ঢাকা ০৭:০০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
আজমিরিগঞ্জে ৮ লিটার চোলাই মদসহ এক যুবক গ্রেপ্তার। মোঃ আংগুর মিয়া নাসিরনগরে তরুণের পায়ের রগ কেটে দেওয়ার অভিযোগ সাংবাদিক সুরক্ষা ও কল্যাণ ফাউন্ডেশন এর ১৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা ময়মনসিংহ জেলায় ভাঙ্গুড়ায় ইউনিয়ন বিএনপির কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা এসপি বলেন , লিখিত পরীক্ষায় বাছাই হওয়া ২৮৫ জনকে আমার ফোন নম্বর দিয়ে দিয়েছি তদন্ত প্রতিবেদনে হাসিনার বিরুদ্ধে ৫ অভিযোগ চিকিৎসকদের পরিবর্তনের মানসিকতা নিয়ে চিকিৎসা সেবার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার যুদ্ধবিরতির পর ভারত-পাকিস্তান যা দাবি করছে হাসিনা কামাল মামুনের বিরুদ্ধে জুলাই গণহত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা নাসিরনগরে বজ্রপাতে শিশুসহ ৩ জনের মৃত্যু

কিশোরগঞ্জের হাওড়ে হিজল ঘেরা দৃষ্টিনন্দন দিল্লির আখড়া

মো:আলমগীর কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :
  • আপডেট টাইম : ০১:১৮:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ জুলাই ২০২৩
  • / ৫১৩ ১৫০০০.০ বার পাঠক

কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন উপজেলার হাওড়ের মাঝখানে উপজেলা সদর থেকে ১৫ কিঃমিঃ দূরে প্রত্যন্ত হাওড়ে কাটখাল ইউনিয়নে হিজল ঘেরা পর্যটন কেন্দ্র দিল্লির আখড়া।

দেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে নানা ঐতিহাসিক স্থাপনা। ঠিক তেমনই এক ঐতিহাসিক স্থাপনা হলো ৪০০ বছরের পুরোনো দিল্লির আখড়া। নিশ্চয়ই ভাবছেন, দিল্লির আখড়া কীভাবে এলো বাংলাদেশে!

বলছি কিশোরগঞ্জ জেলার অন্যতম ঐতিহাসিক ও দর্শনীয় স্থান ‘দিল্লির আখড়া’র কথা। মিঠামইন উপজেলার শেষ প্রান্তে এর অবস্থান। হাওর এলাকার অন্যতম সেরা আকর্ষণ হলো এই আখড়া।

প্রাচীন দেওয়াল ও অট্টালিকার পাশেই নদীর তীর। আর সেখানেই আছে হিজল গাছের সারি। ভেতরের অপূর্ব দৃশ্য ও নিরিবিলি পরিবেশ সবারই নজর কাড়বে। এই আখড়ার ভেতরে আছে আধ্যাত্মিক সাধক নারায়ণ গোস্বামী ও তার শিষ্য গঙ্গারাম গোস্বামীর সমাধি।

সেখানে আরও আছে ধর্মশালা, নাটমন্দির, অতিথিশালা, পাকশালা ও বৈষ্ণবদেব থাকার ঘর। দিল্লির আখড়ার দুদিকে আছে দুটি পুকুর। আখড়ার চারপাশে আছে প্রায় ৩০০০ হিজল গাছ। এই গাছগুলো সেখানকার সৌন্দর্য মাত্রাতিরিক্ত বাড়িয়ে তুলেছে।

দিল্লির আখড়ার প্রতিষ্ঠাকাল সম্পর্কে জানা যায়, দিল্লির সম্রাট জাহাঙ্গীরের সময়ে সাধক নারায়ণ গোস্বামী এই আখড়া প্রতিষ্ঠা করেন। তখন এলাকাটি ছিল জঙ্গলে পরিপূর্ণ। কোনো হিজল গাছও ছিল না। এলাকার চারপাশে ছিল নদী। ফলে আখড়ার এলাকটিকে মনে হতো ভাসমান দ্বীপের মতো।

আখড়ার ৩৭২ একর জমিতে এখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অদ্ভুত আকৃতির কয়েক হাজার হিজল গাছ। যা দূর দূরান্তের আগন্তুককে হাতছানি দিয়ে কাছে ডাকে।

অতীতে একমাত্র নদীপথ ধরেই আখড়ায় চলাচল করা হত। বিভিন্ন সময় রহস্যজনক কারণে নদীপথে চলাচলকারী নৌকা ডুবে যেত। একদিন এ নদীপথে দিল্লির সম্রাটের একটি নৌকা মালামালসহ ডুবে যায়। আরোহীদের একজন সাপের কামড়ে মারা যায়।

তবে এদিকে সাধক নারায়ণ গোস্বামী তার আধ্যাত্মিক গুণে সেই ডুবে যাওয়া মালামালসহ উঠিয়ে দেয়। এমনকি সাপের কামড়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিটিকেও বাঁচিয়ে তোলেন। পরে দিল্লির সম্রাট জাহাঙ্গীরের কাছে এ খবর পৌঁছায়।

এরপর তিনি সাধক নারায়ণ গোস্বামীর নামে এই এলাকায় একটি আখড়া প্রতিষ্ঠা করে দেন। সেই থেকে আখড়াটি ‘দিল্লির আখড়া’ নামে পরিচিতি হয়ে আসছে। সম্রাট জাহাঙ্গীর ১২১২ সালে আখড়ার নামে একটি তামার পাত্রে জমি লিখে দেন।

তবে ১৩৭০ সালে ডাকাতরা তামার পাত্রটি নিয়ে যায় বলে জানায় আখড়ার সেবায়তরা। দিল্লির আখড়ায় প্রতিবছর ৮ চৈত্র মেলা বসে। এই মেলাকে কেন্দ্র করে এ অঞ্চলের সবাই মেতে উঠেন উৎসবে।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

কিশোরগঞ্জের হাওড়ে হিজল ঘেরা দৃষ্টিনন্দন দিল্লির আখড়া

আপডেট টাইম : ০১:১৮:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ জুলাই ২০২৩

কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন উপজেলার হাওড়ের মাঝখানে উপজেলা সদর থেকে ১৫ কিঃমিঃ দূরে প্রত্যন্ত হাওড়ে কাটখাল ইউনিয়নে হিজল ঘেরা পর্যটন কেন্দ্র দিল্লির আখড়া।

দেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে নানা ঐতিহাসিক স্থাপনা। ঠিক তেমনই এক ঐতিহাসিক স্থাপনা হলো ৪০০ বছরের পুরোনো দিল্লির আখড়া। নিশ্চয়ই ভাবছেন, দিল্লির আখড়া কীভাবে এলো বাংলাদেশে!

বলছি কিশোরগঞ্জ জেলার অন্যতম ঐতিহাসিক ও দর্শনীয় স্থান ‘দিল্লির আখড়া’র কথা। মিঠামইন উপজেলার শেষ প্রান্তে এর অবস্থান। হাওর এলাকার অন্যতম সেরা আকর্ষণ হলো এই আখড়া।

প্রাচীন দেওয়াল ও অট্টালিকার পাশেই নদীর তীর। আর সেখানেই আছে হিজল গাছের সারি। ভেতরের অপূর্ব দৃশ্য ও নিরিবিলি পরিবেশ সবারই নজর কাড়বে। এই আখড়ার ভেতরে আছে আধ্যাত্মিক সাধক নারায়ণ গোস্বামী ও তার শিষ্য গঙ্গারাম গোস্বামীর সমাধি।

সেখানে আরও আছে ধর্মশালা, নাটমন্দির, অতিথিশালা, পাকশালা ও বৈষ্ণবদেব থাকার ঘর। দিল্লির আখড়ার দুদিকে আছে দুটি পুকুর। আখড়ার চারপাশে আছে প্রায় ৩০০০ হিজল গাছ। এই গাছগুলো সেখানকার সৌন্দর্য মাত্রাতিরিক্ত বাড়িয়ে তুলেছে।

দিল্লির আখড়ার প্রতিষ্ঠাকাল সম্পর্কে জানা যায়, দিল্লির সম্রাট জাহাঙ্গীরের সময়ে সাধক নারায়ণ গোস্বামী এই আখড়া প্রতিষ্ঠা করেন। তখন এলাকাটি ছিল জঙ্গলে পরিপূর্ণ। কোনো হিজল গাছও ছিল না। এলাকার চারপাশে ছিল নদী। ফলে আখড়ার এলাকটিকে মনে হতো ভাসমান দ্বীপের মতো।

আখড়ার ৩৭২ একর জমিতে এখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অদ্ভুত আকৃতির কয়েক হাজার হিজল গাছ। যা দূর দূরান্তের আগন্তুককে হাতছানি দিয়ে কাছে ডাকে।

অতীতে একমাত্র নদীপথ ধরেই আখড়ায় চলাচল করা হত। বিভিন্ন সময় রহস্যজনক কারণে নদীপথে চলাচলকারী নৌকা ডুবে যেত। একদিন এ নদীপথে দিল্লির সম্রাটের একটি নৌকা মালামালসহ ডুবে যায়। আরোহীদের একজন সাপের কামড়ে মারা যায়।

তবে এদিকে সাধক নারায়ণ গোস্বামী তার আধ্যাত্মিক গুণে সেই ডুবে যাওয়া মালামালসহ উঠিয়ে দেয়। এমনকি সাপের কামড়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিটিকেও বাঁচিয়ে তোলেন। পরে দিল্লির সম্রাট জাহাঙ্গীরের কাছে এ খবর পৌঁছায়।

এরপর তিনি সাধক নারায়ণ গোস্বামীর নামে এই এলাকায় একটি আখড়া প্রতিষ্ঠা করে দেন। সেই থেকে আখড়াটি ‘দিল্লির আখড়া’ নামে পরিচিতি হয়ে আসছে। সম্রাট জাহাঙ্গীর ১২১২ সালে আখড়ার নামে একটি তামার পাত্রে জমি লিখে দেন।

তবে ১৩৭০ সালে ডাকাতরা তামার পাত্রটি নিয়ে যায় বলে জানায় আখড়ার সেবায়তরা। দিল্লির আখড়ায় প্রতিবছর ৮ চৈত্র মেলা বসে। এই মেলাকে কেন্দ্র করে এ অঞ্চলের সবাই মেতে উঠেন উৎসবে।