ঢাকা ০৭:৪৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
এবার কি তবে সত্যিই মারা গেছেন ওবায়দুল কাদের? প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করবেন না পানিসম্পদ উপদেষ্টা নির্বাচন ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যেই হবে গাজীপুর জেলা ৫৬ নং ওয়ার্ড গাজী বাড়ি পুকুর পাড় এলাকায় প্রতিবন্ধী এক যুবতী লাশ উদ্ধার আস্থা বাড়ানোর চেষ্টা করছে মন্ত্রণালয় আস্থা কমছে সরকারি হজযাত্রীদের মোংলায় জমি নিয়ে বিরোধ: জবরদখলের অভিযোগে থানায় অভিযোগ দায়ের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করলেন নাহিদ ইসলাম প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ভাঙ্গুড়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালতে যুবকের ৬ মাসের কারাদণ্ড ও জরিমানা   মেয়র পদে লড়বেন হাসনাত-সাদিক কায়েম? উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ৫ সিদ্ধান্ত

আস্থা বাড়ানোর চেষ্টা করছে মন্ত্রণালয় আস্থা কমছে সরকারি হজযাত্রীদের

নিজস্ব সংবাদদাতা:
  • আপডেট টাইম : ০৫:৩৩:৪৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫
  • / ২ ১৫০.০০০ বার পাঠক

দেশের সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীদের আস্থা উঠে যাচ্ছে। প্রতিবছর হজযাত্রীর ১০ শতাংশের কম কোটা নির্ধারণ করেও তা পূরণ করতে পারছে না ধর্ম মন্ত্রণালয়। দফায় দফায় নিবন্ধনের সময় বৃদ্ধি করেও হজযাত্রী পায় না তারা। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে সরকারি হজ ব্যবস্থাপনা বিতর্কিত হচ্ছে। বিগত বছরগুলোতে সরকারিভাবে হজ পালন করতে গিয়ে হাজিরা নানাভাবে ভোগান্তির শিকার হয়েছেন। তাদের হোটেল, পরিবহণ ও গাইডসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়েছে নিুমানের। এদিকে অনেক বেসরকারি হজ এজেন্সি তুলনামূলকভাবে আরও ভালো সেবা দিয়ে থাকে, যে কারণে অনেকে তাদের দিকে ঝুঁকে পড়েন। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে হজ ব্যবস্থায় নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে। কিন্তু ৫ আগস্টের পরও সেই চিত্র বদলায়নি। এবারও সরকারি ব্যস্থাপনায় নির্ধারিত কোটা প্রায় অর্ধেক খালি রয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীদের আস্থা বাড়ার কথা থাকলেও উলটো কমছে। এই ব্যবস্থাপনায় অনেক সময় দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনীহা, অসংবেদনশীলতা বা সমন্বয়হীনতার অভিযোগ ওঠে। হজের জন্য নিবন্ধন, ভিসা ও অন্যান্য প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রতা এবং জটিলতা ভোগান্তির কারণও রয়েছে। এছাড়া আগের বছরগুলোর নেতিবাচক অভিজ্ঞতা কিংবা প্রচার-প্রচারণার অভাবে সরকারি ব্যবস্থার ওপর মানুষের আস্থাহীনতা তৈরি হয়। ফলে সরকারি ও বেসরকারি উভয় ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রা করা গেলেও সাম্প্র্রতিক বছরগুলোতে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, অনেক হজযাত্রী সরকারি ব্যবস্থার পরিবর্তে বেসরকারি ব্যবস্থাকে বেছে নিচ্ছেন। ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব একেএম আফতাব হোসেন প্রামাণিক যুগান্তরকে বলেন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যেতে মানুষকে নিরুৎসাহিত করেন। তারা বেসরকারিভাবে যাওয়াকে বেশি উৎসাহ দিয়ে থাকেন। আমরা তাদের ব্যাপারে কঠোর হচ্ছি। এছাড়া সরকারিভাবে হজে যেতে আস্থা বাড়ানোর চেষ্টা করছি। ইতোমধ্যে আমরা বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়ার কথা ভাবছি।

এই বিষয়ে হজ অধিশাখার যুগ্মসচিব ড. মো. মঞ্জুরুল হক যুগান্তরকে বলেন, সরকারি হজ ব্যবস্থাপনায় আমাদের কোনো লাভ হয় না। উলটো ভর্তুকি যায়। কি কারণে হজযাত্রীদের আগ্রহ কম সেটি নিয়ে আমরা কাজ করছি। এই নিয়ে নানা উদ্যোগের কথাও ভাবছে মন্ত্রণালয়।

জানা যায়, ২০১৭ সাল থেকে সৌদি আরবের সঙ্গে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজে যাওয়ার চুক্তি হয়। এ সময় সরকারিভাবে ১০ হাজার কোটা আর বাদবাকি বেসরকারিভাবে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তখন সরকারি ও বেসরকারিভাবে কোটা পূরণ হয়ে যায়। এরপর থেকে আর সরকারি ব্যবস্থাপনায় নির্ধারিত কোটা পূরণ করতে পারেনি ধর্ম মন্ত্রণালয়। ২০১৮ সালে সরকারি ব্যবস্থাপনায় কোটা পূরণ হয় মাত্র ৬ হাজার ৭৮৪ জনের, ২০১৯ সালে ৬ হাজার ৯২৩ জনের, ২০২২ সালে ৪ হাজার ১১৫ জনের, যদিও ২০২৩ সালে ১০ হাজার ৩৬০ জনের কোটা পূরণ করে ধর্ম মন্ত্রণালয়। পরে ২০২৪ সালে এই কোটা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়। এ সময় কোটা পূরণ হয়েছে মাত্র ৪ হাজার ৫৬২ জনের। অর্ধেকের বেশি কোটা খালি থাকে। কিন্তু চলতি বছর ১০ হাজার কোটার মধ্যে পূরণ হয়েছে শুধু ৫ হাজার ২০০ জনের। আরও ৮ হাজার ৮০০ জনের কোটা খালি রয়েছে।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

আস্থা বাড়ানোর চেষ্টা করছে মন্ত্রণালয় আস্থা কমছে সরকারি হজযাত্রীদের

আপডেট টাইম : ০৫:৩৩:৪৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫

দেশের সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীদের আস্থা উঠে যাচ্ছে। প্রতিবছর হজযাত্রীর ১০ শতাংশের কম কোটা নির্ধারণ করেও তা পূরণ করতে পারছে না ধর্ম মন্ত্রণালয়। দফায় দফায় নিবন্ধনের সময় বৃদ্ধি করেও হজযাত্রী পায় না তারা। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে সরকারি হজ ব্যবস্থাপনা বিতর্কিত হচ্ছে। বিগত বছরগুলোতে সরকারিভাবে হজ পালন করতে গিয়ে হাজিরা নানাভাবে ভোগান্তির শিকার হয়েছেন। তাদের হোটেল, পরিবহণ ও গাইডসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়েছে নিুমানের। এদিকে অনেক বেসরকারি হজ এজেন্সি তুলনামূলকভাবে আরও ভালো সেবা দিয়ে থাকে, যে কারণে অনেকে তাদের দিকে ঝুঁকে পড়েন। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে হজ ব্যবস্থায় নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে। কিন্তু ৫ আগস্টের পরও সেই চিত্র বদলায়নি। এবারও সরকারি ব্যস্থাপনায় নির্ধারিত কোটা প্রায় অর্ধেক খালি রয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীদের আস্থা বাড়ার কথা থাকলেও উলটো কমছে। এই ব্যবস্থাপনায় অনেক সময় দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনীহা, অসংবেদনশীলতা বা সমন্বয়হীনতার অভিযোগ ওঠে। হজের জন্য নিবন্ধন, ভিসা ও অন্যান্য প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রতা এবং জটিলতা ভোগান্তির কারণও রয়েছে। এছাড়া আগের বছরগুলোর নেতিবাচক অভিজ্ঞতা কিংবা প্রচার-প্রচারণার অভাবে সরকারি ব্যবস্থার ওপর মানুষের আস্থাহীনতা তৈরি হয়। ফলে সরকারি ও বেসরকারি উভয় ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রা করা গেলেও সাম্প্র্রতিক বছরগুলোতে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, অনেক হজযাত্রী সরকারি ব্যবস্থার পরিবর্তে বেসরকারি ব্যবস্থাকে বেছে নিচ্ছেন। ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব একেএম আফতাব হোসেন প্রামাণিক যুগান্তরকে বলেন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যেতে মানুষকে নিরুৎসাহিত করেন। তারা বেসরকারিভাবে যাওয়াকে বেশি উৎসাহ দিয়ে থাকেন। আমরা তাদের ব্যাপারে কঠোর হচ্ছি। এছাড়া সরকারিভাবে হজে যেতে আস্থা বাড়ানোর চেষ্টা করছি। ইতোমধ্যে আমরা বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়ার কথা ভাবছি।

এই বিষয়ে হজ অধিশাখার যুগ্মসচিব ড. মো. মঞ্জুরুল হক যুগান্তরকে বলেন, সরকারি হজ ব্যবস্থাপনায় আমাদের কোনো লাভ হয় না। উলটো ভর্তুকি যায়। কি কারণে হজযাত্রীদের আগ্রহ কম সেটি নিয়ে আমরা কাজ করছি। এই নিয়ে নানা উদ্যোগের কথাও ভাবছে মন্ত্রণালয়।

জানা যায়, ২০১৭ সাল থেকে সৌদি আরবের সঙ্গে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজে যাওয়ার চুক্তি হয়। এ সময় সরকারিভাবে ১০ হাজার কোটা আর বাদবাকি বেসরকারিভাবে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তখন সরকারি ও বেসরকারিভাবে কোটা পূরণ হয়ে যায়। এরপর থেকে আর সরকারি ব্যবস্থাপনায় নির্ধারিত কোটা পূরণ করতে পারেনি ধর্ম মন্ত্রণালয়। ২০১৮ সালে সরকারি ব্যবস্থাপনায় কোটা পূরণ হয় মাত্র ৬ হাজার ৭৮৪ জনের, ২০১৯ সালে ৬ হাজার ৯২৩ জনের, ২০২২ সালে ৪ হাজার ১১৫ জনের, যদিও ২০২৩ সালে ১০ হাজার ৩৬০ জনের কোটা পূরণ করে ধর্ম মন্ত্রণালয়। পরে ২০২৪ সালে এই কোটা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়। এ সময় কোটা পূরণ হয়েছে মাত্র ৪ হাজার ৫৬২ জনের। অর্ধেকের বেশি কোটা খালি থাকে। কিন্তু চলতি বছর ১০ হাজার কোটার মধ্যে পূরণ হয়েছে শুধু ৫ হাজার ২০০ জনের। আরও ৮ হাজার ৮০০ জনের কোটা খালি রয়েছে।