ঢাকা ০২:৩৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
মোংলায় রাষ্ট্র মেরামতে তারেক রহমানের দেওয়া ৩১দফার লিফলেট বিতরণ পীরগঞ্জে নবাগত ওসির সাথে জামায়াত-শিবির নেতৃবৃন্দের সৌজন্য সাক্ষাৎ পিকআপ ভ্যান ও বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ৪ কম দামে বুধবার থেকে ট্রাকে আলু বেচবে সরকার মাওলানা সাদকে বিশ্ব ইজতেমায় আনতে প্রধান উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি মঠবাড়ীয়া আরএম ওয়ালটন ফুটবল টুর্ণামেন্ট ২০২৪ শুভ উদ্বোধন তিতুমীর কলেজে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন পীরগঞ্জে সিনুয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দুর্নীতির দায়ে বরখাস্ত প্রাচীন কাল থেকে নতুন ধানের নবান্ন ‍উৎসব গ্রাম বাংলার ঘরে ঘরে ফুলবাড়ী থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ২ জন ওয়ারেন্ট ভুক্ত আসামীকে আটক করেন

রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলো পরিশোধে ব্যর্থ মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণ পৌনে ২ লাখ কোটি টাকা আর্থিক খাতে বড় দায় হিসাবে চিহ্নিত * ঋণের নামে ভর্তুকি যাচ্ছে, বন্ধ হলে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ বাড়ানো যেত -মির্জ্জা আজিজ

সময়ের কন্ঠ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : ০৫:৪৩:৫৯ পূর্বাহ্ণ, রবিবার, ৩ অক্টোবর ২০২১
  • / ৩০৪ ৫০০০.০ বার পাঠক

সময়ের কন্ঠ রিপোর্ট।।

সরকারের কাছ থেকে ঋণ নেওয়ার পর নির্ধারিত সময়ে পৌনে দুই লাখ কোটি টাকা ফেরত দিতে পারেনি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলো। ঋণগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে পড়েছে। এই ঋণ উন্নয়ন ও পরিচালনা খাতে ব্যয় করা হয়েছে। বিশেষ করে ওই সংস্থাগুলোর প্রকল্পের বিপরীতে নেওয়া বৈদেশিক ঋণ নিজ দায়িত্ব নিয়ে সরকার পরিশোধ করেছে। কিন্তু যথাসময়ে এসব ঋণের অর্থ ফেরত না দেওয়ায় সরকারের আর্থিক দায় হিসাবে দাঁড়িয়েছে। এই ঋণের অঙ্ক চলতি বাজেটের প্রায় এক-ততৃীয়াংশ বা ২৯ শতাংশ। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সূত্রে পাওয়া গেছে এসব তথ্য।

জানতে চাইলে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এবিএম মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলো চলমান লোকসান দিচ্ছে। তাদের লোকসানকে এই ঋণের নামে ভর্তুকি ও অনুদান দেওয়া হয়। অফিশিয়ালি এটি ভর্তুকি হিসাবে স্বীকার করা হয় না। এটি ঋণ হিসাবে দেখানো হয়। এই ঋণ সংস্থাগুলো পরিশোধ করে না। এটি দীর্ঘদিন চলে আসছে। এক্ষেত্রে সংস্থাগুলোর জবাবদিহিতা ও দক্ষতা বাড়াতে না পারলে এভাবে চলতেই থাকবে। আর এই টাকা যদি লোকসানি সংস্থাগুলোর পেছনে ব্যয় করা না হতো, তাহলে সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী খাতে আরও বেশি পরিমাণ অর্থ ব্যয় সম্ভব হতো।

সাবেক সিনিয়র অর্থসচিব মাহবুব আহমেদ যুগান্তরকে বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলোর কাছে বকেয়া পাওনা মানে হলো সরকার এসব প্রতিষ্ঠানের কাছে টাকা পাবে। এর মধ্যে বেশির ভাগ হলো অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। পাশাপাশি লোকসানিও আছে। এসব প্রতিষ্ঠানকে বাজেট থেকে ঋণ দিয়ে টিকিয়ে রাখতে হচ্ছে, যা সরকারের কাছে একধরনের বোঝা। তবে আমি মনে করি, এসব লোকসানি প্রতিষ্ঠান রাখার দরকার নেই। কিন্তু রাজনৈতিক চাপ আসবে যদি বন্ধ করার উদ্যোগ নেয়।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং সেল সূত্রে জানা যায়, সরকারের ১২৮টি সংস্থার কাছে বকেয়া ঋণের পাওনা ১ লাখ ৭৫ হাজার ৫৬৭ কোটি টাকা। হিসাবটি করা হয় ২০১৯-২০ অর্থবছর অর্থাৎ গত বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত। বড় ধরনের এই বকেয়া পাওনাকে সরকারের দায় হিসাবে দেখানো হয়েছে। চলতি অর্থবছরের বাজেটের আকার হচ্ছে ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। আর বকেয়া ঋণের পরিমাণ বাজেটের প্রায় ২৯ শতাংশ। নির্ধারিত সময়ে এই অর্থ ফেরত পাওয়া গেলে বাজেটের অর্থায়ন নিয়ে বড় ধরনের চাপের মুখে পড়তে হতো না বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। যেসব সংস্থার কাছে পাওনা, এর মধ্যে বিদ্যুৎ বিভাগের ১০টি সংস্থার কাছে ৮১ হাজার ২৬৬ কোটি টাকা, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের ৭টি সংস্থার কাছে ৩৩ হাজার ৩১০ কোটি টাকা এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের ৫টি সংস্থার কাছে ২৮ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা।

এছাড়া স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীনে ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী ও গাজীপুর সিটি করপোরেশন এবং ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনা ওয়াসাসহ ৪১টি পৌরসভার কাছে এই বকেয়া ঋণ হচ্ছে ১৬ হাজার ১০৭ কোটি টাকা।

বকেয়া এসব ঋণ অর্থ মন্ত্রণালয় বাজেট থেকে বিভিন্ন সংস্থাকে পরিশোধ করেছে। কিন্তু একই রকম ঋণ খোদ অর্থ মন্ত্রণালয় নিজেও পরিশোধ করেনি। এমন ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ৪ হাজার ২৫৪ কোটি টাকা। তবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে এমন ঋণের অঙ্ক কম। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে বকেয়া ঋণের পরিমাণ ৮৪ কোটি টাকা।

বকেয়া পাওনার তালিকায় নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের ৬টি সংস্থার কাছে ৬ হাজার ২০৮ কোটি টাকা, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অধীনে ৫টি সংস্থার কাছে ৪৪৯১ কোটি টাকা, যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ৩টি সংস্থার কাছে ২ হাজার ৩৫২ কোটি টাকা, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কাছে ৫১৭ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে।

একইভাবে বেসরকারি বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের কাছে পাওনা ৩৮৬ কোটি টাকা, তথ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে ৭৫ কোটি টাকা, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কাছে ৬২ কোটি টাকা এবং পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের কাছে ১২৫ কোটি টাকা বকেয়া ঋণ দাঁড়িয়েছে। এছাড়া তালিকায় পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ১ হাজার ৯৭৫ কোটি টাকা, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ৪ কোটি টাকাও রয়েছে।

অর্থ বিভাগের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, রাষ্ট্রায়ত্ত বিভিন্ন সংস্থা তাদের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর করে। ঋণ দেশি ও বিদেশি খাত থেকে নেওয়া হয়। তবে বৈদেশিক ঋণের অর্থ সংশ্লিষ্ট সংস্থা সরাসরি কোনো ঋণদাতা সংস্থাকে পরিশোধ করে না। অর্থ বিভাগ সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার পক্ষ হয়ে বিদেশি ঋণ পরিশোধ করে দেয়। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট সংস্থা ওই বিদেশি ঋণের অর্থ বাবদ টাকা তাদের নিজস্ব বাজেট থেকে অর্থ বিভাগকে পরিশোধ করার কথা। এর জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া হয়ে থাকে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে সংস্থাগুলো নির্দিষ্ট সময় ঋণের টাকা অর্থ বিভাগকে ফেরত বা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হচ্ছে। এতে ঋণগুলো মেয়াদোর্ত্তীণ হয়ে পড়ছে। বিপুল অঙ্কের এই মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণ এখন সরকারের দায় হিসাবে দেখা দিচ্ছে।

রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলোর টাকা ফেরতের ব্যর্থতার কারণ হিসাবে জানা যায়, বিদেশি ঋণের মাধ্যমে অনেক প্রকল্প যথাসময়ে শেষ করতে পারছে না। ফলে প্রকল্প থেকে কোনো ধরনের আউটপুট আসছে না। এছাড়া বিদেশি ঋণে প্রকল্প শুরুর পর আলোর মুখ দেখছে না অনেক প্রকল্প। কিছু ক্ষেত্রে প্রকল্প নেওয়া হলেও সেখান থেকে কোনো মুনাফা অর্জন করতে পারেনি। উল্লিখিতসহ নানা কারণে সরকারের এই ঋণ পরিশোধ করতে তারা পারছে না।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলো পরিশোধে ব্যর্থ মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণ পৌনে ২ লাখ কোটি টাকা আর্থিক খাতে বড় দায় হিসাবে চিহ্নিত * ঋণের নামে ভর্তুকি যাচ্ছে, বন্ধ হলে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ বাড়ানো যেত -মির্জ্জা আজিজ

আপডেট টাইম : ০৫:৪৩:৫৯ পূর্বাহ্ণ, রবিবার, ৩ অক্টোবর ২০২১

সময়ের কন্ঠ রিপোর্ট।।

সরকারের কাছ থেকে ঋণ নেওয়ার পর নির্ধারিত সময়ে পৌনে দুই লাখ কোটি টাকা ফেরত দিতে পারেনি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলো। ঋণগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে পড়েছে। এই ঋণ উন্নয়ন ও পরিচালনা খাতে ব্যয় করা হয়েছে। বিশেষ করে ওই সংস্থাগুলোর প্রকল্পের বিপরীতে নেওয়া বৈদেশিক ঋণ নিজ দায়িত্ব নিয়ে সরকার পরিশোধ করেছে। কিন্তু যথাসময়ে এসব ঋণের অর্থ ফেরত না দেওয়ায় সরকারের আর্থিক দায় হিসাবে দাঁড়িয়েছে। এই ঋণের অঙ্ক চলতি বাজেটের প্রায় এক-ততৃীয়াংশ বা ২৯ শতাংশ। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সূত্রে পাওয়া গেছে এসব তথ্য।

জানতে চাইলে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এবিএম মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলো চলমান লোকসান দিচ্ছে। তাদের লোকসানকে এই ঋণের নামে ভর্তুকি ও অনুদান দেওয়া হয়। অফিশিয়ালি এটি ভর্তুকি হিসাবে স্বীকার করা হয় না। এটি ঋণ হিসাবে দেখানো হয়। এই ঋণ সংস্থাগুলো পরিশোধ করে না। এটি দীর্ঘদিন চলে আসছে। এক্ষেত্রে সংস্থাগুলোর জবাবদিহিতা ও দক্ষতা বাড়াতে না পারলে এভাবে চলতেই থাকবে। আর এই টাকা যদি লোকসানি সংস্থাগুলোর পেছনে ব্যয় করা না হতো, তাহলে সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী খাতে আরও বেশি পরিমাণ অর্থ ব্যয় সম্ভব হতো।

সাবেক সিনিয়র অর্থসচিব মাহবুব আহমেদ যুগান্তরকে বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলোর কাছে বকেয়া পাওনা মানে হলো সরকার এসব প্রতিষ্ঠানের কাছে টাকা পাবে। এর মধ্যে বেশির ভাগ হলো অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। পাশাপাশি লোকসানিও আছে। এসব প্রতিষ্ঠানকে বাজেট থেকে ঋণ দিয়ে টিকিয়ে রাখতে হচ্ছে, যা সরকারের কাছে একধরনের বোঝা। তবে আমি মনে করি, এসব লোকসানি প্রতিষ্ঠান রাখার দরকার নেই। কিন্তু রাজনৈতিক চাপ আসবে যদি বন্ধ করার উদ্যোগ নেয়।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং সেল সূত্রে জানা যায়, সরকারের ১২৮টি সংস্থার কাছে বকেয়া ঋণের পাওনা ১ লাখ ৭৫ হাজার ৫৬৭ কোটি টাকা। হিসাবটি করা হয় ২০১৯-২০ অর্থবছর অর্থাৎ গত বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত। বড় ধরনের এই বকেয়া পাওনাকে সরকারের দায় হিসাবে দেখানো হয়েছে। চলতি অর্থবছরের বাজেটের আকার হচ্ছে ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। আর বকেয়া ঋণের পরিমাণ বাজেটের প্রায় ২৯ শতাংশ। নির্ধারিত সময়ে এই অর্থ ফেরত পাওয়া গেলে বাজেটের অর্থায়ন নিয়ে বড় ধরনের চাপের মুখে পড়তে হতো না বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। যেসব সংস্থার কাছে পাওনা, এর মধ্যে বিদ্যুৎ বিভাগের ১০টি সংস্থার কাছে ৮১ হাজার ২৬৬ কোটি টাকা, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের ৭টি সংস্থার কাছে ৩৩ হাজার ৩১০ কোটি টাকা এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের ৫টি সংস্থার কাছে ২৮ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা।

এছাড়া স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীনে ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী ও গাজীপুর সিটি করপোরেশন এবং ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনা ওয়াসাসহ ৪১টি পৌরসভার কাছে এই বকেয়া ঋণ হচ্ছে ১৬ হাজার ১০৭ কোটি টাকা।

বকেয়া এসব ঋণ অর্থ মন্ত্রণালয় বাজেট থেকে বিভিন্ন সংস্থাকে পরিশোধ করেছে। কিন্তু একই রকম ঋণ খোদ অর্থ মন্ত্রণালয় নিজেও পরিশোধ করেনি। এমন ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ৪ হাজার ২৫৪ কোটি টাকা। তবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে এমন ঋণের অঙ্ক কম। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে বকেয়া ঋণের পরিমাণ ৮৪ কোটি টাকা।

বকেয়া পাওনার তালিকায় নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের ৬টি সংস্থার কাছে ৬ হাজার ২০৮ কোটি টাকা, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অধীনে ৫টি সংস্থার কাছে ৪৪৯১ কোটি টাকা, যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ৩টি সংস্থার কাছে ২ হাজার ৩৫২ কোটি টাকা, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কাছে ৫১৭ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে।

একইভাবে বেসরকারি বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের কাছে পাওনা ৩৮৬ কোটি টাকা, তথ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে ৭৫ কোটি টাকা, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কাছে ৬২ কোটি টাকা এবং পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের কাছে ১২৫ কোটি টাকা বকেয়া ঋণ দাঁড়িয়েছে। এছাড়া তালিকায় পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ১ হাজার ৯৭৫ কোটি টাকা, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ৪ কোটি টাকাও রয়েছে।

অর্থ বিভাগের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, রাষ্ট্রায়ত্ত বিভিন্ন সংস্থা তাদের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর করে। ঋণ দেশি ও বিদেশি খাত থেকে নেওয়া হয়। তবে বৈদেশিক ঋণের অর্থ সংশ্লিষ্ট সংস্থা সরাসরি কোনো ঋণদাতা সংস্থাকে পরিশোধ করে না। অর্থ বিভাগ সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার পক্ষ হয়ে বিদেশি ঋণ পরিশোধ করে দেয়। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট সংস্থা ওই বিদেশি ঋণের অর্থ বাবদ টাকা তাদের নিজস্ব বাজেট থেকে অর্থ বিভাগকে পরিশোধ করার কথা। এর জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া হয়ে থাকে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে সংস্থাগুলো নির্দিষ্ট সময় ঋণের টাকা অর্থ বিভাগকে ফেরত বা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হচ্ছে। এতে ঋণগুলো মেয়াদোর্ত্তীণ হয়ে পড়ছে। বিপুল অঙ্কের এই মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণ এখন সরকারের দায় হিসাবে দেখা দিচ্ছে।

রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলোর টাকা ফেরতের ব্যর্থতার কারণ হিসাবে জানা যায়, বিদেশি ঋণের মাধ্যমে অনেক প্রকল্প যথাসময়ে শেষ করতে পারছে না। ফলে প্রকল্প থেকে কোনো ধরনের আউটপুট আসছে না। এছাড়া বিদেশি ঋণে প্রকল্প শুরুর পর আলোর মুখ দেখছে না অনেক প্রকল্প। কিছু ক্ষেত্রে প্রকল্প নেওয়া হলেও সেখান থেকে কোনো মুনাফা অর্জন করতে পারেনি। উল্লিখিতসহ নানা কারণে সরকারের এই ঋণ পরিশোধ করতে তারা পারছে না।