ঢাকা ০৪:৪২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
রংপুর থেকে আমাকে উপদেষ্টা ভাবুন: প্রধান উপদেষ্টা সমন্বয়কদের ওপর হামলা হালকাভাবে দেখছে না সরকার গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে মার্কিন মানবাধিকারকর্মীর অনশন ধর্মঘট চিন্ময় দাস ইস্যুতে ভারতের সংসদে বিবৃতি দেবেন জয়শঙ্কর শিক্ষনীয় জ্বলন্ত উদাহরণ রেখে আকর্ষনীয় ক্লাসপার্টি জাহান আইডিয়াল স্কুলে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম,২৯ নভেম্বর ২০২৪ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সম্মেলন হতে যাচ্ছে চিন্ময় দাসের গ্রেপ্তার প্রসঙ্গ ভারতের উদ্বেগ নিয়ে পিনাকীর পোস্ট আবারও হাসনাতের গাড়ি চাপা দেওয়ার চেষ্টা জামিন পেলেন বরখাস্ত হওয়া সেই ম্যাজিস্ট্রেট ঊর্মি ইসকন ইস্যুতে সিদ্ধান্ত জানাল হাইকোর্ট

ঠাকুরগাঁওয়ে আব্দুল্লাহ হত্যা বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

সোহেল তানভীর, স্টাফ রিপোর্টার:
  • আপডেট টাইম : ১২:০৮:১১ অপরাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩
  • / ৮৮ ৫০০০.০ বার পাঠক

ঠাকুরগাঁওয়ে শিশু আব্দুল্লাহ (৬) হত্যার বিচার ও আসামিদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৪) ডিসেম্বর সকালে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার  ভাউলারহাটে এলাকাবাসীর আয়োজনে এ মানববন্ধনটি অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে ৯ নং রায়পুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম সহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার দুই হাজারেরও অধিক ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় আবদুল্লাহ এর মা সহ সকলেই তীব্র আহাজারিতে বলেন, নিষ্পাপ শিশু আব্দুল্লাহকে তারা এভাবে নির্মমভাবে কেন হত্যা করল আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। সেই সাথে এ ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে প্রশাসনের কাছে শাস্তির দাবি করেন সকলেই।

৯ নং রায়পুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বলেন, আব্দুল্লাহকে তার নানা মতিউর রহমান ফুসলিয়ে এখান থেকে নিয়ে গিয়ে চক্রান্ত ভাবে হয়তোবা ছেলেটাকে হত্যা করেছে। এ বিষয়ে থানায় মামলা করার পরে প্রশাসন সে আসামিদের ধরে নিয়ে আসার পরেও কেন ছেড়ে দিল তা আমার জানা নেই। আমি সেই আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার করে শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। প্রশাসন তাদের দ্রুত গ্রেফতার না করলে আমরা এই মানববন্ধন কর্মসূচি অব্যাহত রাখবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।

উল্লেখ্য, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সালন্দর ইউনিয়নের কৃষ্টপুর নামক গ্রামে নিখোঁজের ৩ দিন পরে গত ৫ ডিসেম্বর একটি পুকুর থেকে শিশু আব্দুল্লাহ এর লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় আব্দুল্লাহ এর দাদা মতিবুর রহমান, ছেলেটির বাবা মাসুদ রানা ও তার দাদিসহ ৮ জনের নামে হত্যা মামলা দায়ের করেন ছেলেটির মা রুনা আক্তার। এ আসামিদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে এলাকাবাসী।

গত রবিবার (৩ ডিসেম্বর) সকাল ১১ টায় বাড়ি থেকে বের হয়ে আর বাড়িতে ফেরেনি আব্দুল্লা। অনেক খোঁজাখুঁজি করে তাকে না পাওয়া গেলে ঐ দিনই ঠাকুরগাঁও সদর থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করে শিশুটির বাবা মাসুদ। আজ মঙ্গলবার সকালে শিশুটির দাদা পুকুর পাড়ে শিশুটির ভাসমান লাশ দেখতে পায়। পরে অর্ধগলিত শিশুর মরদেহটি উদ্ধার করে এলাকাবাসী।

এলাকাবাসীর সূত্রে আরো জানা যায়, শিশুটির বাবা মাসুদের সাথে রুনা বেগমের বিয়ে হয় ২০১৬ সালে। পারিবারিকভাবে তাদের মধ্যে অনেক ঝগড়া ঝাটি ও ঝামেলা চলাকালীন মামলা মোকদ্দমায় জরিয়ে পড়ে তারা। এ নিয়ে অনেক বার বিচার মীমাংসাতে বসেও সমাধান হয়নি তাদের। এক পর্যায়ে ২০২১ সালে তাদের ডিভোর্স হয়ে সন্তানটি মায়ের কাছে ছিল। গেল শনিবার (৩ ডিসেম্বর) শিশুটির দাদা মতিউর রহমান রুনা বেগমের বাড়ি বালিয়াডাঙ্গী থেকে আব্দুল্লাকে তার বাড়িতে নিয়ে আসে। রবিবার সকাল থেকে নিখোঁজ হয় শিশু আব্দুল্লা। এ নিয়ে রুনা আক্তার ঐদিনই ঠাকুরগাঁও সদর থানায় ৫ জনের নামে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। শিশুটিকে অনেক খোঁজাখুঁজি করার পরেও না পেয়ে ঠাকুরগাঁও সদর থানায় শিশুটির বাবা মাসুদ একটি লিখিত হারানো ডায়েরি করে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি বলেন, ঐ পুকুরটিতে মাত্র ১ থেকে ২ লতক জুরে পানি আছে তার পরিমাণ হাটুর সমান। যদি শিশুটি ঐ পুকুরে রবিবার ডুবে মারা যায় তাহলে সোমবার (৪ ডিসেম্বর) ঐ পুকুরে আমরা সবাই এতো খোঁজাখুঁজির পরেও কেন তার লাশ পাওয়া গেলনা? আবার মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) পাওয়া গেল তাও আবার অর্ধেক শরীর পানিতে আর অর্ধেক শরীর ডাঙ্গায়। আমরা বিষয়টি অত্যন্ত রহস্যময় মনে করছি।

এদিকে শিশুটির মা তার প্রাক্তন স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি সহ কয়েকজনের উপরে অভিযোগ এনে বলেন, আমার ছেলেকে ওর দাদা মতিউর রহমান জোর করে আমার অজান্তেই তাদের বাড়িতে নিয়ে এসেছিল। তারা ইচ্ছে করেই আমার ছেলেটাকে মেরে ফেলেছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

অন্যদিকে এ ঘটনা সম্পূর্ণ অশ্বিকার করেন শিশুটির বাবার পরিবারের লোকজন।

এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি ফিরোজ কবির মুঠোফোনে জানান, এ বিষয়ে একটি মামলা পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

ঠাকুরগাঁওয়ে আব্দুল্লাহ হত্যা বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

আপডেট টাইম : ১২:০৮:১১ অপরাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩

ঠাকুরগাঁওয়ে শিশু আব্দুল্লাহ (৬) হত্যার বিচার ও আসামিদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৪) ডিসেম্বর সকালে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার  ভাউলারহাটে এলাকাবাসীর আয়োজনে এ মানববন্ধনটি অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে ৯ নং রায়পুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম সহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার দুই হাজারেরও অধিক ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় আবদুল্লাহ এর মা সহ সকলেই তীব্র আহাজারিতে বলেন, নিষ্পাপ শিশু আব্দুল্লাহকে তারা এভাবে নির্মমভাবে কেন হত্যা করল আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। সেই সাথে এ ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে প্রশাসনের কাছে শাস্তির দাবি করেন সকলেই।

৯ নং রায়পুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বলেন, আব্দুল্লাহকে তার নানা মতিউর রহমান ফুসলিয়ে এখান থেকে নিয়ে গিয়ে চক্রান্ত ভাবে হয়তোবা ছেলেটাকে হত্যা করেছে। এ বিষয়ে থানায় মামলা করার পরে প্রশাসন সে আসামিদের ধরে নিয়ে আসার পরেও কেন ছেড়ে দিল তা আমার জানা নেই। আমি সেই আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার করে শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। প্রশাসন তাদের দ্রুত গ্রেফতার না করলে আমরা এই মানববন্ধন কর্মসূচি অব্যাহত রাখবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।

উল্লেখ্য, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সালন্দর ইউনিয়নের কৃষ্টপুর নামক গ্রামে নিখোঁজের ৩ দিন পরে গত ৫ ডিসেম্বর একটি পুকুর থেকে শিশু আব্দুল্লাহ এর লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় আব্দুল্লাহ এর দাদা মতিবুর রহমান, ছেলেটির বাবা মাসুদ রানা ও তার দাদিসহ ৮ জনের নামে হত্যা মামলা দায়ের করেন ছেলেটির মা রুনা আক্তার। এ আসামিদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে এলাকাবাসী।

গত রবিবার (৩ ডিসেম্বর) সকাল ১১ টায় বাড়ি থেকে বের হয়ে আর বাড়িতে ফেরেনি আব্দুল্লা। অনেক খোঁজাখুঁজি করে তাকে না পাওয়া গেলে ঐ দিনই ঠাকুরগাঁও সদর থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করে শিশুটির বাবা মাসুদ। আজ মঙ্গলবার সকালে শিশুটির দাদা পুকুর পাড়ে শিশুটির ভাসমান লাশ দেখতে পায়। পরে অর্ধগলিত শিশুর মরদেহটি উদ্ধার করে এলাকাবাসী।

এলাকাবাসীর সূত্রে আরো জানা যায়, শিশুটির বাবা মাসুদের সাথে রুনা বেগমের বিয়ে হয় ২০১৬ সালে। পারিবারিকভাবে তাদের মধ্যে অনেক ঝগড়া ঝাটি ও ঝামেলা চলাকালীন মামলা মোকদ্দমায় জরিয়ে পড়ে তারা। এ নিয়ে অনেক বার বিচার মীমাংসাতে বসেও সমাধান হয়নি তাদের। এক পর্যায়ে ২০২১ সালে তাদের ডিভোর্স হয়ে সন্তানটি মায়ের কাছে ছিল। গেল শনিবার (৩ ডিসেম্বর) শিশুটির দাদা মতিউর রহমান রুনা বেগমের বাড়ি বালিয়াডাঙ্গী থেকে আব্দুল্লাকে তার বাড়িতে নিয়ে আসে। রবিবার সকাল থেকে নিখোঁজ হয় শিশু আব্দুল্লা। এ নিয়ে রুনা আক্তার ঐদিনই ঠাকুরগাঁও সদর থানায় ৫ জনের নামে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। শিশুটিকে অনেক খোঁজাখুঁজি করার পরেও না পেয়ে ঠাকুরগাঁও সদর থানায় শিশুটির বাবা মাসুদ একটি লিখিত হারানো ডায়েরি করে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি বলেন, ঐ পুকুরটিতে মাত্র ১ থেকে ২ লতক জুরে পানি আছে তার পরিমাণ হাটুর সমান। যদি শিশুটি ঐ পুকুরে রবিবার ডুবে মারা যায় তাহলে সোমবার (৪ ডিসেম্বর) ঐ পুকুরে আমরা সবাই এতো খোঁজাখুঁজির পরেও কেন তার লাশ পাওয়া গেলনা? আবার মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) পাওয়া গেল তাও আবার অর্ধেক শরীর পানিতে আর অর্ধেক শরীর ডাঙ্গায়। আমরা বিষয়টি অত্যন্ত রহস্যময় মনে করছি।

এদিকে শিশুটির মা তার প্রাক্তন স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি সহ কয়েকজনের উপরে অভিযোগ এনে বলেন, আমার ছেলেকে ওর দাদা মতিউর রহমান জোর করে আমার অজান্তেই তাদের বাড়িতে নিয়ে এসেছিল। তারা ইচ্ছে করেই আমার ছেলেটাকে মেরে ফেলেছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

অন্যদিকে এ ঘটনা সম্পূর্ণ অশ্বিকার করেন শিশুটির বাবার পরিবারের লোকজন।

এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি ফিরোজ কবির মুঠোফোনে জানান, এ বিষয়ে একটি মামলা পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে।