিয়ে আরব আমিরাত পর্যন্ত এবং সৌদি আরবের মধ্য দিয়ে জর্ডান ও ইসরায়েল হয়ে ইউরোপের সঙ্গে যুক্ত করা।
মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে অবশ্য ভারত ও সংযুক্ত আরব আমিরাত ব্যতীত কোনও দেশের কথা উল্লেখ করা হয়নি।
ভারত-মধ্যপ্রাচ্য অর্থনৈতিক করিডোর চুক্তিটি গাজায় চার মাসের বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধের মধ্যেই স্বাক্ষরিত হয়েছে। এর ফলে ইসরায়েলকে তার আরব প্রতিবেশীদের সঙ্গে আরও একীভূত করার মার্কিন-সমর্থিত পরিকল্পনাকে লাইনচ্যুত করেছে। সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিককরণের পরিকল্পনাও স্থগিত করেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
আমিরাতের রাষ্ট্রপতি শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন মোদি। মঙ্গলবার মোদির ইউটিউব চ্যানেলে শেয়ার করা ভিডিও অনুযায়ী শেখ মোহাম্মদ একটি বৈঠকে বলেছিলে, ‘আজ, আমাদের অঞ্চল একটি কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তবে আপনার সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের কারণে আমরা অনেক আশা তৈরি করছি। পাশাপাশি ভারতের সঙ্গে সুন্দর ভবিষ্যতের অপেক্ষা করছি যা আমাদের উচ্চাকাঙ্ক্ষার সমান।’
আঞ্চলিক অস্থিরতা
আব্রাহাম অ্যাকর্ডস নামে পরিচিত মার্কিনসমর্থিত উদ্যোগের অধীনে ২০২০ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইসরায়েলের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন হয়। এরই ধারাবাহিকতায় বাহরাইনসহ অন্যান্য আরব রাষ্ট্রগুলোও ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে।
সংযুক্ত আরব আমিরাত যুদ্ধের সময় ইসরায়েলের সঙ্গে সেই সম্পর্ক বজায় রেখেছে। যদিও দেশটি গাজায় ইসরায়েলের বোমা হামলার বারবার সমালোচনা করেছে এবং যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে।
ভারত ও আমিরাতের মধ্যকার চুক্তিটি ইঙ্গিত দেয় যে উভয় দেশ করিডোর স্থাপনের পরিকল্পনা নিয়ে আগাচ্ছে যা চীনের বিশ্ব বাণিজ্য অবকাঠামো বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্পকেও দুর্বল করতে পারে।
ইয়েমেনের হুথি আন্দোলন লোহিত সাগরে চলাচলকারী জাহাজের ওপর আক্রমণ শুরু করেছে বলে চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ভারতও একটি দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ চুক্তি স্বাক্ষর করেছে এবং বৈদ্যুতিক আন্তঃসংযোগ, বাণিজ্য এবং ডিজিটাল অবকাঠামো কভার করে সহযোগিতা চুক্তি বিনিময় করেছে।
মোদি পরে আবুধাবি স্টেডিয়ামে কয়েক হাজার ভারতীয় প্রবাসীদের ভাষণ দেবেন। আবুধাবিতে মধ্যপ্রাচ্যে প্রথম পাথরে নির্মিত হিন্দু মন্দির উদ্বোধনের আগে বুধবার দুবাইয়ে একটি শীর্ষ সম্মেলনেও তিনি বক্তৃতা করবেন।
প্রায় এক দশক আগে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর এই উপসাগরীয় রাজ্যে মোদির সপ্তম সফর ছিল এটি। আমিরাত হলো ভারতের অন্যতম শীর্ষ বাণিজ্য অংশীদার।