ঢাকা ১২:৪৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
ডেঙ্গুতে ২৪ ঘণ্টায় ১০ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৯৯০ ইলা লালালালা: সবুজ ঘাসের লাল দ্রোহের সুর যার কন্ঠে তরুণ আইনজীবী সাইফুলকে যেভাবে হত্যা করা হয় গাজীপুরে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত রায়পুর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের দুর্নীতিত অতিষ্ঠ জনসাধারণ সমাবেশে গিয়ে টাকা না পেয়ে বাড়ি ঘেরাও, ৫ প্রতারক আটক অভিনব সিন্ডিকেট: সয়াবিন তেলের সঙ্গে চাল-ডাল কেনা বাধ্যতামূলক! সব ছাত্রসংগঠনের সমন্বয়ে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করলেন হাসনাত ডেপুটি রেজিস্ট্রার হয়েও নার্সিং ইনস্টিটিউট ব্যবসা নিলুফার ইয়াসমিনের অভিযোগ তদন্তে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে তলব পুলিশ প্রশাসনের নীতিগত পরিবর্তন হলেও এসআই মিজানের অসাধু নীতির পরিবর্তন হয়নি

অবহেলায় যাত্রাবাড়ী শেখ রাসেল পার্কটি বর্তমানে মাদকসেবী ও অনৈতিক কার্যকলাপের আস্তানা

সিকু চাকমা
  • আপডেট টাইম : ০৪:১৮:৫৪ অপরাহ্ণ, শনিবার, ১৮ মার্চ ২০২৩
  • / ৩৭৩ ৫০০০.০ বার পাঠক

তদারকি ও বাতি না থাকায় রাজধানীর যাত্রাবাড়ী মোড়ের উত্তর পাশে শেখ রাসেল পার্কটি এখন মাদকসেবী ও অনৈতিক কাজের নিরাপদ আস্তানায় পরিনত হয়েছে। পার্কের ভেতরে টয়লেট, ঝরনা, লাইব্রেরি ও বাতির কাজ সম্পূর্ণ না করেই প্রায় পৌনে দুই বছর আগে ঠিকাদার জামাল এই পার্কটি ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের কাছে বুঝিয়ে দেন। ফলে ২০২১ সালের ৯ জুন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস পার্টির উদ্বোধন করেন। কিন্তু পার্কটি প্রথমে কিছুদিন ভালো থাকলেও এখন সেটি পার্কের পরিবেশ নেই। এলাকাবাসীর দাবি, পার্কটি খোলা না রেখে বেষ্টনী দিয়ে দর্শনার্থীদের প্রবেশের জন্য নির্দিষ্ট গেট করে দেওয়া উচিত।সেসঙ্গে এর তত্ত্বাবধান করা জরুরী।

স্থানীয়রা যেন একটু খোলা বাতাসে শ্বাস নিতে পারেন,বন্ধুবান্ধব -পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে পারেন ও বাচ্চাদের বিনোদনের জন্য পার্কটি সংস্কার করা হয়। ২০১৭ সালের ১৭ ডিসেম্বর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এর তৎকালীন মেয়র সাঈদ খোকনের পক্ষে পার্কটির সংস্কার কাজের ভিত্তিপ্রস্থর উদ্বোধন করেন ৪৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল কালাম অনু। তখন পার্কটি ছিল পরিত্যক্ত। ২০১৮ সালের আগস্ট মাসে এই আধুনিক পার্কটির সংস্কার কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ২০১৯ সালের জুন মাস পর্যন্ত এর সংস্কার কাজের সময়সীমা বর্ধিত করা হয়। তবুও এর কাজ অসমাপ্ত রেখে এই পার্কটি উদ্বোধন করা হয়। স্বরেজমিনে দেখা যায়, পার্কটির দুই পাশ খোলা। ফলে পার্কে ঘেষে গড়ে উঠেছে ফল বিক্রেটার আড়ত , মাছ ও চা বিক্রেতাসহ বিভিন্ন পণ্যের হকারদের আস্তানা। এরজন্য পার্কের প্রবেশপথে বাধার সৃষ্টি হয়েছে। শুধু তাই নয়, পার্কের ভিতর ঝালমুড়ি ও মোজার দোকান দিয়ে দখল করে রেখেছে কিছু হকার। দর্শনার্থীদের বসার বেঞ্চগুলো ধুলোবালি পড়ে বসার অযোগ্য হয়ে পড়েছে। টয়লেট না থাকায় পার্কের উত্তরপাশে পাবলিক প্রস্রাব করায় পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। পার্কটির মাঝের চত্বরে সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য ঘাস লাগানো হলেও সেগুলো দর্শনার্থীদের পায়ের মারায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে ঘাসগুলো। এমনকি পার্কের ভিতর স্তম্ভটির উপরের চারটি ঘড়ি অকেজো হয়ে পড়লেও দেখার কেউ নেই। অন্যদিকে বাতি না থাকায় সন্ধ্যার পর পার্কটি ভুতুড়ে পরিবেশে সৃষ্টি হয়। রাতে অন্ধকারে পার্কের ভিতরে মাদকসেবন ও কিছু বখাটে ছেলেমেয়েদের আপত্তিকর অবস্থায় বসে থাকতে দেখা যায়। ফলে দখল, দূষণ ও তত্ত্বাবধায়ক না থাকার কারণে পার্কটি বর্তমানে মাদকসেবী ও অনৈতিক কাজের নিরাপদ আস্তানায় পরিণত হয়েছে।
যাত্রাবাড়ীর বাসিন্দা আয়েশা খাতুন বলেন, ‘সিটি করপোরেশন যখন পার্কটি সংস্কার করে, আমরা শেষ পর্যন্ত এ নিয়ে বেশ আশাবাদী ছিলাম। বাস্তবতা হলো এটি এখন অপরাধীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে।’পার্কে বাচ্চা নিয়ে ঘুরতে আসা আসলাম জানান, এখানে বখাটে ছেলেদের উৎপাত বেড়ে যাওয়া পরিবার-পরিজন নিয়ে আসাটা নিরাপদ নয়। অন্যদিকে বাতি না থাকায় সন্ধ্যার পর গাঁজাখোর ও কিছু উঠতি বয়সী ছেলেমেয়েদের অনৈতিক কার্যকলাপ পার্কের পরিবেশ নষ্ট করছে। ফলে বাচ্চা নিয়ে সন্ধ্যার আগেই চলে যেতে হয়।
এ ব্যাপারে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৪৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল কালাম অনু তিনি বলেন, এসব অভিযোগ আমিও শুনেছি। তাই আমি মাঝে মাঝে গিয়ে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি। বর্তমানে পার্কটির বাকি কাজ চলমান। এ ব্যাপারে যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মফিজুল আলম তিনি বলেন, আমরা বিষয়টি অবশ্যই দেখবো।
ডিএসসিসির নির্বাহী প্রকৌশলী (অঞ্চল-৫) সাইফুল ইসলাম জয় তিনি বলেন, ‘পার্কটি এখনো কোনো প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দেওয়া হয়নি। ইজারা দেওয়া হলে, ইজারাদার জায়গাটি রক্ষণাবেক্ষণ করবেন। তখন এর সব সমস্যা দূর হয়ে যাবে। সম্পত্তি বিভাগ ইজারার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। আশা করছি, শীঘ্রই তা শেষ হবে।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

অবহেলায় যাত্রাবাড়ী শেখ রাসেল পার্কটি বর্তমানে মাদকসেবী ও অনৈতিক কার্যকলাপের আস্তানা

আপডেট টাইম : ০৪:১৮:৫৪ অপরাহ্ণ, শনিবার, ১৮ মার্চ ২০২৩

তদারকি ও বাতি না থাকায় রাজধানীর যাত্রাবাড়ী মোড়ের উত্তর পাশে শেখ রাসেল পার্কটি এখন মাদকসেবী ও অনৈতিক কাজের নিরাপদ আস্তানায় পরিনত হয়েছে। পার্কের ভেতরে টয়লেট, ঝরনা, লাইব্রেরি ও বাতির কাজ সম্পূর্ণ না করেই প্রায় পৌনে দুই বছর আগে ঠিকাদার জামাল এই পার্কটি ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের কাছে বুঝিয়ে দেন। ফলে ২০২১ সালের ৯ জুন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস পার্টির উদ্বোধন করেন। কিন্তু পার্কটি প্রথমে কিছুদিন ভালো থাকলেও এখন সেটি পার্কের পরিবেশ নেই। এলাকাবাসীর দাবি, পার্কটি খোলা না রেখে বেষ্টনী দিয়ে দর্শনার্থীদের প্রবেশের জন্য নির্দিষ্ট গেট করে দেওয়া উচিত।সেসঙ্গে এর তত্ত্বাবধান করা জরুরী।

স্থানীয়রা যেন একটু খোলা বাতাসে শ্বাস নিতে পারেন,বন্ধুবান্ধব -পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে পারেন ও বাচ্চাদের বিনোদনের জন্য পার্কটি সংস্কার করা হয়। ২০১৭ সালের ১৭ ডিসেম্বর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এর তৎকালীন মেয়র সাঈদ খোকনের পক্ষে পার্কটির সংস্কার কাজের ভিত্তিপ্রস্থর উদ্বোধন করেন ৪৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল কালাম অনু। তখন পার্কটি ছিল পরিত্যক্ত। ২০১৮ সালের আগস্ট মাসে এই আধুনিক পার্কটির সংস্কার কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ২০১৯ সালের জুন মাস পর্যন্ত এর সংস্কার কাজের সময়সীমা বর্ধিত করা হয়। তবুও এর কাজ অসমাপ্ত রেখে এই পার্কটি উদ্বোধন করা হয়। স্বরেজমিনে দেখা যায়, পার্কটির দুই পাশ খোলা। ফলে পার্কে ঘেষে গড়ে উঠেছে ফল বিক্রেটার আড়ত , মাছ ও চা বিক্রেতাসহ বিভিন্ন পণ্যের হকারদের আস্তানা। এরজন্য পার্কের প্রবেশপথে বাধার সৃষ্টি হয়েছে। শুধু তাই নয়, পার্কের ভিতর ঝালমুড়ি ও মোজার দোকান দিয়ে দখল করে রেখেছে কিছু হকার। দর্শনার্থীদের বসার বেঞ্চগুলো ধুলোবালি পড়ে বসার অযোগ্য হয়ে পড়েছে। টয়লেট না থাকায় পার্কের উত্তরপাশে পাবলিক প্রস্রাব করায় পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। পার্কটির মাঝের চত্বরে সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য ঘাস লাগানো হলেও সেগুলো দর্শনার্থীদের পায়ের মারায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে ঘাসগুলো। এমনকি পার্কের ভিতর স্তম্ভটির উপরের চারটি ঘড়ি অকেজো হয়ে পড়লেও দেখার কেউ নেই। অন্যদিকে বাতি না থাকায় সন্ধ্যার পর পার্কটি ভুতুড়ে পরিবেশে সৃষ্টি হয়। রাতে অন্ধকারে পার্কের ভিতরে মাদকসেবন ও কিছু বখাটে ছেলেমেয়েদের আপত্তিকর অবস্থায় বসে থাকতে দেখা যায়। ফলে দখল, দূষণ ও তত্ত্বাবধায়ক না থাকার কারণে পার্কটি বর্তমানে মাদকসেবী ও অনৈতিক কাজের নিরাপদ আস্তানায় পরিণত হয়েছে।
যাত্রাবাড়ীর বাসিন্দা আয়েশা খাতুন বলেন, ‘সিটি করপোরেশন যখন পার্কটি সংস্কার করে, আমরা শেষ পর্যন্ত এ নিয়ে বেশ আশাবাদী ছিলাম। বাস্তবতা হলো এটি এখন অপরাধীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে।’পার্কে বাচ্চা নিয়ে ঘুরতে আসা আসলাম জানান, এখানে বখাটে ছেলেদের উৎপাত বেড়ে যাওয়া পরিবার-পরিজন নিয়ে আসাটা নিরাপদ নয়। অন্যদিকে বাতি না থাকায় সন্ধ্যার পর গাঁজাখোর ও কিছু উঠতি বয়সী ছেলেমেয়েদের অনৈতিক কার্যকলাপ পার্কের পরিবেশ নষ্ট করছে। ফলে বাচ্চা নিয়ে সন্ধ্যার আগেই চলে যেতে হয়।
এ ব্যাপারে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৪৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল কালাম অনু তিনি বলেন, এসব অভিযোগ আমিও শুনেছি। তাই আমি মাঝে মাঝে গিয়ে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি। বর্তমানে পার্কটির বাকি কাজ চলমান। এ ব্যাপারে যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মফিজুল আলম তিনি বলেন, আমরা বিষয়টি অবশ্যই দেখবো।
ডিএসসিসির নির্বাহী প্রকৌশলী (অঞ্চল-৫) সাইফুল ইসলাম জয় তিনি বলেন, ‘পার্কটি এখনো কোনো প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দেওয়া হয়নি। ইজারা দেওয়া হলে, ইজারাদার জায়গাটি রক্ষণাবেক্ষণ করবেন। তখন এর সব সমস্যা দূর হয়ে যাবে। সম্পত্তি বিভাগ ইজারার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। আশা করছি, শীঘ্রই তা শেষ হবে।