ভূমিকম্প বনাম মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত জামাত নেতা সাঈদী,
- আপডেট টাইম : ০১:৪০:৪৭ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ১৫ আগস্ট ২০২৩
- / ২৯৮ ৫০০০.০ বার পাঠক
সাঈদীর ভক্তদের বলতে শোনা যায় সাঈদীর মৃত্যুতে দেশব্যাপী ভূমিকম্প হয়েছে, আসলে কারো জন্ম মৃত্যুর সাথে ভূমিকম্প, চন্দ্রগ্রহণ,সূর্যগ্রহণ ঝড়-তুফানের কোন সম্পর্ক নেই।
ইহা হলো ইসলামের বিশুদ্ধ আকিদা।
যেমন: হাদিসে বর্ণিত হয়েছে,
যে দিন বিশ্ব নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পুত্র ইব্রাহিম যেদিন মারা যান।
সেদিন সূর্য গ্রহণ লাগল।
তখন লোকজন বলাবলি করতে লাগল যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ছেলে মারা গেছে তাই সূর্য গ্রহণ হয়েছে!
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এসব কথাবার্তা শুনতে পেয়ে দ্রুত ঘর থেকে বেরিয়ে মসজিদে নববীর মিম্বরে দাঁড়িয়ে গেলেন এবং মানুষকে ইসলামের সঠিক দিক-নির্দেশনা দিতে গিয়ে বললেন,
” إِنَّ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ لا يَنْكَسِفَانِ لِمَوْتِ أَحَدٍ مِنْ النَّاسِ ، وَلَكِنَّهُمَا آيَتَانِ مِنْ آيَاتِ اللَّهِ ، فَإِذَا رَأَيْتُمُوهُمَا فَقُومُوا فَصَلُّوا ” رواه البخاري
“কারও মৃত্যু বা জন্মের কারণে চন্দ্র ও সূর্য গ্রহণ লাগে না। কিন্তু এগুলো হলো, আল্লাহর নিদর্শন সমূহের অন্তর্ভুক্ত। অত:এব তোমরা যখন তা দেখবে তখন তোমরা সালাত (চন্দ্র ও সূর্য গ্রহণের সালাত) আদায় করো” [সহীহ বুখারী]
পৃথিবীতে যখন বড় ধরণের দুর্যোগ হয় সেই সময় নিশ্চিতভাবে বিভিন্ন স্থানে অনেক মানুষ মারা যায়।
পীর-বুজুর্গ অন্যান্য ধর্মের ধর্মীয় পণ্ডিত ইত্যাদি সর্বশ্রেণীর মানুষ তাতে শামিল থাকে। সেই সময় তাদের ভক্তরা যদি বলা শুরু করে যে,আমাদের পীর মারা যাওয়ার কারণে বা কোনও হিন্দু যদি বলে যে, তাদের ঠাকুর বা ধর্মগুরু মারা গেছে বলেই এমন দুর্যোগ সৃষ্টি হয়েছেে তাহলে কি তাদের বুজুর্গি প্রমাণিত হয়ে যাবে?
না, কখনো নয়।
মূলত: দেলোয়ার হোসেন সাঈদি গ্রেফতারের সময় যারা তাকে চাঁদে দেখতে পেয়েছিলো (!)
তারাই তার মৃত্যুর কিছুক্ষণ পর ভূমিকম্পের কথা উল্লেখ করে তার বুজুর্গি প্রমাণ করতে চায়।
আওয়ামী লীগ – বিএনপি’র আলাপ নিয়ে আমি সিরিয়াসও না। কিন্তু ফেইসবুকে আসলে বিএনপি – জামাত করা কিছু মানুষের আলাপ শুনলে মনে হয়, দেশে নিরানব্বই শতাংশ মানুষ ই তারা, আওয়ামী লীগ দেশ থেকে বিলীন হয়ে গেছে।
একেবারে নিরপক্ষ দৃষ্টিতে দেখতে গেলেও যদি এর বিশ্লেষণ করা হয় তবে পাওয়া যাবে-আওয়ামী লীগ এখনো এদেশের আম জনতার দল৷ আওয়ামী লীগ -ই একমাত্র রাজনৈতিক প্লাটফর্ম যেখানে বারো জাতি, তেরো উপজাতি, হিন্দু – মুসলমান – বৌদ্ধ – ক্রিশ্চিয়ান, আদিবাসী – অভিবাসী – অনাবাসী, আস্তিক – নাস্তিক, নারী – পুরুষ – ট্রান্সজেন্ডার, সমকামী – উভয়কামী – বিষমকামী, জজ থেকে জেলে, কর্পোরেট বাবু থেকে কৃষক, পীর থেকে ফকির, আউলিয়া থেকে জাউলিয়া, বিদুষী থেকে দোষী, দুর্নীতিবাজ থেকে সুনীতিবাজ সবাই আছে।
দক্ষিণ এশিয়াতে একমাত্র ভারতের ‘জাতীয় কংগ্রেস’ ছাড়া আওয়ামী লীগের মতো এতো বৈচিত্র্যময়, বহুমত, বহুপথের রাজনৈতিক দল আর দ্বিতীয়টি নেই।
সুতরাং যারা মনে করেন দেশে আওয়ামী লীগের জনসমর্থন নাই, তারা আপাতত দিবাস্বপ্নে আছেন।
এটা মূলত মানুষের ধর্মীয় আবেগ নিয়ে খেলা করার নামান্তর।
মহান আল্লাহ আমাদেরকে হেদায়েত করুন,আমীন।