ঢাকা ১০:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৪ মে ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছেলের কবরের বেড়া দিতে গিয়ে মারা গেলেন বাবা বিশ্ব মুক্ত সাংবাদিক দিবস জামালপুরে আমের ফলন কমার আশংকা আজমিরীগঞ্জে জনৈক এক নারীকে ইভটিজিং, মোবাইল কোর্টের জেল ও জরিমানা ইবিতে ‘বি’ ইউনিটের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন: মুরাদ কবির সড়ক দুর্ঘটনায় ট্রাকের হেলপার গুরুতর আহত কুরআনে যাদেরকে আল্লাহর ওলি বলা হয়েছে। দুধরচকী। পাকুন্দিয়া উপজেলার পাটুয়াবাঙ্গা দর্গাবাজারে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হাজী মো: মকবুল হোসেনের পথসভা ও গণসংযোগ জামালপুরে হাত পাখা শিল্পের প্রসার

যশোরে মাদকের ঢেউ

উন্নত প্রযুক্তির বদৌলতে সময়ের সাথে সাথে বদলে যাচ্ছে যশোরে মাদকের কারবারের ধরণ। প্রশাসনের তৎপরতার কারণে কৌশল বদলাচ্ছে জড়িতরা। এখন ফেসবুক-মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপে অর্ডার নিয়ে সরবরাহ করা হচ্ছে শিশুদের মাধ্যমে। অধিকাংশ মাদক ব্যবসার সাথে সন্ত্রাসী ক্যাডাররা; কোথাও জনপ্রতিনিধি বা প্রশাসনের কতিপয় বিপথগামী সদস্য। আর ক্ষমতাশালীদের ছত্রছায়ায় থেকে অবাধে চলছে মাদকের ভয়াল থাবা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সূত্র জানায়, এক সময় যশোরে মাদকের রমরমা বাণিজ্য ছিল। কিন্তু প্রশাসনের তৎপরতায় সেই রমরমা অবস্থা আর নেই। তবে বসেও নেই মাদকের কারবারিরা। প্রশাসনের অভিযান, সামাজিক প্রতিরোধে অনেক কারবারের ধরণ পাল্টাচ্ছে। কেউ কেউ বদল করছে স্থান। কারবার চলছে চেইন পদ্ধতিতে। উৎপাদক, আমদানিকারক, ডিলার, সাব ডিলার, পরিবেশক প্রভৃতি ধাপে চলছে কারবার। ব্যবসায়ও যুক্ত হয়েছে প্রযুক্তির ব্যবহার। মোবাইল ফোন, ফেসবুক মেসেঞ্জার ও হোয়াসটঅ্যাপের মাধ্যমে নেয়া হচ্ছে অর্ডার। নিরাপদ ডেলিভারীতে ব্যবহার করা হচ্ছে শিশুদের।
যশোর শহরের ষষ্ঠীতলার বুনোপাড়া, পাখিপট্টি, মুজিব সড়ক বাইলেন, রেলগেট পশ্চিমপাড়া, খড়কি কলাবাগান, রায়পাড়ার কয়লাপট্টি, বারান্দীপাড়ার লিচুতলা, শংকরপুরের টার্মিনাল, চোপদারপাড়া, সন্যাসী দীঘিরপাড়সহ আরো অনেক এলাকায় চলছে মাদকের কারবার।
মুঠোফোনে কল দিলে ইজিবাইক, রিক্সা ও মোটরসাইকেল যোগেও পৌঁছে দেয়া হয় এসব মাদক।মাদকের কারবার নিয়ন্ত্রণ করছে দাগি সন্ত্রাসীরা। নিষিদ্ধ ব্যবসায়ের উপর সামাজিক চাপ ঠেকাতে চালানো হচ্ছে মাফিয়া স্টাইল। দাপট নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণে অস্ত্রধারী বাহিনী গড়ে তুলেছে কারবারীরা। মাদকাসক্ত ও উঠতি সন্ত্রাসীদের বাহিনীতে ভেড়ানো হচ্ছে নির্বিঘ্নে ব্যবসা চালানো জন্য।
যশোর শহরের ষষ্ঠীতলা বুনোপাড়ায় বাড়িতে বাড়িতে চলে ফেনসিডিল ও ইয়াবার কারবার। মুঠোফোনে আসে ফেনসিডিল ও ইয়াবা। মাদক কারবারী ও সেবীদের কাছে নেশার ট্যাবলেট ইয়াবা ‘বাবা’ এবং ফেনসিডিল ‘ডাল’ নামে পরিচিত। বিকাশের মাধ্যমে টাকা লেনদেন হলেই বাড়ির শিশু, কিশোর ও কিশোরীদের মাধ্যমে মাদকাসক্তদের হাতে পৌঁছে যায় মাদক।
মুজিব সড়ক বাইলেনে ইয়াবা বিক্রি হয় দেদার। এখানকার একটি পরিবারের সবাই ইয়াবা বিক্রির সাথে জড়িত।
রেলগেট পশ্চিমপাড়ায় আছে ডিলার ও ভ্রাম্যমাণ কারবারী।অস্ত্র ও মাদকে ভাসছে খড়কি কলাবাগান
এমএম কলেজের দক্ষিণে মাদক ও অস্ত্র ব্যবসার কারণে বহুল আলোচিত জায়গাটির নাম কলাবাগান। শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী আবু তালেব কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার পর তার মাদক সম্রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ নেন ভাতিজা ।

পুলিশের একটি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ২৪ মে তালিকাভুক্ত ১৪ মাদক ব্যবসায়ীর নাম প্রকাশ করে পুলিশ। তারা হলেন- চাঁচড়া রায়পাড়ার বেবি খাতুন, রুমা বেগম, শংকরপুর এলাকার তারেক কাজী, চৌগাছার কাবিলপুর গ্রামের শফি মেম্বার, অভয়নগরের বুইকরা গ্রামের কামরুল ও লিপি, বেনাপোল ভবেরবেড় গ্রামের রবিউল ইসলাম, বারপোতা গ্রামের রিয়াজুল ইসলাম, চৌগাছার ফুলসারা এলাকার আশরাফুল ইসলাম, কাবিলপুর এলাকার ইসরাইল হোসেন নুনু, শার্শার আনোয়ার হোসেন আনা, বাদশা মল্লিক ও জাহাঙ্গীর।
ওই সময় এসব মাদক ব্যবসায়ীদের ধরতে ১০ থেকে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত পুরস্কার ঘোষণাও করা হয়েছিল।
জেলা পুলিশের মুখপাত্র ডিবির ওসি রূপন কুমার সরকার বলেছেন, মাদক ও সন্ত্রাস বিরোধী অভিযান চলমান আছে। এরপরও যদি কেউ এই ধরণের অপরাধের সাথে জড়িত থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরো খবর.......

আপলোডকারীর তথ্য

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছেলের কবরের বেড়া দিতে গিয়ে মারা গেলেন বাবা

যশোরে মাদকের ঢেউ

আপডেট টাইম : ০১:৫২:০৭ অপরাহ্ণ, সোমবার, ২৩ জানুয়ারি ২০২৩

উন্নত প্রযুক্তির বদৌলতে সময়ের সাথে সাথে বদলে যাচ্ছে যশোরে মাদকের কারবারের ধরণ। প্রশাসনের তৎপরতার কারণে কৌশল বদলাচ্ছে জড়িতরা। এখন ফেসবুক-মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপে অর্ডার নিয়ে সরবরাহ করা হচ্ছে শিশুদের মাধ্যমে। অধিকাংশ মাদক ব্যবসার সাথে সন্ত্রাসী ক্যাডাররা; কোথাও জনপ্রতিনিধি বা প্রশাসনের কতিপয় বিপথগামী সদস্য। আর ক্ষমতাশালীদের ছত্রছায়ায় থেকে অবাধে চলছে মাদকের ভয়াল থাবা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সূত্র জানায়, এক সময় যশোরে মাদকের রমরমা বাণিজ্য ছিল। কিন্তু প্রশাসনের তৎপরতায় সেই রমরমা অবস্থা আর নেই। তবে বসেও নেই মাদকের কারবারিরা। প্রশাসনের অভিযান, সামাজিক প্রতিরোধে অনেক কারবারের ধরণ পাল্টাচ্ছে। কেউ কেউ বদল করছে স্থান। কারবার চলছে চেইন পদ্ধতিতে। উৎপাদক, আমদানিকারক, ডিলার, সাব ডিলার, পরিবেশক প্রভৃতি ধাপে চলছে কারবার। ব্যবসায়ও যুক্ত হয়েছে প্রযুক্তির ব্যবহার। মোবাইল ফোন, ফেসবুক মেসেঞ্জার ও হোয়াসটঅ্যাপের মাধ্যমে নেয়া হচ্ছে অর্ডার। নিরাপদ ডেলিভারীতে ব্যবহার করা হচ্ছে শিশুদের।
যশোর শহরের ষষ্ঠীতলার বুনোপাড়া, পাখিপট্টি, মুজিব সড়ক বাইলেন, রেলগেট পশ্চিমপাড়া, খড়কি কলাবাগান, রায়পাড়ার কয়লাপট্টি, বারান্দীপাড়ার লিচুতলা, শংকরপুরের টার্মিনাল, চোপদারপাড়া, সন্যাসী দীঘিরপাড়সহ আরো অনেক এলাকায় চলছে মাদকের কারবার।
মুঠোফোনে কল দিলে ইজিবাইক, রিক্সা ও মোটরসাইকেল যোগেও পৌঁছে দেয়া হয় এসব মাদক।মাদকের কারবার নিয়ন্ত্রণ করছে দাগি সন্ত্রাসীরা। নিষিদ্ধ ব্যবসায়ের উপর সামাজিক চাপ ঠেকাতে চালানো হচ্ছে মাফিয়া স্টাইল। দাপট নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণে অস্ত্রধারী বাহিনী গড়ে তুলেছে কারবারীরা। মাদকাসক্ত ও উঠতি সন্ত্রাসীদের বাহিনীতে ভেড়ানো হচ্ছে নির্বিঘ্নে ব্যবসা চালানো জন্য।
যশোর শহরের ষষ্ঠীতলা বুনোপাড়ায় বাড়িতে বাড়িতে চলে ফেনসিডিল ও ইয়াবার কারবার। মুঠোফোনে আসে ফেনসিডিল ও ইয়াবা। মাদক কারবারী ও সেবীদের কাছে নেশার ট্যাবলেট ইয়াবা ‘বাবা’ এবং ফেনসিডিল ‘ডাল’ নামে পরিচিত। বিকাশের মাধ্যমে টাকা লেনদেন হলেই বাড়ির শিশু, কিশোর ও কিশোরীদের মাধ্যমে মাদকাসক্তদের হাতে পৌঁছে যায় মাদক।
মুজিব সড়ক বাইলেনে ইয়াবা বিক্রি হয় দেদার। এখানকার একটি পরিবারের সবাই ইয়াবা বিক্রির সাথে জড়িত।
রেলগেট পশ্চিমপাড়ায় আছে ডিলার ও ভ্রাম্যমাণ কারবারী।অস্ত্র ও মাদকে ভাসছে খড়কি কলাবাগান
এমএম কলেজের দক্ষিণে মাদক ও অস্ত্র ব্যবসার কারণে বহুল আলোচিত জায়গাটির নাম কলাবাগান। শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী আবু তালেব কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার পর তার মাদক সম্রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ নেন ভাতিজা ।

পুলিশের একটি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ২৪ মে তালিকাভুক্ত ১৪ মাদক ব্যবসায়ীর নাম প্রকাশ করে পুলিশ। তারা হলেন- চাঁচড়া রায়পাড়ার বেবি খাতুন, রুমা বেগম, শংকরপুর এলাকার তারেক কাজী, চৌগাছার কাবিলপুর গ্রামের শফি মেম্বার, অভয়নগরের বুইকরা গ্রামের কামরুল ও লিপি, বেনাপোল ভবেরবেড় গ্রামের রবিউল ইসলাম, বারপোতা গ্রামের রিয়াজুল ইসলাম, চৌগাছার ফুলসারা এলাকার আশরাফুল ইসলাম, কাবিলপুর এলাকার ইসরাইল হোসেন নুনু, শার্শার আনোয়ার হোসেন আনা, বাদশা মল্লিক ও জাহাঙ্গীর।
ওই সময় এসব মাদক ব্যবসায়ীদের ধরতে ১০ থেকে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত পুরস্কার ঘোষণাও করা হয়েছিল।
জেলা পুলিশের মুখপাত্র ডিবির ওসি রূপন কুমার সরকার বলেছেন, মাদক ও সন্ত্রাস বিরোধী অভিযান চলমান আছে। এরপরও যদি কেউ এই ধরণের অপরাধের সাথে জড়িত থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।