জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধিতে চাপ বাড়বে জনজীবনে
- আপডেট টাইম : ০৯:৪৪:৩৭ পূর্বাহ্ণ, শনিবার, ৬ নভেম্বর ২০২১
- / ২৩৪ ৫০০০.০ বার পাঠক
সময়ের কন্ঠ রিপোর্ট।।
আজ ৫ নভেম্বর ২০২১ইং শুক্রবার দুপুর ৩:০০ঘটিকার সময় ন্যাশনাল ওয়ার্কার্স ইউনিটি সেন্টারের উদ্যোগে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে রাজধানীর মিরপুর-১১নং বাসস্ট্যান্ডে এক প্রতিবাদ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন ন্যাশনাল ওয়ার্কার্স ইউনিটি সেন্টারের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সুলতানা বেগম। বক্তব্য রাখেন ন্যাশনাল ওয়ার্কার্স ইউনিটি সেন্টারের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইলিয়াস, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ ফরিদ উদ্দিন, প্রচার সম্পাদক মোঃ তাহেরুল ইসলাম, ন্যাশনাল ডমেস্টিক ওয়ার্কার্স সেন্টারের সভাপতি সেলিনা বেগম, সাধারণ সম্পাদক কল্পনা আক্তার, সহ-সভাপতি নুরজাহান বেগম, সদস্য সালমা বেগম প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্য সুলতানা বেগম বলেন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির মধ্যে বাড়ানো হলো জ্বালানি তেলের দাম। বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) থেকেই কার্যকর হচ্ছে ডিজেল ও কেরোসিনের নতুন দাম। এক লাফে লিটার প্রতি বেড়েছে ১৫ টাকা। এতে করে পরিবহন ও কৃষি ব্যয় বাড়বে, প্রভাব পড়তে পারে বিদ্যুতের দামেও; সবমিলিয়ে এর মাশুল গুনতে হবে সাধারণ মানুষ, যাত্রী ও ব্যবসায়ীদের। এদিকে হঠাৎ করে গণপরিবহণ বন্ধের ঘোষণায় বিপাকে পড়েছেন ভর্তি পরীক্ষার্থী ও চাকরি প্রার্থীরা।
করোনা ভাইরাসের কারণে বিশ্ব অর্থনীতি যেমন থমকে গিয়েছিল, একইভাবে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের আয়ের ওপরও এর ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। বহু মানুষ কাজ হারিয়েছেন, অনেকের ব্যবসাও বন্ধ হয়েছে। ফলে আয় কমে এসেছে দেশের একটি বড় অংশের মানুষের। এর বিরূপ প্রভাব কাটিয়ে ওঠার চেষ্টার মধ্যেই জ্বালানি তেলের এই দামের প্রভাব সাধারণ মানুষের ওপর বিপর্যয় নেমে আসবে ।
‘এইভাবে এত দাম বাড়ানো মোটেও যৌক্তিক হয়নি। কারণ আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বাড়লে তার প্রভাব বাংলাদেশে পড়তে তিন মাস সময় লেগে যায়। প্রতিদিনের
তেল তো আর বিপিসি প্রতিদিন কিনে আনে না। একইভাবে এলপিজি ব্যবসায়ীদের সুবিধা দিয়েও দাম বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে যখন দাম কমে তখন তারা কিন্তু সহজে দাম কমান না। লোকসান পোষানোর কথা বলতে থাকেন। এটা এক ধরনের লুণ্ঠনমূলক আচরণ।’ তিনি বলেন, ‘কোভিডের কারণে এমনিতেই দেশের ৭৭ ভাগ মানুষের আয় কমে গেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতেই কষ্ট হচ্ছে। আর এখন তো তেলের দাম বাড়ার কারণে পরিবহন ব্যয়, পণ্যের ব্যয় সব বাড়বে এবং এই বৃদ্ধি সমস্ত উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি করবে। পণ্যের ব্যয় বৃদ্ধিসহ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি পাবে। অর্থাৎ ভোক্তার ক্রয় ক্ষমতা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে। সরকার জনগণের স্বার্থ একেবারেই দেখলো না।’
মানববন্ধনে বক্তাবগন বলেন, হঠাৎ করেই একসঙ্গে প্রতি লিটারে ১৫ টাকা বাড়ানোর ঘটনা এটাই প্রথম। তেলের মূল্য বৃদ্ধিতে সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়বে পরিবহন খাতে। অধিকাংশ বাস-ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান এবং লঞ্চে জ্বালানি হিসাবে ডিজেল ব্যবহার করা হয়। তারা তো রাতারাতি পরিবহন ব্যয় বাড়িয়ে দেবে। এই দাম বৃদ্ধি যদি ধাপে ধাপে করতো, তাতে হয়তো সবাই কিছুটা মানিয়ে নেওয়ার সুযোগ পেতো। এত বেশি বাড়ানো দেশের অথনীতির ওপর ব্যাপক বিরূপ প্রভাব ফেলবে। পরিবহন ব্যয় বাড়ায় আমাদের নিত্যদিনের ব্যয় যেমন বাড়বে পাশাপাশি এই অজুহাতে বেড়ে যেতে পারে বিদ্যুতের দামও। কারণ দেশের এখনও অনেকগুলো বিদ্যুৎ কেন্দ্র ডিজেলচালিত। একইসঙ্গে সেচকাজে ডিজেলের ব্যবহার হওয়ায় কৃষিতেও এর প্রভাব পড়বে। আন্তর্জাতিক বাজারের কথা বলে যে দাম বাড়ালেন, কমলে সেই দাম কমাতেও হবে। ডিজেলের সঙ্গে সঙ্গে কেরোসিনের দাম বাড়ানোর ফলে কেরোসিনের ওপর নির্ভরশীল দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনে নেমে আসবেআরও কঠিন পরিস্থিতি।’ সরকারের এই বিষয়গুলো বিবেচনা করা উচিত ছিল।
মানববন্ধন শেষে একটি বর্ণাঢ্য মিছিল মিরপুরের বিভিন্ন রোড প্রদক্ষিন করে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এসে সমাপ্ত হয়।