ফ্রি সেচ সুবিধায় খুশি ঠাকুরগাঁওয়ে হাজারো কৃষক জ্বালানী সাশ্রয় ৮১ কোটি টাকা
- আপডেট টাইম : ০৯:৫৩:২১ পূর্বাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ১১ আগস্ট ২০২২
- / ১৫৯ ৫০০০.০ বার পাঠক
কৃষিতে স্বনির্ভর দেশের উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁও। এ জেলার মাটি উর্বর হওয়ায় অন্যান্য জেলার তুলনায় যেকোনো ফসল উৎপাদন হয় বেশি। ধান,পাট,গম,ভুট্টা, আখসহ সব ধরনের ফসলের আবাদ বেশ ভালো হয় এখানে । এবার বর্ষার ভারি মৌসুমেও ছিটেফোটা বুষ্টির পানির দেখা না পাওয়ায় এর উল্টো চিত্র দেখা দিয়েছিল ঠাকুরগাঁওয়ে। এতে সময় সময় মত ধান রোপণ করতে না পারলে ধানের উৎপাদন কমে যাওয়া সহ কৃষিতে বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা করছিল জেলা কৃষি অধিদপ্তর।
অপরদিকে আমন মৌসুমে ঠাকুরগাঁওয়ে প্রয়োজনীয় পরিমাণ বৃষ্টিপাত না হওয়ায় দুশ্চিন্তায় সময় পার করছিল কৃষকেরা৷ তবে সে দুশ্চিন্তা থেকে কৃষকদের মুখে হাসি ফুটানোর জন্য আমন ধানের জমিতে সম্পূরক সেচের উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ঠাকুরগাঁও জেলা৷
পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া তথ্যমতে, এ বছর পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাস্তবায়িত ভুল্লি বাঁধ সেচ প্রকল্পের ৮০০ হেক্টর, টাংগন বাঁধ সেচ প্রকল্পের ৪ হাজার ৪শ ৫০ হেক্টর,বুড়ি বাঁধ সেচ প্রকল্পের ১ হাজার ৭শ ২০ হেক্টর জমি সহ জেলার সকল সেচ প্রকল্পের মাধ্যমে ১১হাজার ৬শ ৬৫ হেক্টর জমিতে সম্পূরক সেচ প্রদানের উদ্যােগ গ্রহন করেছে। এ উদ্যোগের মাধ্যমে ১১হাজার ৬শ ৬৫ হেক্টর জমিতে ৫৮হাজার২শ ৭৫ মেট্রিক টন ধান উৎপন্ন হবে, যার মুল্য ১শ ১৫ কোটি টাকা। এতে আনুমানিক ৮১ কোটি টাকার জ্বালানি সাশ্রয় হবে। জেলা অফিসের আওতায় ৮৯ টি কৃষক পানি ব্যবস্থাপনা দল রয়েছে। এতে ভূল্লী বাঁধ সেচ প্রকল্পের ১হাজার,টাংগন বাঁধে ৬হাজার জন ও বুড়ি বাঁধ সেচ প্রকল্পে ২হাজার জন কৃষক সুবিধা পাচ্ছেন৷
আমন ধানের জমিতে সম্পূরক সেচে কৃষিতে আশার আলো দেখছেন কৃষকেরা। স্বপ্ন দেখছেন ভালো ফসল ও চড়া দামের৷
বুড়ি বাঁধ সেচ প্রকল্পের আওতায় উপকারভোগী কৃষক মোজাম্মেল হক বলেন, যে পরিমাণ বৃষ্টির প্রয়োজন সেটি পাওয়া যাচ্ছেনা খরার কারনে। তবে সম্পূরক সেচের মাধ্যমে আমন জমিতে পানি দেওয়ায় হতাশা দূর হয়েছে। ভালো ফসল হবে আশা করছি৷
ভূল্লী বাঁধ সেচ প্রকল্পের সভাপতি আসাদুজ্জামান বলেন, আমাদের বাঁধের আওতায় এক হাজার কৃষক সম্পূরক সেচ পাচ্ছেন। আমরা আমন ধান নিয়ে অনেক বেশী দুশ্চিন্তার মধ্যে ছিলাম৷ আর এবারে যখন বৃষ্টি হওয়া দরকার তখন আমরা বৃষ্টি পায়নি। তবে সম্পূরক সেচের মাধ্যমে আমিসহ আমাদের এখানকার কৃষকেরা অনেক উপকৃত হচ্ছেন। আর কৃষিতে প্রাণ ফিরে পেয়েছেন৷
জেলার টাংগন, বুড়ি ও ভুল্লি বাঁধ সেচ প্রকল্পের পূর্নবাসন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক, প্রকৌশলী মোখলেসুর রহমান বলেন, আমন জমিতে সেচ প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষকেরা দারুণ ভাবে লাভবান হচ্ছেন৷
পানি উন্নয়ন বোর্ড ঠাকুরগাঁওয়ের উপ-প্রধান সম্প্রসারণ অফিসার রফিউল বারী বলেন, আমরা সবসময় কৃষকদের জন্য কাজ করে যাচ্ছি৷ খরা মোকাবেলায় আমরা আমন ধানের জমিতে সম্পূরক সেচের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি৷ আমরা মনে করছি এর মাধ্যমে কৃষকেরা কৃষিতে স্বস্তি ফিরে পেয়েছেন৷