ঢাকা ০৮:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ মে ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
সাংবাদিক সুরক্ষা ও কল্যাণ ফাউন্ডেশন এর ১৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা ময়মনসিংহ জেলায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ফ্যাসিস্ট আওয়ামী দোসর পিডি কামাল খান এখনো বহাল★ ভূয়া বিল ভাউচারে সরকারের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ। ★ কানাডাতে সেকেন্ড হোম হিসেবে দশ কোটি টাকা মূল্যের ফ্ল্যাট ক্রয় করে ছেলের মাধ্যমে ব্যবসা করছেন ভাঙ্গুড়ায় ইউনিয়ন বিএনপির কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা এসপি বলেন , লিখিত পরীক্ষায় বাছাই হওয়া ২৮৫ জনকে আমার ফোন নম্বর দিয়ে দিয়েছি তদন্ত প্রতিবেদনে হাসিনার বিরুদ্ধে ৫ অভিযোগ চিকিৎসকদের পরিবর্তনের মানসিকতা নিয়ে চিকিৎসা সেবার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার যুদ্ধবিরতির পর ভারত-পাকিস্তান যা দাবি করছে হাসিনা কামাল মামুনের বিরুদ্ধে জুলাই গণহত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা নাসিরনগরে বজ্রপাতে শিশুসহ ৩ জনের মৃত্যু শহীদ নিজামীর খুনিদের বিচার বাংলার মাটিতেই হবে ইনশাআল্লাহ -মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান

তরমুজ যেভাবে ফিলিস্তিনের সংগ্রামের প্রতীক হয়ে উঠল

নিজস্ব সংবাদদাতা:
  • আপডেট টাইম : ০৬:৩৪:০৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫
  • / ৩৭ ১৫০০০.০ বার পাঠক

আনন্দ শোভাযাত্রায় তরমুজের প্রতিকৃতি দেখে হয়তো অনেকেই মনে করেছেন- জাতীয় মাছ ইলিশ আর গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য পালকির মতো ভীষণ গরমের কারণে ‘তরমুজে’র প্রতিকৃতিও ঠাঁই পেয়েছে আনন্দ শোভাযাত্রায়। তবে প্রকৃত ঘটনা হলো, ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে এই প্রতিকৃতি তৈরি করা হয়েছে। ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতীক তরমুজ।

তরমুজ প্রকৃতপক্ষে কয়েক দশক ধরে ফিলিস্তিনিদের জন্য একটি প্রতীক হিসেবে উপস্থাপন করা হলেও প্রায়ই ফিলিস্তিনের পতাকা বোঝাতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

ফলটির বাইরের অংশের রঙ সবুজ। আর ভেতরের অংশগুলোর রঙ লাল, সাদা ও কালো। এ রঙগুলো ফিলিস্তিনের পতাকার রঙের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। তা ছাড়া ফিলিস্তিনে স্থানীয়ভাবে জন্মানো এ ফলটি বেশ জনপ্রিয়।

দ্বিতীয়ত বাস্তবিক আরেকটি কারণ হলো ফিলিস্তিনের পতাকা প্রদর্শন করা প্রায়শই নিষিদ্ধ কিংবা কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে।

এসওএএস ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের আরব গণমাধ্যম ও রাজনৈতিক যোগাযোগ বিষয়ের অধ্যাপক দিনা মাতার বলেন, এক অর্থে ফিলিস্তিনিরা তরমুজকে ফিলিস্তিনি বলে দাবি করে থাকেন।

তিনি আরও বলেন, তরমুজকে ‘প্রতিরোধ ও অধ্যবসায়ের প্রতীক হিসেবে দেখা হয়।

ইসরাইলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের সময় পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের এ ফল বহনের অর্থ হলো তারা যে ফিলিস্তিনি সেটি বোঝানো।

পশ্চিম তীরের রামাল্লায় ফিলিস্তিনি শিল্পী খালেদ হুরানি ২০২১ সালে ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেছিলেন, শিল্প ‘কখনও কখনও রাজনীতির চেয়েও বেশি রাজনৈতিক হতে পারে।’ তরমুজের এই বিষয়টি হুরানির বেশ কয়েকটি কাজের অনুপ্রেরণা।

লাল, সবুজ, সাদা ও কালো রঙে চিত্রিত ফিলিস্তিনের পতাকার প্রদর্শন নিয়ে কয়েক দশক ধরে বিতর্ক চলে আসছে। তরমুজের চারটি রঙের সঙ্গে ফিলিস্তিনের পতাকার রঙগুলোর মিল থাকার কারণে বিকল্প হিসেবে তাই তরমুজের ব্যবহার আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে।

ইসরাইল অতীতে কিছু ক্ষেত্রে ফিলিস্তিনি পতাকা ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে। কিছু ইসরাইলি রাজনীতিক আনুষ্ঠানিকভাবে আবার তা করার চেষ্টা করছেন। বর্তমানে পতাকাটি কার্যত নিষিদ্ধ। কারণ এ পতাকার উত্তোলন ইসরাইলি জননিরাপত্তা অধ্যাদেশের আওতায় শাস্তিযোগ্য হতে পারে।

২০২১ সালে ফিলিস্তিনের সমর্থনে করা কয়েক লাখ পোস্ট সরিয়ে নিয়েছিল ফেসবুক ও টুইটার (বর্তমানে এক্স নামে পরিচিত)।

ইসরাইলের নাজারেথের হাম্মাস রেস্তোরাঁর মালিক ইয়ারমোক জোয়াবিকে ফিলিস্তিনের পতাকাযুক্ত একটি হোয়াটস্ অ্যাপ স্ট্যাটাসের কারণে এক রাত জেলে কাটাতে হয়েছে।

ইউরোপেও ফিলিস্তিনি পতাকা নিয়ে তুমুল বিতর্ক রয়েছে। জার্মানির বার্লিনের স্কুলগুলোকে ফিলিস্তিনি পতাকার রঙগুলো ব্যবহার করে ইসরাইলের মানচিত্র নিষিদ্ধ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে গত মাসে যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছিলেন যে ফিলিস্তিনি পতাকা প্রদর্শন ফৌজদারি অপরাধ বলে গণ্য হতে পারে। যদিও লন্ডনের মেট্রোপলিটন পুলিশ স্পষ্ট করেছে যে একাকী ফিলিস্তিনি পতাকা ওড়ানো ফৌজদারি অপরাধ নয়।

অধ্যাপক মাতারের যুক্তি হলো পতাকাটি শেষ পর্যন্ত ফিলিস্তিনিদের পরিচয়ের একটি প্রতীক। এর অর্থ এই জাতির সদস্যরা মনে করে তারা নির্দিষ্ট একটি জাতির অন্তর্গত। কারণ ফিলিস্তিনিদের রাষ্ট্র নেই, কিন্তু তাদের একটি জাতি আছে। এ কারণে ফিলিস্তিনি পতাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

তরমুজ যেভাবে ফিলিস্তিনের সংগ্রামের প্রতীক হয়ে উঠল

আপডেট টাইম : ০৬:৩৪:০৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫

আনন্দ শোভাযাত্রায় তরমুজের প্রতিকৃতি দেখে হয়তো অনেকেই মনে করেছেন- জাতীয় মাছ ইলিশ আর গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য পালকির মতো ভীষণ গরমের কারণে ‘তরমুজে’র প্রতিকৃতিও ঠাঁই পেয়েছে আনন্দ শোভাযাত্রায়। তবে প্রকৃত ঘটনা হলো, ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে এই প্রতিকৃতি তৈরি করা হয়েছে। ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতীক তরমুজ।

তরমুজ প্রকৃতপক্ষে কয়েক দশক ধরে ফিলিস্তিনিদের জন্য একটি প্রতীক হিসেবে উপস্থাপন করা হলেও প্রায়ই ফিলিস্তিনের পতাকা বোঝাতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

ফলটির বাইরের অংশের রঙ সবুজ। আর ভেতরের অংশগুলোর রঙ লাল, সাদা ও কালো। এ রঙগুলো ফিলিস্তিনের পতাকার রঙের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। তা ছাড়া ফিলিস্তিনে স্থানীয়ভাবে জন্মানো এ ফলটি বেশ জনপ্রিয়।

দ্বিতীয়ত বাস্তবিক আরেকটি কারণ হলো ফিলিস্তিনের পতাকা প্রদর্শন করা প্রায়শই নিষিদ্ধ কিংবা কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে।

এসওএএস ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের আরব গণমাধ্যম ও রাজনৈতিক যোগাযোগ বিষয়ের অধ্যাপক দিনা মাতার বলেন, এক অর্থে ফিলিস্তিনিরা তরমুজকে ফিলিস্তিনি বলে দাবি করে থাকেন।

তিনি আরও বলেন, তরমুজকে ‘প্রতিরোধ ও অধ্যবসায়ের প্রতীক হিসেবে দেখা হয়।

ইসরাইলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের সময় পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের এ ফল বহনের অর্থ হলো তারা যে ফিলিস্তিনি সেটি বোঝানো।

পশ্চিম তীরের রামাল্লায় ফিলিস্তিনি শিল্পী খালেদ হুরানি ২০২১ সালে ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেছিলেন, শিল্প ‘কখনও কখনও রাজনীতির চেয়েও বেশি রাজনৈতিক হতে পারে।’ তরমুজের এই বিষয়টি হুরানির বেশ কয়েকটি কাজের অনুপ্রেরণা।

লাল, সবুজ, সাদা ও কালো রঙে চিত্রিত ফিলিস্তিনের পতাকার প্রদর্শন নিয়ে কয়েক দশক ধরে বিতর্ক চলে আসছে। তরমুজের চারটি রঙের সঙ্গে ফিলিস্তিনের পতাকার রঙগুলোর মিল থাকার কারণে বিকল্প হিসেবে তাই তরমুজের ব্যবহার আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে।

ইসরাইল অতীতে কিছু ক্ষেত্রে ফিলিস্তিনি পতাকা ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে। কিছু ইসরাইলি রাজনীতিক আনুষ্ঠানিকভাবে আবার তা করার চেষ্টা করছেন। বর্তমানে পতাকাটি কার্যত নিষিদ্ধ। কারণ এ পতাকার উত্তোলন ইসরাইলি জননিরাপত্তা অধ্যাদেশের আওতায় শাস্তিযোগ্য হতে পারে।

২০২১ সালে ফিলিস্তিনের সমর্থনে করা কয়েক লাখ পোস্ট সরিয়ে নিয়েছিল ফেসবুক ও টুইটার (বর্তমানে এক্স নামে পরিচিত)।

ইসরাইলের নাজারেথের হাম্মাস রেস্তোরাঁর মালিক ইয়ারমোক জোয়াবিকে ফিলিস্তিনের পতাকাযুক্ত একটি হোয়াটস্ অ্যাপ স্ট্যাটাসের কারণে এক রাত জেলে কাটাতে হয়েছে।

ইউরোপেও ফিলিস্তিনি পতাকা নিয়ে তুমুল বিতর্ক রয়েছে। জার্মানির বার্লিনের স্কুলগুলোকে ফিলিস্তিনি পতাকার রঙগুলো ব্যবহার করে ইসরাইলের মানচিত্র নিষিদ্ধ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে গত মাসে যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছিলেন যে ফিলিস্তিনি পতাকা প্রদর্শন ফৌজদারি অপরাধ বলে গণ্য হতে পারে। যদিও লন্ডনের মেট্রোপলিটন পুলিশ স্পষ্ট করেছে যে একাকী ফিলিস্তিনি পতাকা ওড়ানো ফৌজদারি অপরাধ নয়।

অধ্যাপক মাতারের যুক্তি হলো পতাকাটি শেষ পর্যন্ত ফিলিস্তিনিদের পরিচয়ের একটি প্রতীক। এর অর্থ এই জাতির সদস্যরা মনে করে তারা নির্দিষ্ট একটি জাতির অন্তর্গত। কারণ ফিলিস্তিনিদের রাষ্ট্র নেই, কিন্তু তাদের একটি জাতি আছে। এ কারণে ফিলিস্তিনি পতাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।