ঢাকা ০৯:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
আন্তর্জাতিকভাবে বঙ্গোপসাগর বড় বড় শক্তির নজরে পড়েছে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্বাচনে কারা আসবে বা যোগ্য, সে সিদ্ধান্ত ইসির: বদিউল আলম মজুমদার রংপুরে ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে ট্রেইনি চিকিৎসকদের কর্মবিরতি সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হকের তিন ব্যাংকে ২১ কোটি টাকার সন্ধান ভারতকে পেছনে ফেলে দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে দামি দল বাংলাদেশ হাসিনা-জয়ের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে ৩০০ মিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগ তদন্ত করবে দুদক ভালোবেসে চুমু খাচ্ছে, সেটিতে গাত্রদাহ কেন: স্বস্তিকা এনআইডির তথ্য বেহাত, বিসিসির সঙ্গে চুক্তি বাতিল করল নির্বাচন কমিশন শক্তিশালী ভূমিকম্পে ফের কাঁপল ভানুয়াতু আজমিরীগঞ্জ কাকাইলছেওয়ে বিএনপির সমাবেশ অনুষ্টিত

এই সংকটময় মুহুর্তেও হত দরিদ্রলোকজন কিস্তির টাকা দিতে হচ্ছে বাধ্যতামূলক!

সময়ের কন্ঠ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : ১০:২৫:১৫ পূর্বাহ্ণ, সোমবার, ৫ এপ্রিল ২০২১
  • / ২৯৫ ৫০০০.০ বার পাঠক

বিশেষ প্রতিনিধি কুমিল্লা।।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে সারাদেশের ন্যায় কুমিল্লাতে দোকান-পাট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। লোকজন চলাচলও সীমিত করে দেয়া হয়েছে। ফলে নিম্ন আয়ের মানুষদের কর্মসংস্থান কমে গেছে।

এতে দিনমজুর-ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের আয় নেই বললেই চলে। এমন পরিস্থিতিতেও জেলাজুড়ে চলছে এনজিওসমূহের ঋণ আদায় কার্যক্রম। এতে এনজিওর ঋণ গ্রহণকারী দরিদ্র মানুষরা পড়েছেন বিপাকে। তাদের দাবি পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত ঋণ আদায় স্থগিত করার।

এ সঙ্কটময় মুহূর্তে জেলার নিম্ন আয়ের মানুষ করোনাভাইরাস থেকেও বেশি চিন্তিত হয়ে পড়েছেন এনজিওর কিস্তির টাকা নিয়ে। কিস্তির টাকা পরিশোধের জন্য সকাল-সন্ধ্যা এসব খেটে খাওয়া মানুষদের বাড়িতে এনজিও কর্মীরা হানা দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। জেলায় গ্রামীণ, আশা, ব্র্যাক, বিজ, শক্তি, আইডিএফ, কারিতাস, পদক্ষেপ, প্রশিকা, সাজেদা ফাউন্ডেশন, টিএমএসএস, এসএসএস, পেইজ, সিসিডিএ, সোস্যাল, গ্রাউস, ইসলামী ব্যাংক ক্ষুদ্র ঋন বিতরণ করে। অভিযোগ রয়েছে প্রত্যেক এনজিওই কিস্তির টাকার জন্য সাধারণ মানুষের উপর চাপাচাপি করছে।

নাঙ্গলকোট পৌর বাজার এলাকা ঘুরে দেখা যায়, করোনাভাইরাস আতঙ্কে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেনা অধিকাংশ মানুষ, রাস্তা-ঘাট প্রায় ফাঁকা। এতে বিপাকে পড়েছে শ্রমিক, দিনমজুর ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীসহ নিম্ন আয়ের মানুষেরা। পঞ্চাশোর্ধ বয়সী তিতু মিয়া নামের একজন রিকশাচালক জানান, তার পরিবারে ৮জন সদস্য রয়েছে। প্রতি সপ্তাহে তাকে এনজিও’র কিস্তি দিতে হয় ১৪শ টাকা। বর্তমানে রাস্তা-ঘাটে মানুষ কমে গেছে এখন আর তেমন আয় হচ্ছেনা। কিভাবে সংসার চলবে আর এনজিও কিস্তি কিভাবে পরিশোধ করবে, এই নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন তিনি।

একই কথা বলেন আরেক রিকশাচালক মো. শিপন। তার বক্তব্য, তিনি এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে রিকশা কিনেছেন। বর্তমানে তার আয় না থাকায় এনজিওর কিস্তি পরিশোধ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

উপজেলার হরিপুর গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম জানান, করোনা আতঙ্কে এখন কেউ তাকে বাড়িতে কাজে দিচ্ছেনা। ফলে তার মজুরী বন্ধ হয়ে গেছে। এতে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। এর মাঝে তাকে প্রতি সপ্তাহে ১১শ টাকা কিস্তি দিতে হয়। তিনি কিভাবে এই কিস্তি পরিশোধ করবেন তা নিয়ে চিন্তায় আছেন তিনি।

একই অবস্থা ক্ষুদ্র চা-ষ্টল, পান-সিগারেটের দোকান ও ফলের দোকানগুলোতেও। বাজারে জনসমাগম কমে যাওয়ায়, এই সকল ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও খাবারে দোকান হোটেলের বেচা-কেনা কমে গেছে। এতে শ্রমিক ও দিন মজুরদের ন্যায় তারাও বিপাকে পড়েছেন।

নাঙ্গলকোট পশ্চিম বাজারের চা বিক্রেতা ইব্রাহিম মিয়া বলেন, সারাদিন যেখানে দুই থেকে তিন হাজার টাকা বেচা-কেনা হত, সেখানে পাঁচশ টাকাও বেচা-কেনা হচ্ছেনা।

করোনা প্রাদুর্ভাব না কাটা পর্যন্ত এনজিওর কিস্তি বন্ধ রাখার জন্য সরকারের উর্দ্ধতন মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ।

এ বিষয়ে গ্রামীণ, ব্র্যাক ও বুরো বাংলাদেশ নাঙ্গলকোট শাখার ম্যানেজারদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন- কিস্তি আদায় বন্ধে আমাদের কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি, তাই আমরা যথারীতি মাঠে কাজ করছি।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

এই সংকটময় মুহুর্তেও হত দরিদ্রলোকজন কিস্তির টাকা দিতে হচ্ছে বাধ্যতামূলক!

আপডেট টাইম : ১০:২৫:১৫ পূর্বাহ্ণ, সোমবার, ৫ এপ্রিল ২০২১

বিশেষ প্রতিনিধি কুমিল্লা।।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে সারাদেশের ন্যায় কুমিল্লাতে দোকান-পাট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। লোকজন চলাচলও সীমিত করে দেয়া হয়েছে। ফলে নিম্ন আয়ের মানুষদের কর্মসংস্থান কমে গেছে।

এতে দিনমজুর-ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের আয় নেই বললেই চলে। এমন পরিস্থিতিতেও জেলাজুড়ে চলছে এনজিওসমূহের ঋণ আদায় কার্যক্রম। এতে এনজিওর ঋণ গ্রহণকারী দরিদ্র মানুষরা পড়েছেন বিপাকে। তাদের দাবি পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত ঋণ আদায় স্থগিত করার।

এ সঙ্কটময় মুহূর্তে জেলার নিম্ন আয়ের মানুষ করোনাভাইরাস থেকেও বেশি চিন্তিত হয়ে পড়েছেন এনজিওর কিস্তির টাকা নিয়ে। কিস্তির টাকা পরিশোধের জন্য সকাল-সন্ধ্যা এসব খেটে খাওয়া মানুষদের বাড়িতে এনজিও কর্মীরা হানা দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। জেলায় গ্রামীণ, আশা, ব্র্যাক, বিজ, শক্তি, আইডিএফ, কারিতাস, পদক্ষেপ, প্রশিকা, সাজেদা ফাউন্ডেশন, টিএমএসএস, এসএসএস, পেইজ, সিসিডিএ, সোস্যাল, গ্রাউস, ইসলামী ব্যাংক ক্ষুদ্র ঋন বিতরণ করে। অভিযোগ রয়েছে প্রত্যেক এনজিওই কিস্তির টাকার জন্য সাধারণ মানুষের উপর চাপাচাপি করছে।

নাঙ্গলকোট পৌর বাজার এলাকা ঘুরে দেখা যায়, করোনাভাইরাস আতঙ্কে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেনা অধিকাংশ মানুষ, রাস্তা-ঘাট প্রায় ফাঁকা। এতে বিপাকে পড়েছে শ্রমিক, দিনমজুর ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীসহ নিম্ন আয়ের মানুষেরা। পঞ্চাশোর্ধ বয়সী তিতু মিয়া নামের একজন রিকশাচালক জানান, তার পরিবারে ৮জন সদস্য রয়েছে। প্রতি সপ্তাহে তাকে এনজিও’র কিস্তি দিতে হয় ১৪শ টাকা। বর্তমানে রাস্তা-ঘাটে মানুষ কমে গেছে এখন আর তেমন আয় হচ্ছেনা। কিভাবে সংসার চলবে আর এনজিও কিস্তি কিভাবে পরিশোধ করবে, এই নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন তিনি।

একই কথা বলেন আরেক রিকশাচালক মো. শিপন। তার বক্তব্য, তিনি এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে রিকশা কিনেছেন। বর্তমানে তার আয় না থাকায় এনজিওর কিস্তি পরিশোধ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

উপজেলার হরিপুর গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম জানান, করোনা আতঙ্কে এখন কেউ তাকে বাড়িতে কাজে দিচ্ছেনা। ফলে তার মজুরী বন্ধ হয়ে গেছে। এতে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। এর মাঝে তাকে প্রতি সপ্তাহে ১১শ টাকা কিস্তি দিতে হয়। তিনি কিভাবে এই কিস্তি পরিশোধ করবেন তা নিয়ে চিন্তায় আছেন তিনি।

একই অবস্থা ক্ষুদ্র চা-ষ্টল, পান-সিগারেটের দোকান ও ফলের দোকানগুলোতেও। বাজারে জনসমাগম কমে যাওয়ায়, এই সকল ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও খাবারে দোকান হোটেলের বেচা-কেনা কমে গেছে। এতে শ্রমিক ও দিন মজুরদের ন্যায় তারাও বিপাকে পড়েছেন।

নাঙ্গলকোট পশ্চিম বাজারের চা বিক্রেতা ইব্রাহিম মিয়া বলেন, সারাদিন যেখানে দুই থেকে তিন হাজার টাকা বেচা-কেনা হত, সেখানে পাঁচশ টাকাও বেচা-কেনা হচ্ছেনা।

করোনা প্রাদুর্ভাব না কাটা পর্যন্ত এনজিওর কিস্তি বন্ধ রাখার জন্য সরকারের উর্দ্ধতন মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ।

এ বিষয়ে গ্রামীণ, ব্র্যাক ও বুরো বাংলাদেশ নাঙ্গলকোট শাখার ম্যানেজারদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন- কিস্তি আদায় বন্ধে আমাদের কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি, তাই আমরা যথারীতি মাঠে কাজ করছি।