শ্যামপুর- ডেমরা সাব-রেজিস্ট্রার অফিস দুর্নীতি ও অনিয়মের আখড়া
- আপডেট টাইম : ০৩:৪৯:১১ পূর্বাহ্ণ, রবিবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৩
- / ১৯৫ ৫০০০.০ বার পাঠক
ডেমরা ,শ্যামপুর,সাব-রেজিস্ট্রার অফিস দুর্নীতি ও অনিয়মের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। ঢাকা সদর, ডেমরা ও শ্যাম্পু সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে ঘুষ ছাড়া কাজ হয় না। জমির নিবন্ধন, নামজারি, জাল দলিলে জমি দখলসহ নানা ঘটনায় অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন ভুক্তভোগীরা। জমির দলিল আটকে রেখে ভুক্তভোগীদের চাপের মুখে ঘুষ দাবি সাব-রেজিস্ট্রার, উম্মেদার, পিওন ও নকলনবিশদের নিয়মিত আচরণে পরিণত হয়েছে। ঘুষ আদায়ের কৌশল হিসেবে সাব-রেজিস্ট্রারের রুটিনমাফিক কাজ নকলনবিশ, উম্মেদার ও পিওন দিয়েও করানো হচ্ছে। এই সুযোগে নকলনবিশ, উম্মেদার ও পিওন কোটি কোটি টাকার মলিক হচ্ছেন। বাংলাদেশ সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধন ম্যানুয়াল-২০১৪ মানছেন না সাব-রেজিস্ট্রাররাও। তারা নিবন্ধন ম্যানুয়াল অনুযায়ী নিজেদের কাজ নকলনবিশ, উম্মেদার ও পিওনদের দিয়ে করাচ্ছেন। দলিল চেক করার কাজ সাব-রেজিস্ট্রারদের করার নিয়ম থাকলেও তা মানছেন না তারা। অনুসন্ধানে ও সরেজমিন ঘুরে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধন ম্যানুয়াল-২০১৪-এর অধ্যায়-২৬-এ উল্লেখ আছে যে, সহকারীগণ কর্তৃক দলিল পরীক্ষাকরণ কাক্সিক্ষত নয়, এই কাজটি অবশ্যই স্বয়ং নিবন্ধনকারী কর্মকর্তা কর্তৃক সম্পাদিত হবে।
সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এই দুর্নীতি বন্ধ করার জন্য গণশুনানির আয়োজন করেছে। শুনানিও চলছে। এতে ভুক্তভোগীরা তুলে ধরেছেন তাদের নানা সমস্যার কথা, বলেছেন ডেমরা ও শ্যামপুর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের দুর্নীতি ও অনিয়মের চিত্র। তারা বলেন, ‘আমরা আমজনতা। আমরা কোনো কাজের জন্য ভূমি রেজিস্ট্রি অফিসে গেলে হয়রানির শিকার হই। মোটা অঙ্কের ঘুষ ছাড়া কাজ হবে না বলে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রকাশ্যে জানিয়ে দেন। আমরা তাদের কাছে জিম্মি।’ ভুক্তভোগী জনগণের দাবি, নামজারি, খারিজ, জমির শ্রেণী পরিবর্তনসহ নানা কাজে জনগণের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে দুর্নীতি করে আঙুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছেন ডেমরা ও শ্যামপুর ভূমি অফিসের সাব-রেজিস্ট্রারসহ কর্মচারীরা।
সরেজমিন গিয়ে রোববার দেখা গেছে, শ্যামপুর সাব-রেজিস্ট্রার এজলাস্ট ছেড়ে খাস কামরায় দরজা বন্ধ করে নিয়মের তোয়াক্কা না করে নগদ অর্থ ও ঘুষ আদায়ের মাধ্যমে রেজিস্ট্রি সম্পূর্ণ করছে ।অফিসের নকলনবিশ রেজিস্ট্রি দলিল চেক করছেন। তিনি দলিল মালিককে জিজ্ঞাসা করছেন আপনার তথ্য-প্রমাণ ঠিক নেই। অথচ নিবন্ধন ম্যানুয়াল অনুযায়ী, দলিল চেক করার কাজ করার দায়িত্ব রয়েছে শ্যামপুর সাব-রেজিস্ট্রারের। এছাড়াও ঢাকার ডেমরা রেজিস্ট্রেশন ভবনে সাব রেজিস্ট্রার অফিসের দলিলও চেক করা হচ্ছে নকলনবিশ, উম্মেদার ও পিওনদের দিয়ে। নিয়ম অনুযায়ী, নকলনবিশগণ অফিসের অন্যান্য কাজ করবেন। সাব-রেজিস্ট্রার দলিল চেক করার পর নকলনবিশগণ দলিল ভলিউমে লিপিবদ্ধ করবেন।
এ বিষয়ে শ্যামপুর সাব-রেজিস্ট্রার এর কাছে জানতে চাইলে তিনি রবিবার দৈনিক সময়ের কন্ঠের প্রতিবেদক কে বলেন, আমি নিজেও দলিল চেক করি। নকলনবিশ দিয়ে বাজারমূল্য চেক করাই। আমরা তিন-চার জন মিলে চার-পাঁচ বার দলিল চেক করি। যাতে কোন ভুল না থাকে। নকলনবিশ দলিল চেক করেন বলেও তিনি জানান। ঘুষ গ্রহণের বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।
রেজিস্ট্রেশন ভবন (১১) দক্ষিণ রায়েরবাগ , কদমতলী, ঢাকা, রোববার দুপুরে সরজমিনে গিয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবং ভ্যানডার সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসেন এর আলাপ কালে তিনি বলেন আমাদের এই ভবনে দলিল রেজিস্ট্রি করতে হলে টাকা লাগে টাকা ছাড়া আমাদের সাব রেজিস্টার স্বাক্ষর করে না জমি নিজেরই হোক আর ভেজাল হোক কোন সমস্যা নেই ,কয়েকজন নকলনবিশ ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতাদের সাথে যোগসাজশে দলিল রেজিস্ট্রি ভুক্তভোগীদের জিম্মি করে ভয়-ভীতি দিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেন। নকলনবীশগণ দলিল রেজিস্ট্রি ভুক্তভোগীদের সঙ্গে স্থানীয় নেতাদের মীমাংসার কথা বলেও অর্থ আদায় করে বলেও অভিযোগ রয়েছে ।