ঢাকা ০৫:২১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
ডেঙ্গুতে ২৪ ঘণ্টায় ১০ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৯৯০ ইলা লালালালা: সবুজ ঘাসের লাল দ্রোহের সুর যার কন্ঠে তরুণ আইনজীবী সাইফুলকে যেভাবে হত্যা করা হয় গাজীপুরে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত রায়পুর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের দুর্নীতিত অতিষ্ঠ জনসাধারণ সমাবেশে গিয়ে টাকা না পেয়ে বাড়ি ঘেরাও, ৫ প্রতারক আটক অভিনব সিন্ডিকেট: সয়াবিন তেলের সঙ্গে চাল-ডাল কেনা বাধ্যতামূলক! সব ছাত্রসংগঠনের সমন্বয়ে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করলেন হাসনাত ডেপুটি রেজিস্ট্রার হয়েও নার্সিং ইনস্টিটিউট ব্যবসা নিলুফার ইয়াসমিনের অভিযোগ তদন্তে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে তলব পুলিশ প্রশাসনের নীতিগত পরিবর্তন হলেও এসআই মিজানের অসাধু নীতির পরিবর্তন হয়নি

ঘুষ ছাড়া নিস্তার নাই,,ঘুষ পাগল সুপার আনোয়ারুল করিম গাজীপুর জেলা কারাগারকে দুর্নীতির আতুরঘর বানিয়েছে

সময়ের কন্ঠ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : ০৫:৫৬:৪১ পূর্বাহ্ণ, শনিবার, ৩০ মার্চ ২০২৪
  • / ১০৭ ৫০০০.০ বার পাঠক

কারাগার মানেই দুর্ভেদ্য প্রাচীর আর তার ভিতরে বন্দিজীবন। সে জীবনের গল্প খুব কমই প্রকাশ পায় বাইরে। দুর্ভাগ্যজনক মিথ্যা মামলায় দুইদিন দুই রাত গাজীপুর জেলে কারাভোগের বাস্তবতা কতটা নির্মম প্রতিবেদক নিজে কারাভোগ না করলে প্রকৃত সত্যটুকু প্রকাশ করা সম্ভব হতো না। হয়রানি, ঘুষ,অর্থাৎ টাকা ছাড়া সেবাপ্রাপ্তি রাষ্ট্রের প্রত্যেক নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার হলেও বাস্তবতা হলো, বর্তমান জেল সুপার আনোয়ারুল করিমের জামানায় ঘুষ ছাড়া, গাজীপুর জেলা কারাগারে সেবা পাওয়া যেন অলৌকিক বিষয়ে পরিনত হয়েছে।
গাজীপুর জেলা কারাগারের ভিতরের ভয়ংকর অমানবিকতা, অনিয়মসহ বিভিন্ন ঘটনা যা “”প্রতিবেদকের,, নিজের চোখ দিয়ে দেখা , “”অনিয়ম ও দুর্নীতি যে গাজীপুর জেলখানাকে রীতিমতো বন্দিদের নির্যাতনের সেলে পরিনত করেছে। জেলখানায় টাকা দিয়ে ভালো থাকা যায়, টাকা দিলেই সবকিছুই পাওয়া যায়, এতে করে প্রকৃত বন্দিগন তার প্রাপ্য হক থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আর এই সুযোগেই বিত্তশালী বন্দিরা টাকার জোরে চিকিৎসার নামে বছরের পর বছর কাটাচ্ছে বাইরে অথবা কারা হাসপাতালের বেডে, আজও অবধি এই অবস্থার কোন পরিবর্তন হয়নি।বর্তমান জেল সুপারের জামানায় জেলখানায় টাকা না দিলে বন্দিরা কোনো সুবিধা পায় না। গাজীপুর কারাগারের কর্মকাণ্ডের অনুপুঙ্খ বিশ্লেষণ এবং মতামত যত দ্রুত সম্ভব এই জেলখানার সংস্কারের প্রয়োজন।গাজীপুর জেলা কারাগারে ৩০৭ জন বন্দির ধারণক্ষমতা থাকলেও এখানে কিন্তু প্রতিদিনই গড়ে ১হাজার ৭৫০ জনের মতো বন্দি রাখা হয়। আর এতে করে প্রতিটি সিট বাড়ার টাকা ঢুকে জেল সুপারের পেটে ও পকেটে, কারাগারের বিধিমালা অনুযায়ী বন্দির ধারণ ক্ষমতার বেশী হলে অন্য কারাগারে বলতে একই জেলার কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ ও হাইসিকিউরিটি -৪ প্রায় কমপক্ষে হলেও ১০০০ হাজার বন্দির চালান দেওয়ার যথেষ্ট সুযোগ থাকা স্বত্তেও দেওয়া হয়না কেন? জেল সুপারের অসৎ উদ্দেশ্য বন্দিদের উপর যতটা জুলুম অত্যাচার, নির্যাতন করে শুধুই টাকা কামাইয়ের জন্য। বন্দি আসামীদের প্রতিদিন গাজীপুর কোর্টে প্রেরণ এবং কোর্ট শেষে কারাগারে আনার অজুহাত দেখিয়ে। “কারাগারের বাস্তব সরেজমিনের অভিজ্ঞতা থেকে প্রকাশ
‘’রাখিব নিরাপদ, দেখাব আলোর পথ’’ স্লোগানটি দেশের সকল কারাগারের ন্যায় , গাজীপুর জেলা কারাগারের ও মূল ফটকের ওপর সাইন বোর্ডে বড় অক্ষরে লেখা “জ্বলজ্বল, করে জ্বলছে। যদি ও জেল সুপার দাবী করছে কারাগারের প্রতিটি বন্দিকে রাখা হয় নিবিড় পর্যবেক্ষণে। কঠোর অধ্যাবসায়ের মাধ্যমে দেখানো হয় স্বাভাবিক জীবনের ফিরে যাওয়ার পথ। তবে জেল সুপার মুখে এ কথা বললেও বাস্তবতার চিত্র সম্পুর্ণ ভিন্ন। কারাগারের বন্দি ও স্বজনদের প্রতিনিয়তই এখানে ভোগান্তিতে পরতে হচ্ছে। জেল সুপার আনোয়ারুল করিম নিজেই অনিয়ম ও দুর্নীততে ডুবে রয়েছে এমনকি কারাগারটির প্রতিটি ইট-পাথরও । বাস্তবে মিলেছে, পুরো এই কারাগারজুরেই চলছে টাকার খেলা আর ক্যান্টিন থেকে শুরু করে টয়লেটের সিটসহ বাড়া দেওয়ার জমজমাট ব্যবসা। যার যতো টাকা ও প্রভাবশালী,কারাগারের ভিতরে তার ততোই দাপট। টাকাওয়ালারা এজেলখানায় ঘরের ন্যায় অতি আরাম আয়েশে দিন কাটায়। নানা ফন্দি ফিকিরে বন্দি ও দর্শনার্থীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে কোটি কোটি টাকা। বিনিময়ে বিত্তশালী বন্দিরা পাচ্ছে আরাম আয়েশে জীবনযাপনের বিশেষ সুযোগ-সুবিধা। জেল সুপারের বিশেষ নির্দেশনায়,জেলার তারিকুল ইসলাম সহ দুইজন ডেপুটি জেলার মো: আবদুল কাদির ও মো: আব্দুর রব মিয়া মিলে এই বিশেষ চক্রটি প্রতিমাসে প্রায় দেড় থেকে দুই কোটি টাকার বাণিজ্য করছে। সংশোধনের পরিবর্তে বন্দি ও সাজাপ্রাপ্তরা প্রতিনিয়ত শিখছে অনিয়ম ও দুর্নীতি নানা অপকর্মের কুট -কলাকৌশল। বন্দিদের সঙ্গে দেখা করতে আসা দর্শনার্থীরাও সুবিধা পেতে এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির সুযোগ নিচ্ছে। তবে প্রতিবেদক একজন সাংবাদিক পরিচয় গোপন করে কারাগারের সুপার আনোয়ারুল করিম কে ভিতরের এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে উত্তর দেন যে, তিনি যোগদানের পরে কোন অনিয়ম ও দুর্নীতি নেই অথচ এই জেল সুপারের আমলেই দুইদিন দুইরাত এই জেলখানায় অসুস্থ অবস্থায় ছিল দুইদিনই সকালে সুপারের নিকট আকুতি করেছিল কারা হাসপাতালে একটা সিটের জন্য, সুপার চামারের ভাষায় স্পষ্ট বলে দেয় এটা জেলাখানা কারো শশুর বাড়ী নয়,যে কাউকে কারা হাসপাতালে থাকতে হলে প্রতিমাসে নিচতলার জন্য ১৫ হাজার দোতলার জন্য ২০ হাজার টাকা অগ্রীম দিতে হবে। যখনই জানতে পারে প্রতিবেদক একজন সাংবাদিক কারাগারের ভিতরের সকল অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য ফাঁস হয়ে যাবে এই ভয়ে দুদিন পর তাকে কাশিমপুর -২ কেন্দ্রীয় কারাগারে চালান করা হয় । প্রতিবেদক সেখানে কোন প্রকার অনিয়ম ও দুর্নীতি খুঁজে পায়নি।কাশিমপুর কেন্দ্রীয় সরকারে সিট পেতে কোন টাকা দিতে হয় না, প্রকৃত অসুস্থ বন্দি ব্যতীত কাউকে কারা হাসপাতালে থাকতে দেওয়া হয়না খাবার ও মানসম্পন্ন পিসি ক্যানটিনে জিনিসপত্রের দাম ও স্থিতিশীলতা।জেলখানায় থাকাবস্থায় প্রত্যেক বন্দিদের বক্তব্য হুবহু নিজ অভিজ্ঞতা থেকে প্রকাশ কোন সুত্র নয়। প্রতিবেদকের নিজ চোখে দেখা , দু কান দিয়ে শুনা কারাগারের ‘তুরাগ’ এবং ‘শীতলক্ষ্যা’ ভবন দুটির পাকা মেঝেতে মোটা কয়েকটি কম্বলের ওপর বিছানার চাদর বিছিয়ে তৈরি করা প্রতিটি সিটের (এক ব্যক্তির জন্য) মাসিক ভাড়া পুর্বে ছিল তিন হাজার বর্তমান জেল সুপার যোগদানের পর এক লাফে দুই হাজার বেড়ে হয়েছে ৫ হাজার টাকা। তবে প্রত্যেক বন্দিকেই প্রথম মাসের ভাড়া অগ্রিম জমা দিয়েই সিট নিশ্চিত করতে হয় বন্দিদের। কিন্তু সিলিং ফ্যানের নিচে কাংখিত সিট পেতে চাইলে কর্তার চাহিদা অনুযায়ী টাকা দিতে হয়। ভবন দুটির প্রতিটি ফ্লোরে চারদিকে বৃত্তাকারে সিটগুলো বিছানো থাকে। এছাড়া বারান্দাগুলোতেও সিটের ব্যবস্থা রয়েছে, যদি ও আগের সুপারের আমলে বারান্দার সিটের জন্য কোন বাড়া লাগতো না। বর্তমান জেল সুপার আনোয়ারুল করিম বারান্দার সিটের প্রত্যেক বন্দিদের জন্য ও ৩০০০ হাজার টাকা নির্ধারণ করে দেয় এরপর থেকে বন্দিদের টাকা ছাড়া কোন সিট মিলে না । তবে যাদের প্রতি মাসে পাচ হাজার সর্বনিম্ন তিন হাজার টাকা দিয়ে সিট ভাড়া নেওয়ার সামর্থ্য নেই তাদেরকে অমানবিক, নিষ্ঠুর,নির্যাতন সহ্য করে রাত কাটাতে হয়। একই দিকে মুখ ফিরিয়ে গাদাগাদি করে সারারাত বসে থাকতে হয়। আর এসব বন্দিগন দিনের বেলা কারাগারের ভিতরে মাঠে গাছতলায় ঘুমায়, কতটা ভয়াবহ অমানবিক নিষ্ঠুর নির্যাতন জুলুমের শিকার হতে হয়, যা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।তবে যেসব বড়লোক ধনীর দুলাল বন্দি একটু নিরিবিলি থাকতে চায় তাদের জন্যও আছে সেলের ব্যবস্থা। ‘ক’ ও ‘খ’ নামে দুটি সেলের দশটি কক্ষ রয়েছে। প্রতিটি কক্ষে একটি সিট ভাড়া মাসিক ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা। এখানেও প্রথম মাসের টাকা অগ্রিম জমা দিতে হয়।এছাড়া ধনী পরিবারের বন্দিদের সুস্থ শরীরে গাজীপুর জেলা কারা হাসপাতালে থাকার সুব্যবস্থা রয়েছে । সেক্ষেত্রে সিটের ভাড়া বেশ চড়া। প্রতিটি সিটের জন্য প্রতিমাসে গুনতে হয় নিচতলার জন্য ১৫ হাজার দোতলার জন্য ২০ হাজার টাকা। টাকাওয়ালারা সিট বাণিজ্যের এ সুযোগ নেওয়ায় প্রকৃত অসুস্থ বন্দিরা চিকিৎসাসেবাহতে বঞ্চিত হচ্ছে। সিট বাড়া এতো টাকা হলেও কারা হাসপাতালটির কোন মাসেই সিট খালি থাকেনা। আর এভাবেই কারাগারটিতে প্রতি মাসে অর্ধ কোটি টাকার মতো কামাই করছে শুধু সিট বাণিজ্য হতে। এছাড়া দর্শনার্থীদের কারাগারের ভেতরে প্রতিটি ধাপে পোহাতে হয় সীমাহীন ভোগান্তি। তবে টাকা দিলেই ভোগান্তি নিমিষেই শেষ । দর্শনার্থীদের বন্দিদের সঙ্গে দেখা করতে টিকিট দেওয়া হয়। কাংখিত মানুষটির সঙ্গে সহসাই দেখা হয় না। কিন্তু যে কোন কারারক্ষীকে ২শ টাকা দিলেই মাইকে ডেকে দ্রুত হাজির করা হয় বন্দিকে। এক্ষেত্রে সচ্ছল পরিবারের দর্শনার্থীদের জন্য রয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। ‘অফিস কলের’ নামে বিশেষ ব্যবস্থায় দর্শনার্থীরা বন্দিদের সঙ্গে নিরিবিলি দেখা করার পাশাপাশি দিতে পারে খাবার, টাকা এবং পোশাক। তবে এজন্য গুনতে হবে ৩০০০ টাকা।গাজীপুর জেলা কারাগারের ক্যান্টিন বানিজ্য নতুন কিছু নয় এতো পুরানো রেওয়াজ বর্তমান জেল সুপার ও চালিয়ে যাচ্ছে। কারাগারের ক্যান্টিন ভেতরে (পিসি) ক্যান্টিনে খাবারের দাম আকাশছোঁয়া। বন্দিদের টাকা দিতে গেলেও প্রতি হাজারে সার্ভিস চার্জের নামে একশ ঘুষ দিতে হয় কেন? । কারাগারের ভিতরের সকল অনিয়ম ও দুর্নীতি কর্মকাণ্ডের অনুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদকের অভিযোগ জেল সুপার আনোয়ারুল করিমের বিরুদ্ধে কারণ এই জেলখানায় তিনিই সর্বেসর্বা যদি তিনি যোগদানের পর সততাকে প্রাধান্য দিয়ে দায়িত্ব পালন করতো তাহলে এই জেলখানায় অনিয়ম ও দুর্নীতি ঘুষের টাকার শব্দটি উচ্চারণ করার সাহস ছিল না।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

ঘুষ ছাড়া নিস্তার নাই,,ঘুষ পাগল সুপার আনোয়ারুল করিম গাজীপুর জেলা কারাগারকে দুর্নীতির আতুরঘর বানিয়েছে

আপডেট টাইম : ০৫:৫৬:৪১ পূর্বাহ্ণ, শনিবার, ৩০ মার্চ ২০২৪

কারাগার মানেই দুর্ভেদ্য প্রাচীর আর তার ভিতরে বন্দিজীবন। সে জীবনের গল্প খুব কমই প্রকাশ পায় বাইরে। দুর্ভাগ্যজনক মিথ্যা মামলায় দুইদিন দুই রাত গাজীপুর জেলে কারাভোগের বাস্তবতা কতটা নির্মম প্রতিবেদক নিজে কারাভোগ না করলে প্রকৃত সত্যটুকু প্রকাশ করা সম্ভব হতো না। হয়রানি, ঘুষ,অর্থাৎ টাকা ছাড়া সেবাপ্রাপ্তি রাষ্ট্রের প্রত্যেক নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার হলেও বাস্তবতা হলো, বর্তমান জেল সুপার আনোয়ারুল করিমের জামানায় ঘুষ ছাড়া, গাজীপুর জেলা কারাগারে সেবা পাওয়া যেন অলৌকিক বিষয়ে পরিনত হয়েছে।
গাজীপুর জেলা কারাগারের ভিতরের ভয়ংকর অমানবিকতা, অনিয়মসহ বিভিন্ন ঘটনা যা “”প্রতিবেদকের,, নিজের চোখ দিয়ে দেখা , “”অনিয়ম ও দুর্নীতি যে গাজীপুর জেলখানাকে রীতিমতো বন্দিদের নির্যাতনের সেলে পরিনত করেছে। জেলখানায় টাকা দিয়ে ভালো থাকা যায়, টাকা দিলেই সবকিছুই পাওয়া যায়, এতে করে প্রকৃত বন্দিগন তার প্রাপ্য হক থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আর এই সুযোগেই বিত্তশালী বন্দিরা টাকার জোরে চিকিৎসার নামে বছরের পর বছর কাটাচ্ছে বাইরে অথবা কারা হাসপাতালের বেডে, আজও অবধি এই অবস্থার কোন পরিবর্তন হয়নি।বর্তমান জেল সুপারের জামানায় জেলখানায় টাকা না দিলে বন্দিরা কোনো সুবিধা পায় না। গাজীপুর কারাগারের কর্মকাণ্ডের অনুপুঙ্খ বিশ্লেষণ এবং মতামত যত দ্রুত সম্ভব এই জেলখানার সংস্কারের প্রয়োজন।গাজীপুর জেলা কারাগারে ৩০৭ জন বন্দির ধারণক্ষমতা থাকলেও এখানে কিন্তু প্রতিদিনই গড়ে ১হাজার ৭৫০ জনের মতো বন্দি রাখা হয়। আর এতে করে প্রতিটি সিট বাড়ার টাকা ঢুকে জেল সুপারের পেটে ও পকেটে, কারাগারের বিধিমালা অনুযায়ী বন্দির ধারণ ক্ষমতার বেশী হলে অন্য কারাগারে বলতে একই জেলার কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ ও হাইসিকিউরিটি -৪ প্রায় কমপক্ষে হলেও ১০০০ হাজার বন্দির চালান দেওয়ার যথেষ্ট সুযোগ থাকা স্বত্তেও দেওয়া হয়না কেন? জেল সুপারের অসৎ উদ্দেশ্য বন্দিদের উপর যতটা জুলুম অত্যাচার, নির্যাতন করে শুধুই টাকা কামাইয়ের জন্য। বন্দি আসামীদের প্রতিদিন গাজীপুর কোর্টে প্রেরণ এবং কোর্ট শেষে কারাগারে আনার অজুহাত দেখিয়ে। “কারাগারের বাস্তব সরেজমিনের অভিজ্ঞতা থেকে প্রকাশ
‘’রাখিব নিরাপদ, দেখাব আলোর পথ’’ স্লোগানটি দেশের সকল কারাগারের ন্যায় , গাজীপুর জেলা কারাগারের ও মূল ফটকের ওপর সাইন বোর্ডে বড় অক্ষরে লেখা “জ্বলজ্বল, করে জ্বলছে। যদি ও জেল সুপার দাবী করছে কারাগারের প্রতিটি বন্দিকে রাখা হয় নিবিড় পর্যবেক্ষণে। কঠোর অধ্যাবসায়ের মাধ্যমে দেখানো হয় স্বাভাবিক জীবনের ফিরে যাওয়ার পথ। তবে জেল সুপার মুখে এ কথা বললেও বাস্তবতার চিত্র সম্পুর্ণ ভিন্ন। কারাগারের বন্দি ও স্বজনদের প্রতিনিয়তই এখানে ভোগান্তিতে পরতে হচ্ছে। জেল সুপার আনোয়ারুল করিম নিজেই অনিয়ম ও দুর্নীততে ডুবে রয়েছে এমনকি কারাগারটির প্রতিটি ইট-পাথরও । বাস্তবে মিলেছে, পুরো এই কারাগারজুরেই চলছে টাকার খেলা আর ক্যান্টিন থেকে শুরু করে টয়লেটের সিটসহ বাড়া দেওয়ার জমজমাট ব্যবসা। যার যতো টাকা ও প্রভাবশালী,কারাগারের ভিতরে তার ততোই দাপট। টাকাওয়ালারা এজেলখানায় ঘরের ন্যায় অতি আরাম আয়েশে দিন কাটায়। নানা ফন্দি ফিকিরে বন্দি ও দর্শনার্থীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে কোটি কোটি টাকা। বিনিময়ে বিত্তশালী বন্দিরা পাচ্ছে আরাম আয়েশে জীবনযাপনের বিশেষ সুযোগ-সুবিধা। জেল সুপারের বিশেষ নির্দেশনায়,জেলার তারিকুল ইসলাম সহ দুইজন ডেপুটি জেলার মো: আবদুল কাদির ও মো: আব্দুর রব মিয়া মিলে এই বিশেষ চক্রটি প্রতিমাসে প্রায় দেড় থেকে দুই কোটি টাকার বাণিজ্য করছে। সংশোধনের পরিবর্তে বন্দি ও সাজাপ্রাপ্তরা প্রতিনিয়ত শিখছে অনিয়ম ও দুর্নীতি নানা অপকর্মের কুট -কলাকৌশল। বন্দিদের সঙ্গে দেখা করতে আসা দর্শনার্থীরাও সুবিধা পেতে এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির সুযোগ নিচ্ছে। তবে প্রতিবেদক একজন সাংবাদিক পরিচয় গোপন করে কারাগারের সুপার আনোয়ারুল করিম কে ভিতরের এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে উত্তর দেন যে, তিনি যোগদানের পরে কোন অনিয়ম ও দুর্নীতি নেই অথচ এই জেল সুপারের আমলেই দুইদিন দুইরাত এই জেলখানায় অসুস্থ অবস্থায় ছিল দুইদিনই সকালে সুপারের নিকট আকুতি করেছিল কারা হাসপাতালে একটা সিটের জন্য, সুপার চামারের ভাষায় স্পষ্ট বলে দেয় এটা জেলাখানা কারো শশুর বাড়ী নয়,যে কাউকে কারা হাসপাতালে থাকতে হলে প্রতিমাসে নিচতলার জন্য ১৫ হাজার দোতলার জন্য ২০ হাজার টাকা অগ্রীম দিতে হবে। যখনই জানতে পারে প্রতিবেদক একজন সাংবাদিক কারাগারের ভিতরের সকল অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য ফাঁস হয়ে যাবে এই ভয়ে দুদিন পর তাকে কাশিমপুর -২ কেন্দ্রীয় কারাগারে চালান করা হয় । প্রতিবেদক সেখানে কোন প্রকার অনিয়ম ও দুর্নীতি খুঁজে পায়নি।কাশিমপুর কেন্দ্রীয় সরকারে সিট পেতে কোন টাকা দিতে হয় না, প্রকৃত অসুস্থ বন্দি ব্যতীত কাউকে কারা হাসপাতালে থাকতে দেওয়া হয়না খাবার ও মানসম্পন্ন পিসি ক্যানটিনে জিনিসপত্রের দাম ও স্থিতিশীলতা।জেলখানায় থাকাবস্থায় প্রত্যেক বন্দিদের বক্তব্য হুবহু নিজ অভিজ্ঞতা থেকে প্রকাশ কোন সুত্র নয়। প্রতিবেদকের নিজ চোখে দেখা , দু কান দিয়ে শুনা কারাগারের ‘তুরাগ’ এবং ‘শীতলক্ষ্যা’ ভবন দুটির পাকা মেঝেতে মোটা কয়েকটি কম্বলের ওপর বিছানার চাদর বিছিয়ে তৈরি করা প্রতিটি সিটের (এক ব্যক্তির জন্য) মাসিক ভাড়া পুর্বে ছিল তিন হাজার বর্তমান জেল সুপার যোগদানের পর এক লাফে দুই হাজার বেড়ে হয়েছে ৫ হাজার টাকা। তবে প্রত্যেক বন্দিকেই প্রথম মাসের ভাড়া অগ্রিম জমা দিয়েই সিট নিশ্চিত করতে হয় বন্দিদের। কিন্তু সিলিং ফ্যানের নিচে কাংখিত সিট পেতে চাইলে কর্তার চাহিদা অনুযায়ী টাকা দিতে হয়। ভবন দুটির প্রতিটি ফ্লোরে চারদিকে বৃত্তাকারে সিটগুলো বিছানো থাকে। এছাড়া বারান্দাগুলোতেও সিটের ব্যবস্থা রয়েছে, যদি ও আগের সুপারের আমলে বারান্দার সিটের জন্য কোন বাড়া লাগতো না। বর্তমান জেল সুপার আনোয়ারুল করিম বারান্দার সিটের প্রত্যেক বন্দিদের জন্য ও ৩০০০ হাজার টাকা নির্ধারণ করে দেয় এরপর থেকে বন্দিদের টাকা ছাড়া কোন সিট মিলে না । তবে যাদের প্রতি মাসে পাচ হাজার সর্বনিম্ন তিন হাজার টাকা দিয়ে সিট ভাড়া নেওয়ার সামর্থ্য নেই তাদেরকে অমানবিক, নিষ্ঠুর,নির্যাতন সহ্য করে রাত কাটাতে হয়। একই দিকে মুখ ফিরিয়ে গাদাগাদি করে সারারাত বসে থাকতে হয়। আর এসব বন্দিগন দিনের বেলা কারাগারের ভিতরে মাঠে গাছতলায় ঘুমায়, কতটা ভয়াবহ অমানবিক নিষ্ঠুর নির্যাতন জুলুমের শিকার হতে হয়, যা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।তবে যেসব বড়লোক ধনীর দুলাল বন্দি একটু নিরিবিলি থাকতে চায় তাদের জন্যও আছে সেলের ব্যবস্থা। ‘ক’ ও ‘খ’ নামে দুটি সেলের দশটি কক্ষ রয়েছে। প্রতিটি কক্ষে একটি সিট ভাড়া মাসিক ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা। এখানেও প্রথম মাসের টাকা অগ্রিম জমা দিতে হয়।এছাড়া ধনী পরিবারের বন্দিদের সুস্থ শরীরে গাজীপুর জেলা কারা হাসপাতালে থাকার সুব্যবস্থা রয়েছে । সেক্ষেত্রে সিটের ভাড়া বেশ চড়া। প্রতিটি সিটের জন্য প্রতিমাসে গুনতে হয় নিচতলার জন্য ১৫ হাজার দোতলার জন্য ২০ হাজার টাকা। টাকাওয়ালারা সিট বাণিজ্যের এ সুযোগ নেওয়ায় প্রকৃত অসুস্থ বন্দিরা চিকিৎসাসেবাহতে বঞ্চিত হচ্ছে। সিট বাড়া এতো টাকা হলেও কারা হাসপাতালটির কোন মাসেই সিট খালি থাকেনা। আর এভাবেই কারাগারটিতে প্রতি মাসে অর্ধ কোটি টাকার মতো কামাই করছে শুধু সিট বাণিজ্য হতে। এছাড়া দর্শনার্থীদের কারাগারের ভেতরে প্রতিটি ধাপে পোহাতে হয় সীমাহীন ভোগান্তি। তবে টাকা দিলেই ভোগান্তি নিমিষেই শেষ । দর্শনার্থীদের বন্দিদের সঙ্গে দেখা করতে টিকিট দেওয়া হয়। কাংখিত মানুষটির সঙ্গে সহসাই দেখা হয় না। কিন্তু যে কোন কারারক্ষীকে ২শ টাকা দিলেই মাইকে ডেকে দ্রুত হাজির করা হয় বন্দিকে। এক্ষেত্রে সচ্ছল পরিবারের দর্শনার্থীদের জন্য রয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। ‘অফিস কলের’ নামে বিশেষ ব্যবস্থায় দর্শনার্থীরা বন্দিদের সঙ্গে নিরিবিলি দেখা করার পাশাপাশি দিতে পারে খাবার, টাকা এবং পোশাক। তবে এজন্য গুনতে হবে ৩০০০ টাকা।গাজীপুর জেলা কারাগারের ক্যান্টিন বানিজ্য নতুন কিছু নয় এতো পুরানো রেওয়াজ বর্তমান জেল সুপার ও চালিয়ে যাচ্ছে। কারাগারের ক্যান্টিন ভেতরে (পিসি) ক্যান্টিনে খাবারের দাম আকাশছোঁয়া। বন্দিদের টাকা দিতে গেলেও প্রতি হাজারে সার্ভিস চার্জের নামে একশ ঘুষ দিতে হয় কেন? । কারাগারের ভিতরের সকল অনিয়ম ও দুর্নীতি কর্মকাণ্ডের অনুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদকের অভিযোগ জেল সুপার আনোয়ারুল করিমের বিরুদ্ধে কারণ এই জেলখানায় তিনিই সর্বেসর্বা যদি তিনি যোগদানের পর সততাকে প্রাধান্য দিয়ে দায়িত্ব পালন করতো তাহলে এই জেলখানায় অনিয়ম ও দুর্নীতি ঘুষের টাকার শব্দটি উচ্চারণ করার সাহস ছিল না।