কমলনগরে আনসার ও ভিডিপি নিয়োগে ঘুষ বানিজ্যের অভিযোগ
- আপডেট টাইম : ০১:৪১:২৫ অপরাহ্ণ, শুক্রবার, ১২ জানুয়ারি ২০২৪
- / ১২৭ ৫০০০.০ বার পাঠক
লক্ষ্মীপুরের কমলনগর আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আনসার ভিডিপি (পুরুষ মহিলা)নিয়োগে কয়েক লাখ টাকা ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে। কমলনগর উপজেলা আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা শাহীন আক্তার বিভিন্ন ইউনিয়নে কর্মরত ইউনিয়ন দলনেতা ও ইউনিয়ন আনসার কমান্ডারদের মাধ্যমে সদস্যদের নিকট থেকে এ টাকা আদায় করেন।
নির্বাচন উপলক্ষে বিগত ২৩/৯/২০২৩ ইং তারিখ রোজ শনিবার জেলা কমান্ড আনসার ও বিডিপি লক্ষীপুর কর্তৃক একটি আনসার ও ভিডিপি সদস্য বাছাই কমিটি গঠন করা হয় । উক্ত বাছাই কমিটির সভাপতি ছিলেন রামগতি উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা শামীমা আরা বেগম । তিনি বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে উপজেলা পরিষদ মাঠে আসা আনসার ও ভিডিপি সদস্য -সদস্যাদের অস্ত্র প্রশিক্ষণ সনদ যাচাই করেন এবং যাদের মৌলিক প্রশিক্ষণ সহ অন্যান্য সনদপত্র আছে কেবলমাত্র তাদেরকেই নির্বাচনে তালিকাভুক্ত করেন। বাসায় কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী ভিডিপি পুরুষ মহিলাগণ মূলত ইউনিয়ন দলনেতা ও ইউনিয়ন আনসার কমান্ডারদের মাধ্যমেই উপজেলা বাছাই কার্যক্রমে আসেন ।
জানা যায়, প্রত্যেক ইউনিয়নের কর্মরত দলনেতা ও আনসার কমান্ডারগণ বাছাইকৃত তালিকা অনুযায়ী সকল ভিডিপি পুরুষ -মহিলা সদস্যদের নিকট থেকে ১০০০-১২০০ টাকা করে দাবি করে এবং টাকা না দিলে বাছাইকৃত তালিকা হতে নাম বাদ দিবে বলে জানান । তালিকা থেকে বাদ পড়ার ভয়ে ভিডিপি সদস্যগনের অনেকেই ধার -দেনা করে নির্ধারিত টাকা পরিশোধ করেন।
বাকিদের কথা হল আমরা অনেক কষ্ট করে এ কাজের জন্যই প্রশিক্ষণ করেছি কোন টাকা দিতে পারবো না । এতে দেখা যায় যারা টাকা দেয়নি প্রত্যেকের নাম ইউনিয়ন দলনেতা, ইউনিয়ন কমান্ডার ও উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তার যোগসাজশে তালিকা থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয় এবং তাদের পরিবর্তে টাকা নিয়ে কোনরকম প্রশিক্ষণ ছাড়াই নিয়ম বহির্ভূত কিছু সাধারন পুরুষ -মহিলাকে আনসার -ভিডিপি দেখিয়ে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সরজমিনে গিয়ে যাদের অস্ত্রসহ নির্বাচনী কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায় । যারা নিজের টাকা খরচ করে কষ্ট করে প্রশিক্ষণ নিয়েছিল তাদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়ায় গত ৬ তারিখ উপজেলা পরিষদ মাঠে লাইনে দাঁড়িয়ে উপজেলা আনসার ও বিডিপি কর্মকর্তা শাহীন আক্তার এর ঘুষ বাণিজ্যের কথা কাটাকাটি করে একপর্যায়ে তার অফিসের সামনে দাঁড়িয়ে মিছিল দিয়ে জেলা আনসার ও ভিডিপি কমান্ট এর নিকট তদন্ত করে ন্যায় বিচারের দাবি জানায় বাদপাড়া নিরীহ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত আনসার ও ভিডিপি পুরুষ -মহিলা সদস্যগন । উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুচিত্র রঞ্জন দাস এর বিশেষ হস্তক্ষেপে নির্বাচন মুহূর্তে এমন অস্বাভাবিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন ।
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা মোট ৫৪টি। প্রতি কেন্দ্রে ১২জন করে বিডিপি পুরুষ মহিলা নিয়োগ করা হয়। এর মধ্যে পিসি ০১জন, এপিসি ০১জন, আনসার ভিডিপি পুরুষ ০৬ জন এবং মহিলা ০৪ জন দায়িত্ব পালন করবে । কেন্দ্র প্রতি ১২ জন ধরে ৫৪টি কেন্দ্রে মোট-৬১৮ জন আনসার ভিডিপি পুরুষ মহিলা সদস্য থেকে প্রায় -৬,১৮০০০(ছয় লক্ষ ১৮ হাজার) টাকা নিয়োগ বানিজ্য করে হাতিয়ে নেওয়ার সত্যতা পাওয়া যায়। অনুসন্ধানে গেলে তালিকায় বাদ পরাপ্রশিক্ষন প্রাপ্ত সাইফুল্যাহ সহ বিভিন্ন ইউনিয়নের নিরীহ আনসার-ভিডিপি পুরুষ মহিলা সদস্যগ জানায়, ০৫ নং চর ফলকন ইউনিয়ন আনসার ভিডিপি কমান্ডার জিয়া উদ্দিন বাবুল নির্বাচনে দায়িত্ব দিবে বলে তাদের ৭০-৮০ জন আনসার ভিডিপি সদস্যের নিকট থেকে ৭০,০০০-৮০,০০০ টাকা হাতিয়ে নেয় ,০৬ নং পাটোয়ারির হাট ইদ্রিস হাওলাদার এর ছেলে ইউনিয়ন দলনেতা মো:মিজানুর রহমান ৩০-৪০জনের থেকে ৪০,০০০(চল্লিশ হাজার) টাকা হাতিয়ে নেয় এর মধ্যে পিসি যোবায়ের দিয়েছে ১২ জনের টাকা। ০৭ নং হাজিরহাট ইউনিয়ন আনসার কমান্ডার প্রতি জন থেকে ৮০০-১০০০টাকা চর জাঙ্গালিয়া দলনেত্রী জান্নাতুল ফেরদাউস জন প্রতি ১০০০ করে ২০ জন ও আনসার ভিডিপি কমান্ডার দেলোয়ার ১০০০করে ১০জন। ০২ নং সাহেবের হাট ইউনিয়ন কমান্ডার মোস্তফা ১০০০ করে ২০ জনের থেকে হাতিয়ে নেয় তবে এর মধ্যে তালিকায় কয়েক জনের নামের পাশে মোস্তফার বিকাশ নাম্বার পাওয়া যায়।
প্রশিক্ষন প্রাপ্ত জনবল থাকা সত্যেও নির্বাচনী কেন্দ্রের মত গুরুত্ত্বপুর্ন কাজে নীতিমালা উপেক্ষা করে অস্র প্রশিক্ষন ছাড়াই টাকার বিনীময় লোক নিয়োগ দেওয়া অত্যন্ত দু:খ জনক । নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ইউনিয়ন আনসার ও ভিডিপি কমান্ডার বলেন, এই নিয়োগ বানিজ্যের সাথে আনসার ও ভিডিপি জেলা কমান্ড জড়িত আছেন।
এ ব্যপারে মুঠো ফোনে কমলনগর উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা শাহীন আক্তার ও নিয়োগ কমিটির সভাপতি রামগতি উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা শামীমা আরা বেগম এর নিকট জানতে চাইলে বিষয়টি এরিয়ে যান। পরে জেলা আনসার ও ভিডিপি কমান্ড এর নিকট জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়েই ফোন কল কেটে দেন।