ঢাকা ০২:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের আয়োজন চলছে, জানালেন ট্রাম্প উত্তরায় আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ অনুসারী মাসুমের ডিগবাজি বিএনপি সেজে নিজেদের কুকর্ম আড়াল করার চেষ্টা করছে লক্ষ্মীপুরে পিস্তলসহ একগৃহ বধূ আটক ঢাকা মহাসড়ক হাইওয়ে রোডে এম্বুলেন্স ও পরিবহনের অগ্নিকান্ড কুমিল্লা পেশাজীবী সাংবাদিক সোসাইটি’র নতুন কমিটি গঠন ঠাকুরগাঁওয়ে স্কাউটস ভবনের ভিত্তি প্রস্তরের উদ্বোধন পিরোজপুর জেলা প্রশাসক কর্তৃক প্রতিবন্ধীদের মাঝে উপকরণ বিতরণ ও পৌর শহরের সৌন্দর্যবর্ধনের কিছু স্থাপনা উদ্বোধন নতুন বছরে যেসব প্রতিজ্ঞা করল ছাত্রশিবির ফ্ল্যাট বিতর্কের পর প্রথমবার প্রকাশ্যে টিউলিপ সিদ্দিক হিজাব না পরার কারণে ইরানে ধর্মীয় নেতার সঙ্গে তর্কে জড়িয়েছেন এক নারী

খুলনায় ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তরা টেকসই বেড়িবাঁধ চায়

সময়ের কন্ঠ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : ১০:৩৪:১৭ পূর্বাহ্ণ, শুক্রবার, ২৮ মে ২০২১
  • / ২৫৬ ৫০০০.০ বার পাঠক

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা অফিস ॥ খুলনায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও পূর্ণিমার প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে উপকূলীয় উপজেলা দাকোপ, কয়রা ও পাইকগাছায় প্রায় ৪০টি গ্রাম প্লাবিত হয়। ভেসে যায় অসংখ্য চিংড়ি ঘের। শত শত ঘর-বাড়ি পানিতে তলিয়ে যায়। গৃহহীন ও অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে প্রায় এক লাখ মানূষ। প্রশাসন থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের খাদ্যসামগ্রী প্রদান করা হচ্ছে। স্থানীয় জনগণের সহায়তায় বাঁধ মেরামতের কাজও চলছে। দুর্যোগকালীন সময়ে ত্রাণসামগ্রী পেয়ে ক্ষতিগ্রস্তরা খুশি হলেও উপকূলীয় বাসিন্দাদের একটাই দাবি ‘ত্রাণ নয়, টেকসই বেড়িবাঁধ চাই।’

গত বুধবার দুপুরের জোয়ারে নদ-নদীর পানির প্রবল চাপে খুলনার উপকূলীয় উপজেলা দাকোপ, কয়রা ও পাইকগাছায় জরাজীর্ণ বেড়িবাধের আন্তত নয়টি স্থান ভেঙ্গে ও বাঁধের উপর দিয়ে উপচে পড়া লবণ পানিতে গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত হয়। এর পর তাৎক্ষণিকভাবে খুলনার জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যজিস্ট্রেট এই তিন উপজেলার ক্ষতিগ্রস্ত ১১টি ইউনিয়নের ১৪ টি গ্রাম পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি পাঁচশত পরিবারের মাঝে শিশু খাদ্য, গো-খাদ্য এবং সাধারণ মানুষের খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন। বৃহস্পতিবারও ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, দুর্গত এলাকার প্রতিটি ইউনিয়নে ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা এবং ৫ টন জিআরের চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়া ২ হাজার ১০০ প্যাকেট চাল, ডাল, বিস্কুটসহ খাদ্য সামগ্রী দেয়া হয়।

স্থানীযরা জানায়, ঘূর্ণিঝড় সিডড়, আইলা, বুলবুল, আমফানে বিধ্বস্ত উপকূলীয় এ জনপদ। আইলার ক্ষত এখনও শুকায়নি, আমফানের ক্ষয়ক্ষতিও কাটিয়ে ওঠা যায়নি। এ অবস্থায় আবার ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে বুধবার ও বৃহস্পতিবার বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে চরম বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে উপকূলবাসী। বহু মানুষের জীবিকার উৎস চিংড়ি ঘের ও পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। পানিতে ঢুবে গেছে ফসলের ক্ষেত ও বসত ঘর। ঘরে পানি ওঠায় মাধা গোজার ঠাঁইও নেই। অনেকে আশ্রয় কেন্দ্রে গেলেও অনেকে বাঁধ বা রাস্তার উঁচু স্থানে ঝুপড়ি বানিয়ে থাকছেন। এলাকা অনেক মানুষ গবাদি-পশু ও হাঁস-মুরগী পালন করেন। নিজেদের কষ্টের সঙ্গে গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগী রক্ষণাবেক্ষনে তারা কঠিন সমস্যায় পড়েছেন। জোয়ার-ভাটার সঙ্গে লড়তে হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের।

ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াও প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে পূর্ণিমা ও অমাবস্যার তিথিতে স্থানীয় নদ-নদীতে পানির প্রবল চাপ বেড়ে যায়। এতে দুর্বল ক্ষীনকায় বেড়িবাঁধের বিভিন্ন স্থান ভেঙ্গে গিয়ে এলাকা প্লাবিত হয়। মৎস্য ঘের, ফসলের খেত, এলাকার ঘরবাড়ি সকল কিছু পানিতে নিমজ্জিত হয়। এর পর ক্ষতিগ্রস্তদের কিছু ত্রাণসামগ্রী দেয়া হয় এবং জোড়াতালি দিয়ে কোন রকমভাবে ভেঙ্গে যাওয়া বাঁধ মেরামত করা হয়। কিন্তু উপকূলবাসীর দুর্ভোগ আর পিছু ছাড়ছেনা। টেক সই বেড়িবাঁধ নির্মাণ ছাড়া প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে তাদের রেহাই নেই।

এদিকে কয়রা উপজেলায় শাকবাড়িয়া নদীর উত্তর মঠবাড়ী মোসলেম সরদারের বাড়ির পাশের প্রায় ৬০ ফুট ভেঙ্গে যাওয়া বেড়িবাঁধ স্বেচ্ছাশ্রমে অস্থায়ীভাবে মেরামত করেছেন স্থনীয় হাজারো মানুষ। শুক্রবার ভোরে নদীতে ভাটির সময় বাঁশ, মাটি, সিমেন্টের বস্তা দিয়ে তারা মহারাজপুর, মঠবাড়ী, কয়রা, শ্রীরামপুর, অর্জুনপুর, পল্লীমঙ্গলসহ কয়রা উপজেলার ১০ থেকে ১৫ গ্রামের মানুষ এ কাজে অংশ নিয়েছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।

খুলনা- ৬ আসনের সংসদ সদস্য (কয়রা-পাইকগাছা) মোঃ আক্তারুজ্জামান বাবু বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। বাঁধ মেরামতের ব্যাপারে সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে। পানি বন্দি মানুষের মাঝে ত্রান সামগ্রী বিতরণ করা হবে তিনি জানান।

এদিকে এই তিন উপজেলা ছাড়া তেরখাদা উপজেলার চিত্রা নদীর মসুনদিয়া নামক স্থানে বাঁধ ভেঙ্গে জোয়ারের পানিতে ভূতিয়ার বিলসহ কয়েকটি বিলে লবন পানি প্রবেশ করায় বোনা আমন ও বোনা আউশ ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তেরখাদা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবার উপজেলায় বোনা আমনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল সাড়ে ৫ হাজার হেক্টর এবং বোনা আউশের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২হাজার ৫শত হেক্টর জমিতে। ইতোমধ্যে দেড় হাজার হেক্টর আমন এবং ১হাজার ২শত হেক্টর জমিতে আউশ ধান বোনা হয়েছে। এসব জমিতে লবন পানি প্রবেশ করায় বোনা আমন এবং বোনা আউশ ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

সুন্দরবন সংলগ্ন কয়রা উপজেলার ৭ টি ইউনিয়নের সব এলাকায় কমবেশি ক্ষতি হয়েছে। সব মিলিয়ে কয়রায় ক্ষপ্রায় ৭ হাজার বাড়ি-ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৫০ টি ঘর সম্পূর্ন, এক হাজার দুইশত আংশিক ও ৫হাজার ৮শত ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে। উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, কয়রায় দুই হাজার এক শত মৎস্য ঘের ভেসে গেছে। মৎস্যখাতে ক্ষতি হয়েছে হপ্রায় ২০ কোটি টাকা। এ ছাড়া ব্যাপক ফসল নষ্ট হয়েছে।

সূত্র জানায়, পাইকগাছা উপজেলায় কয়েকটি স্থানের বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মৎস্য অফিস সুত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় ৬৬০ হেক্টর চিংড়ি ঘের প্লাবিত ও অনেক পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। সব মিলিয়ে পাইকগাছায় প্রায় তিন কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে।

দাকোপ উপজেলার তিলডাঙ্গা ইউনিয়নের পৃথক ৪ টি স্থানের বাঁধ ভেঙ্গে অন্ততঃ ১৬টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ভেসে গেছে অসংখ্য চিংড়ি ঘের ও শতাধিক পুকুরের মাছ। একই উপজেলার সুতারখালী, তিলডাঙ্গা, বানীশান্তা, পানখালীসহ অন্যান্য ইউনিয়ন ও চালনা পৌরসভা এলাকায় বাঁধের বাইরে বসবাসকারী ৩ হাজার পরিবার ও ৫শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান জ¦লোচ্ছাসে প্লাবিত হয়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়। গ্রামে পানি প্রবেশ করায প্রায় দেড় হাজার ঘরবাড়ী ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাঁধ সংস্কারে জন্য কাজ করা হচ্ছে।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

খুলনায় ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তরা টেকসই বেড়িবাঁধ চায়

আপডেট টাইম : ১০:৩৪:১৭ পূর্বাহ্ণ, শুক্রবার, ২৮ মে ২০২১

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা অফিস ॥ খুলনায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও পূর্ণিমার প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে উপকূলীয় উপজেলা দাকোপ, কয়রা ও পাইকগাছায় প্রায় ৪০টি গ্রাম প্লাবিত হয়। ভেসে যায় অসংখ্য চিংড়ি ঘের। শত শত ঘর-বাড়ি পানিতে তলিয়ে যায়। গৃহহীন ও অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে প্রায় এক লাখ মানূষ। প্রশাসন থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের খাদ্যসামগ্রী প্রদান করা হচ্ছে। স্থানীয় জনগণের সহায়তায় বাঁধ মেরামতের কাজও চলছে। দুর্যোগকালীন সময়ে ত্রাণসামগ্রী পেয়ে ক্ষতিগ্রস্তরা খুশি হলেও উপকূলীয় বাসিন্দাদের একটাই দাবি ‘ত্রাণ নয়, টেকসই বেড়িবাঁধ চাই।’

গত বুধবার দুপুরের জোয়ারে নদ-নদীর পানির প্রবল চাপে খুলনার উপকূলীয় উপজেলা দাকোপ, কয়রা ও পাইকগাছায় জরাজীর্ণ বেড়িবাধের আন্তত নয়টি স্থান ভেঙ্গে ও বাঁধের উপর দিয়ে উপচে পড়া লবণ পানিতে গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত হয়। এর পর তাৎক্ষণিকভাবে খুলনার জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যজিস্ট্রেট এই তিন উপজেলার ক্ষতিগ্রস্ত ১১টি ইউনিয়নের ১৪ টি গ্রাম পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি পাঁচশত পরিবারের মাঝে শিশু খাদ্য, গো-খাদ্য এবং সাধারণ মানুষের খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন। বৃহস্পতিবারও ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, দুর্গত এলাকার প্রতিটি ইউনিয়নে ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা এবং ৫ টন জিআরের চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়া ২ হাজার ১০০ প্যাকেট চাল, ডাল, বিস্কুটসহ খাদ্য সামগ্রী দেয়া হয়।

স্থানীযরা জানায়, ঘূর্ণিঝড় সিডড়, আইলা, বুলবুল, আমফানে বিধ্বস্ত উপকূলীয় এ জনপদ। আইলার ক্ষত এখনও শুকায়নি, আমফানের ক্ষয়ক্ষতিও কাটিয়ে ওঠা যায়নি। এ অবস্থায় আবার ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে বুধবার ও বৃহস্পতিবার বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে চরম বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে উপকূলবাসী। বহু মানুষের জীবিকার উৎস চিংড়ি ঘের ও পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। পানিতে ঢুবে গেছে ফসলের ক্ষেত ও বসত ঘর। ঘরে পানি ওঠায় মাধা গোজার ঠাঁইও নেই। অনেকে আশ্রয় কেন্দ্রে গেলেও অনেকে বাঁধ বা রাস্তার উঁচু স্থানে ঝুপড়ি বানিয়ে থাকছেন। এলাকা অনেক মানুষ গবাদি-পশু ও হাঁস-মুরগী পালন করেন। নিজেদের কষ্টের সঙ্গে গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগী রক্ষণাবেক্ষনে তারা কঠিন সমস্যায় পড়েছেন। জোয়ার-ভাটার সঙ্গে লড়তে হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের।

ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াও প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে পূর্ণিমা ও অমাবস্যার তিথিতে স্থানীয় নদ-নদীতে পানির প্রবল চাপ বেড়ে যায়। এতে দুর্বল ক্ষীনকায় বেড়িবাঁধের বিভিন্ন স্থান ভেঙ্গে গিয়ে এলাকা প্লাবিত হয়। মৎস্য ঘের, ফসলের খেত, এলাকার ঘরবাড়ি সকল কিছু পানিতে নিমজ্জিত হয়। এর পর ক্ষতিগ্রস্তদের কিছু ত্রাণসামগ্রী দেয়া হয় এবং জোড়াতালি দিয়ে কোন রকমভাবে ভেঙ্গে যাওয়া বাঁধ মেরামত করা হয়। কিন্তু উপকূলবাসীর দুর্ভোগ আর পিছু ছাড়ছেনা। টেক সই বেড়িবাঁধ নির্মাণ ছাড়া প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে তাদের রেহাই নেই।

এদিকে কয়রা উপজেলায় শাকবাড়িয়া নদীর উত্তর মঠবাড়ী মোসলেম সরদারের বাড়ির পাশের প্রায় ৬০ ফুট ভেঙ্গে যাওয়া বেড়িবাঁধ স্বেচ্ছাশ্রমে অস্থায়ীভাবে মেরামত করেছেন স্থনীয় হাজারো মানুষ। শুক্রবার ভোরে নদীতে ভাটির সময় বাঁশ, মাটি, সিমেন্টের বস্তা দিয়ে তারা মহারাজপুর, মঠবাড়ী, কয়রা, শ্রীরামপুর, অর্জুনপুর, পল্লীমঙ্গলসহ কয়রা উপজেলার ১০ থেকে ১৫ গ্রামের মানুষ এ কাজে অংশ নিয়েছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।

খুলনা- ৬ আসনের সংসদ সদস্য (কয়রা-পাইকগাছা) মোঃ আক্তারুজ্জামান বাবু বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। বাঁধ মেরামতের ব্যাপারে সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে। পানি বন্দি মানুষের মাঝে ত্রান সামগ্রী বিতরণ করা হবে তিনি জানান।

এদিকে এই তিন উপজেলা ছাড়া তেরখাদা উপজেলার চিত্রা নদীর মসুনদিয়া নামক স্থানে বাঁধ ভেঙ্গে জোয়ারের পানিতে ভূতিয়ার বিলসহ কয়েকটি বিলে লবন পানি প্রবেশ করায় বোনা আমন ও বোনা আউশ ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তেরখাদা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবার উপজেলায় বোনা আমনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল সাড়ে ৫ হাজার হেক্টর এবং বোনা আউশের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২হাজার ৫শত হেক্টর জমিতে। ইতোমধ্যে দেড় হাজার হেক্টর আমন এবং ১হাজার ২শত হেক্টর জমিতে আউশ ধান বোনা হয়েছে। এসব জমিতে লবন পানি প্রবেশ করায় বোনা আমন এবং বোনা আউশ ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

সুন্দরবন সংলগ্ন কয়রা উপজেলার ৭ টি ইউনিয়নের সব এলাকায় কমবেশি ক্ষতি হয়েছে। সব মিলিয়ে কয়রায় ক্ষপ্রায় ৭ হাজার বাড়ি-ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৫০ টি ঘর সম্পূর্ন, এক হাজার দুইশত আংশিক ও ৫হাজার ৮শত ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে। উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, কয়রায় দুই হাজার এক শত মৎস্য ঘের ভেসে গেছে। মৎস্যখাতে ক্ষতি হয়েছে হপ্রায় ২০ কোটি টাকা। এ ছাড়া ব্যাপক ফসল নষ্ট হয়েছে।

সূত্র জানায়, পাইকগাছা উপজেলায় কয়েকটি স্থানের বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মৎস্য অফিস সুত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় ৬৬০ হেক্টর চিংড়ি ঘের প্লাবিত ও অনেক পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। সব মিলিয়ে পাইকগাছায় প্রায় তিন কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে।

দাকোপ উপজেলার তিলডাঙ্গা ইউনিয়নের পৃথক ৪ টি স্থানের বাঁধ ভেঙ্গে অন্ততঃ ১৬টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ভেসে গেছে অসংখ্য চিংড়ি ঘের ও শতাধিক পুকুরের মাছ। একই উপজেলার সুতারখালী, তিলডাঙ্গা, বানীশান্তা, পানখালীসহ অন্যান্য ইউনিয়ন ও চালনা পৌরসভা এলাকায় বাঁধের বাইরে বসবাসকারী ৩ হাজার পরিবার ও ৫শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান জ¦লোচ্ছাসে প্লাবিত হয়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়। গ্রামে পানি প্রবেশ করায প্রায় দেড় হাজার ঘরবাড়ী ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাঁধ সংস্কারে জন্য কাজ করা হচ্ছে।