যাত্রাবাড়ী থানার অসাধু পুলিশের এস আই ও সোর্সরা নিয়ন্ত্রণ করছে মাদক ব্যবসা
- আপডেট টাইম : ০২:৩২:০৬ অপরাহ্ণ, সোমবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৩
- / ১১৬ ৫০০০.০ বার পাঠক
রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার পুলিশের এস আই ও সোর্সরা বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ড বিশেষ করে জুয়া খেলা এবং মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছে।
অসাধু পুলিশদের পরোক্ষ সহযোগীতায় চলছে মাদক বেচা-কেনা। ইয়াবা, হেরোইন,ফেনসিডিল, গাঁজাসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক ব্যবসা এখন জমজমাট পাড়ায় ,মহল্লায়,অলি ,গলীতে।
প্রায় সময়ই দেখা যায় সোর্সরা আসামী ধরার নামে যাত্রাবাড়ী থানার পুলিশদের সাথে গাড়িতে ঘুরে বেড়ান। সাধারণত চাহিদামত দাবি পূরণ না হলে, যে কাউকে ফাঁসাতে পারে। তাই সোর্সদের নিয়ে আতঙ্কে সাধারণ মানুষ।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, যাত্রাবাড়ী থানা এলাকার শনিরআখড়া গোবিন্দপুর, মাতুয়াইল ,রূপসী গার্মেন্টস সংলগ্ন বকেট গল্লি, কাজলার পাড়, শনির আখড়া বাস পট্টি, রায়েরবাগ সিনেমা হলের সামনে কাঠপট্টি,সোর্সেরা সরাসরি মাদক ব্যবসায় জড়িত। পুলিশের গাড়িতে চলাফেরার কারণে তাদের বিরুদ্ধে মানুষ ভয়ে মুখ খোলে না। পুলিশ অপরাধীদের বা মাদক ও অস্ত্র ব্যবসায়ীদের ধরতে সোর্সদের কাজে লাগিয়ে থাকে। আর এজন্য পুলিশের একটি সোর্সমানি বরাদ্দ থাকলেও এই বরাদ্দকৃত সোর্সমানি সাধারণত তারা পাননা। কিন্তু সোর্সমানি না দিলেও জব্দকৃত মাদকের একটি অংশ সোর্সদের দেওয়া হয়ে থাকে। পরে মাদক সম্রাট (১) ভাতিজা মনির পিতা:- মোশারফ (২) সোর্স কবির (৩) সোর্স আমিন (৪) সোর্স গাফফার (৫) মাদক সম্রাজ্ঞী মারজান গং এবং সোর্স মাসুদ তাদের লোক দিয়ে এসব মাদক বিক্রি করে থাকেন।
অধিকাংশ সোর্সই মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় একাধিকবার পুলিশের হাতে মাদকসহ আটক হন। এরপর থেকেই পুলিশের সঙ্গে পরিচয়ের সূত্র ধরে হয়ে ওঠে আরো ঘনিষ্ঠ। আইনের ফাঁকে বেরিয়ে এসেই শুরু করে তাদের পুরোনো কর্মকাণ্ড, সঙ্গে যোগ করেন পুলিশের সোর্স হিসেবে বাড়তি ক্ষমতা।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সূত্র জানায়, সোর্সদের জন্য যে অর্থ বরাদ্দ করা আছে, তা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর তাদের দিয়ে দেন। কিন্তু পুলিশের পক্ষ থেকে যে সোর্স মানি বরাদ্দ রয়েছে তা সোর্সদের কাছে পৌঁছানো হয় না। ফলে ওইসব সোর্সরা যেসব আলামত উদ্ধার বা জব্ধ করা হয় তার থেকে কিছু নিয়েই তারা আবার মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে। এতে সোর্সরা বাধ্য হয়েই মাদক ব্যবসায় জড়িত হচ্ছে। পুলিশের সোর্সসহ ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসা যারা করেন, তাদের তথ্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জানেন। এদিকে শনিরআখড়া গোবিন্দপুর এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ভুক্তভোগী জানান, মাদক কারবারে কেউ বাধা দিলে তাকে নিয়ে চলে ষড়যন্ত্র। কখনো ভুয়া ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে গ্রেপ্তারের হুমকি আবার কখনো মারধরের হুমকিও দেওয়া হয়। প্রায় সময়ই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী উল্লেখিত এলাকা গুলোতে অভিযান চালানোর আগেই সব মাদক কারবারিদের পূর্বেই সতর্ক করে দেন সোর্সরা। ফলে অভিযান চালিয়েও মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সফলতা পাচ্ছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারে সাধারণত পুলিশের সোর্স প্রয়োজন হয়। এজন্য পুলিশের নিয়মিত বাজেটের একটা বড় অংশ সোর্সমানি হিসেবে বরাদ্দ রয়েছে। তবে এ সোর্সমানির টাকা কখনো সোর্সদের দেওয়া হয় না। তারা এলাকায় পুলিশের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসা করেই তাদের পাওনা পুষিয়ে নেন। আর এ কারণে সোর্সেরা কখনো ওই টাকা দাবিও করেন না।
সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা যায়, অপরাধী গ্রেপ্তারে নানা তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহযোগিতা করাই সোর্সের কাজ। পুলিশ এসব সোর্স নিয়োগ করে অপরাধীদের মধ্য থেকেই। বিনিময়ে তারা অর্থনৈতিক সুযোগ-সুবিধা পায়। কিন্তু সোর্সেরা অপরাধী ও মাদক ব্যবসায়ীদের ধরিয়ে দিয়ে নিজেরাই ব্যবসা শুরু করছেন। এরা মাঝেমধ্যে বিরোধী গ্রুপের দু-চার জনকে গাঁজা, ইয়াবা, ফেনসিডিলসহ ধরিয়ে দিয়ে নিজেদের ব্যবসা নিরাপদ রাখেন । মাদক সম্রাট ভাতিজা মনির গং
ডিএমপির যাত্রাবাড়ী থানার কতিপয় পুলিশ কর্মকর্তার ছত্রছায়ায় রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানা এলাকা-জুড়ে মাদকের স্পট তৈরি করেছেন। শনিরআখড়া গোবিন্দপুর এলাকাবাসীর সূত্রে পাওয়া গত ১২-১০-২০২৩ ইং তারিখ রোজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা আনুমানিক ৭ ঘটিকার সময় শনির আখড়া গোবিন্দপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় স্কুলের সামনে বাড়িতে মাদক সম্রাট ভাতিজা মনিরের বাবা মোশারফ হোসেনকে ধরতে আসেন যাত্রাবাড়ী থানার সোর্স হানিফ সহ এএস আই অমিত ও তার সিনিয়র এসআই নজরুল , পেয়ে যায় মাদক সম্রাট ভাতিজা মনিরকে বিপুল পরিমাণ মাদক সহ আটক করেন । কিন্তু তাৎক্ষণিক এই সংবাদ পেয়ে যান স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা বাক্কার মোল্লা দ্রুত চলে আসেন ভাতিজা মনিরের বাড়িতে দীর্ঘ তিন ঘন্টার বেশি সময় ধরে গ্রেফতারের বিষয়টি রফাদফা করেন মাদক সম্রাট ভাতিজা মনির এর বাড়িতে বসেই। অবশেষে মাদকসহ মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেন মাদক সম্রাট মনির কে । যা প্রমাণ পাওয়া যাবে ঐ এলাকায় সিসিটিভি ফুটেজে কখন ঢুকেছে কখন বাহির হয়েছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সূত্র জানায়, পুলিশের সোর্স ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসা যারা করেন, তাদের তথ্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জানেন। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেন না। মাদক ব্যবসায়ী, তাদের গডফাদার ও পৃষ্ঠপোষকদের নাম, পিতার নাম, তাদের রাজনৈতিক দলীয় ও প্রশাসনিক পরিচয় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে রয়েছে। সারা দেশের মাদক ব্যবসায়ী ও তাদের পৃষ্ঠপোষক গডফাদারদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। মাদক ব্যবসায়ী বা ইয়াবা বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িতদের অনেকেই মাদক আন্ডারওয়ার্ল্ডে তারা ডন হিসেবে পরিচিত। আবার তারা গডফাদার হিসাবেও পরিচিত। তাদের হাতেই দেশের মাদক বা ইয়াবা বাণিজ্যের সাম্রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ ছিল। আবার অনেকেই সরকারি দলের প্রভাবশালী নেতা। ওয়ার্ড, থানা বা মহানগর নেতা থেকে খোদ সংসদ সদস্য থেকে সিআইপি খেতাব পাওয়া ধনাঢ্য ব্যবসায়ীরাও মাদক বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে কথা বললে ওয়ারী বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনারের জিয়াউল আহসান তালুকদার গণমাধ্যমকে বলেন, আমার কাছে এই বিষয়ে তথ্য এসেছে, শুধু সোর্স নয় বিভিন্ন পেশার মানুষ জড়িয়ে পড়েছে এ ধরনের কাজে, বিষয়টি নিয়ে কাজ চলছে, অচিরেই এসব অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।