ঢাকা ০৫:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
রায়পুরে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চলছে জাটকা নিধন ও ক্রয় বিক্রয় বাংলাদেশের কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র গাজায় দুর্ভিক্ষ মোকাবিলায় ইসরায়েলকে নির্দেশ আন্তর্জাতিক আদালতের রায়পুরে চিকিৎসকের বিচার দাবীতে মানববন্ধন বিরামপুরে এক পা ওয়ালা শিশু সহ জমজ শিশু জন্ম দিলো এক প্রসুতি মা সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে দুই চোরাকারবারি গ্রেফতার,ট্রাকসহ ২১ লক্ষ টাকার ভারতীয় চিনি জব্দ ভন্ড ও দুর্নীতিবাজদের আড্ডাখানা রাজধানী উন্নয়ন কতৃপক্ষ আজমিরীগঞ্জে আউট অব স্কুল চিল্ড্রেন এডুকেশন এর উদ্যেগে মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন ইবি ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রস্তুত, দ্রুত হতে পারে ঘোষণা হল-অনুষদ সম্মেলন ঈদের পর মোংলায় ছাত্রদলের উদ্যোগে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

এই সংকটময় মুহুর্তেও হত দরিদ্রলোকজন কিস্তির টাকা দিতে হচ্ছে বাধ্যতামূলক!

বিশেষ প্রতিনিধি কুমিল্লা।।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে সারাদেশের ন্যায় কুমিল্লাতে দোকান-পাট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। লোকজন চলাচলও সীমিত করে দেয়া হয়েছে। ফলে নিম্ন আয়ের মানুষদের কর্মসংস্থান কমে গেছে।

এতে দিনমজুর-ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের আয় নেই বললেই চলে। এমন পরিস্থিতিতেও জেলাজুড়ে চলছে এনজিওসমূহের ঋণ আদায় কার্যক্রম। এতে এনজিওর ঋণ গ্রহণকারী দরিদ্র মানুষরা পড়েছেন বিপাকে। তাদের দাবি পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত ঋণ আদায় স্থগিত করার।

এ সঙ্কটময় মুহূর্তে জেলার নিম্ন আয়ের মানুষ করোনাভাইরাস থেকেও বেশি চিন্তিত হয়ে পড়েছেন এনজিওর কিস্তির টাকা নিয়ে। কিস্তির টাকা পরিশোধের জন্য সকাল-সন্ধ্যা এসব খেটে খাওয়া মানুষদের বাড়িতে এনজিও কর্মীরা হানা দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। জেলায় গ্রামীণ, আশা, ব্র্যাক, বিজ, শক্তি, আইডিএফ, কারিতাস, পদক্ষেপ, প্রশিকা, সাজেদা ফাউন্ডেশন, টিএমএসএস, এসএসএস, পেইজ, সিসিডিএ, সোস্যাল, গ্রাউস, ইসলামী ব্যাংক ক্ষুদ্র ঋন বিতরণ করে। অভিযোগ রয়েছে প্রত্যেক এনজিওই কিস্তির টাকার জন্য সাধারণ মানুষের উপর চাপাচাপি করছে।

নাঙ্গলকোট পৌর বাজার এলাকা ঘুরে দেখা যায়, করোনাভাইরাস আতঙ্কে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেনা অধিকাংশ মানুষ, রাস্তা-ঘাট প্রায় ফাঁকা। এতে বিপাকে পড়েছে শ্রমিক, দিনমজুর ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীসহ নিম্ন আয়ের মানুষেরা। পঞ্চাশোর্ধ বয়সী তিতু মিয়া নামের একজন রিকশাচালক জানান, তার পরিবারে ৮জন সদস্য রয়েছে। প্রতি সপ্তাহে তাকে এনজিও’র কিস্তি দিতে হয় ১৪শ টাকা। বর্তমানে রাস্তা-ঘাটে মানুষ কমে গেছে এখন আর তেমন আয় হচ্ছেনা। কিভাবে সংসার চলবে আর এনজিও কিস্তি কিভাবে পরিশোধ করবে, এই নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন তিনি।

একই কথা বলেন আরেক রিকশাচালক মো. শিপন। তার বক্তব্য, তিনি এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে রিকশা কিনেছেন। বর্তমানে তার আয় না থাকায় এনজিওর কিস্তি পরিশোধ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

উপজেলার হরিপুর গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম জানান, করোনা আতঙ্কে এখন কেউ তাকে বাড়িতে কাজে দিচ্ছেনা। ফলে তার মজুরী বন্ধ হয়ে গেছে। এতে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। এর মাঝে তাকে প্রতি সপ্তাহে ১১শ টাকা কিস্তি দিতে হয়। তিনি কিভাবে এই কিস্তি পরিশোধ করবেন তা নিয়ে চিন্তায় আছেন তিনি।

একই অবস্থা ক্ষুদ্র চা-ষ্টল, পান-সিগারেটের দোকান ও ফলের দোকানগুলোতেও। বাজারে জনসমাগম কমে যাওয়ায়, এই সকল ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও খাবারে দোকান হোটেলের বেচা-কেনা কমে গেছে। এতে শ্রমিক ও দিন মজুরদের ন্যায় তারাও বিপাকে পড়েছেন।

নাঙ্গলকোট পশ্চিম বাজারের চা বিক্রেতা ইব্রাহিম মিয়া বলেন, সারাদিন যেখানে দুই থেকে তিন হাজার টাকা বেচা-কেনা হত, সেখানে পাঁচশ টাকাও বেচা-কেনা হচ্ছেনা।

করোনা প্রাদুর্ভাব না কাটা পর্যন্ত এনজিওর কিস্তি বন্ধ রাখার জন্য সরকারের উর্দ্ধতন মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ।

এ বিষয়ে গ্রামীণ, ব্র্যাক ও বুরো বাংলাদেশ নাঙ্গলকোট শাখার ম্যানেজারদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন- কিস্তি আদায় বন্ধে আমাদের কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি, তাই আমরা যথারীতি মাঠে কাজ করছি।

আরো খবর.......

জনপ্রিয় সংবাদ

রায়পুরে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চলছে জাটকা নিধন ও ক্রয় বিক্রয়

এই সংকটময় মুহুর্তেও হত দরিদ্রলোকজন কিস্তির টাকা দিতে হচ্ছে বাধ্যতামূলক!

আপডেট টাইম : ১০:২৫:১৫ পূর্বাহ্ণ, সোমবার, ৫ এপ্রিল ২০২১

বিশেষ প্রতিনিধি কুমিল্লা।।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে সারাদেশের ন্যায় কুমিল্লাতে দোকান-পাট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। লোকজন চলাচলও সীমিত করে দেয়া হয়েছে। ফলে নিম্ন আয়ের মানুষদের কর্মসংস্থান কমে গেছে।

এতে দিনমজুর-ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের আয় নেই বললেই চলে। এমন পরিস্থিতিতেও জেলাজুড়ে চলছে এনজিওসমূহের ঋণ আদায় কার্যক্রম। এতে এনজিওর ঋণ গ্রহণকারী দরিদ্র মানুষরা পড়েছেন বিপাকে। তাদের দাবি পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত ঋণ আদায় স্থগিত করার।

এ সঙ্কটময় মুহূর্তে জেলার নিম্ন আয়ের মানুষ করোনাভাইরাস থেকেও বেশি চিন্তিত হয়ে পড়েছেন এনজিওর কিস্তির টাকা নিয়ে। কিস্তির টাকা পরিশোধের জন্য সকাল-সন্ধ্যা এসব খেটে খাওয়া মানুষদের বাড়িতে এনজিও কর্মীরা হানা দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। জেলায় গ্রামীণ, আশা, ব্র্যাক, বিজ, শক্তি, আইডিএফ, কারিতাস, পদক্ষেপ, প্রশিকা, সাজেদা ফাউন্ডেশন, টিএমএসএস, এসএসএস, পেইজ, সিসিডিএ, সোস্যাল, গ্রাউস, ইসলামী ব্যাংক ক্ষুদ্র ঋন বিতরণ করে। অভিযোগ রয়েছে প্রত্যেক এনজিওই কিস্তির টাকার জন্য সাধারণ মানুষের উপর চাপাচাপি করছে।

নাঙ্গলকোট পৌর বাজার এলাকা ঘুরে দেখা যায়, করোনাভাইরাস আতঙ্কে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেনা অধিকাংশ মানুষ, রাস্তা-ঘাট প্রায় ফাঁকা। এতে বিপাকে পড়েছে শ্রমিক, দিনমজুর ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীসহ নিম্ন আয়ের মানুষেরা। পঞ্চাশোর্ধ বয়সী তিতু মিয়া নামের একজন রিকশাচালক জানান, তার পরিবারে ৮জন সদস্য রয়েছে। প্রতি সপ্তাহে তাকে এনজিও’র কিস্তি দিতে হয় ১৪শ টাকা। বর্তমানে রাস্তা-ঘাটে মানুষ কমে গেছে এখন আর তেমন আয় হচ্ছেনা। কিভাবে সংসার চলবে আর এনজিও কিস্তি কিভাবে পরিশোধ করবে, এই নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন তিনি।

একই কথা বলেন আরেক রিকশাচালক মো. শিপন। তার বক্তব্য, তিনি এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে রিকশা কিনেছেন। বর্তমানে তার আয় না থাকায় এনজিওর কিস্তি পরিশোধ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

উপজেলার হরিপুর গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম জানান, করোনা আতঙ্কে এখন কেউ তাকে বাড়িতে কাজে দিচ্ছেনা। ফলে তার মজুরী বন্ধ হয়ে গেছে। এতে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। এর মাঝে তাকে প্রতি সপ্তাহে ১১শ টাকা কিস্তি দিতে হয়। তিনি কিভাবে এই কিস্তি পরিশোধ করবেন তা নিয়ে চিন্তায় আছেন তিনি।

একই অবস্থা ক্ষুদ্র চা-ষ্টল, পান-সিগারেটের দোকান ও ফলের দোকানগুলোতেও। বাজারে জনসমাগম কমে যাওয়ায়, এই সকল ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও খাবারে দোকান হোটেলের বেচা-কেনা কমে গেছে। এতে শ্রমিক ও দিন মজুরদের ন্যায় তারাও বিপাকে পড়েছেন।

নাঙ্গলকোট পশ্চিম বাজারের চা বিক্রেতা ইব্রাহিম মিয়া বলেন, সারাদিন যেখানে দুই থেকে তিন হাজার টাকা বেচা-কেনা হত, সেখানে পাঁচশ টাকাও বেচা-কেনা হচ্ছেনা।

করোনা প্রাদুর্ভাব না কাটা পর্যন্ত এনজিওর কিস্তি বন্ধ রাখার জন্য সরকারের উর্দ্ধতন মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ।

এ বিষয়ে গ্রামীণ, ব্র্যাক ও বুরো বাংলাদেশ নাঙ্গলকোট শাখার ম্যানেজারদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন- কিস্তি আদায় বন্ধে আমাদের কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি, তাই আমরা যথারীতি মাঠে কাজ করছি।