ঢাকা ০৮:১২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
রুলার সরকার না থাকায় ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন রকম অসুবিধায় রয়েছে।। ঠাকুরগাঁওয়ে ভার্চুয়ালি মির্জা ফখরুল ইসলাম ৫ আগস্টের পর সব রাজবন্দি মুক্তি পেলেন, আজহার পেলেন না এবার করা হলো শ্রমিকদের আইনি সুরক্ষা ও জাতীয় ন্যূনতম মজুরির সুপারিশ করেছে শ্রম সংস্কার কমিশন কাকরাইল আগুরাগলি এলাকায় মজুমদার ভিলা—৯৪ নং আবাসিক ভবন রাজউক কর্তক অবৈধ নকশায় নির্মাণ করার প্রমাণিত হওয়ায় মালিককে চিঠি পর্ব ২ শ্রীপুরে ওসি’র ঘুষ লেনদেনের অডিও ভাইরাল গুলশানে র‍্যাবের ক্যাশিয়ার শাহ আলমের ইস্পায় গড়ে তুলেছে অপরাধের আখড়া। পর্ব ২ জানাযায় প্রধান উপদেষ্টার কাতার সফরে গুরুত্ব পাবে কতটুকু নার্সিং ডিপ্লোমাকে ডিগ্রী সমমান করার দাবিতে ঠাকুরগাঁওয়ে অবস্থান কর্মসূচি ঠাকুরগাঁওয়ে কবরের ওপর থেকে হাত পা বাঁধা অবস্থায় নারীর মরদেহ উদ্ধার ঠাকুরগাঁওয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১

বধ্যভূমি সংরক্ষণ ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ নির্মাণে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর প্রতি সুজনের জোরালো অনুরোধ

সময়ের কন্ঠ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : ০৪:০২:৪৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২১
  • / ২৭৭ ৫০০০.০ বার পাঠক

মোঃ শহিদুল ইসলাম (শহিদ)

বিভাগীয় ব্যুরো প্রধান চট্রগ্রামঃ

নগরীতে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ নির্মাণ এবং ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বধ্যভূমি সংরক্ষণ করতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এর নিকট অনুরোধ জানিয়েছেন নাগরিক উদ্যোগের প্রধান উপদেষ্টা এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন। আজ মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর ২০২১ইং) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর নিকট এ অনুরোধ জানান।

এসময় তিনি বলেন ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে গৌরবময় ভূমিকা রেখেছিলেন চট্টগ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ আপামর জনসাধারন। তাছাড়া দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী হওয়ায় চট্টগ্রাম স্বাধীনতা যুদ্ধের অনেক গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকার স্বাক্ষী। চট্টগ্রামের গুরুত্ব উপলব্দি করেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার প্রেরিত স্বাধীনতা ঘোষণার বার্তাটি পাঠান চট্টগ্রামে। চট্টগ্রামের স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র থেকেই স্বাধীনতার ঘোষণা বার্তাটি প্রথম পাঠ করা হয়। এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে সারা দেশের জনগন। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্যি যে অল্প কিছুদিন পর আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন করতে চললেও এতো বছরে চট্টগ্রামে একটি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। চট্টগ্রাম পুরাতন সার্কিট হাউসটি মুক্তিযুদ্ধের একটি স্মৃতি বিজড়িত স্থান। অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধার রক্ত এবং নির্যাতনের চিহ্ন বহন করছে এ ভবনটি। তৎকালীন বিএনপি সরকারের প্রত্যক্ষ নির্দেশে এ ভবনের সম্মুখস্থ স্থানটিকে শিশু পার্ক বানিয়ে ভবনের প্রকৃত ইতিহাসকে আড়াল করা হয়েছে। তাই সার্কিট হাউসের সামনে থেকে শিশুপার্কটি অন্যত্র সরিয়ে সেখানে একটি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ নির্মাণ চট্টগ্রামের সর্বস্তরের জনগনের প্রাণের দাবী। পাশাপাশি সার্কিট হাউসটিকে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘরে রূপান্তরিত করলে নতুন প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান লাভ করতে সক্ষম হবেন। এছাড়াও চট্টগ্রাম নগরীর ফিরোজশাহ কলোনী, ফয়েস লেক, হালিশহরের মধ্যম নাথপাড়া, শেরশাহ কলোনী, ঝাউতলা, ডালিম হোটেল, গুডস হিল, পাহাড়তলী হাজী ক্যাম্পসহ আরো অনেক বধ্যভূমিতে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর সদস্যরা বিহারীদের সহায়তায় বিপুল সংখ্যক মুক্তিযোদ্ধা ও নিরীহ বাঙালিদের হত্যা করে। স্বাধীনতা যুদ্ধের পরে এসব বধ্যভূমিতে মিলেছে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বর হত্যাকান্ডের শিকার সেইসব মানুষদের কঙ্কাল ও নিপীড়নের দাগ। এখনো ঐসব স্থান দিয়ে যাওয়া আসা করলে মুক্তিযোদ্ধাসহ নিরীহ বাঙালির করুন আকুতি কানে ভেসে উঠে। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় দীর্ঘ বছর অতিক্রান্ত হলেও চট্টগ্রামের বধ্যভূমিগুলো সংরক্ষণ করা হয়নি। পাশাপাশি পাকিস্তান থেকে আসা অস্ত্র, গোলাবারুদ বোঝাই ‘সোয়াত’ জাহাজ প্রতিরোধের স্থানটি চট্টগ্রামের বীর প্রতিরোধের স্থান। সেই স্থানটি সংরক্ষণ করা এবং সোয়াত জাহাজের ইতিহাস জানা নতুন প্রজন্মের জন্য একান্ত জরুরী। দীর্ঘ সময় ধরে এসব বধ্যভূমি এবং মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত স্থানসমূহ সংরক্ষণ না করার ফলে বিভিন্ন ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠান অবৈধভাবে এসব জায়গা দখল করে নানা স্থাপনা তৈরী করেছে। ফলে ধীরে ধীরে এসব স্মৃতি চিহ্ন মুছে যেতে শুরু করেছে। অন্যদিকে নতুন প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সংরক্ষণের অভাবে স্মৃতির অতল গহ্বরে হারিয়ে যাচ্ছে এসব অমূল্য স্মৃতি চিহ্নগুলো। যার ফলে ইতিহাস বিকৃতিকারীরা ইতিহাস বিকৃতির সুযোগ পাচ্ছে। খোরশেদ আলম সুজন স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের প্রাক্কালে সরকারীভাবে চট্টগ্রাম পুরাতন সার্কিট হাউস সংলগ্ন ময়দানে একটি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ নির্মাণ এবং মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত বধ্যভূমিগুলো সংরক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণের জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর নিকট সবিনয় অনুরোধ জানান। তিনি আশা প্রকাশ করেন স্বাধীনতা যুদ্ধের মহামূল্যবান এসব স্মৃতিগুলো যদি সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা যায় তাহলে ইতিহাস বিকৃতিরা নতুন প্রজন্মদের আর বিভ্রান্ত করতে পারবেন না। এজন্য মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সকল বুদ্ধিজীবি, রাজনৈতিক নেতা, ছাত্র, জনতা, যুবকসহ সর্বস্তরের জনগনকে এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

বধ্যভূমি সংরক্ষণ ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ নির্মাণে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর প্রতি সুজনের জোরালো অনুরোধ

আপডেট টাইম : ০৪:০২:৪৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২১

মোঃ শহিদুল ইসলাম (শহিদ)

বিভাগীয় ব্যুরো প্রধান চট্রগ্রামঃ

নগরীতে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ নির্মাণ এবং ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বধ্যভূমি সংরক্ষণ করতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এর নিকট অনুরোধ জানিয়েছেন নাগরিক উদ্যোগের প্রধান উপদেষ্টা এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন। আজ মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর ২০২১ইং) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর নিকট এ অনুরোধ জানান।

এসময় তিনি বলেন ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে গৌরবময় ভূমিকা রেখেছিলেন চট্টগ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ আপামর জনসাধারন। তাছাড়া দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী হওয়ায় চট্টগ্রাম স্বাধীনতা যুদ্ধের অনেক গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকার স্বাক্ষী। চট্টগ্রামের গুরুত্ব উপলব্দি করেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার প্রেরিত স্বাধীনতা ঘোষণার বার্তাটি পাঠান চট্টগ্রামে। চট্টগ্রামের স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র থেকেই স্বাধীনতার ঘোষণা বার্তাটি প্রথম পাঠ করা হয়। এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে সারা দেশের জনগন। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্যি যে অল্প কিছুদিন পর আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন করতে চললেও এতো বছরে চট্টগ্রামে একটি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। চট্টগ্রাম পুরাতন সার্কিট হাউসটি মুক্তিযুদ্ধের একটি স্মৃতি বিজড়িত স্থান। অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধার রক্ত এবং নির্যাতনের চিহ্ন বহন করছে এ ভবনটি। তৎকালীন বিএনপি সরকারের প্রত্যক্ষ নির্দেশে এ ভবনের সম্মুখস্থ স্থানটিকে শিশু পার্ক বানিয়ে ভবনের প্রকৃত ইতিহাসকে আড়াল করা হয়েছে। তাই সার্কিট হাউসের সামনে থেকে শিশুপার্কটি অন্যত্র সরিয়ে সেখানে একটি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ নির্মাণ চট্টগ্রামের সর্বস্তরের জনগনের প্রাণের দাবী। পাশাপাশি সার্কিট হাউসটিকে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘরে রূপান্তরিত করলে নতুন প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান লাভ করতে সক্ষম হবেন। এছাড়াও চট্টগ্রাম নগরীর ফিরোজশাহ কলোনী, ফয়েস লেক, হালিশহরের মধ্যম নাথপাড়া, শেরশাহ কলোনী, ঝাউতলা, ডালিম হোটেল, গুডস হিল, পাহাড়তলী হাজী ক্যাম্পসহ আরো অনেক বধ্যভূমিতে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর সদস্যরা বিহারীদের সহায়তায় বিপুল সংখ্যক মুক্তিযোদ্ধা ও নিরীহ বাঙালিদের হত্যা করে। স্বাধীনতা যুদ্ধের পরে এসব বধ্যভূমিতে মিলেছে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বর হত্যাকান্ডের শিকার সেইসব মানুষদের কঙ্কাল ও নিপীড়নের দাগ। এখনো ঐসব স্থান দিয়ে যাওয়া আসা করলে মুক্তিযোদ্ধাসহ নিরীহ বাঙালির করুন আকুতি কানে ভেসে উঠে। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় দীর্ঘ বছর অতিক্রান্ত হলেও চট্টগ্রামের বধ্যভূমিগুলো সংরক্ষণ করা হয়নি। পাশাপাশি পাকিস্তান থেকে আসা অস্ত্র, গোলাবারুদ বোঝাই ‘সোয়াত’ জাহাজ প্রতিরোধের স্থানটি চট্টগ্রামের বীর প্রতিরোধের স্থান। সেই স্থানটি সংরক্ষণ করা এবং সোয়াত জাহাজের ইতিহাস জানা নতুন প্রজন্মের জন্য একান্ত জরুরী। দীর্ঘ সময় ধরে এসব বধ্যভূমি এবং মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত স্থানসমূহ সংরক্ষণ না করার ফলে বিভিন্ন ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠান অবৈধভাবে এসব জায়গা দখল করে নানা স্থাপনা তৈরী করেছে। ফলে ধীরে ধীরে এসব স্মৃতি চিহ্ন মুছে যেতে শুরু করেছে। অন্যদিকে নতুন প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সংরক্ষণের অভাবে স্মৃতির অতল গহ্বরে হারিয়ে যাচ্ছে এসব অমূল্য স্মৃতি চিহ্নগুলো। যার ফলে ইতিহাস বিকৃতিকারীরা ইতিহাস বিকৃতির সুযোগ পাচ্ছে। খোরশেদ আলম সুজন স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের প্রাক্কালে সরকারীভাবে চট্টগ্রাম পুরাতন সার্কিট হাউস সংলগ্ন ময়দানে একটি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ নির্মাণ এবং মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত বধ্যভূমিগুলো সংরক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণের জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর নিকট সবিনয় অনুরোধ জানান। তিনি আশা প্রকাশ করেন স্বাধীনতা যুদ্ধের মহামূল্যবান এসব স্মৃতিগুলো যদি সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা যায় তাহলে ইতিহাস বিকৃতিরা নতুন প্রজন্মদের আর বিভ্রান্ত করতে পারবেন না। এজন্য মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সকল বুদ্ধিজীবি, রাজনৈতিক নেতা, ছাত্র, জনতা, যুবকসহ সর্বস্তরের জনগনকে এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।