ঢাকা ০৪:৪০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
পীরগঞ্জ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দুর্নীতির অভিযোগে বরখাস্ত কঠিন সময়ে কীভাবে পাশে ছিলেন স্ত্রী, জানালেন কোহলি ইতালিতে জি৭ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের আলোচনার তালিকায় নেতানিয়াহুর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা সরকারকে ধন্যবাদ দিয়ে আরো যা ‘পদক্ষেপ’ নিতে বললেন নূরুল কবির মেগা মানডে’: ৩ কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে রণক্ষেত্র যাত্রাবাড়ী অর্থের লোভ দেখিয়ে ‘গণঅভ্যুত্থানের’ ব্যর্থ চেষ্টা, নেপথ্যে কারা? ইমরান খানের হাজারো সমর্থক গ্রেপ্তার প্রতারক বাবু যেন কাশিমপুর থানার একচ্ছত্র অধিপতি ১০ সাংবাদিকের ব্যাংক হিসাব জব্দ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবেন প্রধান উপদেষ্টা, বাকিদের কথা ব্যক্তিগত

আমেরিকান লেডি আর্মি অফিসার ডায়না’র বাংলাদেশী ফেসবুক বন্ধুকে ডলার ভর্তি পার্সেল প্রেরণ

মোঃ মেহেদী হাসান সম্পদ, বরিশাল,বিভাগীয় প্রধান,,
  • আপডেট টাইম : ০৫:১৬:০১ পূর্বাহ্ণ, সোমবার, ৮ জুলাই ২০২৪
  • / ৭৫ ৫০০০.০ বার পাঠক

আমেরিকান লেডি আর্মি অফিসার ডায়না’র সাথে সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম ফেসবুকে পরিচয় বাংলাদেশী অবসরপ্রাপ্ত চাকরিজীবী সফিক মিয়া’র (ছদ্মনাম)। মেসেঞ্জারে বেশ কিছুদিনের আলাপচারিতায় দুজনের মধ্যে গড়ে ওঠে বন্ধুত্ব। এক পর্যায়ে আমেরিকান লেডি আর্মি অফিসার ডায়না বাংলাদেশী ফেসবুক বন্ধু সফিক মিয়া’কে জানায় বেশ কিছুদিন আগে ডায়নার পরিবারের সবাই এক দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন। এ পৃথিবীতে তার আপন বলতে আর কেউ নেই। ডায়নার কাছে তার পারিবারিক ও চাকরি সূত্রে প্রাপ্ত কয়েক মিলিয়ন ডলার সঞ্চিত রয়েছে যা সে তার মৃত্যুর পূর্বে ভালো কোন কাজে ব্যবহারের জন্য বাংলাদেশী ফেসবুক বন্ধু সফিক মিয়া কে দিতে চায়। সফিক মিয়া ডলার নিতে সম্মতি জ্ঞাপন করে মনে মনে খুশি হল।

কিছু দিনের মধ্যেই আমেরিকান লেডি অফিসার ডায়না বিপুল পরিমাণ ডলার পার্সেল করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয় আর সেই ডলার রিসিভ করার জন্য এ সংক্রান্ত ইমিগ্রেশন, কাস্টমস সহ অন্যান্য কাগজপত্র মেইল করে বাংলাদেশি ফেসবুক বন্ধু সফিক মিয়া কে পাঠিয়ে দেয়। ডলার বাংলাদেশে এসে পৌঁছালে বাংলাদেশের কাস্টমস থেকে এক অফিসার সফিক মিয়া কে ফোন করে জানায় যে আমেরিকা থেকে ডায়না নামক এক ব্যক্তি তার নামে একটি পার্সেল পাঠিয়েছে। এ সময় কাস্টমস অফিসার পার্সেল সংক্রান্ত বিভিন্ন ডকুমেন্ট মেইল করে সফিক মিয়া কে পাঠিয়ে দেয়। সফিক মিয়া দেখতে পান তার বন্ধু ডায়না তাকে ডলার রিসিভ করার জন্য যে সমস্ত কাগজপত্র পাঠিয়েছে তার সাথে কাস্টমস অফিসারের প্রেরিত কাগজপত্রের হবহু মিল রয়েছে। কাস্টম অফিসার তখন সফিক মিয়াকে জানায় যে এই পার্সেল ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য কিছু সরকারি চার্জ রয়েছে সেগুলো ব্যাংক একাউন্ট কিংবা বিকাশের মাধ্যমে কাস্টম অফিসার কে পাঠাতে হবে। সফিক মিয়া ডলারের পার্সেল গ্রহণ করার জন্য তখন কাস্টমস অফিসার কে তার চাহিদা মোতাবেক টাকা প্রেরণ করে। এরপর কাস্টমস অফিসার আবার ফোন দিয়ে জানায় যে পার্সেল এর ভেতরে বিপুল পরিমান বৈদেশিক মুদ্রা আমেরিকান ডলার রয়েছে যেগুলো যথাযথ নিয়ম মেইনটেইন করে পাঠানো হয়নি তাই এগুলো ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য আরো বিভিন্ন জায়গায় টাকা দিতে হবে। এভাবে বিভিন্ন সময় কাস্টম অফিসার বিভিন্ন ব্যাংক একাউন্ট ও বিকাশের মাধ্যমে সফিক মিয়া’র কাছ থেকে ৭৭ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা নিয়ে যায় এবং ক্রমশ বিভিন্ন অজুহাতে আরও টাকা চাইতে থাকে। সফিক মিয়ার তখন সন্দেহ হলে সে কাস্টমস অফিসে গিয়ে এ সংক্রান্ত খোঁজখবর নিয়ে বুঝতে পারে যে সে প্রতারকের ফাঁদে পড়েছে। কিন্তু ইতোমধ্যে সে তার চাকরির অবসরের টাকা, জমানো টাকা ও ধার করা টাকা প্রতারককে দিয়ে সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব প্রায়।

সফিক মিয়া তখন বিএমপি কোতোয়ালি মডেল থানায় এ সংক্রান্ত একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা রুজু হওয়ার পর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই/রেজা ও কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের একটি চৌকস টিম ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সার্বিক দিক-নির্দেশনায় অহর্নিশ নিরলস পরিশ্রম করে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ০৪-৭-২৪ খ্রিঃ ঢাকার মতিঝিল এলাকা থেকে অভিযান পরিচালনা করে আন্তর্জাতিক সাইবার অপরাধ চক্রের অন্যতম মূল হোতা অভিযুক্ত ১) মোঃ সোহাগ শেখ (২৪), পিতা-মোঃ জব্বার শেখ, সাং-পাঁচগাও, কেদারপুর ইউপি, থানা- নড়িয়া, জেলা- শরিয়তপুরকে গ্রেফতার করেন এবং অভিযুক্ত সোহাগের সাথে থাকা প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ৩৫ টি ব্যাংকের ৮৬ টি ভিসা ব্যাংক কার্ড, ১৫১ টি ব্যাংক চেকের পাতা, একটি এন্ড্রয়েড মোবাইল সেট, ০৩ টি বাটন মোবাইল সেট সহ ৮ টি মোবাইল সিম উদ্ধার করা হয়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত সোহাগ জানায় সে একটি আন্তর্জাতিক সাইবার অপরাধচক্রের সদস্য। এভাবে অনলাইন প্রতারণা করে তারা মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। মামলার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে
ধৃত ও অজ্ঞাতনামা পলাতক অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

মোরাল অব দ্যা স্টোরি –

সম্মানিত নাগরিক, সস্তায় কিংবা ফ্রিতে কোন কিছু পাওয়ার, নেওয়ার কিংবা কেনার আগে ভালভাবে যাচাই-বাছাই করুন তারপর সিদ্ধান্ত নিন। তা না হলে লোভে পাপ আর পাপে মৃত্যু হবে।

আর অপরাধী যত চতুরই হোক না কেন আইনের আওতায় তাকে আসতেই হবে।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ আপনাদের নিরাপত্তায় সদাজাগ্রত।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

আমেরিকান লেডি আর্মি অফিসার ডায়না’র বাংলাদেশী ফেসবুক বন্ধুকে ডলার ভর্তি পার্সেল প্রেরণ

আপডেট টাইম : ০৫:১৬:০১ পূর্বাহ্ণ, সোমবার, ৮ জুলাই ২০২৪

আমেরিকান লেডি আর্মি অফিসার ডায়না’র সাথে সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম ফেসবুকে পরিচয় বাংলাদেশী অবসরপ্রাপ্ত চাকরিজীবী সফিক মিয়া’র (ছদ্মনাম)। মেসেঞ্জারে বেশ কিছুদিনের আলাপচারিতায় দুজনের মধ্যে গড়ে ওঠে বন্ধুত্ব। এক পর্যায়ে আমেরিকান লেডি আর্মি অফিসার ডায়না বাংলাদেশী ফেসবুক বন্ধু সফিক মিয়া’কে জানায় বেশ কিছুদিন আগে ডায়নার পরিবারের সবাই এক দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন। এ পৃথিবীতে তার আপন বলতে আর কেউ নেই। ডায়নার কাছে তার পারিবারিক ও চাকরি সূত্রে প্রাপ্ত কয়েক মিলিয়ন ডলার সঞ্চিত রয়েছে যা সে তার মৃত্যুর পূর্বে ভালো কোন কাজে ব্যবহারের জন্য বাংলাদেশী ফেসবুক বন্ধু সফিক মিয়া কে দিতে চায়। সফিক মিয়া ডলার নিতে সম্মতি জ্ঞাপন করে মনে মনে খুশি হল।

কিছু দিনের মধ্যেই আমেরিকান লেডি অফিসার ডায়না বিপুল পরিমাণ ডলার পার্সেল করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয় আর সেই ডলার রিসিভ করার জন্য এ সংক্রান্ত ইমিগ্রেশন, কাস্টমস সহ অন্যান্য কাগজপত্র মেইল করে বাংলাদেশি ফেসবুক বন্ধু সফিক মিয়া কে পাঠিয়ে দেয়। ডলার বাংলাদেশে এসে পৌঁছালে বাংলাদেশের কাস্টমস থেকে এক অফিসার সফিক মিয়া কে ফোন করে জানায় যে আমেরিকা থেকে ডায়না নামক এক ব্যক্তি তার নামে একটি পার্সেল পাঠিয়েছে। এ সময় কাস্টমস অফিসার পার্সেল সংক্রান্ত বিভিন্ন ডকুমেন্ট মেইল করে সফিক মিয়া কে পাঠিয়ে দেয়। সফিক মিয়া দেখতে পান তার বন্ধু ডায়না তাকে ডলার রিসিভ করার জন্য যে সমস্ত কাগজপত্র পাঠিয়েছে তার সাথে কাস্টমস অফিসারের প্রেরিত কাগজপত্রের হবহু মিল রয়েছে। কাস্টম অফিসার তখন সফিক মিয়াকে জানায় যে এই পার্সেল ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য কিছু সরকারি চার্জ রয়েছে সেগুলো ব্যাংক একাউন্ট কিংবা বিকাশের মাধ্যমে কাস্টম অফিসার কে পাঠাতে হবে। সফিক মিয়া ডলারের পার্সেল গ্রহণ করার জন্য তখন কাস্টমস অফিসার কে তার চাহিদা মোতাবেক টাকা প্রেরণ করে। এরপর কাস্টমস অফিসার আবার ফোন দিয়ে জানায় যে পার্সেল এর ভেতরে বিপুল পরিমান বৈদেশিক মুদ্রা আমেরিকান ডলার রয়েছে যেগুলো যথাযথ নিয়ম মেইনটেইন করে পাঠানো হয়নি তাই এগুলো ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য আরো বিভিন্ন জায়গায় টাকা দিতে হবে। এভাবে বিভিন্ন সময় কাস্টম অফিসার বিভিন্ন ব্যাংক একাউন্ট ও বিকাশের মাধ্যমে সফিক মিয়া’র কাছ থেকে ৭৭ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা নিয়ে যায় এবং ক্রমশ বিভিন্ন অজুহাতে আরও টাকা চাইতে থাকে। সফিক মিয়ার তখন সন্দেহ হলে সে কাস্টমস অফিসে গিয়ে এ সংক্রান্ত খোঁজখবর নিয়ে বুঝতে পারে যে সে প্রতারকের ফাঁদে পড়েছে। কিন্তু ইতোমধ্যে সে তার চাকরির অবসরের টাকা, জমানো টাকা ও ধার করা টাকা প্রতারককে দিয়ে সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব প্রায়।

সফিক মিয়া তখন বিএমপি কোতোয়ালি মডেল থানায় এ সংক্রান্ত একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা রুজু হওয়ার পর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই/রেজা ও কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের একটি চৌকস টিম ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সার্বিক দিক-নির্দেশনায় অহর্নিশ নিরলস পরিশ্রম করে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ০৪-৭-২৪ খ্রিঃ ঢাকার মতিঝিল এলাকা থেকে অভিযান পরিচালনা করে আন্তর্জাতিক সাইবার অপরাধ চক্রের অন্যতম মূল হোতা অভিযুক্ত ১) মোঃ সোহাগ শেখ (২৪), পিতা-মোঃ জব্বার শেখ, সাং-পাঁচগাও, কেদারপুর ইউপি, থানা- নড়িয়া, জেলা- শরিয়তপুরকে গ্রেফতার করেন এবং অভিযুক্ত সোহাগের সাথে থাকা প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ৩৫ টি ব্যাংকের ৮৬ টি ভিসা ব্যাংক কার্ড, ১৫১ টি ব্যাংক চেকের পাতা, একটি এন্ড্রয়েড মোবাইল সেট, ০৩ টি বাটন মোবাইল সেট সহ ৮ টি মোবাইল সিম উদ্ধার করা হয়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত সোহাগ জানায় সে একটি আন্তর্জাতিক সাইবার অপরাধচক্রের সদস্য। এভাবে অনলাইন প্রতারণা করে তারা মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। মামলার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে
ধৃত ও অজ্ঞাতনামা পলাতক অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

মোরাল অব দ্যা স্টোরি –

সম্মানিত নাগরিক, সস্তায় কিংবা ফ্রিতে কোন কিছু পাওয়ার, নেওয়ার কিংবা কেনার আগে ভালভাবে যাচাই-বাছাই করুন তারপর সিদ্ধান্ত নিন। তা না হলে লোভে পাপ আর পাপে মৃত্যু হবে।

আর অপরাধী যত চতুরই হোক না কেন আইনের আওতায় তাকে আসতেই হবে।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ আপনাদের নিরাপত্তায় সদাজাগ্রত।