আইএলও কনভেনশন-১৮৯ অনুসমর্থন করুন গৃহশ্রমিকদের শ্রম আইনে অন্তর্ভুক্তি-অধিকার ও কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করুন
- আপডেট টাইম : ০৭:৪৭:২৫ পূর্বাহ্ণ, মঙ্গলবার, ৯ মার্চ ২০২১
- / ৩৫৮ ৫০০০.০ বার পাঠক
সময়ের কন্ঠ রিপোর্ট।।
গত ০৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবসে ন্যাশনাল ওয়ার্কার্স ইউনিটি সেন্টার ও ন্যাশনাল ডমেস্টিক ওয়ার্কার্স সেন্টারের যৌথ উদ্যোগে গৃহশ্রমিকদের সমাবেশ ও র্যালী জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও র্যালী অনুষ্ঠিত হয়।
ন্যাশনাল ডমেস্টিক ওয়ার্কার্স সেন্টারের সভাপতি সেলিনা বেগম এর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক কল্পনা আক্তার, সাংগঠনিক সম্পাদক লুৎফা আক্তার, কোষাধ্যক্ষ শান্তিয়ারা বেগম, মমতাজ, অরুনা, দোলনা, হাছিনাসহ নেতৃবৃন্দ।
এছাড়াও বক্তব্য রাখেন ন্যাশনাল ওয়ার্কার্স ইউনিটি সেন্টারের সভাপতি সুলতানা বেগম,সাধারণ সম্পাদক মোঃইলিয়াস, যুগ্ম সম্পাদক খাদিজা রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ ফরিদ উদ্দীন, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রোজিনা আক্তার সুমি, প্রচার সম্পাদক মোঃ তাহেরুল ইসলাম, সেলিনা হোসেন, রাবেয়া ইসলামসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
বক্তরা বলেন, দেশের প্রায় ১৭ লাখ গৃহকর্মীর অধিকার সুরক্ষা এবং তাদের শ্রমকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে সরকারসহ সব পক্ষকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। গৃহশ্রমিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হলে যতদ্রুত সম্ভব আইএলও কনভেনশন-১৮৯ ও গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণনীতি, ২০১৫ বাস্তবায়ন জরুরি।
বক্তারা আরও বলেন, ২০১৬-১৭ সালের শ্রম শক্তি জরিপ এর তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের কর্মজীবি নারীদের একটি বড় অংশ গৃহকর্মী হিসেবে নিয়োজিত যাদের প্রায় ৯০% নারী। এই বিশাল জনগোষ্ঠী বাংলাদেশের শ্রম আইনে অন্তর্ভুক্ত না হওয়ায় তাদের অধিকার এবং শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য কোন প্রাতিষ্ঠানিক নিরীক্ষণ ব্যবস্থা এখনও পর্যন্ত কার্যকর হতে পারেনি।
বক্তারা বলেন, জরিপে দেখাযায়, ২০২০ সালে (জানুয়ারী-ডিসেম্বর) ৪৪ জন গৃহকর্মী নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এদের মধ্যে ৪ জনকে হত্যা করা হয়েছে এবং ১২ জনের রহস্যজনক মৃত্যুসহ মোট ১৬ জননিহত হয়েছেন। ধর্ষণের শিকার হয়েছেন কমপক্ষে ১২ জন। শারীরিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে চরমভাবে নিপীড়নের শিকার হয়েছেন ১২ জন, নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছেন ৪ জন। গৃহকর্মে নিয়োজিত রয়েছে একটি বিশাল জনগোষ্ঠী। তাদের কথা আমাদের ভাবতে হবে এবং আমাদের প্রত্যেকের ঘর থেকেই সেটি আমাদের শুরু করতে হবে। গৃহশ্রমিক সুরক্ষা ও কল্যাণনীতি, ২০১৫ বাস্তবায়ন এবং এটিকে আইনে রূপান্তর করতে হবে। পুরুষতান্ত্রিক সমাজের নেতিবাচক মানসিকতার কারনে গৃহকর্মীরা স্বীকৃতি পাননি। এ মানসিকতা থেকে আমাদের বেরহয়ে আসতে হবে। গৃহকর্মের মর্যাদা দিতে হবে। জনগণ ও সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ যদি গৃহশ্রমিককে মর্যাদা দিতে পারে তাহলেই তার মর্যাদার জায়গাটি পরিবর্তন সম্ভব হবে।
গৃহশ্রকিদের হয়রানি প্রতিরোধে কয়েকটি দাবি তুলে ধরা হয়:
১. গৃহশ্রমিকদের শ্রমআইনে অন্তর্ভুক্তি, নীতিমালা বাস্তবায়ন কর
২. গৃহশ্রমিকদের শোভনকাজ সংক্রান্ত আইএলও কনভেনশন-১৮৯ অনুসমর্থন কর
৩. স্থানীয় সরকারের মাধ্যমে গৃহশ্রমিক নিবন্ধন কার্যক্রম চালু কর।
৪. মজুরী বোর্ড ঘোষনা কর।
৫. গৃহশ্রমিকদের সুরক্ষায় দ্রুত জেলা ও উপজেলা মনিটরিং সেল ও পরিদর্শনটিম গঠন কর।
৬. গৃহশ্রমিকদের হত্যা,নির্যাতন, হয়রানিবন্ধে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান কর।